আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গাড়ল মাহফুজের লাটিয়াল বাহিনী কথিত স্টার সাংবাদিক

আমি একজন পাঠক রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাসায় ফিরে ভীষণ কান্ত। পায়ের ব্যাথায় কাতর আমি। কুসুম গরম পানি দিয়ে পায়ের ব্যাথা সাড়াতে প্রিয়তমা স্ত্রীর থেরাপি। চল্লিশ মিনিটের থেরাপি শেষে যখন কম্পিউটারের সামনে বসলাম তখন লিখব কি লিখব না এ নিয়ে চলছিল নিজের সাথে নিজের দ্বন্দ্ব। অতপর ফেইসবুক খুলে দেখি শত শত স্ট্যাটাস।

সবগুলো পড়া সম্ভব হয়নি। যতটুকু সম্ভব পড়ে দেখেছি, সর্বত্র তোলপাড় চলছে রোববার দুপুরে প্রেসকাবে ঘটে যাওয়া ন্যাক্কারজনক ঘটনা নিয়ে। তখনই সিদ্ধান্ত নিলাম কিছু একটা লিখা দরকার। তাই বিবেকের তাড়নায় লিখতে বসলাম গভীর রাতে ঘঁড়ির কাঁটা যখন দু’টার ঘরে পৌঁছে তখন। শুরুটা করতে চেয়েছিলাম এখন যা লিখছি তা দিয়ে।

কিন্তু নিজের অসুস্থতার কথাটা আগে লিখতে হয়েছে বলে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। তথাকথিত স্টার সাংবাদিক মাহফুজুর রহমানের মাসলম্যান বা লাটিয়াল হিসেবে রাতারাতি পরিচিত হয়ে উঠা জ ই মামুন রোববার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, প্রেসকাবের ঘটনাটি সম্পূর্ণ পরিকল্পিত। আমি তার এই বক্তব্যের সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত হয়ে বলছি সত্যিই ঘটনাটি ছিল পরিকল্পিত। না হলে প্রিয় সহকর্মী সাগর-রুনী হত্যার প্রতিবাদে বিগত পাঁচ মাস ধরে চলে আসা প্রতিবাদ সমাবেশে কখনই একসঙ্গে কথিত স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন বাংলা ও এটিএন নিউজ এর সংবাদকর্মীদের খুব একটা চোখে পড়েনি। অথচ রোববার দুপুরের মানবন্ধনে অংশ নিতে এই দুই চ্যানেলের ৩০ জনেরও অধিক সংবাদকর্মী হাজির হয়েছিলেন প্রেসকাবের সামনে।

শুধু সংবাদকর্মীই নয়, উপস্থিত হয়েছেন এটিএন এর জনা দশেক ক্যামেরাম্যান। নিশ্চয়ই মানববন্ধন কাভার করতে এতোজন সাংবাদিক বা ক্যামেরাম্যানের কোন প্রয়োজন হয় না। তাদের এমন উপস্থিতিতেই প্রমাণিত হয়ে যাচ্ছে জ ই মামুনের কথা সত্য। তিনি সঠিক কথাই বলেছেন। যদি তাদের এই উপস্থিতি পরিকল্পিত না হত তাহলে এটিএন এর এতো লোকের সামগম ঘটত না।

মানবন্ধন শুরু হওয়ার পর একজন সাংবাদিক নেতা জাহাঙ্গীর আলম প্রধানের বক্তব্যের জের ধরে গাড়ল মাহফুজের সাংবাদিক নামধারী ক্যাডাররা যেভাবে তার উপর হামলা চালিয়েছে তাতে এটা স্পষ্ট হয়ে গেছে পুরো ঘটনাই পরিকল্পিত। তা না হলে মাহফুজের পক্ষ নিয়ে এতোগুলো সাংবাদিক নামের দালাল ক্যাডাররা উপস্থিত হত না। এই ক্যাডাররা সাংবাদিক নেতাকে কিল-ঘুষি মারতে মারতে প্রেসকাবের ভিতরে নিয়ে যায়। সেখানেও তারা ছিল উদ্যোত। এক পর্যায়ে সাংবাদিক নেতাদের উপস্থিতিতে প্রেসকাবের ভিতরে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

সাংবাদিকতার নাম নিয়ে এটিএন বাংলা ও এএটিএন নিউজ এর মাহফুজ বাহিনী রোববার যে ঘটনা ঘটলা ছি...ছি...ছি... দেয়া ছাড়া তার নিন্দা জানানের ভাষা আমার জানা নেই। এতোদিন যারা নিজেদের স্টার সাংবাদিক হিসেবে সমাজে পরিচিত করে তুলেছিল তাদের মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে থাকা আসল চেহারা প্রকাশ পেয়েছে এ ঘটনার মধ্য দিয়ে। গাড়ল মাহফুজুর রহমান নিজের ইচ্ছা, অনিচ্ছা কিংবা মুখ ফসকে বলুক না কেন, সে লন্ডনে সাগর-রুনী দম্পতি সম্পর্কে যা বলেছে তাতে আসল ঘটনাই বের হয়ে এসেছে। ওই খুনের সঙ্গে মাহফুজ ও তার প্রতিষ্ঠান প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে জড়িত এটা আর লুকিয়ে রাখার কোন সুযোগ নেই। সাংবাদিক দম্পতি হত্যাকান্ডের পর থেকে লোকের মুখে মুখে শোনা যায় যে, মাহফুজের ঘরেই নাকি খুনীর বসবাস।

খুনীরা নাকি চেনা মুখ। লন্ডনে বসে মাহফুজের মুখ দিয়ে যেন সেই কথাই বের হয়ে এসেছে- এতে কোন সন্দেহ নেই। রোববার দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মধ্যে প্রেসকাবে পৌঁছতেই দেখলাম একদল লোক দৌড়ে প্রেসকাবের দিকে ঢুকছে। তার পিছন পিছন ছুটছে অসংখ্য টিভি ক্যামেরা। তখনও জানতাম না মানববন্ধনকে কেন্দ্র করে কোন অপ্রিতিকর ঘটনা ঘটেছে।

তাই কারণ অনুসন্ধানে নিজেও ছুটলাম প্রেসকাবের ভিতরে। তারপর আদ্যপান্ত শুনে এবং নিজের চোখে দেখে নিজের চোখকেই বিশ্বাস করাতে পারছিলাম না এসব কি ঘটছে...কি দেখছি...। .বেশ কিছু সময় প্রেসকাবের রিসিপশনে হাঙ্গামার পর দেখলাম তথাকথিত স্টার সাংবাদিকরা বের হয়ে আসছেন। এদের সবাই চেনা মুখ। জ ই মামুন, এস এম বাবু, শওকত মিল্টন, ভানু রঞ্জন চক্রবর্তী, রাহাত মিনহাজ, মইনুল ইসলাম, কেরামত উল্লাহ বিপ্লব, মাহমুদুর রহমানসহ আরো অনেকে।

এরা সবাই সহকর্মী সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনীর কথা ভুলে গিয়ে হয়ে গিয়েছিলেন গাড়ল মাহফুজের দালাল। লজ্জা...লজ্জা...লজ্জা...। লোকে বলে এখানেই নাকি খুনীর উপস্থিতি! তবে তাদের এই আচরণ মানুষের সামনে তাদের আসল চেহারাই প্রকাশ করল। এতে সাংবাদিক সমাজ তো বটে সমাজের অনেক উপকার হয়েছে ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।