পৃথিবীর কাছে তুমি হয়তো কিছুই নও, কিন্তু কারও কাছে তুমিই তার পৃথিবী" পেছনের সিটগুলোতে যাত্রী বসা। কেউ হয়তো আরামে ঘুমাচ্ছেন। গাড়ি ছুটছে হাওয়ার বেগে। ডাইনে বায়ে সময়মতো অন্য গাড়িকে সাইড দিচ্ছে, বিপরীত দিক থেকে আসা গাড়ি থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখছে। দরকারে হর্ন বাজাচ্ছে।
ট্রাফিক সিগনালে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। সঠিক স্থানে পার্কিং করছে। কিন্তু কেমন হবে যদি দেখেন এই গাড়ির আসল মানুষ, মানে ড্রাইভারই নেই!
অবিশ্বাস্য মনে হবে। মনে প্রশ্ন জাগবে, তাহলে গাড়ি চালাচ্ছে কি ‘ভূতে’? আসল ঘটনা হলো, ইন্টারনেট সার্চ ইঞ্জিন কোম্পানি গুগল এমন এক সফটওয়্যার আবিষ্কার করেছে যা দিয়ে মানব ড্রাইভারের চেয়ে বহুগুণ নিরাপদে চলবে গাড়ি। গতকাল গুগল এই সফটওয়্যারের জন্য ‘ড্রাইভিং লাইসেন্স’ও সংগ্রহ করে ফেলেছে।
এই লাইসেন্স প্রথমদিকে কেবল যুক্তরাষ্ট্রের নেভাদা রাজ্যের জন্য প্রযোজ্য হবে। এটাই যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম অদৃশ্য ডাইভারের ‘ড্রাইভিং লাইসেন্স’। বিশ্বসেরা ইন্টারনেট সার্চ ইঞ্জিন কোম্পানিটি পরীক্ষামূলকভাবে টয়োটা প্রায়াস মডেল ব্যবহার করেছে। ‘ড্রাইভারবিহীন ড্রাইভিং লাইসেন্স’ অর্জন করতে গিয়ে গুগলের গাড়িকে অনেক ‘পরীক্ষা’ দিতে হয়েছে। এর মধ্যে সবচে কঠিন পরীক্ষা ছিল বিখ্যাত লাস ভেগাস স্ট্রিপে নিরাপদে চালানো।
কোনো মানব চোখ এই গাড়িটিকে পথ চলার সময় তথ্য সরবরাহ করে না। এর ছাদে ক্যামেরা, সেনসর এবং লেজার লাগানো আছে যেগুলো সবকিছু পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে দেখে এবং বিশ্লেষণ করে। এমনকি চলন্ত গাড়ির সামনে হঠাত্ যদি কেউ শুয়ে পড়ে তবে গাড়িটিও হঠাত্ ব্রেক করবে, তাকে চাপা দিয়ে মেরে ফেলবে না। গুগলের প্রকৌশলীরা এর আগে গাড়িটি ক্যালিফোর্নিয়ার রাস্তায় চালিয়েছেন পরীক্ষামূলকভাবে। এমনকি এটি অন্য গাড়ির সঙ্গে লাইন ধরে ধৈর্য্যের সাথে গোল্ডেন গেট ব্রিজও পার হয়েছিল।
ওইসব পরীক্ষা চালানোর সময় একজন ড্রাইভার বসে ছিল যাতে দুর্ঘটনা ঘটতে গেলে সফটওয়্যারের কাছ থেকে তিনি গাড়ির নিয়ন্ত্রণ নিজের কাছে নিতে পারেন। গাড়িটি ইতিমধ্যে ২ লাখ ২৪ হাজার কিলোমিটার পথ চলেছে। কিন্তু একবারের জন্যও দুর্ঘটনার ঘটায়নি। একবারের জন্যও মানব ড্রাইভারটির হস্তক্ষেপ করার দরকার পড়েনি! গুগলের জন্য বিশেষ নাম্বার প্লেট সরবরাহ করা হয়েছে যাতে অন্যরা সহজে গাড়িটিকে চিনতে পারে। গাড়ির নাম্বার ০০১।
গুগল বলেছে, দুর্ঘটনাবিহীন গাড়িচালনার জন্য এটাই হবে ভবিষ্যতের গাড়ি। বিবিসি, টাইমস । ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।