গত কয়েক দিন থেকে ফেসবুক, ব্লগ ও পত্রিকা জুড়ে দেশের একমাত্র স্বীকৃত সোয়াম্প ফরেস্ট (জলের জঙ্গল) রাতারগুল ফরেস্টকে নিয়ে কথা হচ্ছে। সিলেটের সন্তান হিসাবে আমরা ভার্সিটির বন্ধুরা সিধান্ত নিলাম আমরা ঐ জায়গাতে ঘুরতে যাব।
তাই গত শনিবার আমরা ৫ জন বন্ধু ঐ জায়গাটা ঘুরে আসলাম। আর এই ভ্রমন অভিজ্ঞতা নিয়ে আজকের এই ব্লগ পোস্ট।
রাতারগুল ফরেস্টটি সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার, ফতেহপুর ইউনিয়ন এ অবস্থিত।
বিভিন্নভাবে এই জঙ্গলে যাওয়া যায়, তবে সবচেয়ে সহজ হল সিলেট শহরের আম্বরখানা থেকে সিএনজি বা অন্য কোন যানবাহন নিয়ে যাওয়াটা। আপনাকে সাহেব্বাজার (কারন চৌমুহনী বাজার অনেকে চিনবে না) যাওয়ার জন্য গাড়ি ভাড়া করতে হবে। কিন্তু আপনাকে যেতে হবে চৌমুহনী বাজার বা তার চেয়ে একটু সামনে শ্রিঙ্গি পর্যন্ত।
এইটা চৌমুহনী বাজার, রাতারগুল বনের আগে সর্বশেষ বাজার।
ঐ বাজার থেকে মাত্র ২ কি,মি দূরে শ্রিঙ্গি।
কিন্তু রাস্তাটি কাচা হওয়ার কারণে শ্রিঙ্গি পর্যন্ত গাড়ি নাও যেতে পারে। শ্রিঙ্গি হল জঙ্গলের এক প্রান্ত, যেখানে ভাড়া করার জন্য নৌকা পাওয়া যায়।
এই ছবিটা নৌকা ঘাটের পাশ থেকে তোলা (ব্লগারের ছবি এইখানে নেই), ভুলে নৌকা ঘাটের ছবি তোলা হয়নি। ঐ জায়গায় হস্ত চালিত ও ইঞ্জিন চালিত নৌকা পাওয়া যায়। আমরা সারা দিনের জন্য ৩০০ টাকা দিয়ে হস্ত চালিত নৌকা ভাড়া নেই।
এই খালের মধ্যদিয়ে আপনাকে নৌকা নিয়ে আগাতে হবে।
এইটা খাপনা নদী, খালটা ঐ নদীর সাথে যুক্ত হয়েছে। আবার খাপনা নদীটা গোয়াইন নদীর সাথে যুক্ত হয়েছে।
(গোয়াইন নদীর এক পাশ থেকে বনের একাংশ)
বনবিভাগের অফিস, এখান থেকে বনে ঢোকার জন্য অনুমতি নিতে হবে। কিন্তু কর্মকর্তাদেরকে ঐ জায়গায় নাও পেতে পারেন।
তাতে আপনাকে নদী ধরে সামনে আগাতে হবে। বনে ঢোকার আগে যেকোনো জায়গায় পেয়ে যেতে পারেন।
এইটা মটরঘাট বাজার। বনের পাশে একমাত্র বাজার, তবে ঐ জায়গায় তেমন কিছু পাওয়া যায় না। সাহেব্বাজার থেকে চৌমুহনী যাওয়ার আগে একটি রাস্তা আছে, এইটা দিয়ে আপনি মোটরঘাট বাজারে আসতে পারে, কিন্তু ঐ জায়গায় ভাড়া নেওয়ার জন্য নৌকা পাওয়া যায় না।
বনবিভাগের মামারা, ওদের দাবী ছিল ৩০০ টাকা, তয় ১৫০ টাকা উৎসুক দিয়ে আমাদের অনুমতি নিতে হল।
অনেক জায়গা দিয়ে বনে ঢোকা যায়। তবে আমরা এই জায়গা দিয়ে বনে ঢুকে ছিলাম। বনের ভিতর আলো আধারের লুকোচুরি
বনের ভিতর এই রকম ছবির মত সুন্দর দৃশ্য দেখতে পাবেন। তবে এই গাছ গুলতে চড়তে না যাওয়াই ভাল, সাপেরা সাধারনত এই গাছগুলোতে থাকে।
একজন বানর মামার সাথে দেখা হয়ে ছিল। তয় ছবি তুলার আগেই উনি পালিয়ে জান।
জেলেরা মাছ ধরতে ব্যস্ত
এই রকম ঘন ঝোপঝার আপনার চলার পথকে রুদ্ধ করে দিবে
বনের ভিতর এই রকম বিলের দেখা মিলবে
বিলের মধ্যে শাপলা ফুলের গাছ
পানির নিচের লতাপাতা জাতীয় গাছগাছালি
শেষ বিকেলে শান্ত বিলের দৃশ্য
যে মাঝি মামাকে নিয়ে সারা দিন ঘুরলাম। উনার ছবিটা না দিলে ক্যামনে হয় (নিতান্ত সাদাসিধে মনের মানুস)
এই বনের সবচে সুবিধা হল, নৌকা থেকে সারা বন ঘুরে দেখা যায়। তবে বেশি পানি থাকার সময় যাওয়াটাই ভাল।
পানি একটু কম থাকার কারণে আর গভীর বনে যেতে পারি নাই। আর আম্বরখানা থেকে চৌমুহনী পর্যন্ত যেতে প্রায় ৩০ মিনিট এর মত লাগবে।
পরিশেষে বলব, সিলেট থেকে সবচে কাছের অতি সুন্দর প্রাকিতিক জায়গা এই রাতাগুল জলের জঙ্গলটি।
বিঃ দ্রঃ বানান, ভাষাগত ভুলগুলো ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।