আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হুযূরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পিতা-মাতা জান্নাতী। অস্বীকারকারীরা মুসলমান নয়-১

জালিমের ফাঁসি হোক, যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি হোক, রাজাকারদের ফাঁসি হোক হুযূরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পিতা হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম থেকে পূর্বপুরূষ হযরত আদম আলাইহিস সালাম পর্যন্ত সকলেই ঈমানদার ছিলেন। হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি ছিলেন কুরাইশ গোত্রের সবচেয়ে ভদ্র, বিনয়ী, সৎচরিত্র, সুদর্শন এবং অনেকগুণের অধিকারী। উনারা ছিলেন দ্বীনে হানিফের উপর দৃঢ়। এ বিষয়ে হাদীছ শরীফ দেখুনঃ নিম্নে হুযূরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বংশের ধারাবাহিকতা উল্লেখ করা হলোঃ ১। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হযরত মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

২। সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম। হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “আল্লাহ পাক উনার নিকট অতি প্রিয় নাম হচ্ছে আব্দুল্লাহ ও আব্দুর রহমান। ” আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত পিতা সেই প্রিয় নামেরই অধিকারী ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! (সীরাতুল হালাবিয়া ১/৯) ৩।

সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম। তিনি উনার সম্প্রদায়ের সাইয়্যিদ বা সরদার ছিলেন। (রওদুল উনফ ১/২৩) তিনি সেই ব্যক্তি যিনি জাহিলী যুগেই নিজের জন্য শরাবকে হারাম করেছেন। তিনি ছিলেন মুজতাজাবুত দাওয়াত। কুরাঈশদের সহনশীল ধৈর্যশীল এবং সর্বাধিক জ্ঞানী ব্যক্তিগণের মধ্যে শ্রেষ্ঠ।

মানুষ উনার দানশীলতার জন্য উনাকে “ফাইয়াজ” লক্ববে অবহিত করতেন। সুবহানাল্লাহ! (সীরাতুল হালাবিয়া- ১/৯) ৪। সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম আলাইহিস সালাম। ৫। সাইয়্যিদুনা হযরত আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম।

উনার নাম মুগীরা। তিনি অতি সুন্দর সীরত-ছূরত মুবারক-এর অধিকারী ছিলেন। সেই সৌন্দর্যের কারণে উনাকে ‘উপত্যকার চাঁদ’ লক্ববে সম্বোধন করা হতো। ” সুবহানাল্লাহ! (সীরাতুল হালাবিয়া- ১/১৩ রওদুল উনফ ১/২৫, তারিখুত তাবারী ১/২৩৭) মূলত সেই পবিত্র নসব নামা মুবারক-এর সকলেরই আকৃতি-প্রকৃতি, সীরত-ছূরত ছিলো অতি উজ্জ্বল এবং সৌন্দর্যময়। আর তার কারণ ছিলো সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অজুদ মুবারক বা নূর মুবারক-এর অবস্থান।

৬। সাইয়্যিদুনা হযরত কুসাই আলাইহিস সালাম। ৭। সাইয়্যিদুনা হযরত কিলাব আলাইহিস সালাম। ৮।

সাইয়্যিদুনা হযরত মুররা আলাইহিস সালাম। ৯। সাইয়্যিদুনা হযরত কা’ব আলাইহিস সালাম। ১০। সাইয়্যিদুনা হযরত লুয়াই আলাইহিস সালাম।

১১। সাইয়্যিদুনা হযরত গালিব আলাইহিস সালাম। ১২। সাইয়্যিদুনা হযরত ফিহির আলাইহিস সালাম। ১৩।

সাইয়্যিদুনা হযরত মালিক আলাইহিস সালাম। ১৪। সাইয়্যিদুনা হযরত নযর আলাইহিস সালাম। ১৫। সাইয়্যিদুনা হযরত কিনানাহ আলাইহিস সালাম।

১৬। সাইয়্যিদুনা হযরত খুযাইমাহ আলাইহিস সালাম। ১৭। সাইয়্যিদুনা হযরত মাদরিকাহ আলাইহিস সালাম। উনার নাম মুবারক আমর।

এই কারণে উনাকে মাদরিকাহ বলা হয় যে, তিনি সেই যুগের সমস্ত সম্মান-ইজ্জত ও গৌরবের অধিকারী ছিলেন। উনার মধ্যে আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূর মুবারক-এর এমন উজ্জ্বলভাবে প্রকাশ ঘটেছিল যা সবাই দেখতে পেতেন। সুবহানাল্লাহ! (সীরাতুল হালাবিয়া- ১/২৭ রওদুল উনফ ১/৩০) ১৮। সাইয়্যিদুনা হযরত ইলিয়াস আলাইহিস সালাম। তিনি ছিলেন উনার সম্প্রদায়ের সাইয়্যিদ।

হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “তোমরা ইলিয়াস আলাইহিস সালাম উনাকে গালি দিওনা। কারণ, তিনি ছিলেন প্রকৃত মু’মিন। তিনিই উনার পিঠ মুবারক-এর মধ্যে আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তালবিয়া (যা হজ্জের মধ্যে পড়া হয়) পাঠ শুনতে পেতেন। ” (সীরাতুল হালাবিয়া- ১/২৭, রওদুল উনফ- ১/৩০) ১৯। সাইয়্যিদুনা হযরত মুদ্বার আলাইহিস সালাম।

উনার কণ্ঠস্বর মুবারক ছিলো অত্যন্ত সুন্দর। হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “তোমরা মুদ্বার আলাইহিস সালাম উনাকে গালি দিওনা, মন্দ বলিও না। কারণ তিনি হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনার দ্বীনের উপর প্রতিষ্ঠিত ছিলেন। ” (সীরাতুল হালাবিয়া- ১/২৭ রওদুল উনফ ১/৩০) ২০। সাইয়্যিদুনা হযরত নিযার আলাইহিস সালাম।

তিনি স্বীয় চোখের সামনে আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূর মুবারক দেখতে পেতেন। ” সর্ব প্রথম আরবী ভাষায় বিশুদ্ধ কিতাব তিনিই রচনা করেন। (সীরাতুল হালাবিয়া- ১/২৮) ২১। সাইয়্যিদুনা হযরত মা’য়াদ আলাইহিস সালাম। তিনি যুদ্ধ প্রিয় ছিলেন।

এমন কোন যুদ্ধ নেই যে, তিনি বিজয়ী হননি। (সীরাতুল হালাবিয়া- ১/২৮) ২২। সাইয়্যিদুনা হযরত আদনান আলাইহিস সালাম। ২৩। সাইয়্যিদুনা হযরত আদদ আলাইহিস সালাম।

২৪। সাইয়্যিদুনা হযরত মা’কুম আলাইহিস সালাম। ২৫। সাইয়্যিদুনা হযরত নাহুর আলাইহিস সালাম। ২৬।

সাইয়্যিদুনা হযরত তারিহ আলাইহিস সালাম। ২৭। সাইয়্যিদুনা হযরত ইয়ারিব আলাইহিস সালাম। ২৮। সাইয়্যিদুনা হযরত ইয়াশযুব আলাইহিস সালাম।

২৯। সাইয়্যিদুনা হযরত নাবিত আলাইহিস সালাম। ৩০। সাইয়্যিদুনা হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম। তিনি আল্লাহ পাক উনার জলিলুল ক্বদর রসূল।

সাইয়্যিদুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন- انا ابن الذ بحين অর্থ: “আমি দুই যবেহের সন্তান। ” হযরত ইসমাইল আলাইহিস সালাম এবং উনার সম্মানিত পিতা হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাদেরকে বুঝিয়েছেন। উনারা দু’জন যবেহ হননি এবং হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনাকে আগুন কোন ক্ষতি করতে পারেনি। কারণ উনাদের পিঠ মুবারক-এ অবস্থান নিয়েছিলেন আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূর মুবারক। ৩১।

সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম। তিনি মুসলিম মিল্লাতের পিতা। আল্লাহ পাক উনার জলিলুল ক্বদর রসূল। ৩২। সাইয়্যিদুনা হযরত তারিখ আলাইহিস সালাম।

কেউ কেউ বলে যে, সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনার পিতার নাম ছিল আযর। (নাউযুবিল্লাহ) এটা কুফরী আক্বীদা। কারণ আযর কাফির ছিলো। মূলত তাদের এ বক্তব্য সম্পূর্ণ ভুল ও অশুদ্ধ এবং কাট্টা কুফরী। কারণ সীরাতুল হালাবিয়াসহ অন্যান্য সীরাত গ্রন্থে উল্লেখ আছে- اجمع اهل الكتاب على ان ازر كان عمه والعرب سمى العم ابا كما تسمى الخالة اما فقد حكى الله عن يعقوب عليه السلام انه قال ابائى ابراهيم واسماعيل ومعلوم ان اسماعيل انما هوعمه. অর্থাৎ আহলে কিতাবগণের ইজমা হয়েছে যে, আযর ছিল হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনার চাচা।

আরবরা সাধারণত চাচাকে বাবা বলে সম্বোধন করতেন। যেমন খালাকে মা বলে সম্বোধন করতেন। আল্লাহ পাক তিনি হযরত ইয়াকুব আলাইহিস সালাম উনার ঘটনা উল্লেখ করেছেন সেখানে তিনি বলেছেন, “আমার পিতা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম এবং ইসমাঈল আলাইহিস সালাম। ” আর ইহা সর্বজন বিদিত যে, ইসমাঈল আলাইহিস সালাম তিনি ছিলেন উনার চাচা। (সীরাতুল হালাবিয়া-১/৪৫) ৩৩।

সাইয়্যিদুনা হযরত নাহুর আলাইহিস সালাম। ৩৪। সাইয়্যিদুনা হযরত আরগুবী আলাইহিস সালাম। ৩৫। সাইয়্যিদুনা হযরত সারিহ আলাইহিস সালাম।

৩৬। সাইয়্যিদুনা হযরত ফালিহ আলাইহিস সালাম। ৩৭। সাইয়্যিদুনা হযরত আবির আলাইহিস সালাম। ৩৮।

সাইয়্যিদুনা হযরত শালিখ আলাইহিস সালাম। ৩৯। সাইয়্যিদুনা হযরত আরফাখশাজ আলাইহিস সালাম। ৪০। সাইয়্যিদুনা হযরত সাম আলাইহিস সালাম।

৪১। সাইয়্যিদুনা হযরত নূহ আলাইহিস সালাম। তিনি আল্লাহ পাক উনার জলিলুল ক্বদর রসূল। ৪২। সাইয়্যিদুনা হযরত লামক আলাইহিস সালাম।

৪৩। সাইয়্যিদুনা হযরত মাতুশালাখ আলাইহিস সালাম। ৪৪। সাইয়্যিদুনা হযরত আখনুখ আলাইহিস সালাম। যিনি হযরত ইদরীস আলাইহিস সালাম নামে মশহুর।

(তারিখুত তাবারী ১/৫১৮) ৪৫। সাইয়্যিদুনা হযরত ইয়ারদ আলাইহিস সালাম। ৪৬। সাইয়্যিদুনা হযরত মাহলাইল আলাইহিস সালাম। ৪৭।

সাইয়্যিদুনা হযরত কাইনান আলাইহিস সালাম। ৪৮। সাইয়্যিদুনা হযরত আনুশ আলাইহিস সালাম। ৪৯। সাইয়্যিদুনা হযরত শীছ আলাইহিস সালাম।

তিনিও আল্লাহ পাক উনার রসূল ছিলেন। উনার উপর ৫০ খানা সহীফা নাযিল হয়েছিলো। ৫০। সাইয়্যিদুনা আবুল বাশার হযরত আদম আলাইহিস সালাম। তিনি সর্বপ্রথম নবী ও রসূল।

(দালায়িলুন নবুওওয়াত লিল বাইহাক্বী ১/১৭৯- সীরাতু ইবনে হিশাম- ১/১-২, সীরাতুল হালাবিয়া- ১/৯, মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়া, তারিখুত তাবারী ১/৪৯৭ রাওদুল উনফ ১/২৩ শরহুল আল্লামাতিয যারকানী ১/৩৫ ইত্যাদি) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।