রাস্তায় খুঁজে ফিরি সস্তায় ঘুরে ঘুরে এক কাপ চা ব্লগারদের মধ্যে শ্রেণীবিভাগ দেখা যাচ্ছে। সমাজে যেমন অর্থের ভিত্তিতে শ্রেণী পরিচিত হয়ে আসছে সামুতে তেমন হিটের ভিত্তিতে এই শ্রেণী চিনহিত(অভ্রে বানান টা লিখা যাচ্ছে না) হবে। হটাত কইরা যদি আপনে কোন একটা পোস্টে হিট খায়া যান বুঝতে হইব এইটা দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। অস্ট্রেলিয়া যে বাঙলাদেশের কাছে হারল সেইটাও দুর্ঘটনা।
নিত্যদিন হারলেও বাঙালি মুসলমানরা নিজেদের আন্ডারডগ পরিচয় লুকাইতে চায় দুর্ঘটনা দিয়া। এইখানে বাঙালি মুসলমান ব্যাবহার করলাম ক্যান? কারন আছে। লক্ষ্য করলাম যখন জাতি হিসেবে কোন সমস্যার কথা বলা হয় তখন সবাই 'বাঙালি' ট্যাগটা ব্যাবহার করে। বাসে জায়গা নাই। আমি একদম পিছনের সিটে বসলাম।
একটা হুজুর আইসা বলল ভাই সিট আছে?
আমি তারে জায়গা দিয়া ভিতরের সিটে বসতে দিলাম। তিনি সিটটা ভিতরের দেইখা বসলেন না। একই টাইমে দেখলেন সামনে একটা সিট খালি হইছে তখন তিনি সামনের সিটে বসতে গেলেন। সামনের সিটে পৌঁছানোর আগেই আরেকজন সেই সিটে বইসা গেল। এবার তিনি পিছনের সিটে বসতে আসলেন।
তিনি আসতে আসতে আরেকজন আমার পাশের ভিতরের সিটটাতে বইসা গেল। তখন হুজুর বলল,ভাই সিট?
আমি বললাম,আপনারে ত সিট দিলাম। আপনে আগে বসেন নাই ক্যান?
পাশ থেইকা আরেকজন হুজুরের অবস্থা দেইখা বলল,বাঙালি!
বাঙালি ওয়ার্ডটা এমনভাবে কইল তাতে বুঝা গেল সব দোষ বাঙালির জিনে মিশানো ছিল। এরা তো বাঙালি না। তাইলে আমরা হুদাই দোষ 'বাঙালি' নামের একটা ঐতিহ্যবাহী জাতির গাঁড়ে চাপাইব? এরা নিজেদের 'বাঙালি' নয় 'বাঙালি মুসলমান' বইলা পরিচয় দিতে স্বচ্ছন্দবোধ করে তাইলে আমরা ক্যান এগোরে ট্যাগানোর ক্ষেত্রে 'বাঙালি' ট্যাগ দেই? কারণটা হইল আমরা নেগেটিভ ব্যাপারগুলাতে ইছলামের ঢোল লুকাই রাখি।
যখন কোন লোক সত্য মিথ্যার পার্থক্য শিখে এবং স্পষ্টবাদী হিসেবে নিজেরে গড়ে সে তখন অবশ্যই এইখানে 'বাঙালি মুসলমান' বা 'মুসলমান' ট্যাগ ব্যাবহার করব। কারন সত্য সত্যই। খালি দোষের বেলায় বাঙালি ট্যাগানোটাই আমার সমস্যা,গুনের বেলায় যদি বাঙালি ট্যাগানো হয় তাইলে এই কথা আসত না।
বাঙলা সাহিত্য আমরা বিশেষ একটা ভাগে বিভক্ত করে ফেলছি। এদেশে সাহিত্য গবেষণায় বিশেষ একটা দিক হইল 'বাঙলা সাহিত্যে মুসলিমদের অবদান'...এই বিষয়ক বেশ কয়টি বই গলধঃকরণ করে ফেলছি।
পিএইচডি গবেষণাও আছে বহুত। তারা ধইরা নিছে বাঙলা সাহিত্যে মুসলিমদের অবদান গুপ্তকেশ পরিমান তাই এরে টাইনা উপ্রে তুলতে হবে। আশ্চর্য হইলেও সত্য আমি 'বাঙলা সাহিত্যে হিন্দুদের অবদান' নামক কোন গ্রন্থ দেখিনা। মানে তারা আরও আগে থেইকা ধইরা নিছে বাঙলা সাহিত্যটা হিন্দুদের। হিন্দুরা সাহিত্য লিখবে আর মুসলিমরা খাবে।
মাঝে মাঝে দয়া হইলে সেইটা নিয়া নাড়াছাড়া করবে,এর কিছুদিন পর এইটারে বাঙলা সাহিত্যে মুসলিমদের অবদান বইলা চালায়া দেয়া হইবে। বিদ্যাসাগর,মধুসূধন,বঙ্কিম,দীনবন্ধু,কায়কো,রবীন্দ্র নিয়া গবেষণা হইলে সেটা সাহিত্য গবেষণা আর আলতাফ হুসেন,মোজাম্মেল হক,নওসের আলী,আবদুল হামিদ,ওবায়েদুল হক,আবদুল লতিফ,আবদুর রহিম,আহমদ মাশহাদি,মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী,মীর মশাররফ নিয়া হইলে মুসলিম সাহিত্য! বাঙলা সাহিত্যে হিন্দু মুসলিম উভয়ের অবদান আছে। এইটারে বিভাজন করনের দরকার কি?
হিট আস্তিক ব্লগাররা ধইরা নিছে তারা নাস্তিকগণের লগে ব্লগীয় ক্যাচালে জড়াইবে না। এই হিট ব্লগারগো নিজস্ব একটা ফলোয়ার শ্রেণী আছে। এরা কোন ভাবে এই শ্রেণী গোষ্ঠী হারাইতে চাইবে না।
এই হিট ব্লগারগণ মোটামুটি ধর্ম বিষয়ে উদার। যেহেতু তারা আগেই ঠিক কইরা নিছে তারা ক্যাচালে আসবে না তাই নাস্তিকগো লগে না লাইগা মোটামুটি একটা সহঅবস্থান করতেছে। হিট নাস্তিক ব্লগারগণ এইখানে বিশেষ একটা সুবিধা ভোগ করতেছে কারন একশ্রেণীর ব্লগার তাগো ব্লগে আসতেছে খালি বিরোধিতা করতে। যেই হিটটা আস্তিক ব্লগার পাইতেছে না সেই হিট টা পাইতেছে নাস্তিক ব্লগার। এই হিসাবে হিটের দিক দিয়া নাস্তিকগোষ্ঠী হিট খায়া গেলো।
হিট আস্তিক ব্লগারগণ কিছু কিছু ক্ষেত্রে নাস্তিক হিট গুলারে সাপোর্ট দিবে কারন হিটে হিটে একটা সম্পর্ক রাখা দরকার। হিটে হিটে সম্পর্ক ভালা রাখবে এরা। ফাইটে যাইবে হিটে আর সেমি হিটে। সেমি হিটের সব পোস্ট হিট হয়না,যেগুলাতে হিট নাস্তিকের নাম উল্লেখ থাকে সেইগুলাতে হিট হইবে। এই হিট ক্ষণস্থায়ী।
হিট আস্তিক আর হিট নাস্তিক একে অপরের যে সমর্থন সেইটা নৈতিক সমর্থন। এদের সম্পর্কও ভালো। রিয়েলে একে অপরের সাথে সম্পর্কও টাইনা আনে। এদের বাইরে যে হিটহীন ব্লগার আছে,তাদের একটা অংশ ব্লগ লিখিতে আসে। এই একটা অংশের জন্যই টিকা আছি।
ইহারা সুখ আর আনন্দের দূরত্ব সম্পর্কে অবগত।
ব্লগারগণের জাত কি! এরা ব্লগ জাতি। ব্লগেরও ধর্ম আছে। দেশেরও ধর্ম আছে। কোন দেশের ধর্ম নাই।
তারা সভ্য,তাদের দেশে মৃত্যুদন্ড নাই,২১ বছর কারাদন্ড আছে। ব্লগ সভ্য কবে হইবে? ব্যান ব্যানিং কি আদৌ উঠাইবে! না। কোন দেশের ধর্ম নাই তারা সভ্য,কোন ব্লগের ধর্ম নাই তারা ভার্চ্যুয়াল কুততালীগার। দেশ সভ্য হইল কিন্তুক ব্লগ সভ্য হইল না। ব্লগ দেশ হইতে পারে না।
ব্লগার গণ কোন জাতের না। কুজাত! না। তারা স্বজাত। তারা স্বজাতির হলুদ বজ্যরে কালো বানায় ব্লগে আইসা। সো ব্লগের সাথে জাত মিশাইবেন না।
জাত আর স্বজাতের মধ্যে পার্থক্য বিরাজমান। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।