জোরে শব্দ ভালো লাগে না । আজ দুপুর ১২ঃ৩০ নাগাদ বসুন্ধরা সিটির উল্টো দিকের রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম হাতিরপুলের দিকে। প্রায় ১৫ ফিট চওড়া রাস্তার ডানপাশের ফুটপাথ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ উপর থেকে কিছু পড়ার ‘ধপ’ শব্দ পেলাম ঠিক আমার ৪-৫ ফিট দূরেই। ব্যাপার কী বুঝতে গিয়ে দেখলাম, এটা একটা করাত (Hand saw)।
তখন দেখলাম, এই রাস্তায় কাজ চলছে একটা ১০-১৫ তলা ভবনের।
ওটার ৯ তলা থেকেই পড়েছে করাতটা। আশেপাশে তাকিয়ে দেখলাম, রাস্তার চলন্ত রিক্সা বাদে আমার খুব কাছাকাছি কেউ নেই। যে দ্রুতি নিয়ে হাঁটছিলাম, আমি যেখানে ছিলাম আর যেখানে ওটা পড়েছে সে জায়গাটুকু (৫ ফিট) যেতে তখন আমার সর্বচ্চ ১ সেকেন্ড লাগত। তারমানে হয়তো মাত্র ১ সেকেন্ডের জন্য ওটার নিচে পড়া থেকে বেঁচে গেছি। কেন জানি ভয়টা ঠিক তখন পেলাম।
তবু কিছুক্ষণ উপর দিকে তাকিয়ে কী যেন বোঝার বা বলার চেষ্টা করলাম। কাজে রত শ্রমিকগুলোর প্রতিক্রিয়া দেখতে চাইলাম। নাহ, ওদের কোন আফসোস মনে হল না কাঠ কাঁটার একটা করাত প্রায় ১০ তলা উপর থেকে ব্যস্ত রাস্তায় চলন্ত মানুষের উপর পরে যাওয়ায়। এদিকে আমি উপর দিকে তাকিয়ে আছি আর চলন্ত-হাটন্ত লোকজন আমার দিকে তাকিয়ে আছে। একটু পর এক রিক্সাচালক, ওটা যখন পড়ল তখন আমার সামনে থেকে আসছিলো সে, করাতটা উঠিয়ে নিয়ে গেল বেশ রেগেমেগেই।
আর আমিও হাঁটা শুরু করলাম আমার পথে।
কীইবা করার ছিল আমার ! প্রতিবাদ করতে গেলে পড়তে হত ভবন-মালিক বা শ্রমিকদের রোষে যেটা নিত্ত্য ঘটনা আমাদের দেশে। ওরা বলে-আমরা দেখে হাঁটি না কেন রাস্তা দিয়ে !
এমন না যে, বিল্ডিং থেকে নির্মাণ সামগ্রীর পতন ঠেকাতে কিছু দেওয়া হয়নি। টিন-জালের বাঁধ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল-রাস্তার যে পাশে বিল্ডিংটি আমি তার বিপরীত দিকের রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলাম।
আর ওই বস্তুটা রাস্তার ওই পাশ থেকে এই পাশের ফুটপাতে এসে পড়ল। তবু কি আমাদের দোষ-কেন আমরা দেখে আর শুনে রাস্তায় হাঁটি না ?
অথচ গত বছর এখান থেকে মাত্র কিছু দূরের এক নির্মাণাধীন ভবন থেকে মাথায় ইট পড়ে মারা গেছেন এক যুবক। Click This Link
তাই জানতে ইচ্ছে করে- আর কোন্ কোন্ জায়গা আমাদের জন্য অনিরাপদ। বেডরুম তো অনেক আগেই অনিরাপদ বলে গন্য হয়েছে (কয়েকদিন আগেও এক ব্যবসায়ী খুন হয়েছেন তার বেডরুমে)। মেইন রোড এক্ষেত্রে বেশ প্রশংসার (?) দাবীদার।
তাই বলে কি গলির ফুটপাথও ??
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।