আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নদীপথে পণ্য পরিবহনে ভাড়া নির্ধারণে দরপত্র

চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙর থেকে ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় নদীপথে টনপ্রতি পণ্য পরিবহনে ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের নির্ধারিত ন্যূনতম ভাড়া ৪৮৮ টাকা। পণ্যের এজেন্ট কমিশনসহ এ ভাড়া পড়ে ৫০৩ টাকা।
অথচ একই পথে একই ধরনের নৌযানে পণ্য পরিবহনে প্রথমবারের মতো দরপত্রে সর্বনিম্ন ভাড়া চাওয়া হয়েছে টনপ্রতি ২৭৯ টাকা। সিমেন্ট প্রস্তুতকারক সমিতির সদস্যদের আমদানিকৃত কাঁচামাল পরিবহনের জন্য ডাকা দরপত্রে এ দর পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের উপস্থিতিতে গত ২০ এপ্রিল বন্দর ভবনে নৌযান মালিকদের সঙ্গে সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের এক সমঝোতা চুক্তি সই হয়।

এ সমঝোতা অনুযায়ী, সিমেন্ট কারখানার মালিকদের আমদানি কাঁচামালের ৫০ ভাগ ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের আওতাধীন নৌযানে পরিবহনের নির্দেশ দেন মন্ত্রী। মন্ত্রীর এ নির্দেশ অনুযায়ী বন্দর কর্তৃপক্ষ জাহাজ থেকে কাঁচামাল খালাসের অনুমতি দিচ্ছে। এ বাধ্যবাধকতা জারির পর সিমেন্ট প্রস্তুতকারক সমিতি দরপত্র আহ্বান করে এ দর পায়।
সিমেন্ট প্রস্তুতকারক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, ২ মে ২০ লাখ টন ক্লিংকার পরিবহনে এ দরপত্রে অংশ নেয় আটটি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে সর্বনিম্ন দর জমা দেয় চট্টগ্রামের ফয়সাল এন্টারপ্রাইজ।

প্রতিষ্ঠানটি বন্দরের বহির্নোঙর থেকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জে নৌপথে পণ্য পরিবহনে টনপ্রতি ২৭৯ টাকা দর দেয়। এ ছাড়া বহির্নোঙর থেকে কর্ণফুলীতে পণ্য পরিবহনের দর পড়ে ১৭৭ টাকা। ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের আওতাধীন নৌযানে এ ভাড়া ২৯০ টাকা।
সমিতির সভাপতি মোস্তফা কামাল বলেন, সর্বনিম্ন দরে পণ্য পরিবহনের কার্যাদেশ দেওয়া হবে। এ দরে পণ্য পরিবহন হলে বছরে শতকোটি টাকার বেশি সাশ্রয় হবে।

পণ্যের পরিবহন খরচও কমবে। এর সুফল পাবে ভোক্তারা।
সরকারি-বেসরকারি সংস্থার হিসাবে দেখা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে গত বছর সিমেন্ট ক্লিংকার আমদানি হয় এক কোটি ১৮ লাখ টন। এর মধ্যে ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের আওতাধীন নৌযানে পরিবহন হয় ৪৩ লাখ ৬৩ হাজার টন। সিমেন্ট কারখানার নিজস্ব নৌযানে পরিবহন হয় প্রায় ৪৮ লাখ টন।

বাকি পণ্য জেটিতে খালাস হয়।
সর্বনিম্ন দর অনুযায়ী, পরিবহন হলে গত বছরে সিমেন্ট তৈরির কাঁচামাল পরিবহন বাবদ ব্যয় কমত প্রায় ৯৭ কোটি টাকা। সিমেন্টের কাঁচামালের পাশাপাশি ভোগ্যপণ্যের পরিবহন ব্যয়ও সাশ্রয় হতো।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম বন্দরে বড় জাহাজে বিদেশ থেকে সিমেন্ট তৈরির কাঁচামালসহ ভোগ্যপণ্য আমদানির পর ছোট নৌযানে কারখানায় ও গুদামে নেওয়া হয়। বন্দরের বহির্নোঙর থেকে সিমেন্ট কারখানার মালিকদের নিজস্ব নৌযানে এ কাঁচামালের সিংহভাগ পরিবহন হয়।

এর বাইরে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ মালামাল ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের আওতাধীন নৌযানের মাধ্যমে পরিবহন হয়।
সিমেন্ট প্রস্তুতকারক সমিতির দরপত্রে সর্বনিম্ন দরদাতা ফয়সাল এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী শেখ আবদুল্লাহ বাবুল বলেন, ‘সবকিছু বিবেচনা করে এ দর দিয়েছি। আশা করি, এ দরে পণ্য পরিবহন করলেও লাভ করতে পারব। ’
তবে কোস্টাল শিপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান গাজী বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘মন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী সিমেন্ট কারখানার ৫০ ভাগ পণ্য ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের আওতাধীন জাহাজের মাধ্যমে পরিবহন শুরু হয়েছে। এ অবস্থায় আমাদের বেকায়দায় ফেলার জন্য হঠাৎ করে দরপত্র ডেকেছে সিমেন্ট কারখানার মালিকেরা।

তবে এ দরে যদি তারা পরিবহন করতে পারে, তাহলে আমাদের আপত্তি নেই। ’
চট্টগ্রাম চেম্বারের বিবৃতি: এদিকে চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম বন্দর চেয়ারম্যানের কাছে এক চিঠিতে জানান, ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেল নামের একটি অবৈধ সংগঠনের মাধ্যমে উচ্চ ভাড়ায় আমদানি পণ্য পরিবহন করতে বন্দর কর্তৃপক্ষ চাপ দিচ্ছে। কোনো গোষ্ঠীর কাছে ব্যবসা-বাণিজ্যকে জিম্মি করে অর্থনীতি ধ্বংস করার অপপ্রয়াসে বন্দরের সহযোগিতা আমাদের বিস্মিত করেছে। উচ্চ আদালতও বন্দরের কার্যক্রম বিঘ্নকারী বেআইনি কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। ।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।