আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এপিজে কালামের খুলনাসহ দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়ন প্রস্তাবনা !

ব্যক্তিগত সফরে এসে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নের রুপরেখা তুলে ধরলেন সাবেক ভারতীয় রাষ্ট্রপতি ও দেশটির পরামানু অস্ত্রের পথ প্রদর্শক বিজ্ঞানী এপিজে আবদুল কালাম। তার ভাষ্য, ‘শহর বনাম গ্রামের বৈষম্য ও অসম অর্থনৈতিক ব্যবস্থা থেকে মুক্তি পেতে’ এ রুপরেখাটি বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে বিশেষ করে খুলনায় বেশি কার্যকর হবে। তার রুপরেখার নাম ‘‘প্রোভাইডিং আরবান অ্যামেনিটিস ইন রুরাল এরিয়াস’ বা ‘পুরা’। এ রুপরেখা বাস্তবায়নের মাধ্যমে ‘গ্রামীণ জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন এবং একটি সুষম অর্থনৈতিক ব্যবস্থা’ গড়ে তোলা সম্ভব বলে মনে করেন কালাম। সিরডাপ’র (সেন্টার অন ইন্টিগ্রেটেড রুরাল ডেভেলপমেন্ট ফর এশিয়া অ্যান্ড দি প্যাসিফিক) ৩৩তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে বৃহস্পতিবার সংস্থাটির ঢাকাস্থ কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন তিনি।

বক্তৃতার বিষয়, ‘২০৩০ সালের মধ্যে দারিদ্র, ক্ষুধা ও দুর্নীতি মুক্ত সুষম অর্থনীতির একটি বিশ্ব গঠনের পথ পরিকল্পনা’। এ বৈশ্বিক পথ-পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই তিনি বাংলাদেশের জন্য ‘পুরা’ রুপরেখা উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, ‘‘পুরা মডেল বাস্তবায়নে প্রয়োজন চারটি বিশেষ সংযোগ ব্যবস্থা। প্রথমত, অবকাঠামোগত সংযোগ ব্যবস্থা, যেখানে শহরের সঙ্গে গ্রামের ভৌত অবকাঠামোগত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। এক্ষেত্রে বাস, রেলের মতো যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে সংযোগ করা যেতে পারে।

একই সঙ্গে গ্রাম অঞ্চলে পর্যাপ্ত স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল এবং অন্যান্য অবকাঠামো গড়ে তুলতে হবে। ’’ দ্বিতীয় স্তরে বিদ্যুৎ সংযোগের প্রতি গুরত্ব দেন ভারতের এই পরমানু বিজ্ঞানী। তিনি বলেন, ‘‘গ্রামের জনগণের জন্য তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা, এ সর্ম্পকে যথেষ্ট প্রশিক্ষণ ও শিক্ষার ব্যবস্থা করা খুব জরুরি। পরে তারা তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞান ব্যবহার করে কৃষি, মৎস্যচাষ ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের মতো কাজে দক্ষ হবে। ’’ তিনি বলেন, ‘‘অবকাঠামোগত সংযোগ ও বিদ্যুৎ সংযোগ নিশ্চিত করা গেলে গ্রামীণ জনগণ তৃতীয় স্তরের সংযোগের সঙ্গে যুক্ত হবে।

আর সেটি হলো জ্ঞানের সঙ্গে সংযোগ। অবকাঠামোগত সুযোগসুবিধা ও তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত হলে তারা বহুমাত্রিক শিক্ষায় শিক্ষিত হবে। আর এর মাধ্যমে তৃতীয় স্তরের সংযোগটি সম্ভব হবে। ’’ আবদুল কালাম তার উত্থাপিত পুরা মডেলে চতুর্থ স্তরের সংযোগ হিসাবে অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে চিহ্নিত করেন। অনুষ্ঠানে আবদুল কালাম তরল ও কয়লা জ্বালানি ভিত্তিক বিদ্যুৎ ব্যবস্থার পরিবর্তে নবায়ন যোগ্য ও আনবিক শক্তি ব্যবহারের প্রতি জোর দেন।

এক্ষেত্রে গ্রামীণ অঞ্চলে সৌর বিদ্যুৎ, বায়ুবিদ্যুৎ ও পানিবিদ্যুতের মাধ্যমে শক্তির যোগান দেয়া যেতে পারে বলে মনে করেন আবদুল কালাম। পুরা মডেলটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল খুলনা বিভাগে বাস্তবায়ন সম্ভব বলে মনে করেন এপিজে কালাম। তিনি বলেন, ‘‘খুলনা বিভাগের একটি বড় অংশ জুড়ে রয়েছে বিশ্বে সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন। আর বিশ্বে অন্যতম পাট উৎপাদনকারী অঞ্চল হচ্ছে বাংলাদেশের খুলনা বিভাগ। এই অঞ্চলে পাট ও বাশের উৎপাদন বেশি।

পুরা মডেলের চারটি সংযোগ এই অঞ্চলে বাস্তবায়ন করা গেলে খুলনা বিভাগটি স্বতন্ত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসাবে গড়ে উঠবে। ’’ সরকার ভেবে দেখবে কি ?চির বঞ্চিত দখিনাঞ্চল কি বাংলাদেশ এর অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার সুযোগ পাবে? সূত্র , খুলনা নিউজ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।