আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমি মুসলমান। এটা কি পরিচয় দেওয়ার মত যথেষ্ট নয়?

এ পথ যদি না শেষ হয়,তবে......... আমার মনে হয় আমাদের অবশ্যই ইমামদের কথা অনুসরন করতে হবে,কিন্তু আপনি কেন শুধু ইমাম আবু হানিফা (রঃ) কথা মেনে চলবেন অন্য ইমামদের কথা নয়? কারন আপনার বাবা হানাফি মাজহাবের। আপনার বাবা যদি শাফেই মাজাহাবের হতেন? তাহলে আপনি বলতেন আমিও শাফেই মাজহাব মেনে চলতাম। আপনার বাবা যদি শিয়া হতেন?????? তাহলে আপনি বলতেন আমিও শিয়া হতাম। আপনার বাবা যদি অমুসলিম হতেন??? তাহলে আপনি বলতেন আমিও অমুসলিম হতাম!!!!!!!!!! আপনি অমুসলিম হলে আপনি কি মাফ পেতেন?????????????? প্রশ্ন আপনার কাছে। আপনি যদি মাফ পান তাহলে সকল অমুসলিমই মাফ পাবে।

কারন বেশির ভাগের মা বাবা অমুসলিম তাই তারা অমুসলিম। ----------------------------------------------------------------------------- এখন আপনার একটা কথাই বলার থাকতে পারে, “আল্লাহ্‌ যদি আমাকে হেদায়েত দেন তাহলে আমি মুসলিম হয়ে যাব। ” আল্লাহ্‌ পবিত্র কোরআনে সুরা-আনকাবুতের ৬৯ নং আয়াতে বলেছেনঃ যদি তুমি সংগ্রাম কর আল্লাহ্‌ তায়ালার পথে আল্লাহ্‌ তায়ালা তোমার সামনে রাস্তা খুলে দিবেন। এখানে শর্ত হল আল্লাহ্‌র রাস্তায় সংগ্রাম করতে হবে। ----------------------------------------------------------------------------- আমার মাজহাবে অজু করার পর কোন মহিলাকে স্পর্শ করলে অজু ভাঙ্গে না কিন্তু শাফেই মাজহাবে অজু ভেঙ্গে যায়।

প্রশ্ন আপনার কাছে, দুটিই কি একই সাথে সঠিক হতে পারে ???????????? জানিনা আপনাদের উত্তর কি। আমার উত্তরঃ না। তাহলে কারটা সঠিক,সেটা জানতে হলে কোরআন ও সহিহ হাদিসের জ্ঞান থাকতে হবে। --------------------------------------------------------------------------------- তাহলে এই বিষয়ে কোন মাজহাবের কথা বেশি সঠিক সেটা সবার জানা সম্ভব না, যদি না আল্লাহ্‌র রাস্তায় সংগ্রাম করা হয়। --------------------------------------------------------------------------- আল্লাহ্‌ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেছেন।

সুরা-মায়িদা,আয়াত-৬ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا قُمْتُمْ إِلَى الصَّلَاةِ فَاغْسِلُوا وُجُوهَكُمْ وَأَيْدِيَكُمْ إِلَى الْمَرَافِقِ وَامْسَحُوا بِرُءُوسِكُمْ وَأَرْجُلَكُمْ إِلَى الْكَعْبَيْنِ ۚ وَإِن كُنتُمْ جُنُبًا فَاطَّهَّرُوا ۚ وَإِن كُنتُم مَّرْضَىٰ أَوْ عَلَىٰ سَفَرٍ أَوْ جَاءَ أَحَدٌ مِّنكُم مِّنَ الْغَائِطِ أَوْ لَامَسْتُمُ النِّسَاءَ فَلَمْ تَجِدُوا مَاءً فَتَيَمَّمُوا صَعِيدًا طَيِّبًا فَامْسَحُوا بِوُجُوهِكُمْ وَأَيْدِيكُم مِّنْهُ ۚ مَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيَجْعَلَ عَلَيْكُم مِّنْ حَرَجٍ وَلَٰكِن يُرِيدُ لِيُطَهِّرَكُمْ وَلِيُتِمَّ نِعْمَتَهُ عَلَيْكُمْ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ [٥:٦] অর্থাৎ হে মুমিনগণ, যখন তোমরা নামাযের জন্যে উঠ, তখন স্বীয় মুখমন্ডল ও হস্তসমূহ কনুই পর্যন্ত ধৌত কর, মাথা মুছেহ কর এবং পদযুগল গিটসহ। যদি তোমরা অপবিত্র হও তবে সারা দেহ পবিত্র করে নাও এবং যদি তোমরা রুগ্ন হও, অথবা প্রবাসে থাক অথবা তোমাদের কেউ প্রসাব-পায়খানা সেরে আসে অথবা তোমরা স্ত্রীদের সাথে সঙ্গত হও অথবা স্পর্শ কর, অতঃপর পানি না পাও, তবে তোমরা পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও-অর্থাৎ, স্বীয় মুখ-মন্ডল ও হস্তদ্বয় মাটি দ্বারা মুছে ফেল। আল্লাহ তোমাদেরকে অসুবিধায় ফেলতে চান না; কিন্তু তোমাদেরকে পবিত্র রাখতে চান এবং তোমাদের প্রতি স্বীয় নেয়ামত পূর্ণ করতে চান-যাতে তোমরা কৃতজ্ঞাতা প্রকাশ কর। ------------------------------------------------------------------------------ কোরআনের এই আয়াতের উপর ভিত্তি করে,যেটা বলছে কোন মহিলাকে স্পর্শ করলে বা মহিলা স্পর্শ করলে, এখানে আরবি শব্দ হল 'লামাছ'এর মূল আরবি শব্দ 'মাসাহ'। এটার উপুর ভিত্তি করে যে কোন মহিলাকে স্পর্শ করলে আবার অজু করতে হবে।

এখন আরবি শব্দ 'মাছাহ' এই শব্দটার দুটি অর্থ। আরবি ডিকশনারি খুললে দেখতে পাবেন একটা অর্থ-শারীরিক স্পর্শ আরেকটা সহবাস করা। ------------------------------------------------------------------------------- তাহলে এই দুজন মহান আলেম তারা অনেক জ্ঞানী ছিলেন,ওনারা আলাদা দুটি শব্দ বেছে নিয়েছেন। ইমাম আবু হানিফা (রহঃ) আল্লাহ্‌ তাকে শান্তিতে রাখুন, আয়াতটার অর্থ করেন যদি কোন মহিলার সাথে সহবাস করেন তাহলে অজু ভেঙ্গে যাবে। কিন্তু স্পর্শ করলে ওজু ভাংবে না।

আর ইমাম শাফেই (রহঃ) আল্লাহ্‌ তাকে শান্তিতে রাখুন, আয়াতটার অর্থ করেন যদি কোন মহিলাকে শারীরিক স্পর্শ করেন তাহলে ওজু ভেঙ্গে যাবে। এর ফলে হানাফি মাজহাবের মত অনুযায়ী কোন মহিলাকে স্পর্শ করলে ওজু ভাঙ্গে না কিন্তু শাফেই মাজহাবের মত আনুযায়ী স্পর্শ করলে ওজু ভেঙ্গে যায়। মাছাহ শব্দের দুটি অর্থ। ওনারা দুজন আলাদা দুটি অর্থ ধরেছেন। তাহলে সমাধান কি? ইসলাম ধর্মের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পবিত্র কোরআন তার পর সহিহ হাদিস।

যদি কোরআন থেকে কোন সমাধান না পাওয়া যায় অথবা বুঝতে অসুবিধা হয় তাহলে সহিহ হাদিস দেখতে হবে। তবে যদি আমরা পবিত্র কোরআনের অন্যান্য আয়াত দেখি পবিত্র কোরআনের সুরা ইমরানের ৪৭ নং আয়াতে এই মাছাহ শব্দটা ব্যবহার করা হয়েছে। قَالَتْ رَبِّ أَنَّىٰ يَكُونُ لِي وَلَدٌ وَلَمْ يَمْسَسْنِي بَشَرٌ ۖ قَالَ كَذَٰلِكِ اللَّهُ يَخْلُقُ مَا يَشَاءُ ۚ إِذَا قَضَىٰ أَمْرًا فَإِنَّمَا يَقُولُ لَهُ كُن فَيَكُونُ [٣:٤٧] অর্থঃ তিনি বললেন, পরওয়ারদেগার! কেমন করে আমার সন্তান হবে; আমাকে তো কোন মানুষ স্পর্শ করেনি। বললেন এ ভাবেই আল্লাহ যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন। যখন কোন কাজ করার জন্য ইচ্ছা করেন তখন বলেন যে, ‘হয়ে যাও’ অমনি তা হয়ে যায়।

এখানে মরিয়ম (আঃ) এর কাহিনী বর্ননা করা হয়েছে। প্রধান ফেরেস্তা জিব্রীল (আঃ) এসে জানাল আপনার একটা পুত্র সন্তান হবে। মরিয়ম(আঃ) তখন উত্তর দিলেনঃ “আমার সন্তান কিভাবে হবে, আমাকে তো কোন মানুষ স্পর্শ করেনি। ” সেই একই শব্দ মাছাহ এখানেও আছে। এখানে আপনারা বুঝতে পারবেন মাছাহ শব্দটা দারা সহবাস করা বুঝান হয়েছে, শারীরিক স্পর্শ বুঝান হচ্ছে না।

কারন স্পর্শ করলে সন্তান হবার কোন সম্ভাবনাই থাকে না । সেজন্য তিনি বললেন “আমার সন্তান কিভাবে হবে, আমাকে তো কোন মানুষ স্পর্শ করেনি”। তখন উত্তর আসল, আল্লাহ্‌ যখন কোন কিছু স্থির করে তখন আল্লাহ্‌ বলেন হও, তখন সেটা হয়ে যায়। এই হল পুরো আয়াতটা। এখানে মাছাহ শব্দের অর্থ সহবাস করা।

এখন দেখি হাদিসে এ সমন্ধে কি আছেঃ আবু দাউদে ১ নং খণ্ডে বুক অফ সালাহ ৭০ নং অধ্যায়ের ১৭৯ নং হাদিস হযরত আয়েশা (রাঃ) বললেনঃ “একবার নবীজী (সঃ) তার একজন স্ত্রীকে চুমু দিয়ে নামাজ পড়তে চলে গেলেন,তিনি আবার ওজু করেন নি”। তখন ওরয়া (রাঃ) আয়শা (রাঃ) বললেনঃ “সেই স্ত্রী তো আপনি ছাড়া কেউ নন”। তখন আয়েশা (রাঃ) হেসে উঠলেন। এই হাদিস প্রমান করে শারীরিক স্পর্শ করলে ওজু ভেঙ্গে যাবে না। আরেকটা হাদিস আছে সহিহ বুখারিতে ১নং খণ্ডের ৫১৯ নং হাদিস বলা হয়েছে হজরত আয়েশা (রাঃ) বর্ননা দিয়েছেন “আমি ছিলাম মহাম্মাদ (সঃ) এবং কিবলার মাঝামাঝি।

নবীজী(সঃ) তখন নামাজ পড়ছিলেন,তারপর সিজদা দেয়ার সময় তিনি আমাকে পায়ে ধাক্কা দিলেন,আমি একপাশে সরে গেলাম”। এ হাদিস থেকেও বুঝা যায় শারীরিক স্পর্শ লাগলেই ওজু ভাঙ্গে না। কারন নবীজী(সঃ) হজরত আয়েশা (রাঃ) কে স্পর্শ করার পরেও নামাজ পরেছিলেন। এরকম আরও সহিহ হাদিস আছে যা থেকে বোঝা যায় শারীরিক স্পর্শ লাগলেই ওজু ভাঙ্গে না। এখন আপনাকে প্রশ্ন করি এই ব্যাপারে কে সঠিক? অবশ্যই ইমাম আবু হানিফা(রহঃ)।

কারন তার কথা গুলো পবিত্র কোরআন ও সহিহ হাদিসের সাথে মিলে যায়। আবার অন্য অনেক বিষয় আছে যাতে ইমাম আবু হানিফা(রহঃ) এর চেয়ে ইমাম শাফেই (রহঃ) ঠিক ছিলেন। তাহলে বুঝা যাচ্ছে আমরা যদি এক ইমামের সবগুলো কথা মেনে চলি তাহলে ভুলের আশঙ্কা থেকে যায়। পরিশেষে একটি কথা বলতে পারি আমি হানাফি মাজহাবের আনুসারি এবং কোন সহিহ হাদিস ইমাম আবু হানাফি(রহঃ) এর মতের বিপক্ষে গেলে আমি সহিহ হাদিস মেনে চলি,তার পরও আমি হানাফি মাজহাবি। কারন ইমাম আবু হানাফি(রহঃ) বলেছেন, “যখন আমার কোন কথা সহিহ হাদিসের বিপক্ষে যায়, সেটা ছুড়ে ফেলে দাও।

সহিহ হাদিসই আমার মাজহাব। ” ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.