আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কুয়াকাটার সৈকতে পিতলের প্রলেবে সাম্পান নৌকা

মানুষের উপকার কম করলাম না,পরিনামে খেলাম শুধু বাঁশ। তবু হাল ছাড়ি নাই....উপকারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার সৈকতে বালু সরে জেগে ওঠা পিতলের প্রলেব সাম্পান নৌকা দেখতে হাজার হাজার পর্যটক ভিড় করছে। এমন একটি প্রতিবেদন প্রকাশের পর বাংলাদেশ প্রত্মত্বাত্তিক দপ্তরের খুলনা বিভাগের একটি টিম সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কুয়াকাটার ঝাউবন সংলগ্ন সৈকতে সাগরের ঢেউয়ে বালু সরে প্রায় ৬২ হাত লম্বা ও ১৬ হাত চওড়া পিতলের প্রলেব সাম্পান নৌকা জেগে ওঠে।

এ ঘটনার পর পরই স্থানীয় সংবাদকর্মীরা প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। মঙ্গলবার বাংলাদেশ প্রত্মত্বাত্তিক দপ্তরের খুলনা বিভাগের সহকারী গভেষক মো.গোলাম ফেরদৌউসের নেতৃত্বে একটি টিম সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন। পরিদর্শকরা নিশ্চিত হয়েছেন সাম্পানটি শত শত বছরের পুরনো এবং এটি সংরক্ষনের জন্য পরবর্তীতে অন্য একটি বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধি দল অচিরেই কুয়াকাটা আসবেন এসব তথ্য দিয়েছেন কুয়াকাটা সী-বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিদারে আলম মোহাম্মাদ মাকসুদ চৌধুরী। পরিদর্শন টিম সরেজমিনে পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের জানিয়েছে , প্রত্মত্বত্ত বিভাগের উর্ধ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। প্রতিবেদন দাখিলের পর প্রত্মত্বত্ত দপ্তর সংরক্ষন করার বিষয় পদক্ষেপ নিবেন।

তারা জানান,এ সাম্পানটি যখন তেরী হয়েছে তখন স্ব-মিল (করাতকল ) প্রচলন ছিলনা। রাখাইনরা সেগুন কাঠ ও পিতলের প্রলেপ দিয়ে এ সাম্পানটি তৈরী করেছিল। স্থানীয় রাখাইন স¤প্রদায় তথ্য মতে জানা গেছে, প্রয় ২২৫ বছর পূর্বে বার্মার আরাকান রাজ্য থেকে রাখাইন স¤প্রদায় জাতিগত কোন্দলের কারনে ১৫০টি পরিবার রাতের আধাঁরে ৫০টি কাঠের নৌকা যোগে বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে প্রথমে পটুয়াখালী জেলার রাঙ্গাবালী ও কলাপাড়া উপজেলার কুয়াকাটায় এসে বন জঙ্গল পরিস্কার করে বসবাস যোগ্য গরে তোলে। পরে বরগুনা জেলার তালতলী এলাকার বিভিন্ন স্থানে বসবাস শুরু করেন। সেই সময়ের রাখাইনদের এ সাম্পান নৌকা হতে পারে বলে তারা জানান।

সাম্পানটি সংস্কার ও মেরামত করে কুয়াকাটা দর্শণীয় স্থানে সংরক্ষনের দাবী করে কুয়াকাটা রাখাইন যুব ফোরামের সভাপতি জোওয়েনমং। তিনি বলেন, আমাদের পূর্ব পুরুষরা এসব সাম্পানে করেই এসেছিলেন। মো.আব্দুল জব্বার (৫৪) সে পেশায় একজন জেলে। সাগরে মাছ ধরে এসেছে। এসময় তার সাথে আলাপ করলে তিনি জানান, এক সময় চাঁদ সওদাগর ও আমির সওদাগর ঝড়ের তান্ডবে সওদাগরী নৌকা সমুদ্রের তলিয়ে যায়।

সেই সওদাগরী নৌকাও হতে পারে। যা আস্তে আস্তে বালুর চরে পরিনত হয়। কালের বির্বতনের সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটা পূণরায় ভাঙ্গতে শুরু করায় বালু সরে এ সাম্পানটি জেগে উঠেছে। তিনি আরো বলেন, প্রায় ২০ বছর পূর্বে এমন একটি নৌকা সৈকতে জেগে উঠে ছিল। শুনেছি সেই সময় খাওয়ার পানি সংগ্রহ করতে সৈকতে কুয়া করার সময় একটি নৌকা দেখতে পায়।

সেই নৌকটির কাঠ ও মালামাল খুলে নেয়ার সময় ২ জন ব্যাক্তির মৃত্যু হয়েছে। এ ব্যাপারে কুয়াকাটা সী-বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভাপতি, পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিদারে আলম মোহাম্মাদ মাকসুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশ প্রত্মত্বাত্তিক দপ্তরের খুলনা বিভাগের একটি পরিদর্শন টিম প্রাথমিক পরিদর্শন করেছেন। অচিরে অন্য একটি বিশেষজ্ঞ দল সাম্পানটি সংরক্ষনের জন্য আসবেন বলেও তিনি জানিয়েছেন। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।