।
পেটে যাইবার প্রত্যাখ্যান করিয়া দাঁতের চিপায় মিছিল মিটিং এ ব্যস্ত মাংসের অবশিষ্ট কণাকে খোঁচাইতে খোঁচাইতে ঘর হইতে বাহির হইয়া দেখি নবাব আমলের সৈন্যের ড্রেস লাগাইয়া এক বলদ দাড়াইয়া আছে। কহিলাম ভাড় সাজিয়া এইখানে দাড়াইয়া আছো কেন? ভাড়টি বলিল নবাব মীরজাফর বিপদে পড়িয়া আপনাকে স্মরণ করিয়াছেন। যাইতে হইবেক!! বলিলাম আইক্কা বাঁশ চিনস্? ঐটা তোর ইয়ে দিয়া ঢুকাইয়া দিব হারামী কোথাকার!! কিরুপে যাইব অতীতে? বলিল হুজুর টাইম মেশিন তৈয়ার আছে!! চোখে রাজ্যের বিস্ময় লইয়া বলিলাম তাহলে চল। ব্যাটার সহিত দেখা করিয়া আসি
****
টাইম মেশিনে চড়িয়া পৌছিয়া গেলাম ১৭৫৭ সালে।
পলাশীর যুদ্ধ শেষ। পরাধীনতার যুগে প্রবেশ। বিষাদের সমুদ্রে সাঁতার কাটিতে কাটিতে প্রাসাদে প্রবেশ করিলাম। প্রবেশ করিতেই মসনদে বসা মীরজাফর দাঁত ক্যালাইয়া কহিলেন রাহি আসিয়াছ! মনে মনে বলিলাম খা*কীর পুত! দেখতেই তো পারতাছস লেকিন গলায় মধু ঢালিয়া মুখে বলিলাম জী নবাব, বান্দা হাজির। ক্ষিঞ্চিত চিন্তিত হইয়া কহিলেন দেশ কেমন চলিতেছে।
বলিলাম আপনার আওলাদ আপনার দেখানো পথে দেশ বেচার এন্তেজাম করিতেছে আমার কণ্ঠে বিদ্রুপ টের পাহিয়া মীরজাফর সিনা টান টান করিয়া ভাষন দিতে লাগিলেন। বাঙালীকে সভ্য করিবার জন্য আর কোনো পথ ছিলনা। ফিরিঙ্গি আসায় এই হইছে সেই হইছে ইত্যাদি ইত্যাদি। মীরজাফরের প্রলাপ শুনিতে শুনিতে আমার রক্ত গরম হইয়া উঠিল।
যখন বলিলেন তাঁহার চাহিতে বেশী দেশপ্রেমিক আর কেহ নাই।
তখন আর নিজেকে সামলাইতে পারিলাম না। পকেট হইতে ak-47 বাহির করিয়া ( দন্ত সামলান যে রাহি টাইম মেশিনে চইড়া মীরজাফরের সাথে সাক্ষাত করতে পারল। সে রাহি পকেট থাইকা ak-47 ও বাইর করতে পারব ) সোজা মীরজাফরকে ফায়ার করিতে লাগিলাম। অসংখ্য গুলি বুকে লইয়া কি জন্যে স্মরণ করিয়াছিলেন তাহা না বলিয়াই মীরজাফর রওনা হইলেন জাহান্নামের তরে। আর আমি রাহি তাঁহার ডেডবডি সরাইয়া মসনদে বসিলাম
ভাব লইয়া একটা সুইচ বেনসন ধরাইয়া মিহি সুরে কহিলাম কাহারো কোনো সমস্যা? কেহ কিছু বলিল না।
সবার দৃষ্টি আমার হস্তে থাকা তক্তার পানে। সেনাপতি কণ্ঠে রাজ্যের টেনশন লইয়া বলিল আদেশ করুন বস্!! বলিলাম প্রথম আদেশ, মাগী ঘষেটি বেগমকে কারাগারে পাঠাইয়া ডিম্ব থেরাপী শুরু করো। দ্বিতীয় আদেশ, সৈন্যসামন্তকে তৈয়ার কর। ফিরিঙ্গি খেদাইয়াই ছাড়িব।
চারিদিকে সাজ সাজ রব পড়িয়া গেল।
যুদ্ধের এন্তেজাম শুরু হইল। অন্দর মহলে শরাব পান করিতে করিতে বাঈজি বেটির উত্তাল ড্যান্স দেখিতেছিলাম। এমন সময় খবর আসিল পলাশীর প্রান্তরে ফিরিঙ্গিরা উপস্থিত হইয়াছে। আরেক পেগ শরাব পেটে চালান করিয়া খিইচ্চ্যা দৌড় লাগাইলাম পলাশীর তরে।
যুদ্ধ শুরু হইল।
এইবার ঠিকই কামান হইতে গোলা বর্ষিত হইল। ঠিকই সকল সৈন্য প্রাণপণে লড়াই করিল। যুদ্ধ যে দেশ মাতৃকার তরে। আর আমি তো আছিই!! রাহি। দ্য ওয়ান ম্যান আর্মি! হস্তে ak-47
ak-47 এর দাপটে ফিরিঙ্গিগণ দাড়াইতেই পারিল না।
শৈল মাছের পোনার মত ঝাকে ঝাকে ফিরিঙ্গি মারিলাম চ্যালা, মুরিদগণের অবস্থা কেরোসিন দেখিয়া লর্ড ক্লাইভ ঘোড়ায় চড়িয়া ভাগিবার চেষ্টা করিল। মেইন গুন্ডা তো তাই তাঁহাকে পরপারে পাঠাইতে গিয়া দেখি গুলি শেষ।
অতঃপর আমিও আরেক ঘোড়ায় চড়িয়া, প্রাণের মায়া ত্যাগ করিয়া তাঁহার পিছন পিছন ছুটিতে লাগিলাম। এই বলদকে যে শেষ করিলেই বাঁচিয়া যাইবে আমার স্বপ্নের বাংলা। সিরাজউদ্দৌলার স্বপ্নের বাংলা।
যুদ্ধের অসংখ্য কোলাহল, আর্তনাদ, চিৎকার ছাপিয়া ভাসিতে লাগিল আমার ঘোড়ার খুরের শব্দ
ঠক ঠক ঠক ঠক ঠক ঠক ঠক ঠক ঠক ঠক
ঠক ঠক ঠক ঠক ঠক ঠক
ঠক ঠক ঠক ঠক
ঠক ঠক
হঠাৎ ঠক ঠক শব্দের সহিত কে যেন চিৎকার করিয়া বলিয়া উঠিল, এতক্ষন থাইকা কি করস্! বাইর হ! বাইর হ কইতাছি!!
সম্ভিত ফিরিয়া আসিল ভ্রাতার ডাকে। আপনাকে পাহিলাম সেই জায়গায়, যেখানে পাশের বাড়ীর কুদ্দুস হইতে প্রেসিডেন্ট ওবামাকে পর্যন্ত যাইতে হয়। যেখানে বসিয়া আর্কিডিমিস কি বালছাল জানি আবিষ্কার করিয়াছিল। যেখানে বসিয়া রাহি নামক আরেক আকাইম্মা 'প্রায়' বঙ্গ উদ্ধার করিয়া ফেলিয়াছিল। অবশ্য এখানে বসিলে বরাবরই তাঁহার কল্পনার লাগাম ছুটিয়া যায়।
অভিজ্ঞজন নিশ্চয় বুঝিতে পারিতেছেন আমি বাথরুমের কথা বলিতেছি।
ঠক ঠক শব্দ বন্ধ হইয়াছে। তবে লাথির শব্দ শুরু হইয়াছে। ভ্রাতার ইয়ে বোধহয় ইমোশনাল হইয়া গিয়াছে। কাঁদিতে হইবে অবশিষ্ট কর্মগুলি সম্পাদন করিতে করিতে ভাবিলাম, মোর বঙ্গ উদ্ধারের স্বপ্ন ধুলিস্যাৎ হইল ভ্রাতার বাঁধার কারনে।
যেরুপে আরেক হতভাগার স্বপ্ন ধুলিস্যাৎ হইয়াছিল এক বিশ্বাসঘাতকের কারনে। বাথরুম হইতে বাহির হইয়া নব্য মীরজাফরকে বিষণ্ণ স্বরে বলিলাম
ভ্রাতঃ অধম বাঙালী মীরজাফরকে ভুলিবে তুমি আসিয়াছ বলে
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।