আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

“আমাকে একটা মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট দাও আমি তোমাদের একটা চাকুরীজীবি জাতি দেব”

বাংলাদেশের জনসংখ্যা কত জন ??? স্বাধীনতার সময় মুক্তিযোদ্ধা ছিল কত জন ?? স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় দেশের লোকসংখ্যাই বা কত জন ছিল ?? সবাই কি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল ??? পাকিস্তানিদের সহযোগীতা কি কেউ করেনি ??? বা আমাদের ১ লক্ষ মা –বোন কি ধর্ষিতা ছিল না ??? বাংলাদেশে কি বীরাঙ্গনা নেই ??? যদি এত মানুষ যুদ্ধ করে থাকে তাহলে এতটুকু দেশ স্বাধীন হতেই বা ৯ মাস লাগল কেন ??? আমি জানি এই প্রশ্নগুলোর সদুত্তর কেউ দিতে পারবে না । কারণ বাংলাদেশে এর কোন সঠিক পরিসংখ্যান নেই । তবে একটা প্রশ্নের উত্তর আছে , আর তা হল বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা কত জন ??? উত্তর শুন্য থেকে অসীম । তার মানে সংখ্যা বাড়তেও পারে কিন্তু কমবে না ,এটা নিশ্চিত করে বলা যায় । বাংলাদেশ ছোট্ট একটু দেশ তার আবার কত ভাগ , মুসলিম-হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান , সরকারি দল-বিরোধী দল, শ্রমিক-চাকুরীজীবী , শিল্পী-খেলোয়ার ......তবে যত গুলো ভাগই থাকুক না কেন , আমি বলব সমগ্র বাংলাদেশ আজ দুই ভাগে বিভক্ত ১।

মেধাবী ২। কোটার অধিকারী( কোটার মালিককের বংশ যে মেধাশুন্য আমি তা বলছি না )। মেধাবী বলছি এই কারণে যে তারা যদি বাংলাদেশের মাটিতে চাকুরি পায় সেটা তাদের নিজেদের অর্জন , বাপ বা দাদা-নানার গ্রেজ দেয়া মার্কসে নয় । বি,সি,এস এ যাবে কোটা ৩০% , সোনালী ব্যাংকে যাবে সেটা ১০০% (সম্প্রতি নিয়োগ ১২০০ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ), সামনে দিন যত যাচ্ছে মুক্তিযোদ্ধা তত বাড়ছে , যানি না এমন একদিন হবে যেদিন বাংলাদেশের সবাই মুক্তিযোদ্ধা হবে সর্যি সবাই মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনী বা এক কথায় কোটার মালিক হবে । সেটা না হয় বুঝলাম এখান বাংলাদেশের অবস্থা বা শিক্ষিত মেধাবীদের অবস্থা কি ?? ধরি, বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৮কোটি ,তাহলে মুক্তিযোদ্ধা ৬ কোটি সর্যি আবার ভুল করলাম ,আসলে আমি গণিতে অনেক অজ্ঞ ,ধরি মোটামোটি এই রকম দাঁড়ায় , আর তাদের সন্তান-নাতি-নাতনী কত জন ?? আমি হিসেব করতে পারব না ভাই ,অজ্ঞ মানুষ ।

দেশের সকল মানুষের কোন কোটা নাই , আরে আছে তো জনসংখ্যা কোটা ,কারণ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ছাড়া যদি একজন ও চাকুরী পায় সে তো বাংলাদেশেরেই লোক ,তাহলে কোটা নাই কিভাবে ??? ঘুম থেকে উঠেছি তো তাই কিছুক্ষণ বকলাম, এবার আসি আসল সমীকরণে ; একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান যদি রাজাকারের সন্তান এর সাথে বিয়ে হয় আর তার ঘরে ১০-১২ জন বাচ্চা হয়(বাচ্চা না হলে তো আশার আলো) তাহলে সে রাজাকারের নাতি-নাতনী হয়ে মুক্তিযোদ্ধার / দেশের বীর সেনার সুবিধা পেল ,তাহলে আমরা আম জনতার বা যার বাবা স্বাধীনতার সময় দেশের কল্যাণে আসতে পারে নাই ঠিক আছে কিন্তু ওই আল-বদরের মত দেশের মানুষের ক্ষতিও করে নাই ,তার দোষ কোথায় ??? সে কেন বঞ্চিত হবে ????? ঐ নাতি-নাতনীকে কি দেশের শ্রেষ্ট সন্তানদের নাতনী বলব না দেশ মাতৃকার ঘৃণিত সন্তানদের নাতি-নাতনী বলব ???এবার আসি ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা , ডিজিটাল বাংলাদেশ মানে হল ক্ষুধা-দারিদ্র-নিরক্ষর মুক্ত বাংলাদেশ যেখাকার প্রত্যেকটি গ্রাম হবে তথ্য সমৃদ্ধ , ধরি কারও বাবা কৃষক ছিল তাই বলে কি তার ছেলে লেখা পড়া শিখবে না , ভালো সরকারি চাকুরী করার অধিকার কি তার নাই ??? তাহলে কেন সমান বা তার চেয়ে বেশি মেধাবী হয়েও ওই মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের বা নাতি-নাতনীদের কাছে সে সমান তালে চলতে মানে চাকুরী তে আবেদন করতে পারবে না । কেউ কারও বাবার কৃতকর্মের ফলভোগ করতেই পারে কিন্তু অন্য কেউ তো তার বাবা পাপ না করে তার শাস্তি নিতে চাইবে না । হ্যাঁ মুক্তিযোদ্ধা না করা যদি পাপ হয় তাহলে ছেলে বা মেয়েকে কেন , তার বাবাকে ওই পাপের শাস্তি দেওয়া হোক তবুও ছেলে বা মেয়েকে এর দায়ভার থেকে মুক্তি দেয়া উচিত বলে আমি বিশ্বাস করি । যাই হোক আমি সাধারণ মানুষ আমার কথা শোনার মানুষ কি আছে , কেননা জনসভায় যে মঞ্চে মাইক্রোফোন এর কাছে থাকে তার কথাই সবাই শোনে যে মানুষের ভিড়ে পদপিষ্ট হয়ে মারা যায় সমাজ তার কথা শোনে না ,কখনও শুনতে চায় না , চাইবে ও না । আর যদি অদূর ভবিষ্যতে শুনতে চায়ও তাহলে জাতির কপাল ভালো ,তাদের নিয়েও উচু তলার মানুষের কিছু ভাবার আছে ।

পরিশেষে ,নেপোলিয়ন বোনাপার্ট এর কন্ঠে সুর মিলিয়ে বলতে চাই “আমাকে একটা মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট দাও আমি তোমাকে একটা চাকুীজীবী জাতি দেব । ধন্যবাদ সবাইকে । ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.