আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এক দফা এক দাবি, ভিসি তুই কবে যাবি- দাবি জাবি শিক্ষার্থীদের

ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীন কোন্দল সৃষ্টিতে ভূমিকা ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে তৎকালিন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পক্ষের সঙ্গে আজিবুর-অয়ন পক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটির কার্যক্রম এক মাসের জন্য স্থগিত করে কেন্দ্রীয় কমিটি। ফেব্রুয়ারি মাসে কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় কমিটি। এরপর এক বছর পর এ বছরের ১৯মে পুনরায় বিশ্ববিদ্যালয়ে রাশেদুল ইসলাম শাফিনকে সভাপতি ও নির্ঝর আলম সাম্যকে সাধারণ সম্পাদক করে ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু উপাচার্যের এলাকার সাগর, শামিম, প্রিতম পদ বঞ্চিত এবং পারভেজ ছোট পদ পাওয়ায় তিনি এ কমিটিকে মেনে নিতে পারেননি। আওয়ামীলীগের বড় বড় নেতার কাছে গিয়ে কমিটিতে ভাঙতে ব্যর্থ হয়ে উপাচার্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন।

হলে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ২৩ মে রাত তিনটার দিকে মওলানা ভাসানী হলের ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যুগ্ম-সম্পাদক সরকার মোঃ আজগর আলী গ্রুপের জুনিয়র কর্মীদের সাথে সহ-সভাপতি রাশেদ রেজা ডিকেন গ্রুপের কর্মীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। ওই ঘটনার জের ধরে আজগর গ্রুপের কর্মীরা ডিকেন গ্রুপের উপর হামলা চালায়। সংঘর্ষের ঘটনায় ডিকেন গ্রুপের ১০ নেতা-কর্মী মারাত্মক আহত হয়। এ ঘটনায় যুগ্ম-সম্পাদক আজগর আলীকে অনির্দিষ্টকালের জন্য জাবি শাখা ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদদে ৫ জুলাই আল বেরুনী হলে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের এমিলের কর্মীরা সভাপতি গ্রুপের সজীবকে মারধর করে। এর জের ধরে পুরো ক্যাম্পাস সভাপতি- সাধারণ সম্পাদক গ্রুপে বিভক্ত হয়ে রক্থক্ষয়ী সংঘর্ষে মেতে ওঠে। এ ঘটনায় এমিলসহ তার গ্রুপের ৫/৬ জন কর্মীকে হলের ছাদ থেকে পিটিয়ে ও গুলি করে আহত করে নিচে ফেলে দেয়া হয়। সংঘর্ষের সময় ৭/৮ জন গুলিবিদ্ধসহ ৫০জনেরও বেশি আহত হয়। উভয় পক্ষে ৩০ রাউ- গুলিবিনিময়ের ঘটনাও ঘটে।

এ সংঘর্ষের জের ধরে উপাচার্য সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ২ বছর এবং ৬জন আজীবনসহ আরো ১৩ নেতা-কর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করেন। এ ঘটনার জের ধরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সব ধরনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে কেন্দ্রীয় কমিটি। এরপর বহিস্কৃত গ্রুপ ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত থাকায় আর কোন ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে নি। অপছন্দের ছাত্রলীগ বিতাড়ন শরীফ এনামুল কবীর ক্ষমতায় আসার পর ৫ জুলাই ২০১০ সালে আল-বেরুনী হলে এক লৌহমর্ষক সংঘর্ষ সংঘটিত হয় এসময় শরীফ এনামুল নীজে দাড়িয়ে থেকে তার অপছন্দের ছাত্রলীগ কর্মীদের মার খাওয়ান আবার পরবর্তীতে তাদেরই বহিষ্কার করেন। তাছাড়া ঐ সময় ছাত্র ইউনিয়ন সেক্রেটারি মাহী মাহফুজ কোন প্রকার সংঘর্ষের সাথে লিপ্ত না থাকলেও তাকেও বহিষ্কার করে জাবি ভিসি।

পরে ছাত্রজনতার আন্দোলনের মুখে তার বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়। পরে মাহী মাহফুজের বিরুদ্ধে শিবির করার অভিযোগ তোলে, যাতে মাহী মাহফুজ তার কোনো অণ্যায় কাজের প্রতিবাদ না করে। তিনি সে সময় ছাত্রলীগের কর্মীদের মার খায়য়েছিলেন শুধুমাত্র একটি উদেশ্য তা হচ্ছে তার গোপালগঞ্জ লীগকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য। সাংস্কৃতিকচর্চার সুষ্ঠ পরিবেশ নস্যাতের অপচেষ্টা সাংস্কৃতিক রাজানীধ খ্যাত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিকচর্চার সুষ্ঠ পরিবেশের ওপর নানা প্রকার অযাচিত বিধি নিষেধ আরোপের মাধ্যমে এর অতীত ঐতিহ্যকে নষ্ট করার প্রচেষ্টা চলছে। হারাচ্ছে সেলিম আল দীনের স্মৃতি বিজড়িত ক্যাম্পাসের সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য।

সম্প্রতি রাতে ছাত্রী হলে ফেরার জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা হ্রাস করা হয়েছে। এ নিয়মটা আগে সাংস্কৃতিক কর্মীদের ক্ষেত্রে শিথিলযোগ্য থাকলেও বর্তমানে নেই। সাংস্কৃতিকচর্চায় তাই নিয়মিত সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে তাদের। বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্ত ও উদার মানসিকতার শিক্ষার্থীদের আড্ডাস্থল বটতলায় খাবার দোকান খোলা রাখার সময়ের ওপরও আরোপ করা হয়েছে বিধি নিষেধ। রাত ১১টার পর দোকান খোলা রাখলে দোকানীকে গুণতে হয় ২হাজার টাকা জরিমানা।

ফলে রাত ৯টায় ক্যাম্পাসের গাড়ীতে করে ক্যাম্পাসে ফেরা শিক্ষার্থীদের খাদ্য সমস্যায় পড়তে হয় নিয়মিত। তাছাড়া অডিটোরিয়াম, মুক্তমঞ্চ, সেমিনার রুমের ভাড়া বৃদ্ধি, গার্ড থাকা সত্বে আবৃত্তি সংগঠন ‘ধ্বনি’র রুম ভস্মীভূত, সাংস্কৃতিক উৎসবে মেহমান ঠিক করার ব্যাপারে সীমাবদ্ধতা, মিছিল, র্যালী, মাইকিং, পোষ্টারিংয়ের ব্যাপারে সীমাবদ্ধতা সাংস্কৃতিকচর্চার মুক্ত পরিবেশকে নষ্ট করার ষড়যন্ত্র বলেই মনে করেন শিক্ষার্থীরা। জাহাঙ্গীরনর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি মাহী মাহফুজ বলেন, ‘ এসব বিধি নিষেধের মাধ্যমে মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের সুষ্ঠ সাংস্কৃতিকচর্চার পরিবেশকেই নষ্ট করা হচ্ছে। ’ গণমাধ্যম কর্মীদের ওপর চাপ বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীদের ওপর চাপ প্রয়োগ এ উপাচার্যের একচ্ছত্র প্রভাব বিস্তারের অন্যতম এক বৈশিষ্ট্য। বস্তুনিষ্ঠ হওয়া সত্বেও উপাচার্য কিংবা প্রশাসনের কারো বিরুদ্ধে কোন নিউজ প্রকাশিত হলেই ক্ষেপে যান উপাচার্য।

ফোন করে গালিগালাজ তাঁর নিয়মিত স্বভাব। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রোগ্রামে সাংবাদিকদের গালিগালাজ তাঁর আলোচনার একটি অন্যতম অংশ। এর আগে যৌন হয়রানি সংক্রান্ত নিউজ প্রকাশের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ অফিসে সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয় দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকাটি। এককালীন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে দৈনিক কালেরকন্ঠ ও বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকাগুলো। মাওলানা ভাসানী হলে ‘পানিবাহিত রোগে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি’ শীর্ষক নিউজ করার জন্য বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাংবাদিক মাহফুজুল হককে শোকজ করা হয়।

তবে ছাত্রলীগের ক্যাডারদের হাতে এ বছরে সাংবাদিক নির্যাতনের পরিমাণটা ছিল উদ্বেগজনক। জানুয়ারি মাসে মীর মশাররফ হোসেন হলের হিরোইনসেবী ছাত্রলীগ ক্যাডার জসীম দিনকালের প্রতিনিধি সাজ্জাদ পারভেজকে লাঠি দিয়ে মারধর করে। এর কয়েকদিন পর সোহেল-জনি গ্রুপের ক্যাডারদের হাতে তৎকালীন সাংবাদিক সমিতির সভাপতি রেজাউল হক কৌশিকসহ ৭ সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার হন। মে মাসে অর্থনীতি বিভাগে ছাত্রলীগ ক্যাডার শামীমের হাতে নির্যাতনের শিকার হন কালের কণ্ঠের সাংবাদিক ইমনসহ ৪ সাংবাদিক। সর্বশেষ ডিসেম্বর মাসে সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ৪ সাংবাদিক লাঞ্চণার শিকার হন।

উপাচার্যের প্রত্যক্ষ মদদে এসব হামলা পরিচালিত হলেও একটিরও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হয়নি। বিএনপি-জামায়াত তোষণ দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই উপাচার্য জামায়াত-বিএনপি শিক্ষকদের তোষণ করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২৯ এপ্রিল ২০১০ সিনেটে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনে তথাকথিত মুক্তিযুদ্ধের শক্তির নামে উপাচার্য আওয়ামী প্যানেলে নির্যাতিত আওয়ামীলীগের শিক্ষকদের বঞ্চিত করে জামায়াত-বিএনপি শিক্ষকদের নির্বাচিত করেছেন। তাঁরা হলেন উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ফিরোজা হোসেন, দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ফাহমিনা আহমেদ, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মুহাম্মদ ইসমাঈল হোসেন, দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মুহাম্মদ তারেক চৌধুরী, প্রতœতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান খান, গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো: আব্দুর রব, প্রাণীবিদ্যা বিভাগের মো: আব্দুছ ছালাম, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো: গোলাম মোস্তফা, ফার্মেসী বিভাগের অধ্যাপক মো: রফিকুজ্জামান, পরিসংখ্যান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দা শাহনারা হক। এমনকি তাদের মধ্যে ড: ফিরোজা হোসেন, ড: মো: রফিকুজ্জামান, মো: আব্দুর রব ২০০০ সালের ১৮ নভেম্বর বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আগমন ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল উদ্বোধনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠান বর্জন করে ১৬ নভেম্বর ২০০০ তারিখে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক পরিষদের (সাদা দল) এর অকথ্য ভাষায় লিখিত বিবৃতিতে স্বাক্ষর রয়েছে।

সেই বিবৃতি দানকারীদের নেতৃত্বে ছিলেন প্রফেসর জসীম উদ্দিন আহমেদ যিনি বর্তমান উপাচার্যের অন্যতম পরামর্শক! এরমধ্যে অধ্যাপক ফাহমিদা আহমেদ, ফিরোজা হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান খান, ড: সৈয়দা শাহনারা হক, মুহাম্মদ তারেক চৌধুরী, মো: গোলাম মোস্তফা ১৮ আগস্ট ২০০৫ সালে ১৭ আগস্ট ২০০৫ তারিখে দেশব্যাপী বোমা হামলার প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক শিক্ষক পরিষদের বিবৃতিতে স্বাক্ষর আছে। আব্দুল জব্বার হাওলাদার (বাগেরহাট জেলার বদর বাহিনীর প্রধান ও ৭২’র দালাল আইনে সাজাপ্রাপ্ত কুখ্যাত রাজাকার তোফাজ্জল হাওলাদার ওরফে তোফা রাজাকারের পুত্র)কে জীব বিজ্ঞান অনুষদের ডীন নির্বাচিত করিয়েছেন। তিনি আব্দুল-াহেল বাকি ও ইলিয়াছ মোল¬ার ঘনিষ্ঠ শিষ্য। ২৯জুলাই ২০০৯ তারিখে বেগম খালেদা জিয়া হলের সামনে স্থাপিত খালেদা জিয়ার ম্যূরাল ভাঙার প্রতিবাদে সাদা দলের বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী ফিরোজা হোসেন, ফাহমিনা আহমেদ, মুহাম্মদ তারেক চৌধুরী, মো: আব্দুর রবকে উপাচার্য সিনেট নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্যানেলে অন্তুর্ভূক্ত করেছেন। বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তিদাবী এবং বিদেশে তাঁর সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার দাবিতে সাদা দলের বিবৃতিতে নাম অন্তর্ভূক্তকারী প্রাণীবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কবিরুল বাশারকে উপাচার্য আওয়ামীলীগের প্যানেলে সিন্ডিকেট নির্বাচন করিয়েছেন।

বর্তমানে তিনি এ্যাসিস্ট্যান্ট প্রক্টর। সশস্ত্র সন্ত্রাসী লালন অপছন্দের ছাত্রলীগ বিতাড়নের মাধ্যমে উপাচার্য ক্যাডার বাহিনী হিসেবে সশস্ত্র ছাত্রলীগ কর্মীদের লালন পালন করেন। মুরগী চোর সরকার আজগর আলী ও গোপালগঞ্জ কোরামের ও বহি®কৃত বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটির সহ-সভাপতি শেখ নেয়ামুল পারভেজের নেতৃত্বে ক্যাম্পাসে অবস্থান করছে উচ্ছৃঙ্খল অস্ত্রবাজ ছাত্রলীগের ক্যাডার বাহিনী। এরমধ্যে মাওলানা ভাসানী হলের ছাত্রলীগ কর্মী শাকিল, সম্রাট, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের অরুপ, তিলন, শহীদ সালাম বরকত হলের রাজিব, মিশুক, রাহাত, চয়ন, আল-বেরুণী (বর্ধিতাংশ) হলের রাজু, শামিম, রাসেল, আল বেরুনী (মেইন বিল্ডিং) এর আরিফ, কামাল উদ্দিন হলের জাকারিয়া, মোস্তাফিজ, বাবুল, মীর মশাররফ হোসেন হলের তন্ময়, পাপন, লিখন, নিজাম, অভি দুর্ধর্ষ। মূলত প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদদে এরাই সরাসরি নিয়ন্ত্রন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্ত্রজগত।

এরাই মূলত হলভিত্তিক সশস্ত্র গ্রুপ পালনের মাধ্যমে প্রশাসনের এসাইনমেন্ট বাস্তবায়ন করে থাকে। যেকোন সময় এদুর্ধর্ষ বাহিনী বাস্তএদের মধ্যে সরকার আজগর আলী (৩৩তম ব্যাচ-অর্থনীতি) ও শেখ নেয়ামুল পারভেজের (৩৩তম ব্যাচ-বাংলা) ছাত্রত্ব বহু আগেই শেষ হয়ে গেলেও উপাচার্যের বিশেষ ক্ষমতাবলে এদের ছাত্রত্ব টিঁকিয়ে রেখেছেন। লালন-পালন করছেন সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১ ফেব্রুয়ারী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ছাত্রলীগের মূল কমিটির পক্ষের নেতা-কর্মীদের বিতাড়ন করে অস্ত্রধারীদের হলে ওঠানো হয়। এদিন উপাচার্যের বাসায় মিটিংয়ে সিদ্ধান্তের পর গাড়ীতে করে প্রক্টর অধ্যাপক আরজু মিয়ার নেতৃত্বে অস্ত্রধারী শামিম ও শরীফকে হলে ওঠানোর চেষ্টা করা হয়।

এসময় সহকারী প্রক্টর নাজমুল হাসান তালুকদার, কবিরুল বাশার সঙ্গে ছিলেন। সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিরোধের মুখে এ প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে গভীর রাতে হল তল¬াশির নামে প্রায় দুইশ পুলিশের উপস্থিতিতে অস্ত্রধারীদের হলে ওঠানো হয়। এসময় সহকারী প্রক্টর কামাল হোসেনের নেতৃত্বে আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আসগর-পারভেজের নেতৃত্বে প্রায় ৩০-৪০ জন সশস্ত্র ক্যাডার বঙ্গবন্ধু হলে প্রবেশ করে। বিতাড়ন করে মূল কমিটির পক্ষের নেতা-কর্মীদের। লুটতরাজ, হামলা ও ভাঙচুর করা হয়।

যৌন নিপীড়নকারীদের রক্ষা ও যৌন নিপিড়ন কারী দু‘বছরে ক্যাম্পাসে শিক্ষকদের রাজনীতিতে ঘোলাটে পরিবেশ সৃষ্টি করে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল¬াহ হেল কাফী এবং নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আহমেদ সানির বিরুদ্ধে আনীত যৌন হয়রানি অভিযোগের বিচার। দুইজন শিক্ষকই আওয়ামীপন্থী হওয়ায় তাদেরকে পক্ষপাতমূলক বিচারের মাধ্যমে রেহাই দেয়া হয়েছে। আর্ন্তজাতিক সম্পর্ক বিভাগের সভাপতি আব্দুল¬াহ হেল কাফীসহ অপর দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগের এক শিক্ষিকা বিভিন্ন সময়ে ৫ বার মৌখিকভাবে ও ১ বার লিখিতভাবে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন। । এরপরও ব্যবস্থা না হওয়ায় ওই শিক্ষিকা ১৫ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৩০ জন শিক্ষিকাকে নিয়ে উপাচার্য বরাবর আবারো লিখিত অভিযোগ করেন।

শিক্ষক-শিক্ষার্থীর আন্দোলনের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাশসন লঘু শাস্তি প্রদান করেন। প্রশাসনের বহুপদে আসীন ওই শিক্ষক সকল পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে সহযোগী অধ্যাপক থেকে মান অবণতি করে সহকারী অধ্যাপক করা হয়। ২০০৯ সালে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের তৎকালীন সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক আহমেদ সানির বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনেন ওই বিভাগের ৬ শিক্ষার্থী। তৎকালীন প্রশাসন তাকে অভিযোগ থেকে রেহাই দিলেও বর্তমান প্রশাসন আবার হাইকোর্টের আদেশে পূনর্তদন্ত করেন। তদন্তে তার দোষ প্রমাণিত হওয়ায় ওই শিক্ষককে বেতন-ভাতাসহ সকল সুবিধা বজায় রেখে ২ বছরের বাধ্যতামূলক ছুটি প্রদান করে।

এর আগে বাংলা বিভাগের শিক্ষক ড. গোলাম মোস্তফা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক তানভির সিদ্দিককে যৌন হয়রানির অভিযোগে স্থায়ী বহিস্কার করা হয়। মহাজোট সরকার ২ বছর সময় পার করতে চলেছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী প্রশাসনের মেয়াদ ২২ মাস অতিক্রম করেছে। এ সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক রাজনীতিকে সক্রিয় করতে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে বেশি নোংরামির আশ্রয় নেয়া হয়েছে। দলীয়, আত্মীয় কোটা এবং নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে দেড় শতাধিক শিক্ষক নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন।

ছাত্ররাজনীতিতে অস্থিতরতা কখনোই পিছু ছাড়েনি। এ বছরে বেশি সংঘর্ষে ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ দুই শতাধিক আহত হয়েছে। আর সংঘর্ষের কারণে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার হয়েছেন অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী। বর্তমানে জেলে আছেন একজন এবং বিভিন্ন সময়ে পুলিশের হাতে আটক হয়েছে ৬০জনের মত। বিশ্ববিদ্যালয়ে গত এক বছরে ছাত্রলীগের নেতা-র্কীদের হাতে ১৫ সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।

তবে ছাত্রলীগের চাাঁদাবাজি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়ে যায়। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে চলাচলকারী বাস মালিকদের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে লক্ষাধিক টাকা চাঁদা আদায় করে আজগর ও পারভেজ। ছিনতাইয়ের ঘটনা এতই বেড়ে গিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জাহাঙ্গীরনগর এলাকা সংলগ্ন মহাসড়কে ‘ছিনতাইকারী হতে সাবধান’ সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়া ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ৩টি ইভটিজিংএর ঘটনা ঘটিয়েছে এ বছরে। টেন্ডারবাজি টেন্ডারবাজিতে স্বয়ং উপাচার্যের প্রত্যক্ষভাবে জড়িতভাবে থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

নবনির্মিত রফিক-জব্বার হলের নির্মাণ কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য ছাত্রলীগ নেতা মাহফুজ উপাচার্যের আশির্বাদে বাংলাদেশ ফাউন্ড্রি এ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশ লিমিটিডের কাছ থেকে ৩২ লাখ টাকা আদায়ের চুক্তি করেন। পরবর্তীতে উপাচার্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আঁতাত করে চুক্তিকৃত ৩২ লাখ টাকা নিজেই আতœসাত করেন। প্রতিবাদ করায় উপাচার্য মাহফুজকে ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়ন করেন। ১০ কোটি টাকার বাজেটে বরাদ্ধ ‘ওয়াজেদ মিয়া গবেষণা কেন্দ্রে’র কাজ পছন্দের অনিক ট্রেডার্সকে পাইয়ে দেওয়ার জন্য ছাত্রলীগের মাধ্যমে পুরোনো কায়দায় ১০ লাখ টাকা দাবি করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাছাড়া বিনা টেন্ডারে মীর মশাররফ হোসেন হলের সামনের রাস্তা মেরামত, পুরাতন কলার সামনের ভবন মেরামত, কর্মচারীদের ক্যান্টিনসহ প্রায় ৩২ লাখ টাকার কাজ বিনাটেন্ডারে পছন্দের ঠিকাদারকে দেন।

এর বিনিময়ে হাতিয়ে নেন মোটা অংকের উৎকোচ। খুঁটির জোর খুঁটির জোর হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা, রাজনৈতিক সামাজিক উন্নয়ন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আলাউদ্দিন আহমেদ। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রীর গোপালগঞ্জ কালেকশন। বহিষ্কার অপছন্দেরে যাকে তাকে বহিষ্কার ছিল উপাচর্যের মূল হাতিয়ার। ক্যাম্পাসে ইভটিজিয়ের জন্য তিনি আজীবন বহিষ্কার করেন।

অথচ জুবায়েরের হত্যাকারীদের বহিষ্কার করেন মাত্র একবছর পরে আন্দোলনের মুখে কিছু সংখ্যক কে আজীবন করলেও বাকী সন্ত্রাসীদের করেন মাত্র ২ বছর। ক্যাম্পাসে কেন্দ্র ঘোষিত ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিস্বাশী কিন্তু তার পা চাটা গোলাম না এমন স্বক্রীয় ছাত্রলীগ কর্মীদের বিভিন্ন অজুহাতে বহিষ্কারের মাধ্যমে একক আধিপত্য বিস্তার করেন। দায়িত্ব গ্রহণের প্রায় দুবছরে তিনি প্রায় অর্ধশতাধিক ছাত্রলীগ কর্মীকে গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছাড়াই বিভিন্ন অজুহাতে আজীবনসহ সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেন। ৫জুলাই এর সংঘর্ষে উপাচার্য মারামারিরত ছাত্রলীগ কর্মীদের প্রত্যক্ষ মদদ দেন, ‘তোরা মারামারি কর, বিচার আমি করবো। ’ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১৫ হাজার শিক্ষার্থীর অভিভাবক হিসেবে এমন ন্যাক্কার জনক উস্কানীর প্রতিবাদ করায় সম্পুর্ণ বিনা দোষে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি মাহি মাহফুজকে বহিষ্কার করা হয়।

ক্যাম্পাসে বৃক্ষ নিধন গত ১জুন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রীষ্মকালীন ছুটি শুরু হলে প্রশাসন ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থান থেকে গাছ কাটা শুরু করে। পরিবেশ সংরক্ষণ আন্দোলনের ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা গাছ কাটায় বাঁধা দিলে ওই দিন গাছ কাটা বন্ধ থাকে। পরে ক্ষুব্ধ হয়ে উপাচায উপস্থিত থেকে শুক্রবার সকালে পুনরায় গাছ কাটা শুরু হয়। গ্রীস্মকালীন ছুটির মধ্যে অধিকাংশ শিক্ষক-শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিভিন্ন অজুহাতে গাছ কাটা শুরু করে। ছুটির শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অমর একুশের সামনে রাস্তার সড়কদ্বীপের পাশে ৫৬টি গাছ কাটার জন্য চিহ্নিত করে।

প্রথম দিনে ৪০টি গাছ কাটার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বাধার মুখে গাছ কাটা বন্ধ করতে বাধ্য হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন ছাত্র হলের ভেতরে ১৪টি বড় গাছ কাটতে শুরু করে প্রশাসন। এতে হলের ছাত্ররা বাধা দেয়। কিন্তু হলের রাজনৈতিক কর্মীদের দিয়ে সাধারণ ছাত্রদের মুখ বন্ধ করে নির্বিঘেœ গাছগুলো কাটা হয়েছে বলে অনেক ছাত্রই অভিযোগ করেছেন। প্রশাসনের বিভিন্ন কর্তাব্যক্তিদের সাথে কথা বললে তারা বলেন, পুরান বড় বড় গাছ কেটে নতুন গাছ রোপন করলে ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য যেমন বাড়বে তেমনি বিশ্ববিদ্যালয় কোষাগারে কিছু অর্থও জমা হবে।

তবে গাছকাটার বিপক্ষে অবস্থানকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানান, ক্যাম্পাসে জীব বৈচিত্র রক্ষায় এবং প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য গাছ কাটা বন্ধ করতে হবে। অবিলম্বে গাছ কাটা বন্ধ করা না হলে তারা কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবেন বলেও জানান। গন নিয়োগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল প্রকার নিয়োগ বন্ধ থাকার পর শিক্ষক সমিতির নির্বাচনকে সামনে রেখে গণহারে ভোটার শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয় নতুন সরকারের আমলে নতুন উপাচার্য মনোনীত হওয়ার পরপরই। একই সাথে কর্মকর্তা কর্মচারি নিয়োগেও আসে পূর্ণিমার জোয়ার। আর এসব নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধা নয় রাজনৈতিক, আর্থিক ও আত্মীক লবিংই এক মাত্র মানদ-ে পরিনত হয়।

নতুন উপাচার্যের আমলে রেকর্ড সংখ্যক ১৬০ জন দলীয় শিক্ষক নিয়োগ পেয়েছেন। ২০০৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান রসায়ন বিভাগের শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবির। নিয়োগ পাওয়ার পর থেকেই গণহারে শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারি নিয়োগ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বকালের রেকর্ড ভাঙেন। অভিযোগ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি, ডিন, সিনেট, সিন্ডিকেটসহ বিভিন্ন নির্বাচনে জয় নিশ্চিত করতেই তড়িঘড়ি করে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিলো। দায়িত্ব গ্রহনের মাত্র ৮ মাসের মধ্যে ১২০ জন ভোটার শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার পর আয়োজন করে শিক্ষক সমিতি ও সিন্ডিকেটের নির্বাচনে আওয়ামী প্যানেল জয়ী হয়।

বাংলা বিভাগ, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ, লোক প্রশাসন বিভাগ, প্রাণিবিদ্যা বিভাগ, অর্থনীতি বিভাগ, ইতিহাস বিভাগ, প্রতœতত্ব বিভাগ, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, ফিন্যান্স এন্ড মার্কেটিং বিভাগ, গনিত বিভাগসহ আরো কয়েকটি বিভাগে দলীয় শিক্ষক নিয়োগ চলে দেদারচ্ছে। কোন রকম নিয়ম নীতির তোয়ক্কা না করে শিক্ষক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন বর্তমান ভিসি। বাংলা বিভাগের অধ্যাপক পৃথ্বিলা নাজনীন নীলিমা সিন্ডিকেট নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য শুধুমাত্র এ বিভা্েগই ৬ জন শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছেন। বিভাগে বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষে একাধিক অনার্স ও মাস্টার্সে প্রথম শ্রেনিতে প্রথম থাকা সত্ত্বেও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফোকলোর থেকে পাশ করা আহসান ইমাম নিয়োগ দেয়া হয়েছে আত্মীয় কোটায়। গোপালগঞ্জ কোটায় নিয়োগ পেয়েছেন দুইবার মাধ্যমিক শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া রেজওয়ানা আবেদীন তন্বী।

এছাড়া মেধাক্রমে পেছনের দিকে থাকা নাজমুল হাসান তালুকদার, খন্দকার শামীম আহমেদ ও তারেক রেজা নিয়োগ পেয়েছেন ছাত্রলীগ কোটায়। এছাড়া তাসনুমা জামান লিমা নিয়োগ পেয়েছেন স্থানীয় সাংসদ কোটায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন চালু হওয়া মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল বায়েস অনার্সে ২৩তম ও মাস্টার্সে ষষ্ঠ অবস্থানে থাকা তার মেয়ে ফারহানা সেহরীনকে নিয়োগ দিয়েছেন। এছাড়া তার অপর মেয়ে ফারজানা সেহরীন এলিজা বর্তমানে অর্থনীতি মাস্টার্সে অধ্যয়নরত থাকলেও তার নিয়োগ প্রক্রিয়াও মোটামুটি চূড়ান্ত। গণিত বিভাগে নিয়োগ পেয়েছেন মীর মশাররফ হোসেন হলের অস্ত্রধারী ছাত্রলীগ ক্যাডার সাব্বির আলম।

ইতিহাস, প্রতœতত্ত্ব, ফার্মেসি, পরিবেশ বিজ্ঞান এক কথায় সকল বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ ছিল দলীয় ভোটার বৃদ্ধির চূড়ান্ত উদ্দেশ্য। এদিকে কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগে আত্মীয়করণের রেকর্ড করে বর্তমান প্রশাসন। ৫ আগস্টের সিন্ডিকেটে বর্তমান ট্রেজার অধ্যাপক মো. নাসির উদ্দিনের সদ্য বিবাহিত পুত্র বধুকে পরিকল্পনা অফিসের প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। যদিও আবেদনকারীদের মধ্যে অনেকেরই ভালো রেজাল্ট ছিলো। এছাড়া বর্তমান উপ উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. ফরহাদ হোসেনের স্ত্রী, প্রক্টরের স্ত্রী, কলা ও মানবিকী অনুষদের ডিন এর স্ত্রী , শহীদ সালাম বরকত হলের প্রাধ্যক্ষর স্ত্রী, পরিবহনের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক এর স্ত্রী সহ আরো অনেককে জাহাঙ্গীরনগর স্কুল এন্ড কলেজসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

নতুন করে সহকারী নিরাপত্তা অফিসারের পদ সৃষ্টি করে নিয়োগ দেয়া হয়েছে তৎকালীন ছাত্রলীগের অস্ত্রধারী ক্যাডার আজিমুদ্দিন আজিমকে। যার দাপটে ক্যাম্পাস এখন অস্থির। এ সমস্তু কারনে তার পদত্যাগ দাবি করেন ক্যাম্পাসের সকল শিক্ষক শিক্ষার্থীরা  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।