ইইসমাইল আশিন ভিরাথু মিয়ানমারের এক প্রভাশালী বৌদ্ধ ভিক্ষু। অতীত পাপ মোচনের জন্য প্রার্থনা করলেন। এরপর সমবেত হাজারো ভক্তদের উদ্দেশ্য ধর্মোপদেশ দেওয়া শুরু করলেন। ধর্মোপদেশে দেশের সংখ্যালঘু মুসলমানদের উৎখাতের দিক-নির্দেশনা দিলেন তিনি।
ভক্তদের তিনি বললেন, ‘তোমরা দয়া আর ভালবাসায় পূর্ণ থাকতে পার কিন্তু পাগলা কুকুরের পাশে ঘুমাতে পার না।
’
তার মতে, এই পাগলা কুকুর হচ্ছে তার দেশের সংখ্যালঘু মুসলমানরা।
দুই ঘণ্টাব্যাপী ধর্মোপদেশে তিনি বলেন, ‘আমি তাদের সমস্যা সৃষ্টিকারী বলি কেননা তারা সমস্যা সৃষ্টিকারী। আমাকে উগ্রপন্থি বলায় আমি গর্বিত বোধ করি। ’
দেশব্যাপী উগ্রবাদী আন্দোলনকে ছড়িয়ে দিতে ধর্মোপদেশ সংবলিত বক্তব্য ডিভিডি বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকদের মধ্য বিলি করা হচ্ছে।
সহিংসতাকে জোরদার করতে কমিউনিটি সেন্টার খোলা হচ্ছে এবং দেশব্যাপী ৬০ হাজারের বেশি বৌদ্ধ শিশুকে নিয়ে রোববারের স্কুল কর্মসূচি চালু করা হয়েছে।
‘সানডে ধাম্মা স্কুল’ নামের কর্মসূচিতে শিশুদের মনে গেঁথে দেওয়া হচ্ছে, মুসলমান বিদ্বেষী ধারণা।
সম্প্রতি এক ধর্মোপদেশে গত মার্চে মেইকতিলা শহরে স্কুলশিশু ও অন্যান্য মুসলমান বসতিতে গণহত্যাকে ‘শক্তির প্রদর্শন’ হিসেবে উল্লেখ করেন আশিন। একটি মানবাধিকার গোষ্ঠী ওইসব গণহত্যার অভিযোগ করেছে।
আশিন বলেন, ‘যদি আমরা দুর্বল হই, আমাদের ভূমি মুসলমানদের হবে। ’
নিজেকে জাতীয়তাবাদী হিসেবে দাবিকারী আশিন বলেন, ‘মিয়ানমারের বৌদ্ধরা মুসলমানদের অধীন হয়ে যাচ্ছে।
’
তিনি দাবি করেন, মুসলমানরা বৌদ্ধদের থেকে বেশি সন্তান নিচ্ছে এবং বৌদ্ধদের সম্পত্তি কিনে নিচ্ছে।
মুসলিমবিরোধী আন্দোলনের একটি ‘থিম সং’ তৈরি করেছেন আশিন। গানের সারাংশ হচ্ছে, যারা আমাদের দেশে বাস করে, আমাদের পানি পান করে এবং তারা আমাদের প্রতি অকৃতজ্ঞ।
গানটিতে সরাসরি মুসলমানদের উল্লেখ করা না হলেও আশিন ভিরাথু জানান, মুসলমানদেরই উদ্দেশ্য করেই গানটি তৈরি করা হয়েছে।
আশিনের তথাকথিত জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের নাম দেওয়া হয়েছে ৯৬৯।
এ সংখ্যা বুদ্ধের গুণাবলীকে প্রতীকায়িত করে বলে বিশ্বাস বৌদ্ধ ভিক্ষুদের। আন্দোলনের লোগো এখন-কি গাড়ি, কি মোটর সাইকেল, কি দোকান-মিয়ানমারের সর্বত্রই।
নিউইয়র্ক টাইমসের অনলাইন সংস্করণে ‘মিয়ানমারের বৌদ্ধদের মধ্যে চরমপন্থা বাড়ছে’ ও হেরাল্ড ট্রিবিউন ‘মিয়ানমারে এক বৌদ্ধ ভিক্ষুর উত্তেজিত হওয়ার ডাক’ শিরোনামে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।