আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল - শেরাটন - রূপসীবাংলা - ইন্টারকন্টিনেন্টাল : সুদীর্ঘ ৪৫ বছরের পথ পরিক্রমা

জনারণ্যে নির্জনতায় আক্রান্ত। নির্জনতাই বেশী পছন্দ, নিজের ভেতরে ডুবে থাকতেই ভাল লাগে। কিছুটা নার্সিসিস্টও। "হোটেল রূপসী বাংলা" বাংলাদেশের প্রথম পাঁচ তারকামানের হোটেল। জন্মের সময় যার নাম ছিলো "হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল"।

আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদানের জন্য রাষ্ট্রকর্তৃক "বীর উত্তম" পদকপ্রাপ্ত। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সাথে এ হোটেলের নাম ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পুর্বের ও মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন অনেক গুরুত্বপুর্ন ঘোষনা এ হোটেল থেকে এসেছে। স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন এই হোটেল "নো-ওয়ার জোন" হিসেবে স্বীকৃত ছিলো। তখন এ হোটেলে থেকেই বিদেশী কূটনীতিক ও সাংবাদিকরা তাঁদের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

বাংলাদেশের গনহত্যা, মুক্তিযুদ্ধের সংবাদ বিশ্বব্যাপী প্রচার করে তাঁদের অনেকেই তখন বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে বিশ্ব-জনমত গড়ে তুলতে ভূমিকা রেখেছিলেন। বিবিসির বিখ্যাত সাংবাদিক মার্ক টালি ও সাইমন ড্রিংয়ের (একুশে টিভির জন্মের সাথেও যিনি জড়িত ছিলেন) নাম এক্ষেত্রে উল্লেখ না করলেই নয়। মুক্তিযুদ্ধে এ হোটেলের কার্যক্রমের কারনে এটি পাকিস্তানী শাষকগোষ্ঠির রোষানলে পড়েছিল। ১ নং মিন্টো রোডে দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা হিসেবে ১৯৬৭ সালে তৎকালীন পাকিস্তানে প্রথম পাঁচ তারকা মানের হোটেল হিসেবে ইন্টারকন্টিনেন্টাল এর জন্ম পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স ও পাকিস্তানী শিল্পপতি ইউসুফ হারুনের উদ্যোগে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর এটি পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে পরিণত হয়।

তাই বাংলাদেশ সরকার এই হোটেলের দায়িত্ব নেয়। শুরুতে গনপুর্ত মন্ত্রণালয় হয়ে পরে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণে এ হোটেলটি আসে। বর্তমানে এই হোটেলের মালিক বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেড (বিএসএল) যা একটি সরকারী প্রতিষ্ঠান। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর এই হোটেলটি পরিচালনার ভার দেয়া হয় আগের আন্তর্জাতিক চেইন হোটেল কোম্পানি ইন্টারকন্টিনেন্টালকে যা ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত্য কার্য্যকর ছিলো। হোটেলের আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চেইন "স্টারউড এশিয়া প্যাসিফিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টস" ১৯৮৪ সালে ২০ বছরের জন্য হোটেলটি পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহন করে।

সেই সময় হোটেলটির নাম পরিবর্তন করে "ঢাকা শেরাটন" হোটেল রাখা হয় স্টারউড এর ব্র্যন্ড নেম "শেরাটন" এর সাথে মিলিয়ে। চুক্তির মেয়াদ বাড়িয়ে স্টারউডের সাথে পরে যা ২০১১ সাল পর্যন্ত্য নিয়ে যাওয়া হয়। চুক্তির মেয়াদকাল শেষের পর এবার হোটেলটির মালিকানার সাথে পরিচালনারও দায়িত্ব নেয় বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেড (বিএসএল)। নতুন করে হোটেলটির নামকরন করা হয় "হোটেল রূপসী বাংলা" যার বর্তমান লোকবল ৬৫০ জন। বর্তমানে হোটেলটির মালিক সরকারী প্রতিষ্ঠান "বিএসএল" এর সাথে নতুন এক চুক্তিবলে ১৯৮৪ সালে ঢাকা ছেড়ে যাওয়া আন্তর্জাতিক হোটেল চেইন ইন্টারকন্টিনেন্টাল নতুন করে ৩০ বছরের জন্য "হোটেল রূপসী বাংলা"র দায়িত্ব নিয়েছে ।

বিশ্বব্যাপি ১৭০ টি হোটেল পরিচালনাকারী ইন্টারকন্টিনেন্টাল গ্রুপের ইচ্ছানুযায়ী বর্তমানে "হোটেল রূপসী বাংলা" ব্যপক সংস্কার কাজের জন্য ২ বছরের জন্য বন্ধ আছে। ২০১৪ সালে সংস্কার কাজ শেষ হলে "হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল" নামে নতুন করে যাত্রা শুরু করবে বর্তমানের "হোটেল রূপসী বাংলা"। যদিও ইন্টারকন্টিনেন্টাল গ্রুপের কাছে হোটেলটির মূল মালিক "বিএসএল" এর প্রস্তাব রয়েছে নতুন রূপে সজ্জিত হোটেলটির নাম হবে "হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল রূপসী বাংলা। "  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ২১ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.