আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জামায়াতই আরব কূটনীতিকদের ....?

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব। ঢাকায় সৌদি ডেপুটি রাষ্ট্রদূতসহ তিন কর্মকর্তাকে মোবাইল ফোনে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে দূতাবাসের সাবেক অনুবাদককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার নাম আ ন ম আবদুর রশীদ (৫৬)। ২৯-জুন-২০১২ শুক্রবার রাতে রামপুরার বনশ্রীর বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। এ সময় তার কাছ থেকে হুমকি দেওয়ার জন্য ব্যবহূত মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়।

আবদুর রশীদকে গ্রেফতারের মাধ্যমে মার্চে সৌদি কূটনীতিক খালাফ আল আলি হত্যাকাণ্ডের রহস্যজট খুলতে পারে বলে মনে করছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির মুখপাত্র ও ডিবি পুলিশের উপ-কমিশনার মো. মনিরুল ইসলাম জানান, "খালাফ হত্যাকাণ্ডের পরপরই সৌদি দূতাবাসের তিন কর্মকর্তাকে হত্যার হুমকি দেওয়ায় বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রের সঙ্গে মনোমালিন্যের যথেষ্ট সম্ভাবনা ছিল। তাই বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে পুলিশের পাশাপাশি ছায়া তদন্ত শুরু করে ডিবি পুলিশ। " ঢাকা মহানগর ডিবি পুলিশের (উত্তর) উপ-কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে এ তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে এক অভিযানে আইসিটি অ্যাক্টস ২০০৬-এর ৫৭ (ক) অনুসারে রশীদকে গ্রেফতার করা হয়।

মোবাইলে মেসেজের মাধ্যমে হুমকি দেওয়ার বিষয়ে গ্রেফতারকৃত আ ন ম আবদুর রশীদ জানায়, ১৫ বছর চাকরি করার পর গত ২১ মার্চ তার চাকরি চলে যায়। রিলিজিয়াস অ্যাটাচের কারণে তার চাকরি চলে যায় বলে ক্ষিপ্ত হয়ে এই মেসেজ পাঠিয়েছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে তদন্ত শুরু হয় এবং তাকে সাসপেন্ড করা হয় বলে জানায় রশীদ। কিসের অভিযোগে তার চাকরিচ্যুতি সে বিষয়ে কোনো কিছু জানাতে অপারগতা প্রকাশ করে গ্রেফতারকৃত রশীদ। রশিদ পুরানো অপরাধী াগেও কারাগারে ছিল ও তার বিরুদ্ধে মামলা আছে।

দুটি মামলা ও জেলখাটার কারণ জানতে চাইলে রশিদ জানায়, বাসার পাশেই জামায়াত-শিবিরের অফিস রয়েছে। তাই গত বছর ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে কাকরাইলে জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনার মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। সে মামলায় সে দু’মাস কারাগারে থাকার পর জামিনে ছাড়া পায়। আসলে ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসায় শিবিরের রাজনৈতিক নেতৃত্বে ছিল আ ন ম আবদুর রশীদ। তার গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরেও শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল।

সৌদি আরবের মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে সৌদি বৃত্তিতে পড়াশোনা করা আ ন ম রশীদ। যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত এবং গ্রেফতারকৃত জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ এক নেতার রেফারেন্সে দূতাবাসে অনুবাদকের কাজটি পায়। গত ২০ জুন হুমকির ঘটনা ঘটলেও গত বুধবার ২৭ জুন গুলশান থানায় হত্যার হুমকিতে জিডি করা হয়। এই ঘটনায় সৌদি দূতাবাস ও কূটনীতিকদের বাসভবনের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়। গত ৫ মার্চ গুলশানে অজ্ঞাত সন্ত্রাসীদের গুলিতে খুন হন সৌদি দূতাবাসের কর্মকর্তা খালাফ বিন মোহাম্মদ সালেম আল আলি।

জামায়াতের ইন্ধনেই সৌদি দূতাবাসের রাষ্ট্রদূতসহ তিন কূটনীতিককে হুমকি দিয়েছিলেন আ ন ম আবদুর রশীদ। ওই প্রক্রিয়ায় সরাসরি জড়িত ছিলেন জামায়াতের তিন শীর্ষ নেতা ও রাজধানীর বিভিন্ন স্কুল-কলেজের জামায়াতপন্থি ৩০ জন শিক্ষক। ছয় দিনের রিমান্ডের তৃতীয় দিন শেষে এমনই তথ্য দিয়েছেন সৌদি দূতাবাসের সাবেক অনুবাদক গ্রেফতার আ ন ম আবদুর রশীদ। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উন্নয়নমূলক কাজের জন্য সৌদি সরকারের অনুদানের বিষয়টি মনিটরিংয়ের দায়িত্ব ছিল রশীদের ওপর। অনুদান দেওয়ার নাম করে ওইসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে একটি মোটা অঙ্কের কমিশন নিতেন রশীদ।

গত মে-তে বিভিন্ন অপরাধের কারণে সৌদি দূতাবাস থেকে রশীদ চাকরিচ্যুত হলে তাকে দাবার গুঁটি হিসেবে বেছে নেয় জামায়াত। যুদ্ধাপরাধের বিচার বাধাগ্রস্ত এবং সৌদি আরবের সঙ্গে বর্তমান সরকারের অবস্থান খারাপ করতে জামায়াতের তৈরি নীলনকশার অংশ ছিল এ হুমকি। এর বাস্তবায়ন ঘটানো হয়েছে রশীদের মাধ্যমে। ঢাকা মহানগর পুলিশের মুখপাত্র উপ-কমিশনার মনিরুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, 'রশীদের কাছ থেকে ৩০ জন ব্যক্তির নাম পাওয়া গেছে। যাদের অনেকেই জামায়াত ঘরানার।

এ বিষয়টি ভালোভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। একই সঙ্গে তাদের বিশেষভাবে মনিটরিংয়ের মধ্যে রাখা হয়েছে। ' গ্রেফতার রশীদ সৌদি দূতাবাস কর্মকর্তা খালাফ বিন মুহাম্মদ সালেম আল আলী হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, 'তিনি জড়িত ছিলেন এখনই তা বলা যাচ্ছে না। একই সঙ্গে তদন্তের স্বার্থে অনেক তথ্যই প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে তার কাছ থেকে পাওয়া কিছু তথ্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

'  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।