আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দমের চর্চা খুব সোজা -১

ভাল দম চর্চার যে বিষয়গুলো আমাদের কনফিউশন তৈরি করছে সেগুলোকে আমরা প্রথমেই মোটা দাগে দুই ভাগে ভাগ করে নিই। এক, মেডিটেশনের মধ্যে দম চর্চা এবং দুই, মেডিটেশন ছাড়া অন্য সময়ের দম চর্চা। মেডিটেশনের মধ্যে আমরা মূলত ৪ ধরনের দম চর্চা করে থাকি। মেডিটেশনের শুরুতে মনের বাড়িতে যাওয়ার আগে ৩ ধরনের এবং মেডিটেশন শেষে স্বাভাবিক অবস্থায় জেগে ওঠার সময় ১ ধরনের। এবার আসা যাক মেডিটেশনের শুরুতে মনের বাড়িতে যাওয়ার আগে আমরা কী করি? মেডিটেশনে দম চর্চা ১: প্রথমে আমরা দম নিই নাক দিয়ে এবং ফুলবে পেটের ওপরের অংশ।

ছাড়বো মুখ দিয়ে। মজার বিষয় হলো স্বাভাবিক ভাবে আমরা যে দম নিই এবং ছাড়ি তা কিন্তু এভাবেই নিই এবং ছাড়ি। এই স্বাভাবিকতা বোঝাতে কোর্সে গুরুজী যে গল্পটি বলেন- স্বাস্থ্যবান ভুড়িওয়ালা দুলাভাই পেটপুরে খাওয়া দাওয়া করার পর যখন নাক ডেকে ঘুমান, তখন নাক ডাকার সাথে সাথে তার ভুড়ি ওঠা নামা করে। তার মানে হলো স্বাভাবিক নিয়মেই আমরা সাধারণত দম নিই আসলে পেটে। মেডিটেশনের এ পর্যায়ে শুধু অতিরিক্ত সচেতনতা যেটা সেটা হলো দম নিতে হবে দীর্ঘ ভাবে।

অর্থাৎ একবারে যত বেশি পারা যায় অক্সিজেন ধারণ করার ততটুকু নিতে হবে। আর ছাড়তে হবে মুখ দিয়ে এবং ধীরে ধীরে। নেয়ার চেয়ে ছাড়তে সময় বেশি লাগবে। দম নেয়ার এ পদ্ধতিকে বলা হয় আবেশন। সুবিধে হলো এ পদ্ধতিতে আমাদের শরীর শিথিল হয়ে আসে।

শরীরের কোষগুলো বিশ্রামে যেতে শুরু করে। মেডিটেশনে যেহেতু আমরা রিল্যাক্সড হতে চাই, তাই শুরুটিই করছি আমরা আবেশনের মাধ্যমে। অর্থাৎ শরীরকে রিল্যাক্স করার মাধ্যমে। টেকনিকটি হলো স্বাভাবিকভাবে আমরা যেভাবে দম নিই সেভাবেই দম নিবো- তবে, নেয়াটি হবে দীর্ঘ এবং দম ছাড়তে হবে মুখ দিয়ে- নেয়ার চেয়ে আরো দীর্ঘ । উদ্দেশ্য হচ্ছে শরীর মনের রিলাক্সেশন প্রক্রিয়া শুরু করা।

দেহ কোষগুলোকে বিশ্রাম দেয়া এবং চিন্তার বিক্ষিপ্ততাকে ধীরে ধীরে গুছিয়ে আনা। এবার মেডিটেশনে দম চর্চা ২: আগের বারের চেয়ে এবারের দম-প্রক্রিয়ার পার্থক্য হলো আগের বার নাক দিয়ে দম নিয়েছিলাম এবং মুখ দিয়ে দম ছেড়েছিলাম। এবার আমরা নাক দিয়ে নিব এবং নাক দিয়েই ছাড়বো। পার্থক্যটা শুধুমাত্র এখানে। আর দম নেয়া এবং ছাড়া ২টিই হবে আগের চেয়ে ধীর লয়ে।

অর্থাৎ আপনার শরীরকে আরো রিল্যাক্সড করার সুযোগ দিচ্ছেন। দম কোথায় নিচ্ছি তা খেয়াল না করলেও চলবে। কারণ আগের কথাটিই। স্বাভাবিকভাবে আপার এবডোমিনই ফুলবে। এভাবে ৮-১০ বার আমরা দম নিয়ে থাকি।

সম্ভবত এটাকে বলে ধীরম। মেডিটেশনে দম চর্চা ৩: এবার আপনার দম নেয়া ও ছাড়ার প্রক্রিয়া হবে একেবারেই স্বাভাবিক। দিনের অন্যান্য কাজ করার সময় আপনার অজান্তেই আপনি যেভাবে দম নিয়ে থাকেন সেভাবে আপনি দম নিতে পারেন। তবে মনোযোগটা দিতে হবে নাকে দমের প্রবেশপথে, দুই ছিদ্রের কাছে। আপনি খেয়াল বা ভিজুয়ালাইজ করতে পারেন যে বাতাসের সাথে অক্সিজেন যাচ্ছে আপনি খেয়াল করতে পারছেন।

আবার কার্বন ডাই অক্সাইড বের হয়ে যাচ্ছে সেটিও অনুভব করতে পারছেন। ব্যাস এভাবে কিছুটা সময় দম খেয়াল করেন। আপনার খুব তাড়া না থাকলে আরো একটু সময় নিতে পারেন। আপনার ভিজুয়ালাইজেশনকে আরো বর্ণাঢ্য ও ডিটেইল করতে পারেন। যেমন আপনি অনুভব করত পারেন- বাতাসের সাথে ফ্রেশ অক্সিজেন কণা ফুসফুসে যাচ্ছে।

ফুসফুসের পাতলা ঝিল্লি ভেদ করে তা রক্তের সাথে মিশে যাচ্ছে। হার্ট এ রক্তকে পাম্প করে শরীরের প্রত্যেকটি দূরবর্তী দেহ কোষে পৌঁছে দিচ্ছে। রক্ত বহন করে নিয়ে যাচ্ছে ফ্রেশ অক্সিজেন কণা। সেটি কোষ রিসিভ করছে আবার সেখানে তৈরি হওয়া কার্বন-ডাই অক্সাইড কণা রক্তের সাথে ফেরত আসছে ফুসফুসে। দম ছাড়ার সময় শরীর থেকে বের করে দিচ্ছেন আপনি তা।

এ সময়ে আপনি চাইলে মাথা থেকে পা পর্যন্ত শরীরের প্রতিটি অঙ্গে একবার মনোযোগ বুলিয়ে যেতে পারেন। আর দম প্রসঙ্গে স্রষ্টার কাছে শুকরিয়া জ্ঞাপনের এ সুযোগটি গ্রহণ করে আপনি আপনার বিশ্বাস ও অস্তিত্বে এক চমৎকার অনূভুতি সৃষ্টি করতে পারেন। তো এ পর্যায়ের দম চর্চা ও একদম স্বাভাবিক। কোনো জটিলতা নাই। মনের বাড়ীতে যাওয়ার পর থেকে শুন্য থেকে ৭ গণনা করার আগ পর্যন্ত পুরোটা সময়ই দম এভাবে নেয়া যেতে পারে, ইন ফ্যাক্ট আর কোনো নির্দেশনা না থাকলে এটাই নিয়ম।

আর কোনো নির্দেশনা বলতে যেমন মেডিটেশনের মধ্যে যদি তন্দ্রাভাব আসে বা মনোযোগ অনেক বেশি বিক্ষিপ্ত হয় তাহলে একটা লম্বা দম নেয়ার কথা গুরুজী বলেন- সেই লম্বা দমটি কিন্তু আলাদা। এটা নিয়েই আমরা এবার আলাপ করবো। কোয়ানটাম +৮৮০১৭১৪৯৭৪৩৩৩,+৮৮০১৭১১৬৭১৮৫৮। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।