আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণে এবার সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) আইন কঠোর করা হলঃ নাগরিক অধিকার ক্ষুণ্ণ হতে পারে বলে আশঙ্কা

যদি ঠাঁই দিলে তবে কেন আজ হৃদয়ে দিলে না প্রেমের নৈবদ্য সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুক, টুইটার নিয়ন্ত্রণে এবার সরাসরি আইন করা হল, সন্ত্রাস দমনের নামে এই আইন রাষ্ট্রযন্ত্রের অন্যায়, অবিচার, নিপীড়ন এর বিরুদ্ধে দেয়া মতামত দমনে অপপ্রয়োগের আশঙ্কা আছে, সে আশঙ্কা বাস্তবে রূপ নিলে মতপ্রকাশের ক্ষেত্রে নাগরিকদের ন্যূনতম অধিকারও আর থাকবে না বলে মনে করার যথেষ্ট কারন রয়েছে! “ ফেসবুক, টুইটার, স্কাইপ বা ইন্টারনেটের যেকোনো মাধ্যমের অপরাধ-সংশ্লিষ্ট আলাপ-আলোচনা এবং এ-সম্পর্কিত স্থির ও ভিডিওচিত্র আদালতে আমলযোগ্য হবে” এই বিধান রেখে গতকাল জাতীয় সংসদে সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) বিল ২০১৩ পাস হয়েছে। বিলের ২১ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো সন্ত্রাসী ব্যক্তি, সত্তা বা সংগঠনের ফেসবুক, স্কাইপ, টুইটার বা ইন্টারনেটের যেকোনো মাধ্যমের অপরাধ-সংশ্লিষ্ট আলাপ-আলোচনা ও কথাবার্তা অথবা অপরাধ-সংশ্লিষ্ট স্থির ও ভিডিওচিত্র অপরাধের আলামত হিসেবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা আদালতে উপস্থাপন করতে পারবে। এ বিষয়ে সাক্ষ্য আইনে যা-ই থাকুক না কেন, মামলার স্বার্থে তা আদালতের গ্রহণযোগ্য হবে।[সূত্র- প্রথম আলো] Click This Link এখানে সন্ত্রাসী ব্যক্তি, সত্তা বা সংগঠনের ফেবু স্ট্যাটাস, মতামতের বিরুদ্ধে এই আইন করা হয়েছে বলে এই আইন এক ধরণের ন্যায্যতা পাবে, কিন্তু সন্ত্রাসী কাজ বলতে যদি সরকার তার নানান গণবিরোধী কাজের বিরোধিতাকেও অলিখিতভাবে অন্তর্ভুক্ত করে তাহলে এই আইনের ভিত্তিতে বিরোধী মত দমনের আইনি বৈধতা পেয়ে যাবে রাষ্ট্রযন্ত্র, এই আশঙ্কার একটা বড় ভিত্তি হল “সন্ত্রাস বিরোধী আইন” এর সাথে জড়িত আছে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ার অন টেরর প্রজেক্ট! যুক্তরাষ্ট্রের নির্দেশেই সন্ত্রাস বিরোধী আইন ২০০৯ প্রবর্তন করা হয়েছে, সন্ত্রাস দমন বলতে যুক্তরাষ্ট্র বুঝে থাকে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিপক্ষে যারা সক্রিয় তাদের যাবতীয় কর্মকাণ্ডকে। ফলে এ আইনের আন্তর্জাতিক রাজনীতি হচ্ছে বাংলাদেশে মার্কিন স্বার্থ সুরক্ষার যে কোন নীতি, চুক্তির বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া ব্যক্তি, গোষ্ঠী কিংবা দলকে সন্ত্রাসী বলে ট্যাগ করে দিয়ে তাকে দমন করা! আর এই আইনের লোকাল রাজনীতি হতে পারে রাষ্ট্রযন্ত্র কিংবা সরকারের গণবিরোধী নানান কর্মের তুখোড় সমালোচনা কারী ব্যক্তি, গোষ্ঠী কিংবা দলকে যুক্তরাষ্ট্রের মতই সন্ত্রাসী বলে চালিয়ে দিয়ে তার বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া! ফলে ফেসবুক, টুইটার এর মত সোশ্যাল মিডিয়ার এক্টিভিজমও সরাসরি রাষ্ট্রীয় ও আইনি নিয়ন্ত্রণে চলে আসলে নাগরিক অধিকার ক্ষুণ্ণ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে! ইন্টারনেট গেটওয়েতে নজরদারির প্রযুক্তি দিয়ে বিটিআরসি সোশ্যাল মিডিয়াকেও নিয়ন্ত্রণে আনার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে বলে আগেই খবরে প্রকাশ! এখন আবার সন্ত্রাস দমনের নামে আইন এর অপপ্রয়োগ বা অপব্যবহার হলে নাগরিক সমাজের মত প্রকাশ বাধাগ্রস্ত হবে, এতে করে বাংলাদেশ সরাসরি একটা নিয়ন্ত্রনবাদী রাষ্ট্রে পরিনত হবে এটা হলফ করেই বলা যায়!! ‘ওয়ার অন টেরর’ এর এই যুগপর্বে রাষ্ট্রও সাম্রাজ্যের মত কি করে হেজিমনিক হয়ে উঠে তার নজির এই সন্ত্রাস বিরোধী আইন! এই আইন একই সাথে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী তৎপরতায় যুক্তদের প্রতিহত করার কাজে সহায়ক হবে আবার লোকাল রাজনীতিতে শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধ মত দমনের হাতিয়ারও হয়ে উঠতে পারে!

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.