বাংলার মাটি বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল, পুন্য হউক, পুন্য হউক, পুন্য হউক, হে ভগবান। বাংলার ঘর, বাংলার হাট, বাংলার বন, বাংলার মাঠ, পুর্ন হউক, পূর্ন হউক, পূর্ন হ্উক, হে ভগবান। রবীন্দ্রনাথ আজ সকাল থেকেই জোছনা বানুর ঢলোঢলো ফর্সা মুখটি কেমন থমথম করছিল। চুলায় গরম পানি বসিয়েছে। রুটি বানাবে।
রান্নাঘরের বড় জানালা দিয়ে সোনালি রোদ ঢুকেছে। পেয়ারা বাগানে কাক-পাখিদের চিৎকার। মরিয়ম বেগমের আদরের বেড়াল ‘মিল্লাত’ নিঃশব্দে ঢুকল রান্নাঘরে। মিল্লাতের দিকে বিষদৃষ্টিতে চাইল জোছনা বানু।
মরিয়ম বেগম রান্নাঘরে ঢুকে পীঁড়ির ওপর বসলেন।
জোছনা বানু তখনও মিল্লাতকে দুধ দেয় নি দেখে জিজ্ঞেস করলেন, কি রে জোছনা, আজ কি হল তোর?
জোছনা বানু ফস করে বলে, নানী, আমার বেতন কইলাম আইজ হিসাব কইরা দিয়া দিবেন।
কথাটা শুনে মরিয়ম বেগম অবাক হয়ে গেলেন। বেতন দেব? কেন তুই এ বাড়িতে কাজ করবি না?
করুম।
তাহলে বেতনের টাকা চাইছিস কেন?
জোছনা বানু চুপ করে থাকে। একটু পরে সব খুলে বলল জোছনা বানু ...জোছনা বানুর একটা মোবাইল আছে।
মরিয়ম বেগমই কিনে দিয়েছেন। তো, গত রাতে, অনেক রাতে সে মোবাইলে একটা কল এসেছে। ভরাট পুরুষকন্ঠ সালাম দিল। তারপর বলল, আল্লাহর রহমতে আপনি একটি স্বর্ণের পক্ষী পেয়েছেন । এখন স্বর্ণের পক্ষী নিতে হইলে আপনাকে বিশ হাজার টাকাসহ সুতির হাটের ছোট দরগায় আসতে হবে।
জোছনা বানু বলল, নানী, আপনি আমারে বিশ হাজার টেকা ধার দেন, আমি কাম কইরা সব টেকা শোধ কইরা দিমু।
মরিয়ম বেগম স্তম্ভিত। বললেন, আচ্ছা, টাকা কাল নিস। বলে তিনি রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে বারান্দায় এলেন।
বারান্দার বেতের চেয়ারে বসে ডাকলেন-মরম ও মরম।
মরম এল।
মরিয়ম বেগম কপাল কুঁচকে বললেন, আমার মনে হয় জোছনা জিনের বাদশার খপ্পড়ে পড়েছে। কে নাকি গতকাল রাতে ওকে ফোন করে স্বর্ণের পক্ষী দেবে বলেছে। সুতির হাটের ছোট দরগায় বিশ হাজার টাকা নিয়ে যেতে বলেছে । টাকার জন্য জোছনা অস্থির হয়ে গেছে।
এখন কি করা যায় বলত।
মরম হাসল। বলল, দেখেন আমি কি করি।
মরিয়ম বেগম মুচকি হাসলেন।
রুটি সেঁকা প্রায় শেষ।
চুলার ওপর একটা কড়াইয়ে গত রাতের বাসি তরকারি। জলিল মিঞা রান্না ঘরে ঢুলল। জলিল মিঞার পরনে চেকলুঙ্গি আর সাদা ফতুয়া। পুকুর থেকে গোছল সেরে এসেছে জলিল মিঞা। চুল ভেজা।
উবু হয়ে বসল জলিল মিঞা।
জোছনা বানু মুখ তুলে বলল, নাস্তা খাইবেন?
না মা। তোমারে একখান কথা কইতে আইছি।
কি কথা কন। বলে জোছনা বানু তরকারির কড়াই নামিয়ে রাখল।
জলিল মিঞা একবার দরজার দিকে তাকিয়ে ফিসফিস করে বলল, আমি তোমারে বিশ্বাস করি জোসনা।
হ করেন। জানি।
জলিল মিঞা প্রায় ফিসফিস করে বলল, এই মজলিশ বাড়িত অনেক বছর চাকরি কইরা আমার অনেক টাকা জমছে। খরচও হইছে কিছু ।
এখন তোমার কাছে কিছু টাকা জমা রাখুম। আমি আগুন মাসে বাড়ি যামু। বাড়ি যাওনের আগে তুমার কাছ থিকা টাকা নিয়া যামু।
জোছনা বানুর বুক ধরাস করে ওঠে। কত টাকা?
বিশ হাজার?
জোছনা বানু তার ফরসা মুখে তাপ টের পায়।
টাকা আল্লই ব্যবস্থা কইরা দিছেন। কথায় বলে না-রাখে আল্লা মারে কে!
জলিল মিঞার হাতে লাল রঙের কাপড়ের একটি পুঁটুলি। ওটা সে জোছনা বানুকে দিল। জোছনা বানু পুঁটুলি খুলে দেখল এক হাজার টাকার অনেক ক’টা নোট। জলিল মিঞা বলল, সাবধানে রাখিস।
বলে উঠে দাঁড়াল। তার পর রান্নঘর থেকে বেরিয়ে গেল।
রান্নাঘরে একটি সাদ পাটের শিকা ঝুলছে, তাতে মাটির তৈরি চাকা ঝুলছে। শিকায় বেশ কটি মাটির হাঁড়ি। একটি হাঁড়ির ভিতরে রাখল পুঁটুলি।
কেউ যে দেখেনি তা জোছনা বানু এক রকম নিশ্চিত। গভীর আনন্দে শরীর তার কাঁপছে।
দশটার মধ্যে গোছল টোসল সেরে লাল টুকটুকে শাড়ি পড়ল জোছনা বেগম। গালে ছোনো মাখল। তারপর কালো রঙের একটি বোরখা পরে মরিয়ম বেগম- এর ঘরে এল।
মরিয়ম বেগম টেলিফোনে মীরখালীতে বড় মেয়ে সেলিনা সঙ্গে কথা বলছেন। হ্যাঁ, সারওরের মেয়ে পছন্দ হয়েছে। রহমত উকিলও মত দিয়েছেন। এখন ডেট ঠিক করব। বিয়েতে তোর শ্বশুর শাশুড়ি যেন আসে।
আরও কিছুক্ষণ কথা বললেন মরিয়ম বেগম। তার ফোন অফ করলেন, কি রে ?
নানী, আমারে ছুটি দেন।
ছুটি নিবি? কোথায় যাবি?
আমার কাম আছে।
আচ্ছা যা।
জোছনা বানু ঘর থেকে বেরিয়ে যায়।
মরিয়ম বেগম মুচকি হাসেন।
জোছনা বানু রান্না ঘরে এল। শিকা থেকে মাটির হাঁড়ি নামাল। হাঁড়িতে পুঁটুলি নেই! জোছনা বানুর মাথা টলে উঠল।
সুতির হাট জায়গাটি রূপপুরের এক কিলোমিটার উত্তরে।
বাসষ্ট্যান্ড লাগোয়া বাজারে টিনের চালাঘর, মুদিদোকান, মিষ্টির দোকান, চালের আড়ত, চায়ের দোকান ও হোমিওপ্যাথির দোকান রয়েছে। এমনিতে সুতির হাটের তেমন বিশেষত্ব নেই। ছোট দরগায় লোকজন আসে। মানত করে। ছোট দরগা বাসষ্ট্যান্ড থেকে মিনিট দশকের হাঁটাপথ।
এবড়োখেবড়ো পথে রিকশা যায়, ভ্যান যায়। বাস থেকে নেমে জোছনা বানু অবশ্য হেঁটেই গেল। কালো বোরখা পরা থলথলে শরীরটি দ্রুত হাঁটছিল।
সকাল এগারোটার মতো বাজে। এ সময় দরগা ফাঁকা থাকে।
ভিড় হয় বিকেলের দিকে । মূল দরগাটি ছোট। সাদা চুনকাম করা । পাশেই একটি কালচে পানির পানা পুকুর। পুকুরে অনেকগুলি রাজহাঁস।
লোকে বলে ছোট দরগার পীর শা কেরামত- এর বাহন ছিল রাজহাঁস।
দরগার সামনে দাঁড়িয়ে এদিক-ওদিক চাইল জোছনা বানু । দরগার ভিতর থেকে সাদা পাঞ্জাবি আর সবুজ লুঙ্গি পরা একজন মধ্যবয়েসি স্বাস্থবান লোক বেরিয়ে এল। লোকটির গায়ের রং কালো। মুখে ঘন দাড়ি।
নাচের নীচে মসৃন ভাবে কামানো । মাথায় তালপাতার টুপি। লোকটা অত্যন্ত মোলায়েম কন্ঠে বলল, বহিন, আপনি কি স্বর্ণের পক্ষী নিতে আইছেন?
হ।
বিশ হাজার টাকা আনছেন তো বহিন?
হ।
অজু করছেন?
হ।
বড় নিশ্চিন্ত হইলাম। তাইলে শোনেন, আমার নাম মকবুল হোসেন দেওয়ান। আসেন, আমার সঙ্গে আসেন । বলে লোকটি ঘুরে দাঁড়িয়ে হাঁটতে থাকে। দরগার পিছনে ছোট একটি টিনসেডের ঘর।
ছোট্ট বারান্দা। সে বারান্দা পেরিয়ে ছোট্ট ঘর। ঘরের প্রায় পুরোটাই একটা চৌকি দখল করে রেখেছে। চৌকির ওপর মাদুর বিছানো । তার ওপর একটা তেল চিটচিটে বালিশ।
ওপাশে জানালা । সবুজ রং করা পাল্লা। জানালার ওপারে তাক। তাকের ওপর বইপুস্তক আছে। মকবুল হোসেন দেওয়ান চৌকির ওপর বসল।
বলল, দেন, টাকা দেন।
জোছনা বানু পুঁটুলিটা দিল। পুঁটুলিটা খুলে টাকা গুনে গুনে দেখল লোকটা । এক হাজার টাকার কুড়িটি ব্যাঙ্ক নোট। সন্তুষ্ট হয়ে মাথা নাড়ল।
বলল, স্বর্ণের পক্ষী আপনে আগামী শুক্রবার পাইবেন বইন।
কন কি? আইজ দিবেন না? জোছনা বেগমের মুখ কালো হয়ে ওঠে।
না। ওস্তাদের নিষেদ আছে। কন হক মওলা।
হক মওলা। জোছনা বেগম বলে।
মকবুল হোসেন দেওয়ান চোখ বুজে মারফতি গান ধরল,
শা কেরামত বাবার থানে
মাইঝ রাইতের জ্বীনের সনে
কি দেখলা কি দেখলা আন্ধা-মৌলবি
তুমি হইলা নূরের বয়াতী ...ও শাঁই রে ...
জোছনা বানু বিরক্ত হয়ে বলল, আমি এখন যাই। হজুর আপনি আমারে বাজার পর্যন্ত আগায়ে দেন। আমি মেয়েমানুষ।
লোকজন সন্দ করে।
মকবুল হোসেন দেওয়ান চৌকির ওপর উঠল। তারপর তাকের ওপর পুঁটুলি রেখে বলল, সন্দেশ খাইবেন বহিন? বলে তাক থেকে একটা মিষ্টির বাক্স মকবুল হোসেন দেওয়ান । মিষ্টি বাক্সের গায়ে লেখা: নূরে আলম মিষ্টিঘর। ভিতরে তিনটে গুড়ের সন্দেশ।
জোছনা বানু একটা সন্দেশ মুখে ফেলল।
মকবুল হোসেন দেওয়ান চোখ সরু করে বলল, আরও দশ হাজার টেকা আনলে ভালো হয় বহিন। পারবেন আনতে?
আরও দশ হাজার! কন কি! জোছনা বানুর গলায় সন্দেশ আটকে যায় আর কী
হ। তাইলে স্বর্ণের পক্ষী পাইতে সুবিধা। স্বর্ণের পক্ষী আছে কইতুরা পাহারে।
জ্বীন চালান দিয়া আনতে হইব। খরচাপাতি আছে না।
জোছনা বানু বলে, আইচ্ছা, আমি টেকা দিতে পারুন কিনা সেইটা আমি আপনারে মোবাইলে জানামু। আপনার নাম্বার আমি ছেব কইরা রাখছি।
আইচ্ছা।
এখন চলেন, আপনারে রূপপুরের বাসে তুইলা দেই ।
সুতির হাট বাজারে চায়ের দোকানের ঠিক উলটো দিকে একটি পুলিশের জিপ থেমে আছে। আশে পাশে অবশ্য পুলিশ চোখে পড়ল না। রূপপুর থানার সাব-ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ মোজাম্মেল হোসেন চায়ের দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন। বেনসন লাইট ধরিয়ে আয়েস করে ধোঁওয়া ছাড়ছিলেন।
যা গরম পরেছে। ভীষন ঘামছিলেন। দূর থেকে বোরখাপরা একজন মহিলাকে আসতে দেখলেন। পাশে জিনের বাদশাহ মকবুল হোসেন দেওয়ান । ইরফরমার পটা লোকটার নামে আগেই রিপোর্ট করেছিল।
মকবুল হোসেন দেওয়ান জিপের কাছাকাছি এলেই চালের আড়ত থেকে কয়েক জন পুলিশ তার দিকে রাইফেল তাক করে ছুটে যায়। জোছনা বানু হাসলেও জিনের বাদশার মুখটা দেখার মতো হল।
জিনের বাদশাকে নিয়ে যখন শোরগোল পড়ে গেল, তখন একটি টিয়ে পাখি আকাশে উড়াল দিল।
পরদিন সকালে মরিয়ম বেগম বারান্দায় বেতের চেয়ারে বসেছিলে। হাতে দৈনিক রূপপুর পত্রিকা ।
মরম কে ডেকে জোছনা বানুকে আসতে বললেন। মরমের পরনে সাদা গেঞ্জি আর নীল রঙের হাফপ্যান্ট আর স্যান্ডেল। সাদা গেঞ্জির ওপরে লাল রঙের লেখা, ‘আই লাভ ব্যাংকক’ । ছোটচাচা থাইল্যান্ড গিয়েছিলেন। মরমের নিয়ে এসেছেন।
জোছনা বানু এলে রূপপুরের ব্রেকিং নিউজটা পড়ে শোনালেন মরিয়ম বেগম। বললেন, আরেকটু হলে জিনের বাদশা মকবুল তর সর্বনাশ করত।
জোছনা বানু আর কি বলে। চুপ করে মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে রইল। প্রায় চব্বিশ ঘন্টা একটা সত্যি কথাটা চেপে রেখেছে।
দমবন্ধ হওয়ার অবস্থা। এখন বলল, নানী, জলিল মিঞা আমারে বিশ হাজার টাকা দিছিল রাখতে । টাকা রান্নাঘরে লুকায় রাখছিলাম। অখন টাকা পাই না। কে যেন নিসে।
আশ্চর্য! টাকা আবার কে নেবে? এবাড়ির সবাই বিশ্বাসী। যা তো মরম ভালো করে খুঁজে দেখ ত।
মরম দৌড়ে রান্নাঘরে গেল। একটু পর ফিরে এল। ওর হাতে সেই লাল কাপড়ের পুঁটুলি।
মরিয়ম বেগম পুঁটুলি নিয়ে গিঁট খুলে বললেন, এই তো টাকা। খালি খালি মানুষকে সন্দেহ করিস।
জোছনা বানু মিইয়ে গেলেও এতক্ষণে ধরে প্রাণ ফিরে পেল যেন। ঠোঁট উলটে বলল, নানী, আমি আর যের তের টেকা রাখুম না। যার টেকা আমি তারে ফিরায় দিমু।
মরম বলল, ও জোছনাবু, তুমি স্বর্ণের পক্ষী দিয়ে কি করবা?
যতœ কইরা রাইখা দিমু । বিক্রি করুম না।
আচ্ছা আমি তোমাকে একটা স্বর্ণের পক্ষী দিব।
তুমি কেমনে দিবা?
সে আমি বুঝব। এবার বলো তো তোমার কি পাখি পছন্দ?
টুনটুনি।
যাও, রান্নাঘরের শিকায় হাঁড়ির ভিতরে দেখ একটা স্বর্ণের টুনটুনি পক্ষী আছে।
ও মা। কয় কী! বলে জোছনা বানু থলথলে শরীর নিয়ে রান্নাঘরে ছুটল।
মরিয়ম বেগম মরমের দিকে চেয়ে মধুর হাসলেন।
জলিল মিঞা পুকুরে মাছ ধরছিল।
এখন এসে বারান্দার ওপর একটা রুই মাছ ফেলল।
যা মাছটা ফরিদাদের বাড়ি দিয়ে আয়। টক দই দিয়ে রাঁধতে বলিস।
মরম আর ব্যাগের জন্যে রান্নাঘরে গেল না। তখনও প্রায় জ্যান্ত রুইটা কোলে তুলে বেরিয়ে পড়ল।
ঝাঁ ঝাঁ রোদে খুশি মনে হাঁটছে মরম। দইমাছ ওরও প্রিয়। এই আইটেমটা জ্বীনের রাজ্যে হয় না। দূনঈয়াদারি এত মজার বলেই না ও আজও দূনঈয়ায় রয়ে গেছে।
মাধব ঘোষের শ্রীময়ী মিষ্টান্ন ভান্ডারটি শিবতলার আলামিন সুপার মার্কেটের একতলায়।
ফরিদা কলেজ থেকে ফিরছিল। হঠাৎই ওদিকে চোখ গেল। টক দই কেনা দরকার। শ্রীময়ী মিষ্টান্ন ভান্ডারে ঢুকল ফরিদা । গতকাল ফোন করে মরিয়ম খালা দইমাছ খেতে চেয়েছেন।
রুই মাছ পাঠিয়ে দেবেন বলেছেন। গতকালই ফুলির মাকে দিয়ে পেঁয়াজ, রসুন ও আদা বাটিয়ে নিয়ে ফ্রিজে রেখে দিয়েছে।
টক দই কিনে দোকানের বাইরে বেরিয়ে এল ফরিদা। কাঠফাটা রোদ। এগারোটার মতো বাজে।
আজ খুব গরম পড়েছে। তীব্র তাপদাহে ঝলসে যাচ্ছে বৈশাখের শেষ দিনটা। আকাশ বিবর্ণ হয়ে উঠেছে। আকাশ থেকে ঝরছে অদৃশ্য অগ্নিকুন্ড। রাস্তার পাশে পিপাসার্ত কৃষচূড়া গাছের মরা ডালে বসে থাকা তৃষ্ণার্ত কাকেরা চিৎকার করে ডাকতেও ভুলে গেছে।
খর রৌদ্রে পুড়ছে রূপপুর শহর। খাঁ খাঁ করছে পথঘাট।
আজও শিবতলার মোড়ে ফুটপাতের পাশে একটি ১২৫ সিসি-র ইয়ামাহা ওয়াই বি আর ওয়ান টয়েনটি ফাইভ- এর ওপর বসে ছিল দরগাপাড়ার তোবারক মওলার ছোটছেলে হেমায়েত উদ্দীন । হাঁটতে হাঁটতে থমকে দাঁড়িয়েই আবার হাঁটতে লাগল ফরিদা। হেমায়েত উদ্দীনের পরনের ফিনফিনে সাদা গেঞ্জিটা ঘামে ভিজে গেছে।
হেলমেটবিহীন ন্যাড়া মাথা চকচক করছিল। ফরিদা পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় শিস দিল বখাটেটা। শরীর ঘিনঘিন করে উঠল ফরিদার। বাংলা ছবির অশ্লীল গানের দু’ লাইন গেয়ে ওঠে হেমায়েত উদ্দীন । রাগে শরী রি রি করছে ফরিদার।
নিঃশ্বাস ঘন হয়ে উঠল। যেমন বাপ তেমন ছেলে। দরগাপাড়ার তোবারক মওলা রূপপুরের গডফাদরদের একজন।
বাড়ি ফিরেও রাগে গা জ্বলে যাচ্ছিল ফরিদার । বাথরুমে ঢুকে অনেক ধরে শরীর ভিজিয়ে রাখল।
মরিয়ম খালা মরমের হাত দিয়ে রুইমাছ পাঠিয়েছেন। ফুলির মা সে মাছ কেটেকুটে বেছে রেখে গেছে। রান্নাঘরে ঢুকে জেরিন রহমান এর লেখা ‘নানা পদের মাছ রান্না বইটা খুলল ফরিদা। কাল রাতেও একবার ঘুমোনোর আগে চোখ বুলিয়েছে। অল্প পানিতে টক দই ফেটিয়ে তাতে রুই মাছের টুকরা, লবন, পেঁয়াজ, রসুন ও আদা বাটা, গরম মশলার গুঁড়ো ও শুকনো মরিচের গুঁড়ো মিশিয়ে নিল ফরিদা ।
তারপর এক টেবিল চামচ ঘিয়ে তেজ পাতা ও আস্ত গরম মশলা ফোড়ন দিয়ে লাল লাল করে ভেজে নিল। দই ও মশলা মেশানো মাছ ছেড়ে দিল। চুলার আঁচ কমিয়ে দিল। তারপর মনে হল- ওহো, কিসমিসই তো দেওয় হয়নি। মিটসেফ থেকে একটি প্লাস্টিকের কৌটো খুলে কিসমিস বের করে ।
গুনে গুনে আটটি কিসমিস ছিটাল হাঁড়িতে। তারপর ঘড়ি দেখল । একটা বাজে।
মরমদের বাড়ি যেতে যেতে দেড়টা বাজল।
জোছনা বানু রান্নাঘর থেকে খাওয়ার টেবিলের ওপর ভাতের গামলা রাখল।
আজ লালশাক রেঁধেছে। আর আমডাল। ডালে মনে হয় লবন হয়নি। বারবার স্বর্ণের টুনটুনি পক্ষী বার করে দেখছিল অন্যমনস্ক ছিল । জলিল মিঞাকে ডেকে টাকা ফেরত দিয়ে কড়া গলায় বলেছে, আমি যের তের টেকা রাখুম না।
কথাটা শুনে জলিল মিঞার মুখ ভার।
মরিয়ম বেগম লেবুর আচারের বোয়াম নিয়ে খাবার ঘরে এলেন । মরম লেবুর আচার পছন্দ করে। মরম লেবুর আচার বাদেও বেলের মোরব্বা, করমচার আচার, কাঁচা আমের ভর্তা, কামরাঙা ভর্তা, কৎবেল আর চালতার আচার পছন্দ করে। এসব আবার এই বয়েসে মরিয়ম বেগমেরও পছন্দ।
ফরিদা খাওয়ার ঘরের দরজায় এসে দাঁড়াল। হাতে একটি বাটি। সবুজ রঙের চমৎকার একটি সালোয়ার কামিজ পরেছে। সাদা ওড়না। ফরিদাকে দেখে হাসলেন মরিয়ম বেগম ।
খুশি হলেন। বড় ছেলে বউ শহরে থাকে। এক মেয়ে চট্টগ্রাাম আরেক মেয়ে মীরখালী। ফরিদাই কাছে থাকবে। ওর সঙ্গে যত সময় কাটানো যায় ...মরিয়ম বেগম বললেন, এস মা।
এস।
এই নিন, আপনার দইমাছ। বলে বাটিটা টেবিলের ওপর রাখল। বিয়ে পাকা বলে আজকাল এ বাড়ি আসতে লজ্জ্বা পায় ফরিদা।
মরিয়ম বেগম ঢাকনা তুললেন।
সাদা তরকারি ওপর কয়েটা কাঁচা মরিচ। ‘উমম’ ... মরিয়ম বেগমের মুখ থেকে আনন্দসূচক শব্দ বেরুলো। তিনি ‘মরম,’ ‘মরম’ বলে ডাকলেন।
মরম এল।
যা, হাত ধুয়ে আয়।
দইমাছ দিয়ে ভাত খা।
ফরিদা যাই রাঁধুক প্রথমে মরমকেই দেন মরিয়ম বেগম।
মরম হাত ধুয়ে এসে খেতে বসল।
মরিয়ম বেগম জিজ্ঞেস করলেন, তোমার মুখ কালো কেন মা?
ফরিদা কিছু বলতে যাবে - ওর মোবাইল বাজল। নাম্বার দেখে কেটে দিল।
ফরসা মুখটা কেমন ব্যথার নীল ছোপ পড়েছে।
কি হয়েছে মা? খুলে বল তো।
ফরিদা মরমের দিকে তাকাল। মরম একমনে খাচ্ছে। অন্য কোনও দিকে মন নেই।
ফরিদা নীচু স্বরে বলল, খালাম্মা। কলেজ যাওয়া-আসার সময় একটা ছেলে আমাকে খুব ডিসটার্ব করে।
ছেলেটা কে চেন? মরিয়ম বেগমের মুখের রং কেমন বদলে গেছে। কঠোর একটা কালছে ছাপ পড়েছে ।
হ্যাঁ দরগাপাড়ার তোবারক মওলার ছোটছেলে হেমায়েত উদ্দীন
তোবারক মওলা মানে ঐ যে যার কোল্ড স্টোরেজ আর ট্রান্সপোর্টে ব্যবসা আছে?
হ্যাঁ।
মরিয়ম বেগম গম্ভীরস্বরে জানতে চাইলেন, কথাটা বাসায় বলেছ?
ফরিদা মাথা নেড়ে বলল, জ্বী। আম্মা জানেন। আম্মা আব্বাকে বলেছেন। আব্বা আইনের মানুষ। তিনি বলেছেন সলিড এভিডেন্স চাই।
মরিয়ম বেগম শীতল কন্ঠে বললেন, আচ্ছা মা। আমি সলিড এভিডেন্স যোগাড় করছি। তুমি এ নিয়ে ভেব না। বলে আড়চোখে মরমের দিকে তাকালেন। একমনে খাচ্ছে।
অন্য কোনও দিকে মন নেই।
গুমোট সন্ধ্যায় দরগাপাড়ার তোবারক মওলার ছোটছেলে হেমায়েত উদ্দীন নতুন কেনা ১২৫ সিসি-র ইয়ামাহা ওয়াই বি আর ওয়ান টয়েনটি ফাইভটা চালিয়ে জামতলার সরু গলিটা দিয়ে যাচ্ছিল। কালো রঙের ফিনফিনে ফতুয়া পরে ছিল হেমায়েত উদ্দীন । দেখে মনে হল ফুরফুরে মেজাজেই আছে। আজও হেলমেট পরেনি।
কাজেই, হেলমেটবিহীন ন্যাড়া মাথাটি দৃশ্যমান। হেলমেট না পরার কারণে অবশ্য এ শহরের ট্র্যাফিক পুলিশের দরগাপাড়ার তোবারক মওলার ছোটছেলে হেমায়েত উদ্দীন কে ঘাঁটানোর সাহস নেই ।
গলি থেকে বেরিয়ে বড় সড়কে উঠে ডান দিকে টার্ন নিল হেমায়েত উদ্দীন । বাঁদিকে কুচুরি পানায় ভরা কফিলের পুকুর। পুকুরে হাজার হাজার ছিনেজোঁক।
এক একটা এক বিঘত লম্বা। হঠাৎ মনে হল হেমায়েত উদ্দীন এর মনে হল বাইকের ওপর তার নিয়ন্ত্রণ নেই। নিয়ন্ত্রণহীন ইয়ামাহাটা বাঁদিকে ঘুরে রেলিং ভেঙে ধপাস করে পুকুরে মধ্যে গিয়ে পড়ল। রাস্তার লোকজন হইহই করে উঠল। পাশের একটি নির্মীয়মান ভবনে নির্মানশ্রমিকরা কাজ করছিল।
তারা দৌড়ে এল। কারও অবশ্য ছিনেজোঁকের ভয়ে পুকুরে নামার সাহস হল না। বখাটেটা হাবুডুবু খাচ্ছিল, আর চিৎকার করছিল। একজন দড়ি ফেলল । পুকুরের উলটো পাড়ে একটি জামগাছে একটি টিয়ে পাখি বসে ছিল।
টিয়েটা হঠাৎ উড়াল দিল।
হেমায়েত উদ্দীনের ১২৫ সিসি-র ইয়ামাহা ওয়াই বি আর ওয়ান টয়েনটি ফাইভটা কফিলের পুকুর থেকে তোলা হলেও ওটা আর স্টার্ট নেয়নি। হেমায়েত উদ্দীন দারুণ মনোকষ্টে ভুগছে। বাড়িতে একটি পুরনো ভ্যাসপা ছিল। আজকাল ওটা নিয়েই ঘোরে।
আবার ঢাকায় গিয়ে পছন্দের মোটর বাইক কিনে আনতে সময় লাগবে।
হেমায়েত উদ্দীন আজও শিবতলার মোড়ে ভ্যাসপার ওপর বসে ছিল। সকাল এগারোটার মত বাজে। বখাটের পরনে মাথায় হলদে গেঞ্জি। চোখ মহিলা কলেজের দিকে।
আজও ফরিদা পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় শিস দিল হেমায়েত উদ্দীন । ফরিদার শরীর আজও ঘিনঘিন করে উঠল। বাংলা ছবির দু’ কলি গেয়ে ওঠে হেমায়েত উদ্দীন । ফরিদা আজ থমকে দাঁড়াল । বলল, শুনুন আপনার সঙ্গে আমার কথা আছে।
যা হয়, হেমায়েত উদ্দীন ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেল। বলল, বলেন কি বলবেন।
রাস্তায় দাঁড়িয়ে কি কথা বলা যায়?
তাহলে?
আমার সঙ্গে আসুন।
কাছেই আলামিন সুপার মার্কেট। দোতলায় ‘ ঝিলিমিলি কফিকর্নার’ নামে নতুন একটা কফিশপ হয়েছে।
শীততাপ নিয়ন্ত্রিত। তবে এই মুহূর্তে যন্ত্রটা কাজ করছে না। লোড শেডিং। পর্দা তুলে দিয়েছে বলে ভিতরে অলো আঁধারির বদলে রোদের আলো থইথই করছে । সকালের দিকটা কফিশপটা ফাঁকাই থাকে ।
পিছনের দিকে একজন মাঝবয়েসি লোক বসে আছে। মন দিয়ে খবর কাগজ পড়ছে।
সাদা শার্ট আর কালো টাই পরে একটি ছেলে এল।
ফরিদা জিজ্ঞেস করল,কফি আছে?
না। আপা।
নাই।
নেই মানে?
যে কফি বানায় সে এখনও ঘুম থেকে উঠে নাই।
অন্যদিন হলে হেমায়েত উদ্দীন হুঙ্কার ছাড়ত। কিন্তু, আজ এই মুহূর্তে বখাটেটাকে ভিজে বেড়ালের মতো লাগছে। যেন মাছটি উলটে খেতে জানে না।
কোল্ড ড্রিংকস তো আছে?
আছে।
আচ্ছা, তাই দাও।
হেমায়েত উদ্দীন চুপ করে আছে। ফরিদা শীতল কন্ঠে জিজ্ঞেস করল, আপনি আমার পিছনে লেগেছেন কেন?
মানে, মানে ...আপনারে আমার ভালো ভালো লাগে ...মানে। বখাটেটা কেমন তোতলাতে লাগল।
তাই বলে রাস্তায় ডিসটার্ব করবেন? শিস দেবেন। অপমান করবেন? অশ্লীল গান গাইবেন? ছিঃ সকালে আপনার মায়ের মুখ দেখে ঘর থেকে বের হন না? আমাকে আপনার ভালো লাগে সে কথা আপনি আমাকে সরাসরি বলেন না কেন?
হেমায়েত উদ্দীন চুপ করে থাকে।
ফরিদা ছোট্ট শ্বাস টেনে বলল, আমি মনে করি, আমাকে যে আপনার ভালো লাগে সেকথা বলার অধিকার যেমন আপনার আছে, তেমনি আমার যে আপনাকে ভালো লাগে না সেকথা বলার অধিকারও আমার আছে। বুঝেছেন!
হেমায়েত উদ্দীন চুপ করে থাকে।
ফরিদা রুমাল বের করে কপালের ঘাম মুছল।
কী বলতে যাবে, চুপ করে গেল। সাদা শার্ট আর কালো টাই পরা সেই ছেলেটা ছোট একটি ট্রেতে দু গ্লাসে স্প্রাইট দিয়ে গেল। ফরিদা এবার হিসহিস করে বলে, আপনার বিরুদ্ধে আমি রূপপুর থানায় রিপোর্ট করব। কি মনে করেন আপনি? আমি আপনার গডফাদার বাবাকে ভয় করি। গডফাদার বাপের টাকায় মাস্তানি করে বেড়ান ...
চউপ কর! হেমায়েত উদ্দীন খেঁকিয়ে ওঠে।
উড়ে দাঁড়িয়ে ফরিদাকে চড় মারতে হাত তোলে।
হ্যান্ডস আপ!
হেমায়েত উদ্দীন চমকে ওঠে। রূপপুর থানার সাব-ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ মোজাম্মেল হোসেন। হাতে রিভলবার।
ব্যাগ তুলে উঠে দাঁড়াল ফরিদা।
বলল, থ্যাঙ্কস মোজাম্মেল ভাই ।
সাব-ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ মোজাম্মেল হোসেন বললেন, দরগাপাড়ার তোবারক মওলার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আছে। আমাদের ইনর্ফমার পটা মোটামুটি সিউর লোকটা ফেনসিডিলের চোরাচালানির সঙ্গে জড়িত। যা হোক তোমার আব্বার সলিড এভিডেন্স পেয়ে যাবেন ।
ফরিদা হাসল।
কফিশপে কয়েক জন পুলিশ ঢুকল ।
জ্যৈষ্ঠর পূর্ণিমা সন্ধ্যা। মরিয়ম বেগম বারান্দার বেতের চেয়ারে বসে আছেন । ফরিদা বসে আছে পাশে । সাদা রঙের সুতির শাড়ি পরেছে ফরিদা।
খোঁপায় বেলিফুলের মালা। মিষ্টি গন্ধ ছড়িয়েছে। মরম বসে আছ রেলিংয়ে পা ঝুলিয়ে। ওর পরনে সবুজ রঙের পাতলা গেঞ্জি আর সাদা রঙের হাফট্যান্ট। গেঞ্জি আর প্যান্ট গিফট করেছে অন্তুর মা রেহনুমা ।
চেয়ারের পিছনে দাঁড়িয়ে মরিয়ম বেগমের চুলে বিলি কাটছিল জোছনা বানু । লোড শেডিং চলছে । তবে মধুর চাঁদের আলো আর ফুরফুরে বাতাসে মন্দ লাগছিল না । ফরিদা এই মাত্র একটা গান শেষ করেছে। রূপপুর রবীন্দ্র একাডেমির সদস্য ফরিদা ।
চমৎকার গলা।
মরিয়ম বেগম বললেন, আর একটা গান শোনাও মা।
ফরিদা চোখ বুজে ‘সখি বয়ে গেল বেলা/শুধু হাসি খেলা’ গানটি ধরল। মরিয়ম বেগম মুগ্ধ হলেন। তার মাও গান জানতেন।
তবে নজরুল সংগীত। রবীন্দ্রসংগীতও ভালো লাগে মরিয়ম বেগমের।
ফরিদা মগ্ন হয়ে গাইছিল-উদাস নিঃশ্বাস আকুলি উঠিবে/ আশানিরাশায় পরান টুটিবে-/মরমের আলো কপোলে ফুটিবে/ শরম-অরুণরাগে। ।
মরম শব্দে জোছনা বানু সচকিত হয়ে ওঠে।
গান শেষ হতে বলল, ও নানী। মরম রে নিয়া গান আছে ।
মরিয়ম বেগম হেসে বললেন, গান তোকে নিয়ে ও আছে। বলে ফরিদার দিকে তাকিয়ে বললেন, মা ঐ যে জ্যোস্নার গানটা ধর তো।
ফরিদা ধরল ... আজ জ্যোস্না রাতে সবাই গেছে বনে / বসন্তের এই মাতাল সমীরণে ...
গান শেষ হলে জোছনা বানু খুশি দেখাল।
খুশি খুশি স্বরে বলল, খাড়ান মামী। আমি তেজ পাতা আর এলাচ দিয়া সোন্দর কইরা চা বানায় আনতেছি।
মরিয়ম বেগম ও ফরিদা একসঙ্গে হেসে উঠল।
মরম বলল, আমারে এক চামচ চিনি বেশি দিও জোছনাবু।
আইচ্ছা।
দিমু।
রান্নাঘরে ঢুকতেই কারেন্ট এল। চা বানানোর ফাঁকে একবার স্বর্ণের টুনটুনি পাখিটা দেখে নিল জোছনা বানু।
চলবে ...
প্রথম পর্বের লিঙ্ক ...
Click This Link ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।