শোরগোলে হাসনাত আবদুল হাই
হুইস্কির গ্লাসে চুমুক দিতে দিতে লেখক ভাবনার অতলে হারিয়ে গেলেন। আমলা জীবন থেকে রিটায়ারমেন্ট নেওয়ার পর থেকেই অখন্ড অবসর । চাকুরীরত ব্যস্ত সময়ে ভাবতেন অবসর নেয়ার পর লেখালেখিতে আরো বেশী মনযোগী হবেন- স্বপ্ন দ্যাখতেন দুইবাংলায় জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক সুনীল,হুমায়ুন, শীর্ষেন্দু, সমরেশের কাতারে তার নিজের নাম। চাকুরী জীবনে শত ব্যস্ততার মাঝেও তো তিনি লিখে গেছেন । সুলতান, নভেরা, একজন আরজ আলী মাতব্বর ইত্যাদি উপন্যাসগুলো এক সময় তাকে পাঠকপ্রিয়তা দিয়েছিল।
কিন্তু সে তো গত শতকের কাহন। ঐ বইগুলো বাংলাদেশের সাহিত্য অঙ্গনে তাকে একটা স্থান করে দিয়েছিল এবং যে কারণে আজো দেশের জাতিয় পত্র-পত্রিকা বিশেষতঃ ঈদ সংখ্যাগুলোতে তার লেখা প্রকাশ হয়ে থাকে। তবে একজন চালাক লোক হিসেবে অনায়েসে বুঝতে পারেন তিনি আর পাঠকপ্রিয় নন।
ইতোমধ্যেই বেশ কয়েক পেগ হুইস্কি পড়েছে পেটে। নেশা জমেছে বেশ।
তার লেখার ধার কি কমে যাচ্ছে! সৃজনশীল লেখালেখির সাথে কি যৌনশক্তির কোন কৌনিক সম্পর্ক রয়েছে। ৯৫ সালে তার প্রোষ্টেট অপারেশন হয় । আর এ অপারেশনের পরপরই তো যৌন ক্ষমতার পুরোটাই হারিয়ে ফেলেন তিনি। এ কারণেই কি তিনি আর পাঠককে টেনে রাখার মতোন কোন লেখা লিখতে পারছেন না ইদানিং। নিজের এ আবিস্কারে নিজেই আমোদিত হন হাসনাত।
নিশ্চিত হয়ে যান তার পক্ষে এখন আর কালোত্তীর্ণ লেখা সম্ভব নয়। যৌন ক্ষমতার মতোই কি হারিয়ে গেছে তার লেখনির ধার!
ভাবনার ঘোরেই হঠাৎ আলোর ঝলক। আচ্ছা শাহবাগের পোলাপানগোর নিয়ে একটা চটিধরণের লেখা লিখলে ক্যামন হয়! চলমান রাজনীতির আবহে এ লেখাটি বেশ শোরগোল তোলবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না্। ভাবনার মাঝে শাহবাগের শ্লোগান কন্যার মুখটা ভেসে এলো। আচ্ছা, একটু যৌন রস মিশিয়ে ওর আদলে একটা চরিত্র সৃষ্টি করে দেখিই না কি হয়! নেশার ঘোরেই কাগজ কলম বের করেন তিনি.. লেখা এগিয়ে চলে, গভীর রাতেই শেষ হয় গল্পটি।
রাত পোহানোর আগেই টাইপ করে ইমেইলে লেখাটি পাঠিয়ে দেন জাতীয় পত্রিকায়। নিশ্চিত জানেন তিনি তার গল্পটি
ছাপানো হবে পহেলা বৈশাখ সংখ্যায়। হাসেন তিনি, নিশ্চয়ই আবারো হাসনাত আবদুল হাই নামটি নিয়ে শোরগোল হবে .. নতুন প্রজন্মের পাঠকেরা জানার চেষ্টা করবে তাকে ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।