আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছুমিত এবং মারমেইড রাজকন্যা

I m not WIERD, I m just a LIMITED ADDITION অনেকদিন ছুমিতের কোন দেখা পাই না। সেই ফেসবুক কলঙ্কের পর আড্ডায়ও আসতে দেখিনা তারে। ভাবলাম বেচারাকে আর ডিস্টার্ব না করি। থাকুক কিছুদিন নিজের মত। একদিন বিকালে আমি, নয়ন আর অপু গেলাম কাজী পাড়ার স্কুল মাঠে।

গিয়ে দেখি মাঠের উত্তর কোণায় ছুমিত আর তার চাচাত ভাই অমিত বসে আছে। অমিত ঘাস ছিড়তেছে আর ছুমিত সেই ঘাস খাইতেছে। তারে আবার গরু ভাববেন না যেন, মানে এমনি দাঁত দিয়া ঘাস কাটতেছিল। আমরা তাদের পাশে গিয়া বসলাম। নয়ন জিজ্ঞেস করল, : কি রে, কই ছিলি এতদিন? - গেছিলাম দোস্ত কক্সবাজার।

: তাই নাকি? কে কে গেলি? কেমন মজা করলি? - এইতো, আমি আর অমিত গেছিলাম। চারদিন ছিলাম। দোস্ত জটিল জটিল কিছু মাইয়্যা দেখছিরে। অপু বলে, "তোরে তো সবাই ভালো জানতাম, এহন দেখি তোরেও 'মাইয়্যা' ভাইরাসে ধরছে। " - "কি আর বলমু দোস্ত, এই ফেসবুকই আমারে খাইলো।

" : তো বললি না, কেমন মজা করলি? - আরে দোস্ত, আসল কথাই তো বলি নাই। ঐখানে তো এক মারমেইডের দেখা পাইছিলাম। : কি কস ব্যাটা, উল্টা পাল্টা কিছু খাওয়া শুরু করলি নাকি? অমিত সায় দেয়, "না, ঠিকই মারমেইডের লগে দেখা হৈছিল। " আমি বললাম, "কস্কি মমিন? কেমনে কি?" আমরা সবাই চেপে ধরি কি কাহিনী সেটা জানার জন্য। কিন্তু ছুমিত বলতে রাজি হয় না।

অবশেষে তাকে একদিন সাদেক কাকার দোকানে আলুপুরি খাওয়ানো হবে, এই শর্তে রাজি হয়। এবার ছুমিতের বলার পালা। ছুমিত বলতে থাকে, আমরা শুনতে থাকি- "বুঝসছ, আমরা তো গেছি অফ সিজনে। কম ভাড়ায় বীচের কাছের হোটেল পাইয়া গেছি। তো একদিন রাতে গরম লাগতেছিল খুব।

অমিত রে বললাম, 'চল বাইরে ঘুইরা আসি। ' অয় না করল। আমি একাই গেলাম। হাটতে হাটতে বীচের কাছে গেছি আর দেখি একটা মেয়ে, সাদা পোশাক পড়া, দৌড়ায়া সাগরের দিকে যাইতাছে। " অপু বলল, "তারপর তুই কি করলি? ভুত ভাইবা উল্টা দিকে দৌড় দিলি?" ছুমিত বলল, "আরে না।

আমারে কি তোরা কাপুরুষ মনে করছ নাকি?" অমিত ফোঁড়ন কাটল, "হ, তুমি তো পুরা বীরপুরুষ। " আমি বললাম, "হইছে, থাম এইবার। ছুমিত রে বলতে দে। " ছুমিত আবার শুরু করল, "তারপর আমিও ঐ মেয়ের পিছে দৌড়াতে লাগলাম। একেবারে শেষ মুহূর্তে গিয়া ধরে ফেলছি মেয়েরে।

পরে জোড় করে টেনে পাড়ে নিয়ে আসলাম। কিন্তু মেয়েতো আমারে উল্টা ঝারি মারা শুরু করছে। আমি কিছু না বুইঝা তাকায় আছি। পরে ওর মুখ থেকে শুনলাম যে ও হল মারমেইড রাজার একমাত্র কন্যা। মানে মারমেইডদের রাজকন্যা।

সে নাকি কয়েকদিন আগে স্থলচর মানুষ দেখতে বেড়াইতে আসছিল। এখন বাড়িতে ফিরা যাইতাছে। আর মাঝপথে আমি বাধা দিলাম। " নয়ন ব্যঙ্গ করল, "মারমেইড শুইনা কি করলি? অজ্ঞান হয়ে যাস নাই তো?" এইবার ছুমিত ক্ষেপে গেল, "দ্যাখ, কথার মধ্যে বামহাত ঢুকাইলে আমি যামুগা কিন্তু। " সবাই বললাম, "ঠিক আছে, তুই বলতে থাক।

" ছুমিত বলে, "আমি তো পুরা আটকাইয়া গেছি। মেয়ে বলে কি! ভাবলাম আমার সাথে ফান করতাছে। আমি রেগে গিয়ে বললাম, 'আপনার কথা বিশ্বাস করি না, প্রমাণিত লিংক দেন। ' তারপর সে মেজাজ খারাপ কইরা বলে, 'এই ইন্টারনেটই পুলাপান রে খাইলো। লিংক দিতে পারুম না।

বিশ্বাস না করলে চল আমার সাথে। ' আমিও সাথে সাথে রাজি হয়ে গেছি। তারপর সে একটা কাঠি বের করে কি জানি মন্ত্র পড়ল, আর আমি ঘুমাই গেলাম। ঘুম ভাঙার পর দেখি আমি সাগরের নিচে শুইয়া আছি। আমার চারদিকে মারমেইডরা সাতার কাটতাছে।

সাথে অনেক মাছ আরো অনেক কিছু। আমিতো পুরা অবাক। খাইছে! কই আইলাম আমি? একটু পরে সেই মেয়েটা আমার সামনে আসলো। তার মাথা থিকা কোমর পর্যন্ত মানুষের মত, বাকী অর্ধেক মাছের মত। আমি বললাম, 'আমারে কই লইয়া আইছেন? বিটলামী কইরেন না।

নইলে কিন্তু আমি খেলতাম না। ' সে বলল, 'চুপ থাক। একটু পরে তোমারে আমার বাবার কাছে নিয়া যামু। ' এরপর সে আমারে একটা চিপায় নিয়া গেলো। আমিতো ভয় পাইয়া গেলাম, আমার সব কিছু না আবার ছিনতাই কইরা রাইখ্যা দেয়।

ঐখানে গিয়া দেখি এক আধবুড়া ব্যাটা বইসা আছে। ঐ ব্যাটা হল এই মারমেইডের আপন বাপ। আমি সামনে গিয়া বললাম, : কাকারে দেখি চিনা চিনা লাগে। সে ধমক মাইরা বলল, - আমার কি নাক বোচা? চোখ ছোট? আমি চিনা হমু ক্যান? আমি মালদ্বীপের মানুষ । : ও আচ্ছা।

- ও আচ্ছা মানে কি রে? আমি কি যেমন তেমন লোক? আমি মালদ্বীপের পানিসম্পদ মন্ত্রী আছিলাম। : কেমনে কি? আপনে এইখানে কেন? - আর বইলো না ভাতিজা। ঐ যে গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর প্রতিবাদ করার জন্য আমাদের প্রেসিডেন্ট সাগরের নীচে মন্ত্রীসভার মিটিং করছিলো না? এরপরই মারমেইডরা আমারে ধরে রাইখা দিছে। তারা বলছে, 'পানিসম্পদ মন্ত্রী মাটিতে কি? দুনিয়ার সব পানিসম্পদ মন্ত্রীরে পানির নীচে ধরে আনা হবে। ' : ঠিকই তো আছে।

আমাদের দেশেরটারেও ধরে আনেন। সব মন্ত্রী বেকুব। ' একটুপর এক মারমেইড এসে আমারে বলল, 'টাইম আপ স্যার, টাইম আপ। এখন আপনের যাওয়ার টাইম হৈছে। ' এরপরই আমি দেখলাম আমার চারদিকে অন্ধকার হয়ে আসতেছে।

আমার দম বন্ধ হয়ে আসতেছে। মনে হইতেছে যেন আমি মারা যাইতেছি। " আমরা সবাই অবাক হয়ে একসাথে জিজ্ঞেস করলাম, "তারপর? তারপর কি করলি?" এবার অনেক্ষণ চুপ থাকার পরে অমিত কথা বলল, "তারপর আর কি? আমি লাথি দিয়া ছুমিতের ঘুম ভাঙাইলাম। বলদে নিজের বিছানায় হিসু কইরা সাগর বানায়া ফেলছিল। আর ঐ সাগরে শুইয়া মারমেইডের স্বপ্ন দেখা শুরু করছিল।

" ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.