আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রক্ত এবং অশ্রুর মধ্যে পার্থক্য (রাজনৈতিক সহিংসতায় মারা যাওয়া লোকজনের পরিবারের অশ্রু)

আহ অমরত্ব, তোমার উষ্ণ ঠোঁটে রাখি ঠোঁট, চোখ বন্ধ করে সবটুকু আনন্দ ভোগ করি। তোমার উষ্ণতায় বারেবারে বিলীন হয়ে যাই, দিতে পারিনি কিছুই, শুধু নষ্ট করে যাই। রক্ত আর অশ্রুর মধ্যে পার্থক্য যেমন আছে তেমনি আছে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। রক্তপাতের কারণে অশ্রুপাত ঘটে , কিন্তু অশ্রুপাতের কারণে কি রক্তপাত ঘটে ? সারা দেশে রাজনৈতিক সহিংসতায় মারা গেছে অনেক মানুষ। কেমন আছে তাদের স্বজনেরা।

তাদের অশ্রু কি এখনো ঝরছে না শুকিয়ে গেছে অনেক আগেই। আমরা জানিনা কিংবা জানার চেষ্টাও করিনি কখনো। যে ছেলেটা মারা গিয়েছে পুলিশের গুলিতে কিংবা যে পুলিশ মারা গেছে আন্দোলন থামাতে গিয়ে তার পরিবার কেমন আছে। তাদের মা কি এখনও ছেলের ছবি বুকে ধরে আছেন। আমরা জানিনা, আমরা জানতে চাই না।

এ দেশে মৃত্যু শুধু সংখ্যা দিয়ে বিচার করা হয়। আজ সহিংসতায় মারা গেলো এতজন। আমরা মৃত্যু গুলো দেখিনা, দেখি সংখ্যাটা। যে লোকটি আন্দোলনের আগুনে পুড়ে মারা গেল, তার আগুন খুব সহজেই নিভে যায়। আমরা নিভিয়ে দেই, আগুনের উত্তাপ আমরা সহ্য করতে পারিনা।

আমরা সভ্য , তাই মুখ ফিরিয়ে নেই অসভ্যতা হতে। এইসব রক্তপাত বাড়িয়ে যাচ্ছে শুধু অশ্রুপাত। আমরা রক্তের বদলা নিতে গিয়ে আরও রক্তপাত বাড়াই। এদিকে বয়ে চলা অশ্রু কোন প্রতিরোধ ছাড়াই গড়িয়ে পড়ে চোখ হতে। এইসব মৃত্যুতে কে লাভবান হচ্ছে? আমরা সবাই জানি কারা এইসব মৃত্যু নিয়ে ব্যাবসা করছে।

কারা আমাদের ঠেলে দিচ্ছে আন্দোলনের মৃত্যুকূপে। আমরা কিছুই বলতে পারিনা, আমরা বলতে পারিনা যা , আমরা পিষ্ট হয়ে যাচ্ছি এইসব আন্দোলনের চাপে। সরকার, বিরোধী দল সবাই সুবিধা নিচ্ছে, ভাগ করে নিচ্ছে রক্ত আর লাশ। এই দেশ স্বাধীন হওয়ার পর যতগুলো আন্দোলন হয়েছে, সেগুলোতে অনেকেই মারা গেছে। কিন্তু কি হয়েছে পরবর্তীতে? আবার সব আগের মতই হয়ে গেছে, শুধু লাশগুলো জীবন্ত হয়নি।

স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে শহীদ হওয়া নূর হোসেন এবং মিলন লজ্জিত হবেন আজ স্বৈরাচারকে দেখে। বিএনপি- জামাত কিংবা আওয়ামীলীগের হরতালে মারা যাওয়া মানুষগুলো বৃথাই জীবন দিয়ে গেলেন। অনেক পরিবার এখন আর অশ্রুপাত করেনা, এখন আর তারা কাঁদতে পারেনা, জীবন মানে কি তারা তা জীবন দিয়ে বুঝেছে। সন্তানেরা হয়তো এখনও অপেক্ষায় বাবার জন্য। কিন্তু কিছুই ফিরে আসেনা, ফিরে আসেনা জীবন , ফিরে আসেনা দেশ।

আমরা তারপরও সহিংসতা বাড়িয়ে চলি, বাড়িয়ে চলি লাশ, বাড়িয়ে চলি রক্তপাত আর অশ্রুপাত। এ সবের শেষ কোথায় আমরা কেউ জানিনা। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৩ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.