অভিলাসী মন চন্দ্রে না পাক, জোছনায় পাক সামান্য ঠাই মিডিয়ার প্রেশার গ্রুপের চাপে অবশেষে ডেস্টিনি ২০০০ লিমিটেড সরকার ও এলিটদের নজরে এসেছে! প্রেশার গ্রুপের অব্যহত চাপে অর্থমন্ত্রী কমিশন গঠনের করে ডেস্টিনি সদস্যদেরকে তাদের মুলধন ফেরত দেবার ব্যবস্থা করবে বললেও, আইনের সঠিক ব্যাবহারের মাধ্যমে তা সম্ভব হবে না, নানা কারনে। এর আগে আরেক মাল্টি পারপাস সমিতি "যুবকে"র ব্যাপারে এমনটি করা হলেও টাকা ফেরতের প্রক্রিয়াটি যথেষ্ট সময় ও ব্যায় সাপেক্ষ এবং এর ফলে বাজারের বা বিনিয়োগকারীদের একটা পয়সাও লাভ হচ্ছে না। এবং উদার অর্থনীতিতে সরকার এভাবে বাজারে হানা দিলে তা বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তা নষ্ট করবে এবং বিদেশি বিনিয়োগ অনুৎসাহিত করবে।
একটা বিষয় খুবই আশ্চর্য্যের যে, ডেস্টিনি ২০০০ লিমিটেড এর "এমএলএম" থিওরিকে মূলত পিরামিড স্কিমের অন্তর্ভুক্ত ধরা হয় এবং অর্থনৈতিক বিশ্বে উদাহরনযোগ্য দেশগুলো একটাতেও পিরামিড স্কিম বৈধ নয়। http://en.wikipedia.org/wiki/Pyramid_scheme আইনগত নিষিদ্ধ! সেখানে বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত এটি অবৈধ নয়! অবৈধ হলে তো ডেস্টিনির সকল সম্পত্তি জব্দ করে টাকা ফিরিয়ে দেয়া যেত!
তবে, কি হলে কি হতে পারতো এসব নিয়ে কথা বলে কোন লাভ নেই বরং সময় ও মেধা অপচয়! তার চেয়ে বরং দেখি কি করা যায়।
সরকার যদি এখন হুট করে ডেস্টিনি ২০০০ আইনীভাবে বন্ধ ঘোষনা করে তবে তা বাজারে শুধু প্যানিক ছড়াবে। এর পরিচালনা পর্ষদ তাদের মাল্টি লেভেল মার্কেটিং এর সেক্টর বন্ধ করে ইতিমধ্যে গড়ে তোলা অন্যান্য ব্যাবসায়ীক খাতে চলে যাবে।
যেই ৪৬ লক্ষ মানুষ পিরামিড স্কিম না বুঝেই এর সদস্য হয়েছে, তারা আবারো না বুঝেই টাকা ফেরত চেয়ে পথে-ঘাটে ভাংচুর করবে।
ডেস্টিনি ২০০০ লিমিটেড একটি সফল প্রতিষ্ঠান। এরা বাংলাদেশে বৈধ এমন পথেই অনুসরন করেছে।
সুতরাং এদের ব্যাবসায়ীক স্বাধীনতা হরন করা সম্ভব নয়। এখন আইন করে পিরামিড স্কিম বন্ধ করলেও, তাদের শাস্তি দেয়া যাবে না, কারন আইনের সাধারন মূলনীতি অনুযায়ী "বর্তমানে আইন করে কাউকে অতীতের কৃতকর্মের জন্য বিচার করা যাবে না"। শুধু ডেস্টিনি'র জন্য আইনকে বদলানো যায় না! কেউ ডেস্টিনির উপর সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপ দাবী করলে সেটা ধর্তব্যের মাঝেই আনার কোন প্রয়োজনীয়তা নেই। যা করতে হবে সেটা বৈধ এবং সম্ভব হতে হবে।
আমার প্রস্তাব হচ্ছে, ডেস্টিনি ২০০০ লিমিটেড একটি সফল প্রতিষ্ঠান সুতরাং দেশের অর্থনীতি এবং এর সদস্যদের স্বার্থেই ডেস্টিনি'কে ব্যাবসা করে যেতে হবে।
তবে, ডেস্টিনি ২০০০ লিমিটেড'কে মাল্টিপারপাস থেকে একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে পরিবর্তন করা হোক। একমাত্র এই পদ্ধতিতেই কোম্পানি এবং এর সদস্যদের বাঁচানো সম্ভব। শেয়ারহোল্ডার হলে ৪৬ লক্ষ মানুষ, যারা এর সদস্য তারা নিজ নিজ বিনিয়োগ অনুযায়ী নির্ধারিত পরিমানের লভ্যাংশ লাভ করবে। এবং যেই উদ্দেশ্যে ডেস্টিনি ২০০০ লিমিটেডের সদস্য হয়েছিল সেই আর্থিকভাবে লাভবান হবে।
ডেস্টিনির মোট মূলধনের যোগানদাতা তাদের তালিকাভুক্ত সদস্যগণ।
সুতরাং ডেস্টিনি'র সম্পদে তাদের অধিকার আইনগতভাবে প্রমান করা সম্ভব। এবং তাদের সদস্য সংখ্যাটি যা ৪৬ লক্ষ অতিক্রম করেছে তা সরকারকে কিছুটা ইন্টারফেয়ার করার বৈধতা দিবে। তবে ডেস্টিনি ২০০০ লিমিটেড যদি আজকে সৎ উদ্দেশ্যে ব্যাবসা করতো তবে কিন্তু এমন হতো না। বরং বৈপ্লবিক উন্নতি হতো বাংলাদেশের বাজারের। ধরেন, ডেস্টিনি যদি কালো জিরার তেল বিক্রি না করে আর চাল-ডাল বিক্রি করতো তবে, ৪৬ লক্ষ মানুষ কিন্তু নিশ্চিতভাবেই লাভবান হতো।
তাদের সাইকেলও সচল থাকতো তারা ঠিকই নগদ রিটার্ন পেত, বাজারে ফাটকাবাজী করমো এবং এর ফলে দেশের প্রভুত উন্নতি হতো! যেহেতু তা হয় নাই, এখন সরকারের উচিত সৎ উদ্দেশ্যে, এই কোম্পানিটির লভ্যাংশে ন্যায্যতার ভিত্তিতে সদস্যদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা।
তার চেয়ে বরং সরকারের উচিত ডেস্টিনি ২০০০ কে গ্রামীন ব্যাংকের মালিকানা'র আদলে একটি কর্পোরেশনে প্রতিষ্ঠিত করা। ডেস্টিনির কার্যক্রমের সফলতা ও সক্রিয়তা নিশ্চিত করতে এর বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ অপরিবর্তিত রেখে ৪৬ লক্ষ সদস্যের মাঝে শেয়ার বিতরন করে দেয়া দরকার। সদস্যদের টাকায় নানা নামে ডেস্টিনির বিভিন্ন খাতে যেই পরিমান বিনিয়োগ হয়েছে, তার লভ্যাংশে ৪৬ লক্ষ সদস্যের আইনী অধিকার প্রতিষ্ঠা করাই হোক সরকারের দায়িত্ব।
১৯৯৬ সালে আলবেনিয়ায় এমন পিরামিড স্কিম পতনের কারনে সেদেশে গৃহযুদ্ধ বেধে গিয়েছিল! অবশ্য সেখানে সরকারী এবং পুরো জনসংখ্যার সংশ্লিষ্টতা ছিল।
কিন্তু ১৭ কোটি মানুষের দেশ বাংলাদেশ একটি বড় দেশ।
এখানে ৪৬ লক্ষ মানুষ কোন একটি খাতে টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারিত হলে সেটাও সামাজিক সমস্যা তৈরী করতে পারে।
সেজন্য, যথাশীঘ্রই ডেস্টিনি ২০০০ লিমিটেড কে বাধ্যতামুলকভাবে একটি পাবলিক কর্পোরেশনে পরিবর্তন করে ৪৭ লক্ষ সদস্যের মাঝে শেয়ার বিলিয়ে, পিরামিড স্কিম নিষিদ্ধ ঘোষনা করে সংসদে আইন পাস করুক সরকার। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।