নীল পাগলের দেশ থেকে
ভারত মহাসাগরে যতগুলো দ্বীপরাষ্ট্র রয়েছে তার মধ্যে আফ্রিকা মহাদেশের শক্তিশালী রাষ্ট্র মাদাগাস্কার অন্যতম। আয়তন ৫ লাখ ৮৭ হাজার ৪১ বর্গ কি মি. লোকসংখ্যা প্রায় ২ কোটি। মাদাগাস্কার সবচেয়ে বেশি বিখ্যাত এর অসাধারণ আর অদ্ভূতুড়ে জীববৈচিত্র্যের কারণে। অসংখ্য প্রাণী আর উদ্ভিদে ভরপুর এ দ্বীপটির জীববৈচিত্র্যের কথা শুনলে অবাক হওয়াটাই স্বাভাবিক। আরো বেশি অবাক হবার মত কথা হল যে , মাদাগাস্কারের জীবজন্তুগুলোর ৮০ ভাগই পৃথিবীর আর কোথাও পাওয়া যায় না।
অর্থাৎ কিনা এসব জীব দেখতে হলে মাদাগাস্কারেই যেতে হবে। আর এরকম হওয়ার কারণ হচ্ছে দেশটির ভৌগোলিক বৈচিত্র্য।
কেমন সেই বৈচিত্র্য? দেশটির পূর্ব এবং মধ্য-দক্ষিণে আছে রেইন ফরেস্ট। আবার পশ্চিমে আছে ড্রাই ফরেস্ট। আবার একই দ্বীপে দুই বনের পাশে দক্ষিণদিকেই আছে মরুভূমি! এমন দ্বীপ আর আছে কোথাও? আর এই দ্বীপে যেসব প্রাণীরা থাকে, তারা আর কোন দ্বীপেই বা গিয়ে থাকতে পারবে? মাদাগাস্কারে প্রায় ৬০০ প্রজাতির জীব আছে।
জীব বলতে আবার শুধু পশু-পাখি আর পোকামাকড় আর মাছ নয় , জীব বলতে কিন্তু গাছপালাকেও বোঝানো হচ্ছে।
এই দ্বীপের ৬০০ প্রজাতির জীবের মধ্যে নানারকম গাছপালা আছে ৩৮৫ প্রজাতির, কীটপতঙ্গ আছে ৪২ প্রজাতির, মাছ আছে ১৭ প্রজাতির, উভচর প্রাণী আছে ৬৯ প্রজাতির, সরীসৃপ আছে ৬১ প্রজাতির আর স্তন্যপায়ী প্রাণী আছে ৪১ প্রজাতির।
বিজ্ঞানীদের হিসাবমতে, মাদাগাস্কারে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ২ লক্ষ প্রাণী এবং গাছ আছে, যার মধ্যে প্রায় দেড় লক্ষ প্রজাতিই পৃথিবীর অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। এদের মধ্যে রয়েছে প্রায় ১৫ প্রজাতির লেমুর, ৩৬ প্রজাতির পাখি এবং আরো অনেক অদ্ভূত অদ্ভূত সব প্রাণী। আবার মাদাগাস্কারের অসংখ্য ব্যাঙের মধ্যে শতকরা ৯৫ ভাগই শুধু মাদাগাস্কারেই পাওয়া যায়।
তবে অন্য কোথাও খুঁজে পাওয়া না গেলেও এসব প্রাণীদের কিছু কিছু জাত ভাই অবশ্য দক্ষিণ আমেরিকা আর দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে পাওয়া যায়।
এবার আসা যাক মাদাগাস্কারের সাপদের কথায়। নাম শুনলেই তো অনেকের গা শিরশির করে ওঠে, এমনকি আমার নিজেরও! অনেক সাপ কিন্তু এত্তো সুন্দর, যে দেখলে চোখ ফেরানো যায় না। যাই হোক, মাদাগাস্কারে সাপ আছে মোট ৮০ প্রজাতির। তবে এদের কোনোটাই বিষাক্ত তো নয়ই, ভয়ংকরও না।
আসলে যে প্রজাতির সাপগুলো বিষাক্ত হয়, এই যেমন গোখরো, মাম্বা, ভাইপার র্যাটল স্নেক, এসব সাপ মাদাগাস্কারে থাকেই না।
বোয়া আর ক্লুব্রিডস সাপই এখানে বেশি পাওয়া যায়। একমাত্র বিষাক্ত সাপটির নাম হচ্ছে ‘রেয়ার-ফেংড’ যদিও এই সাপ কামড় দিলে মানুষ মারা যায় না, বড়জোর শরীরের কিছু অংশ একটু অবশ হয়ে যায়। সে আর এমন কী! আমাদের গোখরো এক কামড় দিলেই তো নির্ঘাত মরণ। তবে সমুদ্রে দু’ধরনের খুব বিষাক্ত সাপ আছে।
এদের একটির নাম হচ্ছে ‘হুক-নোজড সি স্নেক’ আর অন্যটি হচ্ছে ‘ইয়েলো-বেলিড সি স্নেক’।
ভালো লাগলে জানাবেন, মাদাগাস্কার সম্পর্কে আরো কিছু পোষ্ট পেলে পরবর্তিতে জানাবো, কেউ আবার ভাববেন না যে আমি নিজে মাদাগাস্কার গিয়েছি, এবং ছবি তুলেছি । কারণ আমার লেখা নিয়ে আজকাল অনেক বিতর্ক হচ্ছে, সব তথ্য ও ছবি ইন্টারনেটের বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগৃহীত ।
ঈদের শুভেচ্ছা সবাইকে । ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।