আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ট্রাভেল বাংলাদেশঃ রিসোর্ট পরিচিতি - চলুন ঘুরে আসি ''শুকতারা প্রকৃতি নিবাস'' সিলেট ও তার আশেপাশের পাহাড়ি বনবাদাড়

কলম চালাই ,এইগুলো লেখার পর্যায়ে পরে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে :) ব্লগের বয়স বছরের উপরে দেখালেও নিয়মিত লিখছি ১৭ আগস্ট ২০১২ থেকে :) প্রায় সাত একরের ছোট্ট একটি পাহাড়। উদ্দীনের টিলা নামেই বেশি পরিচিত। চূড়ায় উঠলে যেদিকে চোখ যায় শুধু সবুজ আর সবুজ। খাদিম আর বরজানের চা বাগান, একটু পেছনে খাদিমনগর জাতীয় উদ্যান আর সবশেষে দূর বহুদূরে দৃষ্টিসীমা আটকে দেওয়া খাসিয়া—জৈন্তিয়া পাহাড়ের আকাশ ছোঁয়া দেয়াল। অন্যদিকটায় দেখা যায় সুরমার জলধারা, আরেক দিকে দিন-রাত পাহাড়ের বাঁকে উঁকি মেরে জ্বলে চলা আলুটিলা গ্যাসফিল্ডের মশাল।

চারিদিকে সবুজে ঘেরা প্রান্তরের মাঝে পাহাড় চূড়ায় এক টুকরা স্বর্গ শুকতারা প্রকৃতি নিবাস। শাহজালাল, শাহপরাণের পুন্যভূমি সিলেট শহর থেকে প্রায় সাড়ে সাত কিলোমিটার দূরেই এর অবস্থান। সিলেট শহর থেকে তামাবিল সড়কে শাহপরাণের (রহ.) মাজার ছেড়ে একটু সামনে বামে ছোট সড়কে মোড় নিয়ে প্রায় এক কিলোমিটার এগুলোই শুকতারার দুয়ার। এখানে পাহাড়ের পায়ের কাছে গিয়ে গাড়ি ছেড়ে উপরে উঠতে হবে। সর্পিল আঁকাবাঁকা সান বাঁধানো পথ উপরে উঠে গেলেও গাড়ি ওঠানোর অনুমতি নেই।

তবে ভয়েরও কিছু নেই। শুকতারার ট্রেন কিংবা গলফ কার্ট সুউচ্চ টিলার গা বেয়ে সোজা পৌঁছে দেবে অভ্যর্থনা গৃহের সামনে। পাহাড়ের গাছগাছালির আড়ালে চারতলাবিশিষ্ট এ বাড়িটির তৃতীয় তলায় সাজানো গোছানো অভ্যর্থনা আর লাউঞ্জ। পাশেই পাঠাগার। চায়ের দেশ সিলেটের ইতিহাস-ঐতিহ্য, আর ভ্রমণের বই-ই এর মূল বিষয়।

এর এক ছাদ নিচেই রেস্তোরাঁ একাশিয়া। একেবারে ভিন্ন এক পরিবেশে অসাধারণ সুস্বাদু সব খাবার এখানকার। পাশেই সভাকক্ষ। চল্লিশজন একসঙ্গে সভা করতে পারবেন এখানে। একেবারে নিচের তলায় আছে ছোট একটি হোম থিয়েটার।

এ ভবনটিতে স্থান পেয়েছে নানা রকম শিল্পকর্ম, চিত্রকর্ম আর আলোকচিত্র। অভ্যর্থনা থেকে সামান্য দূরত্বে পাহাড়ের উপরে শুকতারার প্রকৃতি নিবাস। এ পথের শুরুতেই ‘পাখি নীড়’ নামে শিল্পী অলক রায়ের শিল্পকর্ম। এখান থেকে উপরে কটেজের আঙ্গিনায় দাঁড়িয়ে সিলেটের চারপাশের বড় একটা অংশই চোখে ধরা দেয়। কটেজগুলোর ভেতরের সৌন্দর্য বাইরে থেকে বুঝার উপায় নেই।

প্রতিটি কক্ষের ছাদ পর্যন্ত কাঁচের দেয়াল। মোটা পর্দা সরিয়ে দিলে ঘরে বসেই পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করা যায় সহজেই। প্রতিটি ঘরের সঙ্গেই লাগোয়া বারান্দা। ভেতরের আসবাব বেতের তৈরি, কাঠের মেঝে আর পরিচ্ছন্ন বিছানা। গোসলখানায় সার্বক্ষণিক গরমজল আসে সৌরচালিত গিজার থেকে।

শুকতারা প্রকৃতি নিবাসের চারপাশেই আছে বেশকিছু অসাধারণ বেড়ানোর জায়গা। খাদিম চা বাগান, বরজান চা বাগান, শাহ বদরের মাজার, খাদিমনগর জাতীয় উদ্যান, শাহ পরাণ, শাহজালালের (রহ.) মাজার, রাতারকুল জলের বন, সারি নদী, লালা খাল, জৈন্তা রাজবাড়ি, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরিত্যক্ত বিমানবন্দর, জাফলং, সারি নদী, লালাখাল ইত্যাদি। এসব জায়গায় বেড়ানোর জন্য শুকতারার আছে অভিজ্ঞ গাইড আর বিভিন্ন প্যাকেজ। শুকতারার কর্মচারীদের সবাই স্থানীয়। বেশিরভাগই চা শ্রমিকদের ছেলে-মেয়ে।

কিন্তু তাদের পেশাদারিত্ব আর দক্ষতা সে পরিচয় আড়াল করে দেয়। কক্ষ সাজসজ্জা আর রেস্তোরাঁ সেবা তার প্রমাণ দেবে। জানা গেল শুকতারার কর্ণধার মোহাম্মদ হোসেন মুরাদ তার স্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক জেরিনা হোসেন পৃথিবীর পথে পথে ঘুরতে ঘুরতে স্বপ্নে দেখেছিলেন ছোট্ট এই জগতটির। কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে তারা শুকতারার কর্মচারীদের পুরোটাই নিয়োগ দিয়েছেন স্থানীয় পরিবারগুলো থেকে। আর দীর্ঘ সময় ধরে প্রশিক্ষণ দিয়ে এসব ছেলে-মেয়েদের গড়ে তুলেছেন দক্ষ হোটেল কর্মী হিসেবে।

যেভাবে যেতে হবে সড়ক, রেল ও আকাশ পথে ঢাকা থেকে সরাসরি সিলেট যাওয়া যায়। বন্দরনগরী চট্টগ্রাম থেকেও আসা যায়। ঢাকা থেকে গ্রিন লাইন পরিবহন, সোহাগ পরিবহন, সৌদিয়া পরিবহনের এসি বাস যায় সিলেটে। ভাড়া ৮০০-১০০০ টাকা। এ ছাড়া ঢাকার ফকিরাপুল, কমলাপুর, সায়দাবাদ প্রভৃতি জায়গা থেকে শ্যামলী পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, সৌদিয়া, মামুন পরিবহন, সিলকম পরিবহন ইত্যাদি সংস্থার নন-এসি বাসও সিলেটে যায়।

ভাড়া ৩০০-৫০০ টাকা। ঢাকার কমলাপুর থেকে মঙ্গলবার ছাড়া সপ্তাহের প্রতিদিন সকাল ৬.৪০ মিনিটে ছেড়ে যায় আন্তঃনগর ট্রেন পারাবত এক্সপ্রেস, সপ্তাহের প্রতিদিন দুপুর ২টায় প্রতিদিন ছাড়ে জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস এবং বুধবার ছাড়া সপ্তাহের প্রতিদিন রাত ৯টা ৫০ মিনিটে ছাড়ে উপবন এক্সপ্রেস। ভাড়া এসি বার্থ ৬৯৮ টাকা, এসি সিট ৪৬০ টাকা, প্রথম শ্রেণী বার্থ ৪২৫ টাকা, প্রথম শ্রেণী সিট ২৭০ টাকা, স্নিগ্ধা শ্রেণী ৪৬০ টাকা, শোভন চেয়ার ১৮০ টাকা, শোভন ১৫০ টাকা, সুলভ ৯৫ টাকা। চট্টগ্রাম থেকে সোমবার ছাড়া প্রতিদিন সকাল ৮টায় যায় পাহাড়িকা এক্সপ্রেস এবং শনিবার ছাড়া প্রতিদিন রাত ৯টায় উদয়ন এক্সপ্রেস। প্রথম শ্রেণী বার্থ ৪৬৫ টাকা, প্রথম শ্রেণী সিট ৩২০ টাকা, স্নিগ্ধা শ্রেণী ৫৩৫ টাকা, শোভন চেয়ার ২১০ টাকা, শোভন ১৯০ টাকা।

এ ছাড়া ঢাকা থেকে বাংলাদেশ বিমান (০২-৭১৬৮৮৪২), ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স (০২-৮৯৩২৩৩৮, ০২-৮৯৩১৭১২), রিজেন্ট এয়ারের (০২-৮৯৫৩০০৩) বিমান নিয়মিত উড়াল দেয় সিলেটের আকাশে। সিলেট শহর থেকে সিএনজি চালিত বেবি টেক্সিতে শুকতারা আসতে ভাড়া লাগে ১৫০-২০০ টাকা। অনুমিত খরচ ভাড়া শুকতারার কক্ষ ভাড়া ৫০০০-৬৫০০ টাকা। তবে বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার ছাড়া সপ্তাহের অন্যান্য দিনে এ মূল্যের উপরে মিলবে ১০ ভাগ ছাড়। যোগাযোগ শুকতারা প্রকৃতি নিবাস, উদ্দীনের টিলা, শাহপরাণ উপশহর, খাদিমনগর সিলেট।

ফোন :০৮২১-২৮৭০৯৯৪-৫, ০১৭৬৪৫৪৩৫৩৫। http://www.shuktararesort.com নিকটবর্তী দর্শনীয় স্থান খাদিমনগর জাতীয় উদ্যান কানাইঘাট লোভা-মুলাগুল রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট জৈন্তাপুর জাকারিয়া সিটি লালাখাল ভোলাগঞ্জ জাফলং নাজিমগড় রিসোর্ট নিচের ছবিগুলো বড় করে দেখতে হবে , উপরের মত বড় করে ছবি আপলোড হচ্ছে না । ছবিগুলো বড় করে না দেখলে পস্তাবেন । আমাদের দেশ যে কত সুন্দর তা অকল্পনীয় সুত্রঃ ইন্টারনেট । ***********************আর্কাইভে আরও বেশ কিছু ভ্রমণ এবং রিসোর্ট বিষয়ক পোস্ট আছে , আগ্রহীরা ঢু' মেরে দেখতে পারেন একবার *************************  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।