মোবাইল ফোন এখন প্রতি মুহূর্তের সঙ্গী। যোগাযোগের অন্যতম এই মাধ্যমটি হাতের মুঠোয় না থাকলে যেন একাকি বোধ হয়। মনে হয় বন্ধু নেই, নেই সাহায্য, নেই তথ্য, নেই যোগাযোগ।
অনুন্নত, স্বল্পোন্নত, উন্নয়নশীল এবং উন্নত দেশ কোথায় নেই মোবাইল ফোন। যার যে রকম সাধ্য তার সে রকম ফোন।
তাই খুব কম সময়ে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পাওয়া যোগাযোগের এই মাধ্যটিকে নিয়ে যেন কৌতুহলের শেষ নেই।
কেউ কেউ বলছে এটি ব্যবহারে হৃদরোগ থেকে শুরু করে উচ্চ রক্তচাপ, কানের সমস্যা, ক্যান্সারসহ নানান ধরণের রোগ হতে পারে।
কিন্তু এসব ধারণাকে ভুল প্রমাণিত করে যুক্তরাজ্যের হেলথ প্রোটেকশান এজেন্সির (এইচপিএ) একদল গবেষক বলেছেন যে, মোবাইল ফোন ব্যবহারে মানুষের স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে এখনও এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
বিজ্ঞানীরা শতাধিক গবেষণা পর্যালোচনা করে দেখেছেন যে, বন্ধ্যাত্ব, মস্তিস্কের সমস্যা, ক্যান্সার কিংবা অন্য কোনো রোগের সঙ্গে মোবাইল ফোন ব্যবহারের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
তারপরও তারা বলেছেন যে, এই বিষয়ে পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখা হবে।
কেননা মোবাইল ব্যবহারে দীর্ঘ মেয়াদী প্রভাব থাকতে পারে। তবে গবেষণাটিতে এটাই প্রমাণিত হয়েছে যে, মোবাইল ফোন ব্যবহারে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।
এক্ষেত্রে শিশুদের অতিরিক্ত হারে মোবাইল ফোন ব্যবহার থেকে বিরত রাখার ব্যাপারে এইচপিএ সংস্থাটি বিশেষভাবে সতর্ক করে দিয়েছে।
যুক্তরাজ্যে প্রায় ৮০ মিলিয়ন মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। এছাড়া তারা টেলিভিশন, রেডিও, ওয়াইফাইসহ বিভিন্ন ধরণের প্রযুক্তি ব্যবহার করছে।
গবেষণায় দেখা গেছে যে, এসব প্রযুক্তি থেকে খুবই কম মাত্রার রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি বের হয়।
খুবই কম মাত্রার রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি কোনো ক্ষতি করে কিনা তা দেখার জন্য এইচপিএ প্রতিষ্ঠানের একদল গবেষক গবেষণা করেছেন। সেখানে তারা দেখেছেন যে, এই মাত্রার রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি সনাক্ত করার মতো তেমন কোনো ক্ষতি করে না।
রেডিও ফ্রিকোয়েন্সিতে যাদের সমস্যা হয় এমন ব্যক্তিদেরও গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সেখানেও এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি যে, রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি মস্তিস্কে টিউমার, বিভিন্ন ধরণের ক্যান্সার, বন্ধ্যাত্ব, হৃদরোগ বা অন্য কোনো ক্ষতির কারণ হতে পারে।
গবেষক দলের প্রধান অধ্যাপক অ্যান্থনি শোয়ার্ডলো জানান, এই গবেষণাকে আরও পর্যালোচনা করতে হবে এবং দীর্ঘমেয়াদী পর্যবেক্ষণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি আরও জানান, অনেক সময় দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব কেমন হবে তা জানতে সংক্ষিপ্ত সময়ে যে গবেষণা করা হয় তাই যথেষ্ট।
এইচপিএ প্রতিষ্ঠানটি ২০০৩ সালে আরও একটি গবেষণা পরিচালনা করেন। সেখানেও প্রমাণিত হয়ে যে, মোবাইল ফোন ব্যবহারে কোনো ক্ষতি হয় না। যদিও তার পরে অনেকটা সময় পার হয়ে গেছে এবং এই বিষয়ের ওপর বিস্তর গবেষণাও করা হয়েছে।
শিশুদের দূরে রাখুন: রেডিও ফ্রিকোয়েন্সির কারণে শিশুদের মস্তিষ্কের কার্যকারিতায় সমস্যা দেখা দিতে পারে। ফলে শিশুদের আচরণগত সমস্যা দেখা দেয়। রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি থেকে যতটা সম্ভব শিশুদের দূরে রাখেতে হবে। অনেকেই ঘরে স্মার্ট মিটার লাগিয়ে থাকেন কিংবা বিমানবন্ধরে নিরাপত্তা স্ক্যানারের যে রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি তা শিশুদের জন্য ক্ষতিকর।
এজন্য শিশুদের মোবাইল ফোন ব্যবহার থেকে শিশুদের দূরে রাখতে বার বার সতর্ক করেছে এইচপিএ এবং এখনও তারা তাদের সিদ্ধান্তে অটল।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।