আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিড়ম্বনাঃ একজন আইনজীবী ও তাঁর পরিবার যখন সার্জেন্ট এর খপ্পরে

নারী ও শিশু আমার ভাল লাগার বিষয়। এদের নিয়ে কাজ করতে ভাললাগে। কিন্তু এখন আমার কর্মক্ষেত্র সকল জনগোষ্ঠীকে কেন্দ্র করে। কয়েক দিন থেকেই শরীরটা খুব খারাপ লাগছিল। আজকে এই গরমের দুপুরে একটা বিয়েতে যেতে হবে ভেবে শরীরটা আরো কাহিল হয়ে পড়ল ।

নিজের দুই মেয়ে এবং ভাইএর দুই মেয়ে এবং বিয়ের বউকে নিয়ে সাত কাজ পার করে, গরমে অতিষ্ট হয়ে, বিয়ে খেয়ে এবং বিয়ে বাড়ীতে সবাইকে রেখে, যখন গাড়ীতে করে বাসায় ফিরছিলাম, ঠিক তখনি পড়লাম সার্জেন্ট- এর খপ্পড়ে সনি সিনেমা হলের সামনে আজকে ৫ঃ৩০ টার দিকে। নিজে বললাম, আমি একজন আইনজীবী। আমার কাগজ পত্র সব ঠিক ঠাক আছে । গরমে অতিষ্ট অবস্থা তারপরেও শফিকুর নামের ট্রাফিক পুলিশ চেকিং এর নামে আমার ড্রাইভারের কাছে কাগজ পত্র সব চাইল। আমার ড্রাইভার গাড়ী থেকে নেমে মটর সাইকেলের উপড় বসা সার্জেন্ট এর কাছে গেল।

গাড়ীতে এসি কাজ করছিল না বিধায় গরমে ৪ জন বাচ্চা অস্থির অবস্থা দেখে আমি নিজেই নীচে নেমে গিয়ে সার্জেন্ট জহুরুল সাহেবকে সব কথা বললাম । কিন্তু বৃথা এ অনুরোধ ……। । সার্জেন্ট উল্টা আমাকে তাঁর কার্ড বের করে দেখাল সেও একজন এল এল বি পাস । এবং আমার কাগজ পত্র সব অনেক সময় নিয়ে উল্টে পাল্টে দেখল।

গরমে মনে হলো………… কি মনে হলো নাই বা বললাম। কাগজ পত্রে যখন কিছুই পেল না। তখন ড্রাইভারের লাইসেন্স সার্জেন্ট চাইল। আমার ড্রাইভারের লাইসেন্স অরিজিনাল। ৪ বছর হয়ে গ্যাছে আর এক বছর পড় রিনিঊ করতে হবে।

সার্জেন্ট সেই লাইসেন্স দেখে বলল । “লাইসেন্স তো সুবিধার না” । আমার ড্রাইভার বলল “ স্যার কি অসুবিধা?” তখন সার্জেন্ট আমাদের হাতে কাগজ ধরিয়ে দিল। আর ড্রাইভারের লাইসেন্স জব্দ করল। আমাকে বলল “যদি ড্রাইভারের লাইসেন্স ঠিক থাকে তবে ১৫ জুনের মধ্যে কাগজ প ত্র উঠিয়ে আনতে পারবে আর না হলে ২০০ টাকা জরিমানা দিয়ে R/C + D/L তুলতে হবে।

আমি ২০ বছর যাবৎ অফিসের গাড়ীতে এবং নিজের গাড়ীতে চড়ে আসছি। কখনোই সার্জেন্ট এর সাথে এই রকম মনোভাব পাইনি। আমাদের পরিবারের সবাই গাড়ীর সব কাগজ পত্র সব সময় আপ টু ডেইট রাখে। যাতে রাস্তা ঘাটে কখনো কোনো সমস্যা না হয়। আর আমার মনে হতো একজন আইনজীবী হিসেবে এতটুকু সচেতনতা আমার থাকা উচিত।

কিন্তু আজকে, একজন আইনজীবী হয়ে গাড়ী চেকিং এর নামে আমি এবং আমার বাচ্চারা যে বিড়ম্বনার স্বীকার হলাম তাহলে সাধারন জনগন কিংবা সিএনজি চালক নিত্যদিন কি অসহ্য যন্ত্রনার মধ্যে দিনাতিপাত করছে আপনারাই ভেবে দেখুন। আমি জানি আমার ড্রাইভার যদি আজকে নেমেই তাঁদের ২০০ টাকা দিয়ে দিত তাহলে আজ এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না। কিন্তু আমার প্রশ্ন, আমি কেন দিব? ওদেঁর টাকা দেওয়াটা কি আমার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে? মটরযান অধ্যাদেশ ১৯৮৩ মোতাবেক অপরাধসমুহের জন্য ১৫৯ ধারায় জরিমানা আরোপের জন্য প্রতিবেদনঃ অপরাধ সমুহ নিন্মরুপঃ ১৩৭ অপরাধের শাস্তি প্রদানের সাধারন বিধান ১৩৯ নিষিদ্ধ হর্ণ কিংবা শব্দ সৃষ্টিকারী যন্ত্র লাগানো ও ব্যবহার। ১৪০ আদেশ অমান্য বাধা সৃষ্টি ও তথ্য প্রদানে অস্বীকৃতি। ১৪২ নির্ধারিত গতির চেয়ে দ্রুত গতিতে গাড়ী চালানো ১৪৬ দুর্ঘটনা সংক্রান্ত অপরাধের ১৪৯ নিরাপত্তাহীন অবস্থায় গাড়ী ব্যবহার।

১৫০ ধোয়া বের হওয়া মটরযান ব্যবহার। ৩৫১ এ অধ্যাদেশের সাথে সঙ্গতিবিহীন অবস্থায় গাড়ী বিক্রয় অথবা গাড়ীর পরিবর্তন সাধন। ১৫২ রেজিষ্ট্রেশন, ফিটনেস সাটিফিকেট অথ বা পারমিট ছাড়া মটর গাড়ী ব্যবহার। ১৫৩ অনুমোদিত এজেন্ট ও ক্যানভাসার ১৫৪ অনুমোদিত ওজন অতিক্রমপুর্বক গাড়ী চালনা ১৫৬ অনুমতি ছাড়া গাড়ী চালনা ১৫৭ প্রকাশ্য সড়কে অথবা প্রকাশ্য স্থানে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি ১৫৮ মটরযানে অননুমোদিত হস্তক্ষেপ উপরোক্ত কোনো অপরাধের কারনে ধরতে না পেরে “১৩৭ অপরাধের শাস্তি প্রদানের সাধারন বিধান” এর আওতায় R/C এবং D/L জব্দ করেছে আর লিখেছে “যাচাই করার জন্য পাঠানো হলো”। আমার গাড়ীর R/C আর ড্রাইভারের ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়েছে।

ডিসি ট্রাফিক কার্যালয়ে অপরাধীকে হাজির হওয়ার তারিখঃ ১৫/০৬/১২ ১৫ই জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করব নাকি পুরো ব্যাপারটির বিবরন দিয়ে একটি চিঠি দিব ডিসি ট্রাফিক বরাবর ??  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।