আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গুগলের এক্সক্লুসিভ যত সার্ভিস

মনের মহাজন খুঁজে ফিরি.... বর্তমানে গুগল হচ্ছে সবচেয়ে শক্তশালী সার্চ ইঞ্জিন। ইনকরপোরেটেড একটি মার্কিন টেকনোলজি কোম্পানি এবং তাদের গুগল সার্চ ইঞ্জিন ও অনলাইন বিজ্ঞাপনের জন্য বিশ্ববিখ্যাত। গুগল সার্চওয়েবের বৃহত্তম সার্চ ইঞ্জিন। গুগলের লক্ষ্য হচ্ছে, বিশ্বের যাবতীয় তথ্য সুবিন্যস্ত করা এবং সেগুলো সর্বসাধারণের জন্য উপযোগী করে প্রকাশ করা। আমরা অনেকেই গুগলের ইতিহাস বা খুঁটিনাটি তথ্য সবই জানি।

তারপরও যারা জানেন না, তাদের জন্যই এই টিউন। স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্র ল্যারি পেজ এবং সার্গেই ব্রিন গুগলের প্রতিষ্ঠাতা। গুগলের প্রধান কার্যালয় ‘ক্যালিফোর্নিয়ার মাউন্টেইন ভিউ’ নামে শহরে। এর মূলমন্ত্র হচ্ছে, ‘বিশ্বের তথ্য সন্নিবেশিত করে তাকে সবার জন্য সহজলভ্য করে দেয়া। ’ বিশ্বের দ্রুততম সার্চ ইঞ্জিন গুগল ১৯৬৬ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই পিএইচডি কোর্সের ছাত্র ল্যারি পেজ এবং সার্গেই ব্রিন এর কাজ শুরু করেন।

১৯৯৮ সালের ৭ সেপ্টেম্বর ল্যারি পেজ এবং সার্গেই ব্রিন একটি প্রাইভেট লিমিটেড হিসেবে গুগল প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০৪ সালের ১৯ আগস্ট এটি পাবলিক লিমিটেডে রূপান্তরিত হয়। গুগল প্রতিনিয়ত নতুন সেবা, নতুন পণ্য দিয়ে বিশ্বে নিজেদের প্রয়োজনীয়তা বাড়িয়ে তুলছে। বিজ্ঞাপন জগতে নিজেদের অবস্থান করেছে সুদৃঢ়। এছাড়া বিভিন্ন কোম্পানি কিনে এবং অংশীদারিত্ব নিয়ে নিজেদের বহুমুখিতা সমৃদ্ধ করছে।

তাই সার্চের পাশাপাশি ই-মেইল, ভিডিও শেয়ারিং, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং ইত্যাদি বিষয়ে গুগলের সেবা রয়েছে। প্রায় ১৬ হাজার লোকের কর্মসংস্থান জুগিয়েছে এই গুগল। গুগলের মোট আয় হচ্ছে ২.০৭৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (২০০৬)। প্রতিনিয়তই গুগল সমৃদ্ধ করছে তাদের তথ্যভাণ্ডার। হয়তো বেশি দূরে নয় সেদিন, যেদিন গুগল পুরো পৃথিবীটাকে সার্চয়্যাবল ওয়ার্ল্ড করে দেবে।

বর্তমানে গুগল বিশ্বের দ্রুততম সার্চ ইঞ্জিন। গুগল যে সার্চ ইঞ্জিন নিয়েই বসে আছে তা নয়, বরং দিনে দিনে নতুন নতুন সেবার মাধ্যমে ইন্টারনেটের সব ক্ষমতাই মুঠোয় নিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে ব্যবহারকারীরা যেমন ভালো সেবা পাচ্ছেন, তেমনি নেটের ক্ষমতা হয়ে যাচ্ছে একপেশে। গুগলের যেসব সেবা রয়েছে সেগুলো হলো : সার্চ ইঞ্জিন গুগলের সবচেয়ে বেশি চালিত এবং প্রথম কার্যক্রম হলো সার্চ ইঞ্জিন, যা বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে দ্রুততম এবং বহুল ব্যবহৃত সার্চ ইঞ্জিন। এটি ১৯৯৬ সালের জানুয়ারি মাসে তাদের কার্যক্রম শুরু করে।

তারপর দিনে দিনে তারা বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় তাদের অবস্থান প্রথমে আনতে সক্ষম হয়। http://www.google.com.bd গুগল ক্রোম গুগল চায় সব জায়গাতেই তাদের আধিপত্য বিস্তার করতে। ব্রাউজারের জন্য তারা গুগল ক্রোম বের করেছে, যা অন্যন্য ব্রাউজারের তুলনায় অনেক ফাস্ট, কিন্তু এর চেয়ে অপেরা এখন পর্যন্ত অনেক ভালো পজিশনে আছে। গুগল ওয়েভ ইয়াহু, মাইক্রোসফটকে পেছনে ফেলার কাজ তো শেষ, এখন শুধু বাকি আছে ফেসবুক। তাও হয়তো গুগল ওয়েভের কাছে হার মেনে যাবে, কেননা নতুন নতুন আকর্ষনীয় সার্ভিস থাকবে গুগল ওয়েভে, যা কিছুদিনের মধ্যেই ফেসবুকের জনপ্রিয়তায় ভাটা ফেলতে সাহায্য করবে।

গুগল আর্থ আমরা যারা বিশ্বভ্রমণ করতে ভালোবাসি, কিন্তু টাকা নেই, তাদের জন্যই মূলত এই সার্ভিস। এর মাধ্যমে নেটে বসেই পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তের ছবি দেখা সম্ভব। এই সার্ভিস অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠছে দিন দিন। গুগল এমনকি পানির মধ্যকার ছবিও দেখতে দিচ্ছে গুগল আর্থের মাধ্যমে। গুগল টক ইয়াহুর জনপ্রিয়তা কমাতে গুগলকে এই সফটওয়্যারটি তৈরি করতে হয়েছে।

এর মাধ্যমে এখন জিমেইলের আইডি দিয়ে অন্যের সঙ্গে চ্যাট করা যাচ্ছে এবং ভয়েস চ্যাটের ভয়েস খুব স্পষ্ট। হয়তো ভবিষ্যতে এর আরও নতুন ফিচার দেয়া হবে। গুগল ই-বুক গুগল তাদের ব্যবহারকারীদের জন্য বই কালেকশন করছে, যার মাধ্যমে নেটে বসেই বই পড়া যাবে। আর এতে প্রায় ২৪টি ক্যাটাগরির বই পাওয়া যায়। নতুন পুরনো সব বই একসময় পাওয়া যাবে এই গুগল ই-বুকে।

এমনকি এখন বিলুপ্তপ্রায় বইগুলো কালেকশন করার চেষ্টা করছে গুগল। ঠিকানা : http://books.google.com/books জিমেইল নোটিফাই জিমেইলের একটি অনন্য সার্ভিস হলো মেইল নোটিফাই। আমরা অনেকেই মেইল চেক করতে চাই না, বা অনেকদিন পরপর মেইল চেক করি। হয়তো বা অনেকে মেইলের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে, তাদের জন্য মূলত এই সার্ভিস, যাতে মেইল আসার সঙ্গে সঙ্গেই গুগল আপনাকে জানিয়ে দেবে—কে মেইল পাঠিয়েছে এবং এর সাবজেক্ট কী। ব্লগস্পট আমরা যারা ফ্রি ওয়েব বা ব্লগসাইট বানাতে চাই, তাদের জন্যই গুগলের এই উদার সেবা।

এর ফলে খুব সহজেই কোনো ইন্টারনেট ব্যবহারকারী একটি ব্লগসাইট বানাতে পারে। আর এটা ব্যবহার করা খুব সহজ। ঠিকানা : https://www.blogger.com/start গুগল অ্যাডসেন্স প্রবৃদ্ধি যাতে আরও বৃদ্ধি পায় সেজন্য গুগল নিজেদের শেয়ার থেকে কিছু অর্থ বরাদ্দ রেখেছে। যারা সাইটে গুগলের দেয়া অ্যাড বসাবে তারা এই টাকার কিছু অংশ পাবে। এর ফলে একদিকে যেমন গুগল লাভবান হচ্ছে, তেমনি যে বিজ্ঞাপন দিচ্ছে সেও লাভবান হচ্ছে।

গুগল ট্রান্সলেট গুগলের একট অসাধারণ সার্ভিস হলো গুগল ট্রান্সলেট। এর ফলে খুব সহজেই বাংলা ভাষাসহ বিশ্বের প্রায় ৫০টি ভাষায় ট্রান্সলেট করা সম্ভব হচ্ছে। ভবিষ্যতে ভাষার সংখ্যা আরও বাড়ানো হতে পারে। ঠিকানা : http://translate.google.com গুগল ফাস্ট ফ্লিপ গুগল ফাস্ট ফ্লিপ হলো একটি নিউজ অ্যাগ্রিগেটর সার্ভিস। গুগল নিউজের সঙ্গে এর পার্থক্য হলো—এতে আপনি পাবলিশার বা ঘটনা অনুসারে সাজানো নিউজ পাবেন।

খবরগুলোর নেভিগেশন সিস্টেম গুগল নিউজের মতো হলেও ক্লিক করলে সংশ্লিষ্ট সাইটে চলে যাবে। অনেকটা ম্যাগাজিনের পাতা ওল্টানোর মতো আপনি খুব সহজেই মাউস স্ক্রল করে বা কার্সরের মাধ্যমে মুভ করতে পারবেন। ঠিকানা : http://fastflip.googlelabs.com গুগল গ্যাজেটস গুগল গ্যাজেটের মাধ্যমে ওয়েবে বা নিজের ডেস্কটপে ডায়নামিক কনটেক্সট যোগ করা সম্ভব, হতে পারে তা নিজের আইগুগল পেজ, ব্লগ, ওয়েব পেজ বা গুগল ডেস্কটপ। যে কেউ নিজের তৈরি কনটেক্সট পাবলিশ করতে পারেন এর মাধ্যমে। গুগল লাইভলি এটি গুগলের ভার্চুয়াল দুনিয়া।

এতে আপনি আপনার নিজস্ব রুম তৈরি করতে পারেন। সেটি ইচ্ছামত সাজাতে পারেন। ডিজাইন করতে বা রঙ বদলাতে পারেন। পিকাসা বা ইউটিউব থেকে ছবি দেয়ালের ফ্রেমে ঝোলাতে পারেন। একসঙ্গে ২০ জন পর্যন্ত চ্যাট করা সম্ভব রুমগুলোতে।

আপনি এবং অন্যরা একেকটি কার্টুন ক্যারেক্টার হিসেবে রুমে একে অন্যকে দেখতে পারবেন এবং আপনাদের কথাগুলো বাবল হিসেবে দেখা যাবে। তবে বর্তমানে এ সার্ভিসটি বন্ধ আছে। গুগল ল্যাটিচুড গুগলের লোকেশন ট্র্যাকিং সার্ভিস। মোবাইল ফোনে গুগল ম্যাপস ব্যবহার করে একজন ব্যবহারকারী তার নিজের বর্তমান অবস্থান অন্যদের জানাতে পারেন। ব্ল্যাকবেরি, উইন্ডোজ মোবাইল, অ্যান্ড্রয়েড, আইফোন আর সিম্বিয়ান প্লাটফর্মে কাজ করে এটি।

ফাঁকিবাজির ব্যবস্থাও আছে, কিন্তু আপনি চাইলে শুধু শহরের নাম দেখাতে পারেন, এমনকি নিজে যে কোনো লোকেশন ম্যানুয়ালি লিখেও দিতে পারেন! ঢাকায় বসে সিডনি লিখে দিলে সবাই দেখবে আপনি সিডনিতে! ঠিকানা : http://www.google.com/latitude গুগল মার্স আমাদের মতো নাদানদের মঙ্গল গ্রহ দেখার সুব্যবস্থা করে দিয়েছে এই সার্ভিস। বিভিন্ন উত্স থেকে সংগ্রহ করা মঙ্গল গ্রহের ছবি নিয়ে ব্রাউজার আর গুগল আর্থভিত্তিক সার্ভিস এটি। ব্রাউজারে দ্বিমাত্রিক হলেও গুগল আর্থে হাই রেজুলেশন ত্রিমাত্রিক ছবি দেখতে পাবেন আপনি। দেখতে চাইলে এই ঠিকানা : http://mars.google.com গুগল মুন গুগল মার্সের মতো একই সার্ভিস চাঁদ দেখার জন্য। ছবির কালেকশন আর কোয়ালিটি স্বভাবতই মার্সের চেয়ে সমৃদ্ধ।

ঠিকানা : http://moon.google.com গুগল মডারেটর গুগলের মডু সার্ভিস। এটা একটা সার্ভে বা কোশ্চেন এবং তার ফিডব্যাক ম্যানেজমেন্ট টুল। এর মাধ্যমে ব্যাপক আকারে প্রশ্ন, সাজেশন বা আইডিয়া কালেক্ট করা, সাজানো বা বিশ্লেষণ করা যায়। কোনো বিষয়ের ওপর বা প্রশ্নে রেটিং বা ভোটিংয়ের ব্যবস্থাও আছে। ঠিকানা : http://moderator.appspot.com অরকুট এটি গুগলের সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট।

ফেসবুকের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পাত্তা না পেলেও এটি বেশ জনপ্রিয়। এতে ফেসবুকের মতোই প্রোফাইল তৈরি, ছবি, ভিডিও শেয়ারিং, ফ্রেন্ডশিপ করা যায়। এতে থিম পরিবর্তনের সুবিধা রয়েছে। গুগলের অন্য সার্ভিসের সঙ্গে ইনট্রিগেশন করা যায় একে। গুগল টক ব্যবহার করে চ্যাটিং আর ফাইল শেয়ারিংও সম্ভব।

করা যায় ভিডিও চ্যাটও। বন্ধুদের রেটিং করা যায়। ফেসবুকের সঙ্গে একটা বড় পার্থক্য হলো, আপনি যাদের ইগনোর লিস্টে রেখেছেন তারা ছাড়া যে কেউ যে কারও প্রোফাইল দেখতে পারবে, বন্ধু না হলেও। ঠিকানা : http://www.orkut.com গুগল স্কলার গুগল স্কলার একটি স্কলার আর্টিকেল, টেকনিক্যাল রাইটিং, রিপোর্ট আর থিসিস সার্চ ইঞ্জিন। ডিসিপ্লিনভিত্তিক স্কলার ফুল টেক্সট কনটেক্সট সার্চ করা যায় এতে।

বিশ্ববিখ্যাত অসংখ্য জার্নাল থেকে ফুল পাবলিকেশন পাওয়া যায়। গুগল সাইটস নবিসদের জন্য ওয়েবসাইট তৈরির সার্ভিস। খুব সহজে কোনো ধরনের কোডিং জানা ছাড়াই ওয়েবপেজ তৈরি আর পাবলিশ করা যায় গুগলের সার্ভারে। খুব সহজ থিম, ফন্ট, লেআউট কাস্টমাইজেশন করা গেলেও হাই কোয়ালিটি পেজ বা ডায়নামিক কিছু করা সম্ভব নয়। ফ্রি ইউজারদের ১০০ মেগাবাইট স্টোরেজ আর গুগল ডক, ইউটিউব, ক্যালেন্ডার থেকে কনটেক্সট যোগ করা যায়।

রয়েছে অ্যাডসেন্সও! গুগল স্ট্রিট ভিউ গুগল ম্যাপস আর গুগল আর্থের একটি ফিচার এটি। বিশ্বের বিভিন্ন বড় বড় শহরের রাস্তাঘাট একেবারে ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে দেখা যায়। স্যাটেলাইট ইমেজ, জাহাজ বা গাড়ি থেকে তোলা ছবি ব্যবহার করা হয়েছে এতে। রয়েছে জুম করার সুবিধাও। গুগল স্কোয়াড গুগল স্কোয়াড একটি ডাটা এক্সট্রাকশন সার্ভিস।

ওয়েব থেকে আপনার দরকারি ডাটা কালেক্ট করে স্প্রেডশিট আকারে দেবে এটি। সার্ভিসটি এখনও বেটা পর্যায়ে আছে। ঠিকানা : http://www.google.com/squared গুগল ট্রেন্ড কোনো একটি নির্দিষ্ট বিষয় জনমনে কতটুকু আলোড়ন তুলছে, সেটা দেখার সেবা। গ্রাফের মাধ্যমে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কেন কি-ওয়ার্ড দিয়ে করা সার্চের পরিমাণ দেখা যায়। মোট সার্চের পরিমাণের কত ভাগ এই কি-ওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করা হয়েছে, তার একটা তুলনামূলক চিত্র পাওয়া যায় এ থেকে।

ভেবো মিউজিক ভিডিও সার্ভিস। ইউটিউব আর ইউনিভার্সাল স্টুডিওর যৌথ উদ্যোগে মিউজিক ভিডিও বিক্রির ব্যবস্থা। ঠিকানা : http://www.vevo.com আমার এই লেখাটি আজ ২২ মে ২০১২ ইং মঙ্গলবার দৈনিক আমারদেশ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে | ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।