আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এশিয়ার দেশগুলোর সরকারি তথ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নজর?

এশিয়া অঞ্চলের বিভিন্ন দেশের সরকারি তথ্যে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসএ) নজরদারি করছে বলেই এ অঞ্চলের নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা ধারণা করছেন। নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের ইমেইলে গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকতার তথ্য নজরদারি ও তথ্য সংগ্রহের বিষয়টি নিয়ে আলোচনার ঝড় উঠেছে। ১২ জুন বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার এক নিরাপত্তা বিশ্লেষক জানিয়েছেন, দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তারা ব্যক্তিগত ইয়াহু মেইল বা জিমেইল ব্যবহার করেই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য লেনদেন করেন। স্পর্শকাতর তথ্য স্থানান্তরে ক্ষেত্রেও তাঁরা জিমেইল ও ইয়াহু মেইলের ওপরই ভরসা রাখেন।


ইন্দোনেশিয়ার তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, দেশটির অনেক কর্মকর্তাই পাবলিক ই-মেইল ঠিকানা ব্যবহারের ঝুঁকি সম্পর্কে জানার পরও অফিশিয়াল ইমেইল ব্যবহার করেন না তাঁরা। অনেক সময় বড় ফাইল, ছবি, ভিডিও পাঠাতে গেলে পাবলিক ইমেইল অ্যাড্রেস ব্যবহারে প্রয়োজন পড়ে। তবে স্পর্শকাতর তথ্যের ক্ষেত্রে পাবলিক মেইল ব্যবহারের বিষয়ে সতর্ক থাকা প্রয়োজন।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাদের গোপনে তথ্য সংগ্রহের তথ্য ফাঁস করেন এডওয়ার্ড স্নোডেন নামের সিআইএ-এর সাবেক এক কর্মী। ‘প্রিজম’ নামে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার গোপন একটি কর্মসূচীর কথা ফাঁস করেন তিনি।

এ কর্মসূচীর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত বিভিন্ন অনলাইন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্ভারে গোয়েন্দারা আড়ি পাতেন এবং তথ্য সংগ্রহ করেন।
৭ জুন ওয়াশিংটন পোস্ট ও গার্ডিয়ান পত্রিকা গোয়েন্দাদের গোপন কর্মসূচী ফাঁস করে। প্রতিবেদনে বলা হয় গুগল, ইয়াহু, ফেসবুকসহ নয়টি প্রতিষ্ঠানের সার্ভার থেকে তথ্য সংগ্রহ করছে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা। তবে এ বিষয়টি গোয়েন্দা প্রধান ও প্রতিষ্ঠানগুলো অস্বীকার করে। এ ঘটনায় এশিয়া অঞ্চলের দেশগুলোর কর্মকর্তাদের যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অনলাইন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরতা ও নজরদারিতে থাকার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।


এ প্রসঙ্গে থাইল্যান্ড সরকারের মুখপাত্র থিরত রতনসুই জানিয়েছেন, সম্প্রতি থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের আঞ্চলিক সংস্থা এসকাপের অধিবেশনে যোগ দিতে আসা এশিয়া অঞ্চলের ৩৩ টি দেশের কর্মকর্তাদের মধ্যে ২০ জন যোগাযোগের জন্য জিমেইল, হটমেইল বা ইয়াহু মেইল ঠিকানা দিয়েছেন। অফিশিয়াল কোনো মেইল ঠিকানা দেননি তাঁরা।

কোনো পথ খোলা নেই
এশিয়া বাদে অন্যান্য দেশের কর্মকর্তারা ব্যক্তিগত কাজে কেবল ব্যক্তিগত মেইল ব্যবহার করেন কিন্তু এশিয়া অঞ্চলে এ চিত্র ভিন্ন। এশিয়ার কয়েকটি অঞ্চলে অফিশিয়ালভাবে যোগাযোগের প্রয়োজন হলেও ব্যক্তিগত মেইল ঠিকানা ব্যবহার করা হয়। বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী ও অনেক মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব ডোমেইন নেই আর যাদের আছে সেগুলো ঠিকঠাক রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় না এবং মোবাইল থেকে পড়ার সুবিধাও নেই।


জাকার্তাভিত্তিক নিরাপত্তা পরামর্শক ও প্রযুক্তিবিদ মারেক বিয়ালোগ্লোয়ি জানান, এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলটির দেশগুলোর সরকারি কর্মকর্তারা ইমেইল লেনদেনের জন্য জিইমেল বা ইয়াহু মেইল ব্যবহার করেন কারণ তাদের অফিশিয়াল মেইল ঠিকানাগুলোতে বড় বা এনক্রিপটেড তথ্য পাঠানো যায় না। পাবলিক ইমেইল ব্যবহার করে স্পর্শকাতর তথ্য পাঠানো হলে প্রিজমের মতো কর্মসূচীর সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তির মাধ্যমে কিংবা পাসওয়ার্ড হ্যাক করে সহজেই জানা সম্ভব হতে পারে। তবে সিঙ্গাপুর, জাপানের মতো দেশগুলো তথ্য পাঠানোর ক্ষেত্রে পাবলিক মেইল ঠিকানা ব্যবহারে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। জাপানে সরকারি কর্মকর্তাদের পাবলিক মেইল অ্যাড্রেস ব্যবহার করে স্পর্শকাতর তথ্য পাঠানো কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
ভারতের সরকারি কর্মকর্তাদের দাবি, তারা অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের ক্ষেত্রে অফিশিয়াল মেইল ব্যবহার করেন।

তবে ব্যক্তিগত যোগাযোগে জিমেইল, ইয়াহু মেইল সার্ভিস ব্যবহার করেন। ভারতের এক সরকারি কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের মেইলে নজরদারি করলে কিছু আসে যায় না। জিমেইলে কোনো মেইল পাঠানোর অর্থই হচ্ছে পৃথিবীকে আমার সবকিছু জানিয়ে দেওয়া। ।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.