আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আইছিরে আইছি, ঈদ কইরা আইছি, কেডা কেমুন ঈদ করেছ তাড়াতাড়ি কও, নইলে কিলের সাথে খামছি ফিরি[/sb]

আমি সুমাইয়া বরকতউল্লাহ। ছাত্রী। লেখালেখি করা আমার ভীষণ পছন্দ। আমি ছড়া, গল্প লিখি। পত্রিকায় নিয়মিত লিখি।

লেখালেখি করে বেশ কয়েকটা পুরস্কারও পেয়েছি। শিশু অধিকার রক্ষায় বিশেষ অবদান রাখার স্বীকৃতি স্বরূপ (প্রিণ্ট মিডিয়া) পর পর ৩ বার জাতিসংঘ-ইউন কিযে আনন্দ আর মজা হয়েছে এবারের ঈদে বলে শেষ করা যাবে না। বুঝছ? সবার সঙ্গে আনন্দ করে বিদায় নিয়ে যখন ফিরে আসছি তখন অনেকের চোখে ছিল পানি। আমার চোখেও পানি। ঈদের আনন্দের স্মৃতিগুলি আমার মনে অনেকদিন বেঁচে থাকবে।

খুব হই চই করে সারা পাড়া ঘুরে বেড়ালাম। আমরা বারো তেরোজন মেয়ে। সবাই সবার বাড়িতে বেড়ালাম। বড়োলোকের ঘরে অনেক আইটেমের খাবার আর অসম্ভব ফূর্তি, হইহল্লা। সবচেয়ে আনন্দ পেলাম ছোট ছোট ঘরে গিয়ে।

তারা আমাদের খাওয়ানোর সাথে অনেক ভালোবাসা আর আদর দিয়েছে। তাঁদের আন্তরিকতায় আমি মুগ্ধ। ঘরগুলো ছোট ছোট ভালোবাসায় ভর্তি বড়ো বড়ো ঘরে দেখি আছে খালি ফূর্তি আমরা জোলাপাতি (পিকনিকের মতো) আর পলাপলি খেলেছি। নোডল্স, খিচুড়ি, মুড়ি-চানাচুর ইত্যাদির জোলাপাতি। চাঁদা তুলে করেছি এসব আয়োজন।

আমরা যেমন পারি তেমন রেধেছি। লবণ কম হলেও বলেছি, দারুন টেষ্ট! স্বাদ না হলেও বলেছি, এমন মজার খাবার জীবনেও খাইনি। আসলে আনন্দটাই বড় কথা। আমরা যখন ভেতরের উঠোনে পাটি বিছিয়ে বসে মজা করে গল্প করছি তখন এ বাড়ি থেকে ও বাড়ি থেকে বুল ভর্তি পিঠাপুলি আসতে লাগল। তখন আমরা খাবলা-খাবলি করে খেয়ে ফেলতাম।

কারো মুখ থেকে টেনে নিয়ে খেয়ে ফেলতাম। আর মিঠাই মাখা হাতটা চুরি করে অন্য কারো জামায় মুছে ভালো মানুষটির মতো বসে থাকতাম। টের পেলে আন্দাজে-মান্দাজে কিল আর খামছি। রাতে আমরা বসিয়েছি গল্পের আসর। আমরা সবাই মজা করে গল্প করেছি।

হাসির গল্প। এমন সময় আশপাশের কয়েকটা ভাইয়া এলো। ওরা ক্যামনে যে কথা বলে শুনলে রাগও উঠে আবার হাসিও পায়। তারা আমাদের গল্পের আসরে এসে বলে, এহ্, ইত্তা কোনো গল্প অইল? খালি মিছা কতা। এত্তে বালা গল্প আমরা পত্যেকদিনই করি।

আর আমগোর গল্প হুনলে তো তোমরা পাগল অইয়া যাইবা গা। আর খালি কইবা, আরেকটা হোনাও না ভাইয়া, আরেকটা হোনাও না। অনুরোধ করলে এহন একটা কইতে পারি গল্প। হোনবানি? আমি আনন্দে বললাম, আচ্ছা ভাইয়া একটা গল্প শোনাও তো এখন, দেখি কেমন গল্প বলতে পারো তুমি? ওম্মা আমার চাচাতো বোন তানজিয়া আমার মুখটা আরেকদিকে ফিরিয়ে দিয়ে বলে, সুমাপু, জীবনেও এই ছেরাগর গল্প হোনবা না। পরথম পরথম বালা কতা দিয়া গল্পডা শুরু করবে, পরে গল্পের এ্যন্টিনাডা ঘুরাইয়া দিবে আরেক দিকে।

এই কাইল্লা লাম্বা একটা ছেরা দেকতাছ না, যেই শয়তান ইডা। তার কথা শুনে ছেলেরা রাগের চোটে বলতে লাগল, তরা আমগর লগে সবসময় খারাপ ব্যবার করছ কেন? তগর লগে গল্প করতে আমগর এত ছেকা না। এত ফেরাই দেহাছ কিয়ের লাইগ্যা, হে? তানজিয়া বিছার মতো লাফিয়ে উঠে মুখ চোখা করে বলে, যাও এহান থেকে। শরম নাই তোমগর? ছেরাগোর লগে আমরা গল্প করতাম কেরে। দেখতাছ না আমরা আমরা যে গল্প করতাছি।

ছেঁরাপাইন্তের গল্প হোনার এত দরকার নাই আমগর। আমরা তোমগর গল্প হুনতে যাই কোন? আমগর পেটেই গল্পে ভর্তি। ছেলেরা জেদ করে বলল, আইচ্ছা আমরা যাইতামনা এহান থেইকা। এহানে খারাইয়া তোমগর গল্প হুনমু। এহন কও গল্প।

আয় হায় এখন না কারো মুখ থেইকা আর গল্প বারয় না। আমারও না। খালি ফিসফাস। পরে দাদীর কথা বলায় এরা চলে গেছে, এমুন! পরে জোলাপাতির খাবার আমাদের ভাইয়েরা চুরি করে খাওয়া শুরু করে দিল। আমরা তাদের হাতে নাতে ধরে আচ্ছা রকম পিটনী দিয়েছি।

খামছিও দিয়েছি। এমন বেহায়া ভাইয়ারা কিল খামছি খাইল কিন্তু খাওয়া ছাড়ল না। পরে ভাইয়ারা আমাদের সেভেন আপ আর দই খাইয়েছে। অনুষ্ঠান করেছি। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

সাধারণ জ্ঞানের অনুষ্ঠান। পুরস্কারও দিয়েছি। মজাই মজা। বৃষ্টির পানিতে গোসল করার আনন্দই আলাদা। হাঁসের মতো তইতই পঁইপঁই।

কয়েকজনের ঠাণ্ডা লেগে গেল। আমারও। আনন্দের ঠেলায় ঠাণ্ডা-জ্বর পালিয়েছে। আমরা সবাই সুস্থ। ঈদের আনন্দ ঈদের স্মৃতি আমার মনে অনেকদিন থাকবে।

কিছু কিছু আনন্দকথা এখানে শেয়ার করলাম। বাকিগুলো আমার মনে মনে আছে। এহ সব কথা বলব কেন? তোমাদেরটা আগে শুনে নেই তারপর। এবার ভালয় ভালয় তোমাদের ঈদের আনন্দের খবরগুলো জানাও। না জানালে একটা কিলের সাথে একটা খামছি যে ফিরি দিমু এতে কোনো সন্দেহ নাই।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।