জোর গলাতেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ঘোষণা দিয়েছেন আইনি লড়াইয়ের। তাঁর পাশে এসে দাঁড়িয়েছে ক্লাব বার্সেলোনাও। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কিন্তু জেলও হতে পারে লিওনেল মেসির! স্পেনের আইন অনুযায়ী যে শাস্তির মেয়াদ সর্বোচ্চ ছয় বছরের!
গত বুধবার সারা বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিয়ে খবর আসে, বরাবরই বিতর্ক থেকে নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখা মেসি কর ফাঁকির মতো গুরুতর অন্যায় করেছেন। অঙ্কটাও বিশাল, ৫৩ লাখ ডলার; বাংলাদেশি মুদ্রায় যা দাঁড়ায় প্রায় ৪২ কোটি টাকা।
কাতালুনিয়ার কর অপরাধ বিভাগের দাবি, ২০০৬ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত আয়কর রিটার্নে ভুল তথ্য দিয়েছেন মেসিরা।
অভিযোগে বলা হয়, স্পেনে বসবাসরত মেসি তাঁর ইমেজ-স্বত্ব বিক্রি করেছিলেন ইংল্যান্ড ও সুইজারল্যান্ডের দুটি প্রতিষ্ঠানের কাছে। সেখান থেকে উপার্জিত অর্থের কোনো হিসাবও দেননি। বিশাল এ অর্থের পুরোটাই ওই দুই দেশ থেকে সরাসরি পাঠিয়ে দেওয়া হয় কর ফাঁকির স্বর্গ বলে পরিচিত বেলিজ ও উরুগুয়েতে। কর বিভাগের দাবি, স্পেনের নাগরিকত্ব পেয়েও ব্যাপারটা স্পেনের কর বিভাগের কাছে লুকিয়ে রেখেছিলেন তিনি।
আর এ কাজে মেসিকে সহায়তা করেন তাঁর বাবা হোর্হে।
মেসির আইনজীবী ও কর উপদেষ্টা অ্যাঙ্গেল হুয়ারেজ অবশ্য এ ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তাঁকে কিংবা তাঁর মক্কেল মেসিকে জানানোর আগেই ঘটনা সংবাদমাধ্যমে ফাঁস করার যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কর বিভাগ থেকে কোনো নোটিশ পাননি বলেও দাবি করেন হুয়ারেজ। শিগগিরই মেসির পক্ষ থেকে আইনি লড়াইয়ে নামার ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি।
ছুটে আসা কলঙ্কের এই তির থেকে বাঁচাতে মেসির পাশে আছে তাঁর ক্লাবও। গতকাল বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বার্সার প্রেসিডেন্ট সান্দ্রো রসেল বলেছেন, ‘আমরা সবাই মেসির পাশে আছি। তাঁর পরিবারের পাশে আছি। মেসি যে পুরোপুরি নির্দোষ, এ ব্যাপারে বিন্দুমাত্র সংশয় নেই আমাদের। ’
বার্সার প্রেসিডেন্ট জানান, অভিযোগটা শোনার পর আর্জেন্টিনায় মেসির পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।
মেসির সমর্থনে বার্সা স্পেনের আদালতে আইনি লড়াইয়ে নামবে কি না, এ ব্যাপারে অবশ্য নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি রসেল, ‘আমি জানি না, মেসির পাশে দাঁড়িয়ে আমাদের আইনি লড়াই চালানোর সুযোগ আছে কি না। ব্যাপারটা নিয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলব আমরা। এটা নিশ্চিত করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে সবকিছুতেই আমরা মেসির পাশে আছি। ’
মেসি ও তাঁর বাবার বিরুদ্ধে অভিযোগটা দায়ের করা হয়েছে কাতালুনিয়ার আদালতে। ওই এলাকাতেই থাকেন মেসি।
কর অপরাধ বিভাগের করা অভিযোগের ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো নির্দেশনা দেননি আদালত। অভিযোগটা সত্যি হলে তা মেসির জন্য যথেষ্টই ‘বিব্রতকর’। ২৫ বছর বয়সী এই তারকার খেলোয়াড়ি জীবন নিয়ে বিতর্ক নেই। বিতর্ক নেই তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও। স্পেনের কর বিভাগের এই অভিযোগটা তাই তাঁর গায়ে কলঙ্কের ছোপ লাগার মতোই।
যদিও তা এখনো প্রমাণের অপেক্ষায়।
এ মাসেই ক্রীড়াঙ্গনের সবচেয়ে বেশি আয় করা খেলোয়াড়দের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে মার্কিন সাময়িকী ‘ফোর্বস’। ওই তালিকায় লিওনেল মেসির অবস্থান দশম। বার্ষিক মোট আয় চার কোটি ১৩ লাখ ডলার। সূত্র: এনডিটিভি, গোলডটকম।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।