আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গল্প: হামহাম ঝর্নার অপদেবতা কিংবা নিয়ানডার্থাল রহস্য

বাংলার মাটি বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল, পুন্য হউক, পুন্য হউক, পুন্য হউক, হে ভগবান। বাংলার ঘর, বাংলার হাট, বাংলার বন, বাংলার মাঠ, পুর্ন হউক, পূর্ন হউক, পূর্ন হ্‌উক, হে ভগবান। রবীন্দ্রনাথ মৌলভীবাজারের রাজকান্দি রিজার্ভ ফরেস্টে নিয়ানডার্থাল -এর ফসিল পাওয়া গেছে। আরও সব রহস্যময় ঘটনা ঘটছে এখানে । তোরা শীঘ্রি রাজকান্দি চলে আয়।

বৃষ্টিভেজা বিকেলে মিনহাজ ভাইয়ের ফোন পেয়ে ঝুমুর এর মনটা খুশিতে নেচে উঠল। ও মুচকি হেসে মোবাইল অফ করে। জানালার বাইরে ঝিরঝির বৃষ্টি। তানভির আর রনি মুখোমুখি বসে দাবা খেলছিল। ঝুমুর সোফার ওপর টানটান হয়ে শুয়ে বই পড়ছিল।

বইটা মুড়িয়ে উচ্ছ্বসিত কন্ঠে বলল, বয়েজ গেট রেডি ফর অ্যানাদার অ্যাডভেঞ্চার । মানে? তানভির মুখ তুলে তাকালো। মিনহাজ ভাই ফোন করেছে। আমাদের আজই রাজকান্দি রিজার্ভ ফরেস্ট যেতে বলেছে। ওখানে নাকি কীসব ঘটছে।

তানভীর আর রনি লাফিয়ে উঠল। ওদের খুশির কারণ আছে। বুয়েট বন্ধ। ঘরে বসে ঝিমাচ্ছিল। তাছাড়া রাজকান্দি রিজার্ভ ফরেস্ট দারুণ জায়গা।

ইসলামপুর ইউনিয়নের কুরমা রির্জাভ ফরেস্টের গহীন বনে হামহাম ঝরনা। একেবারে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সীমান্ত ঘেঁষে। ঝুমুরের কাজিন মিনহাজ ভাই শখের প্রাণি বিজ্ঞানী। রাজকান্দি রিজার্ভ ফরেস্টে বন্য প্রাণি নিয়ে গবেষনা করছেন। রাতে ট্রেন।

ট্রেনে রনি কানে হেডফোন গুজে বসে থাকল। তানভীর ওর নোটবুকে ঝুঁকে ছিল। ঝুমুর একটা বই পড়ছিল। তানভীর জিগ্যেস করে, কি পড়ছিস রে ঝুমুর? জ্যাকুই হায়েস এর লেখা নিয়ানডার্থালদের নিয়ে একটা রিসার্চ পেপার। ‘হিউম্যানস অ্যান্ড নিয়ানডার্থালস ইন্টারব্রিড, অ্যাকরডিং টু আওয়ার অ্যানাটমি।

’ ও। ঝুমুর খুব পড়য়া। এ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণিবিদ্যা বিভাগে ভর্তি হয়েছে। ওর বাবা অধ্যাপক শফিক আলী সরীসৃপ নিয়ে গবেষনা করছেন । রনি ঝুমুরের ক্লাসমেট।

ও ঢাকা বার্ড ক্লাবের সদস্য । তানভীর রনির কাজিন। ও অবশ্য বুয়েটে পড়ছে। ইলেকট্রিকালে। উপবন ট্রেনটি যখন শ্রীমঙ্গল স্টেশনে থামল তখন রাত তিনটা ।

ঝমঝম করে বৃষ্টি পড়ে যাচ্ছিল বাংলাদেশের বৃষ্টির শহরে। করার কিছুই নেই- প্ল্যাটফর্মে পায়চারি কিংবা বেঞ্চে বসে ঝিমানো ছাড়া। সূর্য ওঠার পর দূর্গম পথে চলা আরম্ভ হবে । শ্রীমঙ্গল থেকে কমলগঞ্জ। কমলগঞ্জ থেকে বত্রিশ কিলোমিটার পাড়ি দেওয়ার পর রাজকান্দি রিজার্ভ ফরেস্ট।

সেখানেই মিনহাজ ভাইয়ের ল্যাব। মিনহাজ ভাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগ থেকে এম এস সি পাস করেছেন। কমলগঞ্জের পূর্ব দিকে সীমান্তের গহীন বনভূমির দূর্গম আদিম পরিবেশে আজও অসংখ্য প্রজাতির জীবজন্তুর বাস। মিনহাজ ভাই এলনগেটেড টরটয়েস নামে এক ধরণের কাছিম নিয়ে গবেষনা করছেন। দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশ ছাড়া এই বিরল প্রজাতির কাছিম বাংলাদেশেও পাওয়া যায়।

অনেকটা যেন মন্ত্রবলে বৃষ্টি থামল। ঠিক ভোরের আগে। একটা রেস্টুরেন্টে ঢুকে চা খেয়ে নিল ওরা। তারপর সিএনজির খোঁজ। আদমপুর অবধি সিএনজি করে যাবে।

রাজকান্দি রিজার্ভ ফরেস্টের মূল অংশ অবশ্য আরও দূরে। সেই কুরমা বিজিবি চেকপোস্টের কাছে। ওরা গত বছর এদিকে যখন এসেছিল। তখনই ওরা দেখেছে কুরমা বাজারের পরে অরণ্য আরও গভীর। ওদের ভাগ্য ভালো।

একটা সি এনজি পেয়ে গেল। কমলগঞ্জ- শ্রীপুর পেরিয়ে সাড়ে আটটা বাজল রাজকান্দি রিজার্ভ ফরেস্টের আদমপুর বিটে পৌঁছতে। সিএনজি থেকে নেমে মিনহাজ ভাইকে ফোন করল ঝুমুর। ফোন অফ। কী ব্যাপার? ও কাঁধ ঝাঁকালো।

আদমপুরের এই জায়গাটা বাজারের মতন। দোকানপাট খুলেছে। বোঝা যাচ্ছে-বাজারের লোকজন নীল জিন্স আর কালো শার্ট পরা ঝুমুরকে দেখে অবাক হয়েছে। । (গতবারও হয়েছিল ) তার ওপর ওরা হামহাম ঝরনা অবধি যাবে বলে স্থানীয় লোকজন আরও অবাক।

ঝুমুর অবশ্য পাত্তা দিচ্ছিল না। ওরা একটা রেস্টুরেন্টে ঢুকে পরোটা আর ডাল দিয়ে নাস্তা খেয়ে নিল। একজন মাঝবয়েসি থলথলে চেহারার লোক বলল, আপনেরা হামহাম ঝরনা যাইবেন কেনে? তাতে আপনার সমস্যা কী? ঝুমুর এর কন্ঠ বেশ তীক্ষ্ম শোনালো। লোকে হেনে যায় আত্মহত্যা করত। ঝুমুর উঠে দাঁড়িয়ে বলল, আত্মহত্যার জন্য অতদূর যাওয়ার কী দরকার।

এখানে করলেই তো হয়। এই চল তো। বলে ব্যাকপ্যাকটা কাঁধে তুলে নিল। গতবার মিনহাজ ভাই ওদের নিয়ে যাওয়ার জন্য রামু নামে একজন স্থানীয় ছেলেকে পাঠিয়েছিল । এবার তো তার সঙ্গে যোগাযোগ করাই যাচ্ছে না।

পথটা ওদের আবছা মনে আছে। তবে গাইড ছাড়া গেলে পথ হারানোর সম্ভাবনা আছে। ওরা দ্বিধাদ্বন্দে ভুগছিল। শেষ অবধি অবশ্য একজন গাইড পাওয়া গেল। বাইশ- তেইশ বছরের ছেলেটি স্থানীয়।

গায়ের রং ফরসা। মাথায় ঘন কোঁকড়া চুল। পরনে হলদে গেঞ্জি আর কালো প্যান্ট। নাম মাধব। বাঁ হাতে একটি তামার বালা।

কানে পিতলের রিং। ওরা হাঁটতে শুরু করল। এই মুহূর্তে বৃষ্টি-টিষ্টি পড়ছিল না। চারিদিক ঝলমলে রোদে ভেসে যাচ্ছে। বলা যায় না কখন আবার বৃষ্টি শুরু হয়।

হাঁটতে একটি চাবাগান পড়ল। মাধব বলল, চা বাগানের নাম বাঘাইছড়ি। চারিদিকে সবুজের সমারোহ। ওদিকে তাকালেই চোখে আরাম হয়। রেইনট্রি গাছের গভীর ছায়া পড়েছে।

তানভির 'কুল' বলে আনন্দে শিস দিল। প্রায় ১৫ কিলোমিটারের মতন হাঁটার পরে পিচরাস্তা শেষ হয়ে এল। এরপর চা বাগান। মাধব চাবাগানের বলল, কুরমা । এসব চাবাগান গতবারও ওরা দেখেছিল।

যে দিকেই চোখ যায় অপূর্ব সবুজ সৌন্দর্য। কুরমা বাজার পৌঁছতে পৌঁছতে দশটা বাজল। পকেট থেকে নাকিয়া বের করে মিনহাজ ভাইকে ফোন করল ঝুমুর। ফোন অফ। কী ব্যাপার? মিনহাজ ভাই তো খুব ভোরে ওঠেন।

ও কাঁধ ঝাঁকালো। কুরমা বাজার বাজারে কয়েকটা দোকান। মিনারেল ওয়াটার আর বিস্কুট কিনল ওরা । ওদের দেখে এখানেও যথারীতি জটলা তৈরি হয়েছে। নানান প্রশ্ন- হামহাম ঝর্নার কাছে কেন যাবেন।

ওদিকে কেউ যায় না। ইত্যাদি। ঝুমুরকে সামান্য ক্ষিপ্ত মনে হল। রনি ইঙ্গিতে ওকে শান্ত থাকতে বলল। আবার রওনা হয়ে দেখা গেল মাটির রাস্তাটি প্রচন্ড এবড়োখেবড়ো।

মাধব বলল, প্রায় দশ কিলোমিটার হাঁটতে হবে। তারপর ন্যাশনাল টি কোম্পানির চাম্পারাই চা বাগান। চা বাগানটি শতবর্ষের পুরনো। ১৯১০ সালে নাকি প্রতিষ্ঠিত। ওরা চাম্পারাই চা বাগানে পৌঁছল বেলা ১১টার দিকে ।

এখানেই একটি আদিবাসী গ্রাম রয়েছে। গ্রামের নাম: কলাবন গ্রাম। স্থানীয় অধিবাসীরা কলাবন পাড়া। স্থানীয়রা বেশির ভাগই চা-শ্রমিক। কলাবন অদ্ভূত সবুজ আর সুন্দর।

গ্রামের পিছনে সবুজ পাহাড়ের সারি-ধাপে ধাপে উঠে গেছে। সীমান্তের ওপারে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য। মাধব এর কথায় একটি করে বাঁশের লাঠি কিনল ওরা। হাঁটতে নাকি সুবিধে হবে। কলাবনপাড়া পেরিয়ে সেগুন গাছের ঘন জঙ্গল।

তার পর আঁকাবাঁকা লাল মাটির পথ। উচুঁ নীচু টিলা-পথ। ক্রমশ অরণ্য আরও গভীর হচ্ছে। পথে বেশ কটি বাঁশের সাঁকো পড়ল । দু’পাশে ঘন বাঁশবন।

মিনহাজ ভাই গতবার বাঁশের নাম বলেছিলেন। ডলু, মুলি, মিরতিঙ্গা আর কালি । মুলি বাঁশ দেখে চেনা যায়; কিন্তু কোনটা যে ডলু, মিরতিঙ্গা কিংবা কালি তা বোঝা মুশকিল। বাঁশঝাড় ছাড়াও রয়েছে বড় বড় গাছ। গাছ বেয়ে লতা জড়িয়ে ওপরে উঠে গেছে।

কয়েকটি গাছে বানর বসে আছে। কেমন ছায়া ছায়া পথ। পাখির ডাকে কান পাতা যায়। নিবিড় অরণ্যের কি সৌন্দর্য! বেতবনের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় একটা ছিপছিপে গড়নের লালকালো রঙের বনমোরগ ডানা ঝাপটে পালালো। টুক টুক টুক ... টুক টুক টুক শব্দে কী পাখি ডেকে উঠল।

একটা অর্জুন গাছের খোড়লে সবুজ রঙের ছোট্ট একটা পাখি দেখে তানভির বলে ওঠে, ওয়াও। কুল! পাখিটার মাথা লাল রঙের । ঠোঁট কালো। রনি বলল, ছোট্ট বসন্তবাউরি। গাছের কোটরে গর্ত নিজেরা করেনি।

ওরা প্রাকৃতিক কোটরে থাকে। কী সুন্দর! ঝুমুর উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে। ওর গলায় একটা লাল রঙের সনি সাইবার-শট ডিএসসি -টি এক্স সিক্স সিক্স ঝুলছে। ক্লিক করার আগেই উড়ে পালালো পাজি পাখিটা। ঝুমুরকে কেমন বিমূঢ় দেখালো।

ওরা হাঁটছে। পায়ের তলায় বাঁশপাতা আর কাটা বাঁশের টুকরো। চারিদিকে তাকিয়ে তানভির ভাবল :এই রাজকান্দির এই অরণ্য দূর্গম বলে বনদস্যুরা এখনও একে গিলে খায়নি। বনদস্যুদের কবল থেকে লাউয়াছড়া রক্ষা পায়নি। হাঁটতে হাঁটতে ওরা একটি তিনরাস্তার মোড়ে পৌঁছল।

মাধব জায়গাটিকে বলল, ত্রিমোহনা। সে আরও বলল, ডানদিকের রাস্তাটি পাহাড়ী। আর সিধা পথটি ঝিরিপথ। দু পথেই হামহাম পৌঁছনো যায়। গতবার ওরা পাহাড়ি পথে গিয়েছিল।

তাই ঝুমুর চেঁচিয়ে উঠল, ঝিরি ঝিরি ঝিরি। রনি মুচকি হাসল। ঝিরিপথটি অর্পূব। কী শীতল পানি! কী ঠান্ডা অনুভূতি। জলের গভীরতা কোথাও হাঁটু, কোথাও গোড়ালী আবার কোথাও কোমর অবধি ।

পায়ের নীচে থিকথিকে কাদা। ভয়ানক পিচ্ছিল পথ। ওরা বাঁশের লাঠি ধরে সাবধানে এগুচ্ছে। গভীরতা মাপতে বাঁশের লাঠি কাজে লাগছে বেশ। পায়ের নীচে শ্যাওলা ধরা পাথর আরও পিছল।

ঝিরির ওপর বড় বড় সব পাথরের বোল্ডার। দু’পাশে বড় বড় বাঁশ তোড়ণের মতন বেঁকে আছে। দুপাশে পাহাড়। পাহাড়ের গভীর ছায়া পড়েছে ঝিরির ওপর । জুক ধইরলে আমারে বইলেন।

মাধব বলল। সৌভাগ্যক্রমে জোঁকের দেখা মিলল না অবশ্য। ওরা ক্রমশ ওপরে উঠে যাচ্ছে। পথটি আপস্ট্রিম বলে। তানভির বলল, বাংলাদেশ সরকারের উচিত কলাবন পাড়া থেকে হামহাম ঝরনা পর্যন্ত কেবল কার বসানো।

তা হলেই হয়েছে। রনি ব্যঙ্গ করে বলে। মাধবও ঝকঝকে দাঁত বের করে হাসল। বাংলাদেশের প্রত্যন্ত এলাকার মানুষও রাজনীতি সচেতন। সামনে একটি টিলা পড়ল।

মাধব টিলার নাম বলল, মোকামটিলা। টিলাটি কেমন যেন- মাটি ও পাথরের মেশানো। ধাপে ধাপে সিঁড়ি টিলার শীর্ষে চলে গেছে। সিঁড়ি কারা করেছে- কে জানে। শিকড় লতা ধরে ধরে কোনওমতে ওরা চূড়ায় পৌঁছল।

কাঁধের ব্যাকপ্যাক খুলে, রেস্ট! রেস্ট! বলে চেঁঁচিয়ে উঠল ঝুমুর। রনি আর তানভিরও ব্যাকপ্যাক খুলে বসল। রনির শ্যামলা মুখে ঘাম। ঢকঢক করে পানি খেল রনি। মাধব একটা বিড়ি ধরাল।

আশেপাশে তাকাচ্ছে ঝুমুর। তানভির জিজ্ঞেস করে, কি দেখছিস রে? নিয়ানডার্থাল। ঝুমুর বলল। মিনহাজ ভাই কাল ফোনে বললেন, এই রাজকান্দি রিজার্ভ ফরেস্টে নিয়ানডার্থাল -এর ফসিল পাওয়া গেছে। বলে প্যাকেট খুলে মাধবকে বিস্কুট দিল।

মাধব সামান্য ইতস্তত করে বিস্কুট নিল। তানভির জিজ্ঞেস করল, নিয়ানডার্থাল এখানে ছিল? এই মৌলভী বাজারে? ঝুমুর এক ঢোক পানি খেয়ে বলল, আহা। প্লাইস্টেসিন যুগে কি মৌলভীবাজারের নাম মৌলভীবাজার ছিল নাকি? অরণ্য আরও ঘন ছিল। প্লাইস্টেসিন মানে? প্লাইস্টেসিন হল ভূতাত্ত্বিক যুগের নাম । এর সময়কাল ছিল ২,৫৮৮,০০০ থেকে ১১,৭০০ বছর।

নিয়ানডার্থাল সম্বন্ধে আমি তেমন জানি না রে , একটু ব্রিফ কর তো। বলে বিস্কুটে কামড় দিল তানভির। নিয়ানডার্থালরা আধুনিক মানুষের প্রথম পূর্বপুরুষ, মানে মানুষের প্রাগৈতিহাসিক পূর্বপুরুষ। ৩৭ হাজার বছর আগে ওরা বেঁচে ছিল । রাশিয়ার মেরু অঞ্চলে ঘোরাফেরা করত।

ওদের শরীর ছিল রোমশ। কিছুটা ঝুঁকে চলত। গড়ন শক্তপোক্ত। নিয়ানডার্থালরা পাথরের তৈরি অস্ত্রশস্ত্র বানাত। ওরা ভারি বুদ্ধিমান ছিল।

মাথা আধুনিক মানুষের চেয়ে বড়। মেয়েদের ব্রেস্টও বড়। অনেকের মতে নিয়ানডার্থালরা লোপ পেয়েছে তবে ঠিক বিলুপ্ত হয়নি। বিলুপ্ত হয়নি মানে ? বিলুপ্ত হয়নি মানে- নিয়ানডার্থালরা আজও অন্যভাবে টিকে আছে। আধুনিক মানুষ অর্থাৎ হোমো সাপিয়ান্স এর সঙ্গে ওরা মিশে গেছে।

মানে আমাদের শরীরে নিয়ানডার্থাল দের জিন রয়েছে। এ নিয়ে ইন্টারব্রিড থিউরিও আছে। রনি বলল, আচ্ছা, মাধব । এখানকার অনেকে বলে হামহাম ময়দানব আছে । তুমি কি কখনও দেখেছ? না।

আমি দেখি নাই। তয় আমার দাদা ঠাকুর দেখেছেন। হুমম। আচ্ছা, এখন ওঠা যাক। বলে ঝুমুর উঠে দাঁড়াল।

ওরা টিলা থেকে সাবধানে নামতে থাকে। টিলার নীচে নিবিড় অরণ্য। দু ধারে ঘন বাঁশের বন । তারপর আবার ঝিরি। রনি হিসেব করে দেখল ওরা সব মিলিয়ে আড়াই ঘন্টার মতন হেঁটেছে।

বেশ ক্লান্ত লাগছিল। বাঁশ আর পাথর বিছানো ঝিরি পথটা সরু। এই জায়গাটা একটা খাঁজের মতন । নানা রকম পোকা ডাকছে। ঝিঁঝির ডাকে পুরো খাঁজটা মূখর।

চারিদিকে পাহাড় ঘেরা। বড় ছায়াময়। একটু পর একটানা ছিরর ছিরর জলের শব্দ শুনতে পেল ওরা। ঐ যে। হাত তুলে রনি বলল।

প্রায় সত্তর ফুট উঁচু একটা কালচে পাথরের স্ল্যাব। তার ওপর থেকে সফেদ জলের ধারা গড়িয়ে পড়ছে। পানি যেখানে পড়েছে সেখানে ছোট্ট একটা জলাধার তৈরি হয়েছে। তার চারপাশে বড় বড় পাথরের বোল্ডার। মাধব বলল, এখানকার স্থানীয় অধিবাসীরা পানি পতনের স্রোতধ্বনিকে ‘হামহাম’ বলে।

তাই জলপ্রপাতের এই নাম। মাধব বলল, আমাকে এবার বিদায় দিন দিদি। ঠিক আছে। আমাদের সাহায্য করার জন্য ধন্যবাদ। বলে ঝুমুর ওকে একটা পাঁচশ টাকার নোট দিল।

মাধব অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে ঝুঁকে সেলাম করে চলে গেল। এবার পথটা চেনা। ওরা হাঁটতে থাকে। শুকনো পাতা বিছানো বেশ সরু পথ। বাতাসে কেমন বুনো গন্ধ।

একটা কাঠবেড়ালি ওদের সাড়া পেয়ে তিড়িং বিড়িং কলে পালিয়ে গেল। পোকামাকড় ও পাখির ডাক এখানেও তীব্র। তবে সব ছাপিয়ে ঝরনার শব্দই ... একটু পর গাছপালার ফাঁকে একটা সাদামাটা মাটির বাড়ি চোখে পড়ল। বাড়ির চারপাশে শক্ত তারের বেস্টনী দেওয়া। চালের ওপর সোলার প্যানেল।

ভিতরে ঢোকার মুখে বিশাল কড়ুই গাছ। উঠানে একটা কাঠের গুঁড়ির ওপর খরগোশ কোলে বসেছিল রামু। বয়স এই আঠারো-উনিশ । গায়ের রংটি মিশমিশে কালো। মেয়েলি ধরণের গোলপানা মুখ।

নাক চ্যাপ্টা। কানে তামার রিং। পরনে সবুজ হাফপ্যান্ট আর সাদা গেঞ্জি। রামু ওদের দেখে উঠে দাঁড়াল। খরগোশটা এক লাফে ছুটে পালাল।

দাওয়ার ওপর ব্যাকপ্যাক রেখে ঝুমুর জিজ্ঞেস করল, রামু, মিনহাজ ভাই কই? ফোনে পাচ্ছিনা কেন? রামু বলল, বলি দাদা তো কাল রাত্তিরে ফিরেন নাই কো। কখন বেড়িয়েছেন? কাইল দুপুর তখ হইল বলে। ঝুমুরের ভুঁরু কুঁচকে ওঠে। মিনহাজ ভাইয়ের কি কোনও বিপদ হয়েছে? ঘড়ি দেখল। এখন আড়াইটার মতন বাজে।

মিনহাজ ভাই কাল ফোন করেছিল বিকেলে। তার মানে কাল বিকেল পর্যন্ত কোনও বিপদ হয়নি। রামু রান্নাবান্নার আয়োজন করতে লাগল। ওরা ঘুরে ঘুরে দেখল। বাড়িতে তিনচারটি ঘর ।

সবচে বড় ঘরটাই ল্যাব। বেড়ায় জগদীশ চন্দ্র বসুর সাদাকালো একখানি ছবি সাঁটা । তার পাশে লেখা: Nothing in Biology makes sense except in the light of evolution.Theodosius Dobzhansky. টেবিলের ওপর কয়েকটি খাঁচা। তাতে বানর বসে ঝিমাচ্ছে। পিছনের উঠানে একটি পাকা চৌবাচ্চা।

কালচে পানিতে কাছিমের ছানা। একটা ঘরে ডাঁই করা শুকনো কাঠ। এদিকটায় যখন-তখন বৃষ্টি হচ্ছে । রান্নাবান্নার জন্য শুকনো কাঠের বড্ড অভাব। মিনহাজ ভাইয়ের খোঁজ করা দরকার।

দূরের টিনের চালা রোদে ঝকঝক করছিল। বি এস এফ ক্যাম্প। এরা যখন তখন গুলি করে। তানভির উদ্বেগ টের পায়। ও বলল, চল।

ঝরনায় গোছল করে এসে খেয়ে দেয়ে তারপর মিনহাজ ভাইয়ের খোঁজে বের হই। ওরা হামহাম ঝর্নার কাছে এল। পানি পড়ার শব্দে মনে হচ্ছে কানের পরদা ফেটে যাবে। পাথর টপকে ওরা পানিতে নামল। অসম্ভব ঠান্ডা পানি।

অবশ্য রোদ ছিল। যাত্রাপথের সব ক্লান্তি মুছে গেল। পানির গভীরতা বেশি না। বুক পর্যন্ত। রামু খিচুরি রেঁধে অপেক্ষা করছিল।

ওর রান্না চমৎকার। আগেও খেয়েছে। এতক্ষণ ঝলমলে রোদ ছিল। খাওয়ার সময় মেঘ করে এল। খাওয়ার পর রামু কড়া ব্ল্যাক কফি নিয়ে এল।

কফি খেয়ে ওরা বেরুতে যাবে। তার আগেই শুরু হল তুমুল বৃষ্টি । অনেকটা বাধ্য হয়েই ওরা সন্ধ্যা অবধি ঘরে আটকে থাকল। বৃষ্টি থামল সন্ধ্যার কিছু আগে । ধবধবে পূর্ণিমার আলোয় চারপাশ ভেসে যাচ্ছিল।

বনময় কী এক সুগন্ধ। যে সুগন্ধের নাম নেই। আকাশে আলোর বন্যা। পথে অবশ্য কাদা আর ভিজে পাতা। ঠান্ডা বাতাস বইছিল।

ওরা হামহাম ঝর্নার কাছে চলে এল। রাতের নির্জনতায় পানি পড়ার শব্দ অত্যন্ত গভীর। অসাম। তানভির চারিদিকে তাকিয়ে বলল। রনি বলল, ওই যে দ্যাখ।

কী? পাথরের ফাঁকে একটা সেলফোন। এলজি অপটিমাস প্রো। ঝুমুর কুড়িয়ে নিয়ে বলল, আরে! এটা তো মিনহাজ ভাইয়ের। গত বছর মা গিফট করেছিল। রনি গম্ভীর কন্ঠে বলল, মিনহাজ ভাই তাহলে বিপদে পড়েছেন।

তাই মনে হয়। বলে ঝুঁকে একটা পাথর তুলে নিল ঝুমুর। পাথরটা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখে বলল, রনি দেখ, এই পাথরটা নিয়ানডার্থালদের Mousterian সংস্কৃতির। এই যে দ্যাখ। এদিকটা কেমন ভোঁতা।

সেদিন ক্লাসে হাসান স্যার এ নিয়ে বললেন। রনি বলল, হুমম। নিয়ানডার্থালদের Mousterian সংস্কৃতির সর্বশেষ নিদর্শন পাওয়া গেছে জিব্রাল্টার এর দক্ষিণ উপকূলের গোরহ্যাম গুহায়। তানভির জিজ্ঞেস করে, নিয়ানডার্থাল এর ফসিল কি এখানেই পাওয়া গেছে? রনি বলল, সেখানে নিয়ানডার্থাল দের ফসিল পাওয়া যায় সাধারণত সেখানে ওদের পাথরের অস্ত্রশস্ত্রও পাওয়া যায়। বলে এদিক ওদিক তাকাল।

হঠাৎ করেই জঙ্গল অস্বাভাবিক শান্ত হয়ে এল। ঝিঁঝি পোকার তারস্বরে ডাকছিল। থেমে গেল। ঝুমুর এদিক ওদিক তাকায়। কি ব্যাপার? রনি ভয়ার্ত কন্ঠে বলল,ওই দ্যাখ।

তানভির ও ঝুমুর একসঙ্গে তাকাল। চাঁদের আলোয় পরিস্কার দেখা যায়। পাথরের ওপর একটি নিয়ানডার্থাল দাঁড়িয়ে। পাথরের ওপর ছায়া পড়েছে। উচ্চতায় সাড়ে পাঁচ ফুটের মতো।

সামান্য ঝুঁকে আছে। রোমশ শরীর। পরনে চামড়ার পোশাক। তানভির ফিসফিস করে বলল, নিয়ানডার্থাল! মেরুদন্ডে শীতল আতঙ্কস্রোত টের পায় রনি। ঝুমুর মুখে হাত চাপা দিয়েছে।

ওর গলায় ঝোলানো সনি সাইবার-শটটা তুলে ছবি তুলতে যাবে-নিয়ানডার্থাল ঝুঁকে একটা পাথর তুলে নিল হাতে। ভোঁতা পাথর। হঠাৎ ডান দিক থেকে টুক টুক টুক ... টুক টুক টুক শব্দ ভেসে এল। সেই শব্দ শুনেই কিনা কে জানে - নিয়ানডার্থালটা চোখে পলকে পাথর টপকে অদৃশ্য হল। রনি বলল, ছোট্ট বসন্তবাউরির ডাক।

চারিদিকে চেয়ে তানভির বলল, হ্যাঁ। কিন্তু নিয়ানডার্থালটা ভয় পেল কেন? হঠাৎ ডানদিকে মচমচ শব্দ হল। কার যেন পায়ের শব্দ মনে হল। ওরা চমকে তাকিয়ে দেখল মিনহাজ ভাই। শীর্ণ লম্বা।

একমাথা কোঁকড়া চুল কাঁধ অবধি নেমে এসেছে। চোখে চশমা। ফরসা। লম্বা মুখটিতে খোঁচা খোঁচা দাড়ি। ঘন মোচ।

পরনে সবুজ হাফশার্ট। কালো প্যান্ট। মিনহাজ ভাই কে কেমন ক্লান্ত দেখাচ্ছে। মিনহাজ ভাই! মিনহাজ ভাই ওদের দেখে হাসলেন। চাঁদের আলোয় সে হাসি মলিন দেখাল।

তোমায় ফোনে পাইনি। কেন? বিপদে পড়েছিলাম। বিপদ মানে? বলছি। তোরা নিয়ানডার্থাল দেখে অবাক হয়েছিস, না? বাহ্ । অবাক হব না মানে! বলে ঝুমুর জিজ্ঞেস করে, তোমার কি বিপদ হয়েছে? আর বলিস না।

কাল বিকেলে তোকে ফোন করার পর এখানে এসেছি। হঠাৎ বিএসএফ এসে আমাকে ঘিরে ধরল। তারপর ওদের ক্যাম্পে ধরে নিয়ে যাতা প্রশ্ন শুরু করল। বললাম আমি বিজ্ঞানী। ওরা বিশ্বাস করে না।

কাল সারারাত আর আজ সারাদিন আটকে একটু আগে ছাড়ল। ক্যামেরা রেখে দিল আর এখান থেকে আমাকে চলে যেতে হবে বলল। ওহ্ । রনির চোখমুখ কুঁচকে যায়। ওদের ক্যাম্প তো কাছেই।

দুপুরে ক্যাম্পের টিনের চালা দেখেছিল। এখন কি করবে? বলছি। আয়। বলে মিনহাজ ভাই হাঁটতে থাকেন। ওরা হাঁটতে থাকে।

গাছপালার ফাঁকে গুহা চোখে পড়ল। গুহামুখটি বেশ বড়। ভিতরে কেমন বাসী মাংসের গন্ধ। ঝুমুরের শরীর সামান্য গুলিয়ে ওঠে। ঝুমুর মিনহাজ ভাইয়ের পাশে হাঁটছিল ।

ফিসফিস করে বলল, নিয়ানডার্থাল এর ব্যাপারটা তুমি জান। না? হ্যাঁ। জানি। ওদের সঙ্গে আমার সর্ম্পক ভালো। ওদের ভাষাও শিখছি।

আজ তাহলে নিয়ানডার্থাল টাকে তুমিই সঙ্কেত পাঠিয়ে সরে যেতে বললে? হ্যাঁ। বললাম যে এদের আমি চিনি। তাই বলে বসন্তবাউরি পাখির ডাক? প্রাণি জগতের ভাষা সীমাবদ্ধ। এই জগতে একটা শব্দের অনেক রকম মানে থাকে। গুহার ভিতরে ওরা মাংস পোড়া গন্ধ পাচ্ছিল।

গুহার ভিতরে আগুন জ্বলেছিল। ওখানে পৌঁছনোর পর ওরা তিনজনই থমকে গেল। আগুনের কুন্ডলী ঘিরে নিয়ানডার্থালরা বসে আছে। সংখ্যায় তিরিশ- চল্লিশ জন হবে। তারা হাত নেড়ে নেড়ে কথা বলছে।

দেয়ালে তাদের ছায়া পড়েছে। পরনে চামড়ার পোশাক। কয়েক জনের গলায় আর কানে মাটির গয়না। কোলে শিশু -নিয়ানডার্থাল। এদের নিয়ানডার্থাল - নারী বলে মনে হল।

অমৃণ মেঝের ওপর কতগুলি মাটির হাঁড়ি পড়ে আছে। তার হাড়ের স্তূপ আর পশু চামড়া। পশুর মাথার খুলিও রয়েছে । কয়েকজন নিয়ানডার্থাল কী একটা প্রাণি কাটা মাংসের টুকরো ছিড়ে ছিড়ে আগুনে ফেলছে। মিনহাজ ভাই বলল, নিয়ানডার্থাল সামাজিক।

দলবদ্ধ হয়ে থাকে। ওদের চিন্তাভাবনায় বেশ উন্নত। ধর্মের প্রাথমিক ধারণা ওদের মধ্যে ছিল। এদের সঙ্গে মিশে আমি যা বুঝেছি, তা হল, প্লাইস্টেসিন যুগে যুগ থেকেই নিয়ানডার্থাল রাজাকান্দিতে আছে। ওরা এখানেই থাকবে।

আমি ওদের কথা প্রাণিবিজ্ঞানীদের জানাব না। তোমার সঙ্গে কী ভাবে নিয়ানডার্থালদের এত ভাব হল? বছর খানেক আগের কথা। হামহাম ঝরনার কাছে কালিবাঁশের জঙ্গলে একটা নিয়ানডার্থাল আহত অবস্থায় পড়েছিল। ওর ঘাড়ে গুলি লেগেছিল। মে বি চোরাচালানি অর ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী।

তারপর ওকে ট্রিটমেন্ট করে সুস্থ করে তুলি। পরে সেই আমাকে এখানে নিয়ে এল। ওর গ্রুপের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিল। ওদের সঙ্গে আমার সর্ম্পক ভালো। তোরা একটু দাঁড়া।

আমি আসছি। বলে মিনহাজ ভাই নিয়ানডার্থাল দের কাছে চলে গেলেন। নিয়ানডার্থালরা মিনহাজ ভাই কে দেখে উঠে দাঁড়াল। ওরা যে মিনহাজ ভাই কে গভীর শ্রদ্ধা করে তা বোঝা যায়। মিনহাজ ভাই একটু পর ওদের কী সব বলে ফিরে এলেন।

ওদের তুমি কি বললে? গুহামুখের দিকে যেতে যেতে মিনহাজ ভাই বললেন, ওদের বললাম বি এস এফ এর বাড়াবাড়ির কথা। ওরা এখন বিএসএফ ক্যাম্প আক্রমন করতে যাবে । বিএসএফ এর সদস্যরা ভয়ানক কুসংস্কারগ্রস্থ। এতগুলি নিয়ানডার্থাল একসঙ্গে দেখে তারা আর এ জীবনেও এদিকে ঘেঁষবে না। জোস! তানভির বলে ওঠে।

রনি জিজ্ঞেস করল, আচ্ছা, মিনহাজ ভাই । এখানকার মানুষ যে হামহাম ঝরনার অপদেবতা কিংবা ময়দানবের কথা বলে সেটা কি আসলে নিয়ানডার্থাল ? হুমম। কেবল আজকের না আজ থেকে তিন হাজার কি দুই হাজার কি এক হাজার বছর আগেকার স্থানীয় লোককাহিনীতে যে ময়দানবের কথা আছে তাও ওই নিয়ানডার্থাল। রনি বলল, বুঝলাম নিয়ানডার্থাল এর ভয়ে বিএসএফ আর এদিকে ঘেঁষবে না। কিন্তু হামহাম ঝরনা দেখতে বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের পর্যটকেরা আসছে।

তাদের কী হবে? মিনহাজ ভাই হেসে বললেন, নিয়ানডার্থালরা পাতার ফাঁকে ওদের দিকে উঁকি দেবে। আর একটু ভয় দেখাবে। এটুকু অধিকার ওদের আছে। আফটার অল এটা ওদেরই রাজ্য। ওরা হেসে উঠল।

গুহার বাইরে অপার্থিব পূর্ণিমার আলোয় ভেসে যাচ্ছিল। নির্জন রাত্রির স্তব্দতা ভেঙে ছোট্ট বসন্তবাউরি ডেকে ওঠে । টুক টুক টুক ... টুক টুক টুক ... টুক টুক টুক ... উল্লেখ্য: নিয়ানডার্থাল সম্বন্ধে নানান তথ্য ও তত্ত্ব দিয়ে সাহায্য করেছেন ব্লগার সুমন সোহরাব। হামহাম ঝরনা এবং রাজকান্দি রিজার্ভ ফরেস্ট সম্বন্ধে প্রিয় ব্লগার দুখী মানবের নীচের অসাধারণ এই পোস্টটি না পড়লে এই গল্পটি লেখা সম্ভব হত না। Click This Link এই গল্পটি লিখতে আরও যেসব পোস্ট সাহায্য করেছে।

Click This Link Click This Link Click This Link তথ্য ও ছবি দিয়ে সাহায্য করার জন্য আমি সুমন সোহরাব, দুখী মানব, মেঘনা পাড়ের ছেলে, সরব এবং ধূসরধ্রুব কে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.