আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রেমাক্রি থেকে থানচি --- শ্বাসরুদ্ধকর সাত ঘন্টা !

{ব্যাটারীতে চার্জ না থাকায় ছবি তোলা হয় নি । } ( দেখুন রেমাক্রির আগের কিছু ছবি । ) আমাদের এই ট্যুরটা ১৩ই ফেব্রুয়ারী ২০১১এর । আইবিএম এ কর্মরত শরীফের চিন্তা অফিস ধরতে হবে , সরকারী চাকুরে ডা: মৌরীরও । ইঞ্জিনিয়ার কোরেশীর তেমন তাড়া নেই ।

আর ডা: মোহন তো আরামেই আছে আমার, মিজান ভাই আর আবুবকরের মত । আমরা গিয়েছিলাম বাংলাদেশের সবচাইতে উচুঁ পাহাড় সাকাহাফং বা ত্লাংময় (যদিও সরকারী ঘোষনা নেই) সহ আরো চারটি পাহাড়ে উঠতে । কেওক্রডং, তাজিনডং আর ক্যাপিটাল ছিল । পথ ভুলের কারণে ক্যাপিটালের নিচ দিয়ে গেলাম । যদিও আগের বার পথ ভুল হয়নি ।

কিন্তু এবার আর উঠা হলো না । যাই হোক কিছুটা অনিশ্চয়তা নিয়েই গিয়েছিলাম । কারণ কেউ যে পথে পা মাড়ায়নি সেই পথে যাবার পরিকল্পনা করলো আবুবকর । জিপিএসও নেই সাথে । যাব কি যাব না দোটানায় ছিলাম ।

শেষ পর্যন্ত সবার অনুরোধে যাব বলে স্থির করলাম । আমাদের রুটটি ছিল --- দিন-১- ঢাকা - বান্দরবান - রুমা - বগালেক (জীপ ও পায়ে হেঁটে দুই ভাবেই বগালেক যাওয়া যায়) দিন-২- বগালেক - দার্জিলিংপাড়া - কেওক্রাডং - পাসিংপাড়া - জাদিপাইপাড়ার পাস দিয়ে - ক্যাপিটাল পিক - বাকলাই দিন-৩- বাকলাই - সিমত্লাপিপাড়া - থানদুইপাড়া - নয়াচরণপাড়া দিন-৪- নয়াচরণপাড়া - হাঞ্জরাইপাড়া - নেপিউপাড়া - ত্লাংমং/সাকা হাফং - সাজাইপাড়া দিন-৫- সাজাইপাড়া - সাতভাইখুম (ঝর্না) - আমিয়াখুম - নাইক্ষামুখ - সাজাইপাড়া দিন-৬- সাজাইপাড়া - জিন্নাহপাড়া - নাফাখুম - রেমাক্রি দিন-৭- রেমাক্রি - বারপাথর (বড়পাথর) - টিন্ডু - থানচি - বান্দরবান - ঢাকা । আগের বিকেলে নাফাখুম দেখা শেষ করে ফেরার সাথে সাথে রেমাক্রি বাজারে নৌকা খোঁজ করলাম অনেকক্ষন । নৌকা বন্ধ !!! কারণ খুজঁতে যেয়ে দেখি ভয়ন্কর । কোন পাড়াতে যেন দুইজন বাঙ্গালীকে কুপিয়ে খুন করেছে কারা ।

তাই বিজিবি নৌকা বন্বিধ করে রেখেছে । বিকেল থেকে ভাবছি কি করা যায় ? একসময় আবুবকর চেষ্টা করলো একজন পথ প্রর্দশক (গাইড) জোগার করতে । কিন্তু গাইড যখন ১৫০০ (পনেরশত ) টাকা চাইলো তখন মেজাজ এত খারাপ হলো রাতেই রওনা দিতে ইচ্ছে হলো । এতটা কঠিন পথ এসেছি প্রায় গাইড ছাড়াই (আমাদের সিয়াম এই পথটা চেনে না । ) কোন সমাধান পেলাম না সারারাত ।

সকাল ৫টায় উঠে সবাইকে নিয়ে চিনির টোষ্ট আর কলা খেলাম । আবার নৌকা খোঁজ করলাম কিন্তু আশার গুড়ে বালি । নৌকা না পেয়ে হাঁটা দিলাম । কেউই আমরা আসিনি এই পথে । তাই কোন ধারনাও ছিল না পথ সর্ম্পকে ।

নদীর ধাঁর দিয়ে আর কখনো পাহাড়ী পথকে সঙ্গী করে এগিয়ে যাচ্ছিলাম থানচি । পথে পেলাম আরো তিন এডভেঞ্চার প্রিয়কে । তারাও নৌকা না পেয়ে হাঁটা দিয়েছে । পথের কান্তি ভোলার সুযোগ পেলাম বড় পাথরের কাছে এসে পেলাম চায়ের দোকান । পাহাড়ি পাকা কলার সাথে বিস্কুট আর রং চা ।

অমৃত লাগলো । কিন্তু কিছু সময় পর ভুলে গেলাম সে অমৃতের স্বাদ । কারণ শরীফ আর মৌরির অফিস এর কথা মনে হলো । আবার পা চালানোর পালা । চার ঘন্টা হাঁটার পর পেলাম টিন্ডু ।

বাজারে আবার নৌকা খোঁজ করলাম । কিন্তু এবার ব্যর্থ হলাম । ব্যর্থতা যেন আমাদের গতি বাড়িয়ে দিল । পদ্ম ঝিরিতে এসে বিশ্রাম নিলাম ৩০ মিনিট খেলাম অনেক কিছু । এবার নৌকাতে উঠে পারি দিলাম পদ্ম ঝিরির ছোট পথটুকু ।

দুপুরের কড়া রোদ আমাদের চলার পথকে কঠিন করে তুলছে ধীরে ধীরে । সাথে পায়ের নিচে শুকনো উওপ্ত বালি । আবু বকর থানচিতে ফোন করে দুপুরের খাবার আর বাসের টিকেট বুক করতে বললো । থানচিতে পৌছে শেস হলো আমাদের শ্বাসরুদ্ধকর সাত ঘন্টা ট্রেকিং । জম্পেস খাবার পেলাম দুই রকম মাছ, সবজি ভর্তা, গরম ভাত ।

খাবার শেষ করে দিলাম দৌড় বাস ষ্ট্যান্ডে । টিকেট কাঁটা শেষ করেই আড্ডা শুরু হলো জিলানী ভাইদের সাথে । কিছু সময় পর শুরু হলো আমাদের বান্দরবান যাত্রা । আমাদের দলে ছিলেন--- ১. ডাক্তার মাহাফুজা আক্তার মৌরি ২. রবিউল হাসান খান মনা ৩. আবু বকর সিদ্দিক ৪. মাহমুদ সাফায়েত জামিল কোরেশী ৫. ইখতিয়ার মোহাম্মদ শরীফ ৬. নিজাম উদ্দিন মিজান ৭. ডাক্তার মাহফুজুর রহমান মোহন আমাদের পথ প্রর্দশক ছিলেন লাল সিয়াম বম । (যদিও তাকে পথ দেখিয়েছি ।

) ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।