আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সিপ্পি আরসুয়াং অভিজান...(ছবি-ভিডিওসহ রিপোস্ট)

ভাবছি.. ব্যোম ভাষায় আরসুয়াং শব্দের অর্থ হল উঁচু স্থান। বেসরকারী তথ্য আড়াল করে মতবিরোধ থাকা সত্ত্বেও সরকার স্বীকৃত বাংলাদেশের দুই সর্বোচ্চ শৃঙ্গ তাজিনডং (৩১৭২?) ও কেওকারাডং (৩১৭১) তার আশে পাশে সঙ্গী সাথীদের সাথে প্রায় সমানে সমান অথচ রাওয়াংছড়ি থেকে পাঁইক্ষ্যাং পাড়ার দিকে কিছু দূর যাওয়ার পরই সিপ্পি আরসুয়াংকে (৩০২৮) দেখা যায় অসংখ্য সৈন্য সামন্ত, সভাসদ, উজির-নাজির নিয়ে দিগন্তের বুক চিড়ে সম্রাটের ন্যায় দাঁড়িয়ে থাকতে। BPSS ২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি অলাভজনক অভিযান সংগঠক সংগঠন। এখানে আছে অদ্ভুত রকম উদ্যমী সংগঠক এবং সুশৃঙ্খল ও সুসংঘবদ্ধ সদস্য বহুল অভিযাত্রী দল। BPSS (Boarding Para Shobuj Shongho) এর নাম করণ নিয়ে বেশ মজার কিছু পরিক্রমা রয়েছে, সেগুলো না হয় আজ বাদ থাক শুধু এটুকু বলা যায় যে থানচী আর তাজিনডং এর মধ্যবর্তী একটি দুর্গম মুরং আদিবাসী পল্লী হচ্ছে বোর্ডিং পাড়া, যার ভৌগলিক নান্দনিকতায় BPSS এর নীতি নির্ধারণী সকল সদস্যই বিমুগ্ধ।

সে যা-ই হোক BPSS এর এবারের মিশন “সিপ্পি আরসুয়াং”। এ আগ্রহীরা যোগাযোগ করে যে কেউই খুব সহজে BPSS এর সদস্য হতে পারেন। আর অভিযানে সঙ্গী হওয়ার জন্য প্রয়োজন শুধুই আত্মবিশ্বাস! সন্ধ্যা ৬:৩০। এমন মায়াবী পূর্ণিমা শেষ কবে দেখেছি কিংবা আদৌ কখনো দেখেছি কি না ভেবে এমন জ্যোৎস্না সুধা উপভোগ করা থেকে নিজেকে বঞ্চিত করতে চাই না। সাদী, অয়ন, সূজন, রণ নিশ্চয়ই এতক্ষণ রনিন পাড়ায় পৌঁছে থাকবে।

ভোরে রনিন পাড়া থেকে আরসুয়াং এর উদ্দেশ্যে রওয়ানা করার কিছুক্ষণ পরই সুমন ভাই এর পায়ের ব্যথা বাড়তে থাকে। আগের দিন রাওয়াংছড়ি থেকে ৯ ঘন্টায় পাঁইক্ষ্যাং পাড়া হয়ে রনিন পাড়ায় আসতে প্রায় ১৭ কি:মি: পাহাড়ী পথে হাটতে হয়েছে। রাতে বিশ্রাম নিয়ে আবার সকালেই আরসুয়ং এর পথে এই ছুটে চলা...। নাছরবান্দা পাভেল এর জন্যই কি সুমন ভাই রনিন পাড়ায় ফিরে গেল না? বলা মুশকিল। ওরা শম্ভুক গতিতে আসছে আর আমরা বাকীরা সিপ্পির তলদেশে ঝিরিতে অপেক্ষা করতে থাকলাম।

এখান থেকে আরসুয়াং এ উঠার তিনটি রাস্তা আছে। রাস্তা না বলে উঠার অবস্থা আছে বলাই ভাল। প্রথমটি বেশ সময় সাপেক্ষ, সিপ্পির উপড় দিয়ে সাইজাম পাড়ার রাস্তা ধরে মাটিভাঙ্গা পাহাড়ের চূড়ায় উঠে ডান দিকে বাঁশ কেঁটে কেঁটে পথ তৈরী করে যেতে হবে বেশ খানিক রাস্তা, মাঝে আরও একটা চূঁড়া পেরোতে হবে। দ্বিতীয় উপায় হচ্ছে ডানদিকে সরে যেয়ে সিপ্পির বুকের জঙ্গল, গাছ, বাঁশ কেটে চূঁড়ায় উঠা। এতে সময় কিছুটা কম লাগবে কিন্তু ভিষণ কষ্টসাধ্য ব্যাপার।

তৃতীয ও শেষ উপায় হচ্ছে সিপ্পির বুক চিড়ে যে ঝিরি নেমে এসেছে সেটা বেয়ে ওঠা। এটাকে ঝিরি না বলে ঝরণা বলাই ভাল। এই পথের নামটাও অদ্ভুত সুন্দর “মরন ঝিরি”। সকলে একত্রিত হওয়ার পর কিছু বুঝে উঠার আগেই দেখলাম আমাদের বাঁশ কাটার জন্য ভাড়া করা দুই ব্যোম আদিবাসী মরনঝিরি ধরে উঠা শুরু করেছে। জঙ্গল কম কাটতে হবে এজন্যই কিনা জানি না তবে আমাদের দফারফা সারা হওয়ার জোগার হল।

এমন আদিম ঝরণা। যদিও শীতকাল তবুও পানির প্রবাহ নেহাত মন্দ নয়। পাথরগুলো বার্ধক্যের সাক্ষী হয়ে কালো কুচকুচে হয়ে আছে। পাথরের খাঁজে খাঁজে কোথাওবা হাটু সমান পানি জমে আছে, লাঠি দিয়ে মেপে তবেই পা দিতে হচ্ছে। এমনই ঘন জঙ্গল যে সূর্যের সাধ্য কি ভেদ করে! পাথর ও গাছের শিকড় ধরে ঝুলে ঝুলে উঠছি।

আশপাশে ভাল করে চোখ বুলাচ্ছিলাম, শঙ্খচূড়ার জন্য আদর্শ জায়গা এটি। দুর্ভাগ্যই বলতে হবে আমাদের সাক্ষাত হয়নি। কিছু দূর যেতেই রশির ব্যবহার অবশ্যম্ভাবী হয়ে দাঁড়াল। মজাই লাগল Trekking করতে এসে Climbing করা হয়ে গেল। একটু এদিক ওদিক হলেই সোজা নিচে অপেক্ষমান পাথরের চাঁই-এ মাথা চূর্ণ-বিচূণ হয়ে যেত নিমিষেই।

যা-ই হোক এক সময় আমরা ঝরণা ছেড়ে ঝরণার ডান পাশ ধরে উঠতে থাকলাম। পাথরগুলো এতই আলগা যে শুধুই ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য ধরেছি, শরীরের ভর দিতে গেলেই পাথর সমেত খাদে পারতে হত। নিচে কত গভীর আন্দাজ করতে দেয়নি ঘন বাঁশঝার; মাটির দেখা পাওয়ার আগেই অসংখ্য বাঁশ/কঞ্চি উন্মুখ হয়ে ছিল এফোঁড়-ওফোঁড় করে ফেলতে। অতিরিক্ত ঝুঁকি হয়ে যাওয়াতে একসময় আবারও বেশ কয়েকটি স্থান উতরে যেতে হল রশিতে ঝুলে। রনি (টাকিলা) অসম্ভব সাহসিকতার সাথে নিজে ঝুকি নিয়ে রশি বেঁধেই চলছে।

এই ছেলেটা ভিষন অদ্ভুত। দুনিয়ার সবাইকেই সে যেকোনভাবে সাহায্য করার জন্য মরিয়া। যেন সাহায্য করাই তার পেশা! ভাগ্যিস ফিরতি পথে ঘুরা রাস্তায় ঝিরিতে পৌঁছে মরনঝিরি ধরে আবার কিছুদূর উঠেছিলাম পানি সংগ্রহ করার জন্য। এ ঝিরি বেয়েই আমরা উঠেছিলাম অথচ এখন এটাকে মনে হচ্ছে রূপকথার রাক্ষসপুরীর প্রবেশ দ্বার। ভয়ংকর সুন্দর বুঝি এমনই হয়! আবেগ সামলাতে পারিনি, পাথরে হেলান দিয়ে আধ-শোয়া হয়ে চোখ বুজতেই নিজের অস্তিত্ব হারালাম।

নিরবতার ক্যানভাসে অবিরত তুলির পরশ বুলিয়ে চলেছে ঝিরির কুলকুল শব্দমালা। দেহ ঘুমন্ত; আমার আমি আজ নির্ভার-অর্স্পৃশ্য, উড়ন্ত আমি যেন স্বচ্ছ-অর্দৃশ্য। অস্তিত্ব আমার দিগন্ত-জোড়া; দৃষ্টি আমার তীক্ষè-ছোরা! সাই করে এক ঝাঁক ফিনিক্স উড়ে গেল আমার গা ছুঁয়ে, ঐ যে সারি বেধে চলেছে এক দল মেডুসা। এক ফালি ফাঁপা ধূসর কুয়াশা। অনেক দূরের আরো দূরে এক বিন্দু রক্তিম আভা।

দশ দিকের জানালাতেই চাঁদ-কাস্তের মত বাঁকা। আচমকা ব্লেড দিয়ে পর্দা চিড়ে দিল ব্যাঙের গোঙ্গানী। মুহুর্তেই বাস্তবে ফিরে এলাম। মোটেই নিরাপদ জায়গায় নেই আমি। অন্ধকার হয়ে গেছে, আশ-পাশে কোথাও একটি ব্যাঙ সাপের আক্রমনের শিকার হয়েছে আর প্রচন্ড মশা-ম্যালেরিয়া আতঙ্ক।

ঝটপট এক বোতল পানি নিয়ে আবার চলতে শুরু করলাম। রনিনপাড়া এখনও প্রায় ৪০/৫০ মিনিটের পথ। জুমের উঁচু চূঁড়াটাতে উঠে একটু বসব ভাবছি। এমন দুর্গম পাহাড়ি জঙ্গলের পথে রাতে আমি একা হাটছি, যে পথে মাত্র আজ সকালেই প্রথম হেটেছি। শীতকাল হলেও শরীরের উত্তাপটা শীত অনুভূত হতে দিচ্ছে না।

পাহাড়ের খাজগুলো বরাবরই গুমোট। গায়ে শুধু হাফ হাতা “সিপ্পি অভিযান টি-শার্ট”। পেছনের সবার কথা ভাবছি। আমি যখন ওদেরকে ছেড়ে আসি তখন পর্যন্ত ৫ মিনিট পথ পাড়ি দিয়ে ওদের জন্য ১৫ মিনিট অপেক্ষা করতে হয়েছে। BPSS এর সদস্যদের ধৈর্যশক্তির প্রমান পেয়ে বুকটা আমার গর্বে ভরে গেল।

মাঝ রাতের আগে ওরা পৌঁছতে পারবে বলে মনে হয় না। পথের ধারে জঙ্গলে কতগুলো কলাগাছ বেশ জোরের সাথে নড়ে উঠতে দেখলাম, মনে হল কেউ যেন আছরে পড়েছে। থমকে দাড়ালাম; কিছুটা ভয়ই পেয়ে গেলাম; ভাল্লুক নয় তো? একটু পরই চাঁদের আলোয় দেখলাম বিশাল আকৃতির এক গয়াল বেরিয়ে গেল কলাগাছের সারি ছেড়ে। হিমালয়ের এই লেজে গত দুই/তিন দশক আগেও বোধ হয় প্রাণী বৈচিত্র্যের কোন অভাব ছিল না, অধিক হারে বন উজাড় করাতে খাদ্য শৃঙ্খল ধ্বংস হওয়াতেই অধিকাংশ প্রাণী সংরক্ষিত বনাঞ্চলে আশ্রয় নিচ্ছে, কিছু আবার সীমানা পেরিয়ে আরাকান ও মিজোরামেও পাড়ি জমিয়েছে। তবে আশার কথা হলো যে, এখানে বাংলাদেশী ভূখন্ডে এখনো প্রায় ১ লক্ষ ৯২ হাজার একর সংরক্ষিত বনাঞ্চল আছে।

বুনো হাতি নাইক্ষ্যংছড়ির দিকে সরে গেছে, বাকলাই সংরক্ষিত বনাঞ্চলে এখন ভাল্লুকের আনাগোনা বেশি তবুও খাবারের সন্ধানে এরা প্রায়ই জুমের ক্ষেতগুলোতে হামলে পড়ে। হরিণ এখনও সিপ্পি পাড়ার পাশের ছোট টিলাগুলো যে জঙ্গল সেখানে মাঝেমাঝে চোখে পড়ে। চিতাবাঘ এখন খুব একটা দেখা যায় না। বন্য শুকর এখনও যথেষ্ট পরিমানে আছে। জুমের চূঁড়ায় চলে এসেছি।

এখান থেকে আর্মি ক্যাম্পটি চোখে পড়ছে। ঘুরে সিপ্পি আরসুয়াং এর দিকে তাকাতেই দেখলাম ধূসর কালো হয়ে দাড়ানো সম্রাটকে। ওমা! এত দূরে কেন? “কেউ খাদে পড়ে যায়নি তো? এত সময় তো কোনভাবেই লাগার কথা না”। সাদীর উৎকন্ঠা যেন শেষ হচ্ছেই না। শেষ পর্যন্ত নিজেকে স্বান্তনা দিচ্ছে ‘ওরা যেন জুম ঘরে রাত কাটায়”।

রাত ১০টা পার হয়ে গেছে, দুশ্চিন্তা নিয়েই ‘সাদী স্পেশাল কাশ্মিরী চিকেন’ রান্না চলছে। ৪ কেজি ওজনের একটি খাসি সাইজের মোরগ জোগাড় করে দিয়েছিল আমাদের আশ্রয়দাতা মনা ব্যোম। দুশ্চিন্তা কাটেইনা; নামার জন্য আমরা যে রাস্তাটা ব্যবহার করেছি সেটার কিছু কিছু জায়গা কুয়াশাসিক্ত হয়ে প্রচন্ড পিচ্ছিল হয়ে ছিল। খাদের পাশে এমনই সরু রাস্তা যে দু’পা একত্রে রেখে দাঁড়ান সম্ভব নয়। আমিতো একবার পা পিছলে চিৎ হয়ে পড়ে জঙ্গল আঁকড়ে ধরে কোন রকম রক্ষা পেয়েছিলাম।

হাতের লাঠি ঠুকে মাটি নিশ্চিত করে অন্য হাতে জঙ্গল আঁকড়ে ধরে ধরে তবেই ঐ জায়গাটা উতরেছিলাম। ভুলে গিয়েছিলাম সাপের ভয়। খাদে পড়ে নিখোঁজ হওয়ার চেয়ে সাপের ছোবলে মৃত্যু উত্তম! অন্ধকার ঐ জায়গাটা টর্চ ছাড়া কিভাবে পেরিয়েছিলাম জানি না, সত্যিই আমি জানি না। তাও রক্ষা যে ওদের সাথে দু’টো টর্চ আছে। সারা দিন পেটে দু’কাপ কফি ও এক প্যাকেট বিস্কুট ছাড়া আর কিছুই পড়েনি তাই কোন মতে খাওয়া দাওয়া সেরে ওদের অপেক্ষায় অধীর হয়ে বসে থাকলাম।

ওদের সাথে কোন খাবার নেই, গরম পোষাকও নেই, জুম ঘরে তো থাকার প্রশ্নই আসে না। বড় কোন ঝামেলা হলে নিশ্চয়ই গাইডকে পাঠিয়ে সংবাদ দিত। তা-ও-বা কিভাবে সম্ভব? এই শ্বাপদ-সঙ্কুল জঙ্গলে গাইড-ই তো ওদের সবচেয়ে বড় ভরসা। তার উপর জুমের ফসল ঘরে উঠাতে মিজোরাম ও আরাকানের সন্ত্রাসী বাহিনীদের সন্ত্রাসবাদের পূর্ণ মৌসুম এটি। অপহৃত হল না তো আবার কেউ? ২:৫৫/১৫ই ডিসেম্বর ২০১০ শত বাধা সত্ত্বেও আমাদের সকলের পায়ের নিচে সিপ্পি আরসুয়াং।

ভালই লাগছে অভিযাত্রী দলের ১৩ জনই আরসুয়াং জয় করলাম। যে কোন ভাবে সিপ্পি জয় করা আসলে এমন কিছু নয় কিন্তু আমাদের এই অতিরিক্ত উচ্ছ্বাস মরনঝিরি ধরে সিপ্পি জয় করাতে। ব্যোম আদিবাসীদের সাথে কথা বলে মোটামুটি নিশ্চিত হলাম যে আমরাই প্রথম বাঙালি অভিযাত্রী যারা মরনঝিরি ধরে সিপ্পি আরসুয়াং জয় করেছি। চূঁড়া থেকে মেঘাচ্ছন্ন বিশাল ভারতীয় পাহাড় শ্রেণী দেখা যাচ্ছে। সিপ্পিপাড়া ও সাইজামপাড়া ঐ যে দেখা যাচ্ছে।

রাইক্ষ্যাং লেক পর্যন্ত একটা শ্রেণী বাদে পুরো জায়গাটাই ছোট ছোট টিলায় পূর্ণ। চূঁড়ায় বাঁশ কেঁটে সকলের একত্রে দাঁড়ানোর ব্যবস্থা করা হল। সারা রাস্তায় অয়ন ভিডিও চিত্র ধারণ করেছে, চূঁড়াতেও এর ব্যতয় ঘটেনি। সিপ্পির চূঁড়াটা অধিকাংশ সময়ই মেঘ পরিবেষ্টিত থাকলেও ভাগ্যদেবীর আশির্বাদে আমরা ফকফকা-তকতকাই পেলাম। শুকরিয়া আদায় ও চূঁড়া উপভোগ করা শেষে জঙ্গল পরিষ্কার করে করে চললাম মাটিভাঙ্গা পাহাড় চূঁড়া ধরে ফিরতি পথে।

পা এর আওয়াজ পেতেই ছুটে বের হলাম আমরা। সকল আশঙ্কা মিথ্যা প্রমানিত করে অবশেষে ওরা রনিন পাড়ায় ফিরল রাত যখন ১:১০। প্রত্যেকেই সীমাহীন ক্ষুধার্ত। সুমন ভাইতো মাটির উপর হাত পা ছেড়ে বসে আছে। রনি(জুবস) পুরো ঘটনা বর্ণনা করল যার সার সংক্ষেপ হলো, সুমন ভাই এর পা ব্যাথা চরম আকার ধারণ করাতেই এত দেরী।

এরপরই শুরু হয়ে গেল অভিযানের মহা আকর্ষন মেগা ভুরিভোজ। খেতে বসেও রনি(টাকিলা) ও পাভেল দুই বন্ধুর খোঁচাখুচি চলছেই, সারা রাস্তায় যে ওরা কি করেছে খোদাই মালুম। আমাদের গাইড এইজেস ব্যোম সদালপী একজন মানুষ। পাঁইক্ষ্যাংপাড়াতেই তার সাথে বিচ্ছেদ হয়ে গেল আমাদের। এই মানুষটা ৫ বছর শান্তিবাহিনীর সশস্ত্র কর্মী ছিল বিশ্বাসই হচ্ছে না।

একই পাড়ার কারবারীর ছেলে পিতর ব্যোম তো ‘Young Boam’ নামে একটা সংগঠন-ই দাঁড় করিয়ে ফেলেছে পর্যটন শিল্প গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে। সত্যিকার অর্থেই সাধুবাদ জানানোর মত উদ্যোগ। সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ফিরছি আমরা; হয়তো আবারও দেখা হবে-হয়তো হবে না। প্রতিবারই ফেরার পথে মন খারাপ হয়, যথারীতি এবারও হল। সন্ধ্যায় রাওয়াংছড়ি পৌঁছে চাঁদের গাড়িতে ২২ কি:মি: পথ পাড়ি দিয়ে বান্দরবন পৌঁছে ঢাকার বাস ধরলাম; আর মহাকাল মুঠোয় পুরে বেজার মুখে মন পা ঝুলিয়ে বসেই থাকল পাঁইক্ষ্যাংপাড়া ও রনিনপাড়ার মধ্যবর্তী বড় টেবিল পাহাড়ে...  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।