আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হুযূরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে আমাদের মত মানুষ বলা কুফরী।

জালিমের ফাঁসি হোক, যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি হোক, রাজাকারদের ফাঁসি হোক

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “হে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালামগণ! আপনারা অন্য কোনো মহিলাদের মতো নন। ” হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারাই যদি অন্য কোনো মহিলাদের মতো না হন, তাহলে আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কি করে অন্য কোনো জিন-ইনছানের মতো হবেন? মূলত আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অন্য কোনো জিন-ইনছানের মতো মনে করা সুস্পষ্ট কুফরী। আর যে বা যারা কুফরী করবে, সে বা তারা চিরজাহান্নামী হবে। পবিত্র কুরআন শরীফ উনার বহু পবিত্র আয়াত শরীফ উনাদের দ্বারা প্রমাণিত যে, হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে কাফির-মুশরিকরাই কেবল তাদের মতো মানুষ বলে মনে করতো। যেমন হযরত নূহ আলাইহিস সালাম উনার ক্বওম এবং আদ ও ছামূদ গোত্রের লোকেরা হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের শান মুবারক সম্পর্কে বেয়াদবী করতে গিয়ে বলেছিলো, “আপনারা তো আমাদের মতোই বাশার তথা মানুষ।

” আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্পর্কে কাফির-মুশরিকরা বলেছিলো, “ইনি তো তোমাদের মতো বাশার তথা মানুষ ব্যতীত কেউ নন। ” একইভাবে আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্পর্কে কাফির-মুশরিকরা আরো বলতো যে, “ইনি কেমন রসূল, যিনি খাদ্য খান এবং বাজারে যান?” উল্লিখিত পবিত্র আয়াতে কারীমা উনাদের দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে নিজের মতো মানুষ বলা কাফির-মুশরিকদের জঘন্যতম একটি বদস্বভাব। মূলত কাদিয়ানীরা যেমন ‘খাতামুন্ নাবিইয়ীন’ শব্দ মুবারক উনার মনগড়া অর্থ ও ব্যাখ্যা করে খতমে নুবুওওয়াত উনাকে অস্বীকার করে থাকে। তদ্রুপ বাতিল আক্বীদা ও ফিরক্বার লোকেরাও পবিত্র কালাম শরীফ উনার পবিত্র সূরা হামীম সাজদা শরীফ উনার পবিত্র আয়াত শরীফ- قل انـما انا بشر مثلكم يوحى الى উনার মনগড়া অর্থ ও ব্যাখ্যা করে আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে তাদের মতো মানুষ বলে থাকে। নাউযুবিল্লাহ! প্রকৃতপক্ষে উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার সঠিক অর্থ ও মর্ম হলো, “হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি ওই মুশরিকদের বলে দিন যে, আমি তোমাদের মেছাল (ছূরতান) একজন মানুষ, (হাক্বীক্বতান আমি একজন রসূল; যার কারণে) আমার নিকট ওহী মুবারক এসে থাকে।

” প্রকৃতপক্ষে উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অন্য কোনো মানুষের মতো বলা হয়নি। কারণ উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যেই يوحى الى অর্থাৎ ‘আমার নিকট ওহী মুবারক এসে থাকে’ এ বাক্যটি উনাকে সকল মানুষ থেকে আলাদা করে দিয়েছে। যেহেতু অন্যান্য মানুষের নিকট ওহী মুবারক আসে না। এর বহু উদাহরণের মধ্যে একটি উদাহরণ হচ্ছে حيوان (হায়ওয়ান) শব্দটি। যেমন ‘হায়ওয়ান’ বা প্রাণী বলতে মানুষকেও বুঝায় এবং অন্যান্য জীব-জন্তুকেও বুঝায়।

তবে কি কেউ একথা বলবে যে, গরু-ছাগল, ঘোড়া-গাধা ইত্যাদিও মানুষের মতো ‘হায়ওয়ান’ নাউযুবিল্লাহ! মূলত মানুষ হায়ওয়ান বটে কিন্তু গরু-ছাগল, ঘোড়া-গাধা প্রভৃতি হায়ওয়ানের মতো নয়। কেননা মানুষ হলো ‘হায়ওয়ানে নাতিক্ব’ অর্থাৎ বাক ও বোধ শক্তিসম্পন্ন জীব। অর্থাৎ মানুষ বিবেক, জ্ঞান ও বাকশক্তির অধিকারী। যেরূপ এ নাতিক্ব বা ‘বাকশক্তিসম্পন্ন’ শব্দটি মানুষকে অন্যান্য জীব-জন্তু হতে পৃথক করে দিয়েছে; তদ্রুপ يوحى الى অর্থাৎ ‘আমার নিকট ওহী মুবারক এসে থাকে’ পবিত্র বাক্যখানা আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অন্য সকল মানুষ থেকে পৃথক করে দিয়েছেন। পবিত্র সূরা মারইয়াম শরীফ উনার ১৭ নম্বর পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনার মানব আকৃতি ধারণ করার কথা উল্লেখ করেছেন।

এই পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যেও হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনার ক্ষেত্রে ‘বাশার’ বা মানুষ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। এখন বাশার ছিফতের অধিকারী হওয়ার কারণে আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যারা তাদের মতো মানুষ বলছে, তারা তাহলে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনাকে তাদের মতো মানুষ বলছে না কেন? মূলত আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অন্য কোনো জিন-ইনছানের মতো মনে করা সুস্পষ্ট কুফরী। আর যে বা যারা কুফরী করবে, সে বা তারা চিরজাহান্নামী হবে। অতএব, এ ধরনের কুফরী আক্বীদা থেকে সংশ্লিষ্ট সকলকে খালিছ তওবা করতে হবে। নচেৎ চিরজাহান্নামী হওয়া ছাড়া কোনোই গতি থাকবে না।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।