আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যেসব কারণে মায়ের একমাত্র ছেলেকে বিয়ে করতে মেয়েদের আপত্তি!

সন্তান মাত্রই মা-বাবার আদরের ধন। আর আমাদের সমাজে অধিকাংশ ক্ষেত্রে বাবার ভালবাসার বড় অংশ মেয়ের ভাগ্যে জুটলেও মায়েদের দুর্বলতা ছেলেসন্তানটির প্রতিই থাকে বেশি। সেই সন্তান যদি হয় একমাত্র, তাহলে তো 'সোনায় সোহাগা'!  তাকে রাখা হয় আদরের চূড়ান্ত স্তরে। এর সুদূরপ্রসারী ফল খুব একটা ভালো হয় না। এতে সন্তান যেমন বিগড়ে যেতে পারে, তেমনি তার ভবিষ্যৎ জীবনেও ডেকে আনতে পারে সমস্যা।

বিশেষ করে মায়েরা একমাত্র পুত্রসন্তানকে আগলে রাখেন পাখির বাচ্চার মতো। সকল সমস্যা থেকে ছেলেকে দূরে রাখতে চান। একজন মা হিসেবে এটা খুবই স্বাভাবিক আচরণ। কিন্তু যখনই এই আগলে রাখার প্রবণতা বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে যায়, তখন শুরু হয় সমস্যা।

মায়ের এই অতি আদরে সন্তানের ব্যক্তিত্বের বিকাশ যেমন সঠিকভাবে হয় না, তেমনি সে গড়ে ওঠে না মানসিকভাবে শক্তসামর্থ একজন মানুষ হিসেবে।

এমনকি এর প্রভাব পড়ে তার দাম্পত্যজীবনেও। অনেক মেয়েই বিয়ে করতে চায় না মায়ের একমাত্র পুত্রসন্তানকে। কিন্তু কী তার কারণ? কী সমস্যার কারণে মেয়েরা পিছিয়ে যায়? কেন তারা মনে করে যে মায়ের একমাত্র পুত্রসন্তানকে বিয়ে করা উচিত নয়? কারণগুলো একটু ভাবলে আমাদের সবারই চোখে ধরা দেবে। দেখা যাক কারণগুলো কী কী?

স্বামীর পরনির্ভরশীল এবং শিশুসুলভ হওয়া :পরিবারের একমাত্র সন্তান হওয়ায় ছেলে বড় হয় পরনির্ভরশীল হিসেবে। কারণ বড় কাজগুলো তো বটেই, ছেলের ছোট-খাট কাজগুলোও মা করে দিয়ে থাকেন।

ফলে ছেলে নিজের দেখভাল যেমন করতে পারে না, তেমনি অপরের দায়িত্বও নিতে পারে না। অথচ পুরুষদের হওয়া উচিত এমন যাতে তারা সহজেই স্ত্রী ও মায়ের দায়িত্ব নিতে পারে। এছাড়া মায়ের একমাত্র ছেলেরা তুলনামূলকভাবে শিশুসুলভ হয়। কারণ মা তাকে সারাক্ষণ ছোট বাচ্চার মতোই আগলে রাখে। এর ফলে ছেলে মানসিকভাবে বড় হওয়ার সুযোগটা কম পায়।

এই ছোট্ট কারণটা দাম্পত্যজীবনে ডেকে আনতে পারে বড় ধরনের সমস্যা। দেখা যায় স্বামী কোনো কিছুই সিরিয়াসভাবে নেন না। শিশুসুলভ হওয়ার কারণে তারা ভবিষ্যৎ নিয়েও কম চিন্তাভাবনা করে থাকেন। মা অন্যায় করলেও তা বলতে না পারা :মা মাত্রই সম্মানিত ব্যক্তি। কিন্তু এই সম্মান অনেক সময় ভীতিরূপে ছেলের মনে অবস্থান করে।

ফলে মা অন্যায় করলেও ছেলে তা বলতে পারে না। বিশেষ করে একমাত্র ছেলেরা মায়ের অন্ধ ভক্ত হয়। তাই মায়ের ন্যায়-অন্যায়ের বিচারের ক্ষমতা তাদের থাকে না। আর এ সমস্যাটা তখনই প্রকট হয়ে দাঁড়ায় যখন ঘরে পুত্রবধু আসে। মা স্ত্রীর সাথে অন্যায় আচরণ করলেও ছেলে তা নিয়ে কথা বলতে পারে না।

অনেক সময় মা অন্যায় করলেও ছেলেকে মায়ের পক্ষ নিয়ে কথা বলতে বা স্ত্রীকে শাস্তি দিতে দেখা যায়। এতে যেমন স্ত্রীর অধিকার খর্ব হয়, তেমনি সংসারে আসে অশান্তি।

দাম্পত্য জীবনে শাশুড়ির নাক গলানো :মায়ের একমাত্র পুত্র তার মায়ের কাছেই ছোটবেলা থেকে সব গোপন কথা শেয়ার করতে অভ্যস্ত থাকে। ফলে দেখা যায়, দাম্পত্যজীবনের অনেক কথাই তারা মাকে বলে ফেলে। এতে শাশুড়ি তার পুত্রবধু সম্পর্কে এমন কথাই জেনে যান, যা হয়তো জানাটা উচিত নয়।

অনেক মাকে দেখা যায় ছেলের দাম্পত্যজীবন নিয়ে অতিরিক্ত মাথা ঘামাতে, যা আদৌ শোভনীয় নয়।

যেমন তাড়াতাড়ি ঘুমুতে গেলে কেন, ঘুম থেকে উঠে গোসল করেছ কিনা, তোমাদের শারীরিক সম্পর্কে সমস্যা আছে কিনা, বাচ্চা কেন নিচ্ছ না ইত্যাদি প্রশ্ন করা। এতে যেমন দাম্পত্যের গোপনীয়তা বজায় থাকে না, তেমনি পুত্রবধুর ওপরে এক প্রকার মানসিক নির্যাতনও করা হয়। এসব কারণে অনেক মেয়েই মায়ের একমাত্র ছেলেকে বিয়ে করতে চায় না।

সংসার নিয়ে শাশুড়ির ঈর্ষাকাতর হওয়া :এ সমস্যাটি আমাদের দেশের প্রায় প্রতিটি ঘরে ঘরেই দেখতে পাওয়া যায়, ছেলে যদি একমাত্র সন্তান না হয় তবুও।

তবে একমাত্র ছেলের বউকে তুলনামূলক এ সমস্যায় ভুগতে হয় বেশি। কারণ শাশুড়ি তাঁর সংসারে সর্বেসর্বা থাকেন, তাঁর অধীনেই চলে সংসারের যাবতীয় কর্মকাণ্ড। তাই পুত্রবধু যখন তাঁর পরিবারে আসে, তখন থেকেই তাঁর মনে বদ্ধমূল ধারণা হয় যে পুত্রবধু তার প্রতিদ্বন্দ্বি। এছাড়া অনেক সময় তিনি এটাও ধারণা করে বসেন যে ছেলে হাতছাড়া হয়ে গেল বা ছেলে পর হয়ে গেল! অথচ এ ধারণাটি ভিত্তিহীন। এসব ভুল ধারণার ফলে তিনি ছেলে ও ছেলের বউয়ের সংসার নিয়ে ঈর্ষাকাতর হয়ে পড়েন।

এই ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হবার আশঙ্কাতেও অনেক মেয়ে মায়ের একমাত্র ছেলেকে বিয়ে করতে চায় না।

নিজের ব্যক্তিগত জীবন না থাকা :মায়ের একমাত্র পুত্রসন্তানকে বিয়ে করা মানেই ব্যক্তিগত জীবন অনেকাংশে ভুলে যাওয়া। যেহেতু এসব পরিবারে শাশুড়ির কর্তৃত্ব থাকে, তাই প্রয়োজন পড়লেও তাঁর অনুমতি ছাড়া বাড়ির বাইরে যাওয়া যায় না। এমনকি শাশুড়ির ইচ্ছানুযী পোশাক পরা, খাওয়া-দাওয়া, চলাফেরা ইত্যাদিও করতে হয় অনেক পরিবারে। ফলে ব্যক্তি স্বাধীনতা বলতে আর কিছুই অবশিষ্ট থাকে না।

বিশেষ করে যেসব মেয়েরা নিজের ক্যারিয়ার গড়তে চান, তারা মায়ের একমাত্র ছেলেকে এড়িয়ে চলতে চান।

মডেল: সাব্বির ও তাসনিয়া

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/index.php     দেখা হয়েছে বার     বুকমার্ক হয়েছে বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.