আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যুবাদের স্বপ্নে আর্থিক বিনিয়োগ

অলসদের দিয়ে কী আর হয়। আলসেমি ছাড়া! ২৫ এপ্রিল ব্র্যাক সেন্টার ইনে একটি মতবিনিময় সভা হয়েছে যার নাম ছিল –Investing in Youth Financing Dreams’ । নামে বোঝা যাচ্ছে এটি তরুন উদ্যোক্তাদের টাকা যোগাড়ের বুদ্ধি বের করার শলা পরামর্শ। ছিলেন ব্যাংক (দুইটি), আর্থিক প্রতিষ্ঠান (ভেঞ্চার ফান্ড), আন্তর্জাতিক সংস্থা (আইএফসি), ব্র্যাক বিম্ববিদ্যালয়ের বিজনেজ স্কুল এবং সেন্টার ফর এন্টারপ্রিনিয়র ডেভেলপমেন্ট, আর ব্র্যাকের দু্টি প্রকল্পের লোকজন যারা গ্রামীণ কর্মসংষ্থানের জন্য কাজ করছেন। এর বাইরে ছিলেন কয়েকজন আইটি ও অন্যান্য উদ্যোক্তা।

আইবিএর যে শিক্ষার্থী এবার এইচএসবিসি বিজনেজ প্রতিযোগিতায় পুরস্কার পেয়েছে সেও ছিল। আলোচনার শুরুতে ব্র্যাকের উমনিযাত একটি ছোট্ট সার্ভে রিপোর্ট উপস্থাপন করেন। তাঁর ঐ ইনফরমাল সার্ভেটি ছিল ৪২ জন তরুন-তরুনী যারা নিজেরা কিছু করার চেষ্টা করছে। তাঁর ফাইন্ডিংসগুলো অনেকটা এরকম • অনেক উদ্যোক্তা নিরাই জানে না বা বোঝে না যে সে এরই মধ্যে একজন উদ্যোক্তা, • সবার মধ্যে ধর্মের বেশ প্রভাব। সবাই কমবেশি নিয়তি নির্ভর • ঋণ নিতে সবারই ব্যপক হেসিটেশন • ব্যবসার বিভন্ন অপশন নিয়ে তেমন একটা বুঝজ্ঞান নেই এসব কারণে তার মনে হয়েছে এন্টারপ্রিনিযরশীপ রিইন্ট্রোডিউস হওয়া দরকার এবং উদ্যোক্তার ব্যাপারটা ভালমতো প্রমোট করা দরকার।

সেখানে বিভিন্ন ব্যাংকের এসএমই লোনের ব্যাপারে খোজ নেওয়া হয়েছে। দেখা যাচ্ছে- • এসবের জন্য ব্যক্তিগত জামিনদার দরকার • জামানত লাগে • ২/৩ বছরের সাফল্য লাগে • নিজের বিজনেজের জায়গা বা লিজ এগ্রিমেন্ট দেখানো লাগে • কোন প্রেস পিরিয়ড নাই • বেশিরভাগ উদ্যোক্তার আইডিয়া ভিন্ন হলেও একসেস টু ফাইন্যান্স সবার কমন সমস্যা এরপর আলোচনাতে অংশনেন কয়েকজন উদ্যোক্তা। তাদের বক্তব্যের সারাংশ- • বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকরা সরাসরি বাজার উপযোগী হোন না, ফলে তাদের পেছনে বেশ কিছু সময় দিতে হয়। এতে অনেক টাকা এবং সময় লাগে। পরে দেখা যায়, সেই সব কর্মীকে ভাগিয়ে নিয়ে যায় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো • কোন প্রতিষ্ঠান এখন ওয়েবডিজাইনে কাজ করে।

তাদের ব্যবসা তারা সম্প্রসারণ করতে চায়। এজন্য ইনিশিয়াল কিছু টাকা দরকার। সেটা তারা পাননা কারণ ব্যাংককে সেটা বোঝানো যায় না। • আবার বাজারে দক্ষ লোকের ম্যালা অভাব • উদ্যোক্তাদের কিছু বিষযে সমস্যা হয় যেমন বিজনেজ প্ল্যান বোঝা, একাউন্টিং রাখা ইত্যাদি। টেক উদ্যোক্তাদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা বেশী • উদ্যোক্তাদের জন্য প্যাকেজ থাকলে ভাল হতো • ব্যবসার ধরণ-ধারণ মানে লিমিটেড করবে না প্রোপাইটরি করবে এসব নিয়ে স্বচ্ছতা কম।

এজন্য প্রশিক্ষণ বা কর্মশালার দরকার এ পর্যায়ে কয়েকজন ব্যাংকার আর ভেঞ্চারগণদের কাছ থেকে নিন্মোক্ত সুপারিশ পাওয়া গেল • শুরু থেকে প্রতিষ্ঠানটির কাজকর্ম ব্যাংকের সঙ্গে করলে সেটি ব্যাংকেবল হতে পারে • কর্পোরেট আইনজীবীদের পরামর্শ নে্য়া উচিৎ কোম্পানি বানানোর ক্ষেত্রে • এসব ক্ষেত্রে ইনকিউবেশন সেবা থাকলে সবচেয়ে ভাল হয় • ফিনান্সের জন্য পার্টনার নিলে ভাল হয় বেশি • টাকার চেয়ে ফোকাস এবং একাগ্রতার বিষয়ে বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিৎ • সনাতনী ব্যাংকের জন্য কাজটি কঠিন এমটিবিএল ব্যাংক একটি উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানায়। এরপর শোনা হল বিআইআইসির কথা। তারা ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজ করে। তাদের বক্তব্য হল অনেক মানুষ আছে যারা তাদের টাকা এসব উদ্যোক্তাদের দেবেন যদি ঠিকমতো ব্রিজ করা যায়। তবে, তারা সরাসরি কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত হবে না বরং তারা কোস ইনভেস্টমেন্ট ফার্মের মাধ্যমে বিনিয়োগ করবে।

কিন্তু অন্য সব সেক্টরের মতো এখানেও দক্ষ রোকের বড় অভাব। ব্র্যাকের দুইটি কর্মসংষ্থান প্রকল্পের অভিজ্ঞতা শোনা হল- • এগুলো গ্রামীণ মেয়েদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য কাজ করে। • প্রশিক্সণ এবং মোটিভেশনের কাজটা হওয়ার পর মেযেটি যকন কর্মক্ষেত্রে নামে তখন তার কিছু ফিন্যান্সের প্রয়োজন হয়। এটি টাকার অংকে খুবই সামান্য (২০ হাজারও হতে পারে) হলেও সেটি যোগাড় করা যায় না খুলনার প্রাণন-বিআইআইসি ইনকিউবেটরের ক্ষেত্রে জানা গেল সেখানে প্রতি চারমাস পর পর নতুন একদল উদ্যোক্তা যুক্ত হবে, তাদেরকে প্রশিক্ষিত করা হবে এবং পরে তারা নিজেরা কোম্পানি খুলবে। যেহেতু এখনোএটির উদ্যোক্তারা কেও মাঠে নামেনি তাই এর মূল্যায়নের সময় হয় নি।

এই সময় উদ্যোক্তারা তাদের মধ্যে কেও কেও ভাল টার্ন ওভারের ব্যবসা করলেও ব্যাংক তাদেরকে ঋণের জন্য বিবেচনা করেন না। সামারীলি কী ফাইন্ডিংস গুলো তাহরে হলো- ক. ব্যাংকারদের ধারণা সনাতনী ব্যাংক ঋণের মাধ্যমে উদ্যোক্তাদের শুরুর দিকে ফাইনান্সিং প্রায় কঠিন কারণ ১. সংগত কারণে সেখানে সুদের হার বেশি ২. রিস্ক এসেসমেন্ট কঠিন ও বায়বীয় ৩. কোলেটারাল পাওয়া যায় না ৪. তরুন উদ্যোক্তাদের কারিগরি ব্যাপারগুলো বোঝার ক্ষেত্রে ব্যাংকের সক্ষমতাও কম। খ. ইইএফ জাতীয় ফান্ডগুলোআরো বুহত্তর পরিসরে কাজ করতে পারে গ. দেশে অনেক লোক প্রাইভেটলি বিনিয়োগ করতে পারেন এসব উদ্যোক্তাদের জন্য। কিন্তু ম্যাচ মেকিং হচ্ছে না। এর জন্য দুটো বিষয়কে দায়ী করা যায়- ১. সম্ভাবনাটা ঠিকমতো ঠিক লোকের কাছে তুলে ধরা যাচ্ছে না ২. ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজার নাই।

ঘ. ভেঞ্চার এবং এনজেল ইনভেস্টমেন্টের সংস্কৃতি আমাদের থাকলেও সেটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়নি। আমাদের তরফে আমরা কী করতে পারি সেটা নিয়ে কিছু আলাপ হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল – • এন্টারপ্রিনিয়র তৈরি করার জন্য কিছু প্রশিক্ষণ, কর্মশালা ইত্যাদির আয়োজন করা এসব ক্ষেত্রে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর এন্টারপ্রিনিয়র ডেভেলপমেন্ট সহায়তা করতে পারে, • ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজার তৈরি করার জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, • ইনোভেটিভ (যেমন বি-প্রাণন) কাজগুলোকে উৎসাহিত করা, • আরো বৃহত্তর পরিসরে এই রকমের আলোচনার আয়োজন করা মোঁটামুটি এই ছিল সেদিনের আলোচনা। আমার নোট থেকে আমি এই কাজটা করলাম। রেপোটিয়ারদের রিপোর্টথেকে বিস্তারিত পাওয়া গেলে আবারও শেযার করা যাবে।

এই আলোচনাটি ছিল আমাদের এর আগের আয়োজন কারিগরি উদ্যোগের জন্য অর্থায়ন আলাপের ফলোআপ। আমরা মোটামুটি একটি ধারণা গুছাতে পারছি। আমাদের উদ্যোক্তা বিষয়ক কর্মকাণ্ডের একটি বড় লক্ষ্য হচ্ছে ফাইন্যান্সিং এর সমাধান করা। ফেসবুকের গ্রুপেও আমরা নানান আলাপ করছি। তবে, মনে হচ্ছে কিছু আলাপের এখন একশনে নেমে যাওয়ার সময় হচ্ছে।

সামনে আমরা সেই লাইনে এগোবো। সবার সেকেন্ড ডিফারেন্সিযাল নেগেটিভ হোক। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।