'পাত্রী যে বয়সেরই হোক, বিয়ে করলেই অনায়াসে স্বপ্নের দেশ কানাডা বা আমেরিকার নাগরিক! আর এ জন্য প্রয়োজন এক থেকে পাঁচ লাখ টাকা। ' ম্যারেজ মিডিয়া চক্রের এমন লোভনীয় প্রস্তাবে পড়ে পথে বসেছেন শতাধিক ব্যক্তি।
গতকাল সোমবার মহানগর পুলিশের (ডিবি) মিডিয়া সেন্টারে ভুক্তভোগীরা উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে এভাবেই বর্ণনা করেন তাদের প্রতারিত হওয়ার কাহিনী। ডিবি পুলিশের একটি
টিম রোববার রাজধানীর বনশ্রী ও কুড়িল এলাকা থেকে এ প্রতারক চক্রের দুই নারীসহ ৯ জনকে গ্রেফতার করে। খবর পেয়ে ভুক্তভোগীরা মিন্টো রোডে মিডিয়া সেন্টারে চলে আসেন।
ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেফতারকৃতরা হলো_ ভুয়া প্রবাসী পাত্রী মায়া বেগম ও রানু রশিদ, তাদের সহযোগী রুহুল মৃধা, নাজমুল আলম, ইদ্রিস হামিদ, খোরশেদ আলম, উজ্জ্বল ও ইমতিয়াজ। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ২২টি পাসপোর্ট, বিভিন্ন দেশের ২৫টি জাল আইডি কার্ড, ৪০টি জাল ইমিগ্র্যান্ট ভিসা, ১০টি নকল ভিসা ফরম, বায়োডাটা ফরম ৭৬টি, একটি ল্যাপটপ ও বিভিন্ন ধরনের জাল কাগজপত্র।
ভুক্তভোগী চট্টগ্রামের বাসিন্দা ওয়াজিউল্লাহ জানান, তিনি তিন ছেলে ও দুই মেয়ের জনক। তারা সন্তানরাও প্রত্যেকে বিবাহিত। চাকরি করেন চট্টগ্রামে একটি বেসরকারি সংস্থায়।
রামপুরা এলাকার একটি বায়িং হাউসের মালিক সাজ্জাদের মাধ্যমে তিনি ম্যারেজ মিডিয়া চক্রের খপ্পরে পড়েন। তারা ভুয়া যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী জনৈক তরুণীর সঙ্গে ওয়াজিউল্লাহকে দেখাও করিয়ে দেয়। ওই তরুণী তাকে বিয়ে করতে রাজি হয়। তিনি তাদের কথায় রাজি হয়ে ২ লাখ টাকা ও পাসপোর্ট দেন; কিন্তু টাকা নেওয়ার পরই তারা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। গ্রেফতার হওয়ার পর ডিবি পুলিশ উদ্ধার করা পাসপোর্টের সূত্র ধরে ওয়াজিউল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগ করে।
একই ভাবে প্রতারিত হওয়ার ঘটনা বর্ণনা করেন কুমিল্লার আবদুর রহমানসহ অন্যরাও।
ডিবি ডিসি (দক্ষিণ) মনিরুল ইসলাম জানান, রুহুল মৃধা ও নাজমুল আলম আগেও ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিল। গ্রেফতারকৃত মায়া বেগম বাস্তবে রহুল মৃধার স্ত্রী। সম্প্রতি তারা জামিনে বের হয়ে পুনরায় ম্যারেজ মিডিয়ার অফিস খুলে আবারও প্রতারণা শুরু করে।
গ্রেফতারকৃতরা জানায়, সাধারণত তারা বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় 'প্রবাসী পাত্রী'র জন্য পাত্র চাই_ এমন চটকদার বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে দেশের বেকার ও বিদেশে গমনেচ্ছু ব্যক্তিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
পরে পাত্র তাদের অফিসে এলে কথিত পাত্রীসহ তারা যে কোনো হোটেলে বসে কথাবার্তা চূড়ান্ত করে চুক্তিতে উপনীত হয় এবং পাত্রের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়া শুরু করে। প্রতারণার ঘটনায় ভাটারা ও রামপুরা থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক গোলাম মাওলা জানান, গ্রেফতারকৃতদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এ প্রতারক চক্রের অন্যান্য সদস্যকেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। (সবার জানা উচিত ভাল না লাগলে বাজে মন্তব্য করবেন না)
সূত্রঃসমকাল ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।