আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অপ্সরী,ভালবাসা এবং একটি নীল গোলাপ(স্বপ্নচারী)

রাত ঠিক ৩ টা ৪৫ বাজে। এমন সময় রাজের ফোন বেজে উঠল। এয়ারটেল এর চিরচেনা শব্দ। আশিক ফোন করেছে দেখে আর রিছিভ করেনি। মনে করেছে রাতে জাগা পাখিরা এমন ডিস্টার্ব করবেই।

কিছুক্ষণ পর দেখল আবার ফোন বাজছে। ফোন রিছিভ করল, রাজ- “ কিরে দোস্ত এত রাতে কল করলি যে?” আশিক-“ কিরে ঐ মেয়েটা কে কি স্বপ্ন দেখছিলি নাকি?এতক্ষণ লাগল যে ফোন রিছিভ করতে?” রাজ-“ না রে। এমনি একটু দেরি হয়ে গেছে। মেয়েটা যে আমার স্বপ্ন থেকে যাচ্ছেই না। আমি যে ওকে ভুলতেই পারছিনা।

” আশিক-“ দোস্ত, মন খারাপ করিস না। কাল দেখবি কোচিং এ ও নিশ্চয় আসবে। এখন মন খারাপ না করে ঘুমিয়ে পড়। আর আমি সকালে তোর নোট টা বাসায় নিয়ে আসব । ” রাজ-“ ঠিক আছে।

আমি ঘুমিয়ে যাচ্ছি। বাই!’’ দুই দিন আগে_ঃ রাজের স্কুল এ এক নতুন কোচিং শুরু হয়েছে। নাম দৃষ্টি কোচিং । ক্লাস চলাকালীন হঠাত তার চোখ পড়লো একটি মিষ্টি মেয়ের উপর । নাম তার অপ্সরী ।

মেয়েটি ঐ স্কুল ছেড়ে দিয়েছে অনেক আগেই। শুধু এখানে কোচিং করতে এসেছে । রাজ নিজেকে আর সামলাতে পারেনি। ক্লাস চলাকালীন মেয়েটির দিকে তাকিয়ে থাকে। প্রথম দেখাতেই সে তার শপ্নচারিনির দেখা পেয়ে গেছে , যেন সে তার চিরচেনা কারও দেখা পেল।

মেয়েটির চোখ ছিল টানাটানা । রাজ যেন তার সপ্নের সাথে মিলিয়ে ফেলল ঐ মেয়েটিকে। সপ্নে যেমনটি করে সে ওই মেয়েটিকে নীল গোলাপ উপহার দিয়েছিল, ঠিক তেমনি ওকে নীল গোলাপ দিয়ে মনের কথা বলতে চায় রাজ। আগের দিনঃ রাজ আর তার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু আশিক বসে আছে একটা রেস্টুরেন্ট এ । রাজ হটাত করে দেখতে পেল অপ্সরীকে একটা ফ্লেক্সির দোকান থেকে বের হতে।

সাথে ওর মা ও ছিল। তখন রাজ আশিক্ কে ঐ মেয়েটির কথা বলল। রাজ-“ কিরে শোন , এই মেয়েটাই আমার সপ্নের অপ্সরী। তুকে বলেছিলাম না কতদিন ধরে একটা আজব মেয়েকে সপ্ন দেখতেছিলাম। আমার ওকে দেখেই মনে হয়েছে ও ই সেই সপ্নচারিনি।

” আশিক-“ আরে পাগল, তর মাথা পুরা গেছে। তুই কি যে বলিস না । এই মেয়েত আমাদের সাথে পড়ে। নতুন কোচিং এ তাই না??” রাজ-“ হ্যাঁ । ঠিক ধরেছিস।

আমি আমার ভালবাসার দেখা পেয়ে গেছি। ওকেই আমি খুজতেছিলাম এতটা বছর ধরে। ও আমার অপ্সরী , আমার সপ্নচারিনি। আমি অকে আমার মনের সকল কথা বলতে চাই। দোস্তো, প্লিজ আমাকে একটু হেল্প করনা ।

প্লিজ। । অপ্সরীকে দেখার জন্য ওর স্কুল এর সামনে দাঁড়িয়ে থাকত রাজ। সে ক্লাস শেষে অপ্সরীর রিকশার পিছনে পিছনে ঘুরে বেড়াত। এক পলক দেখার জন্য ব্যাকুল হয়ে থাকতো রাজ।

তবু ও দেখা মিলত না। বন্ধুদের সাহায্যে একদিন ওর দেখা পায় রাজ। কিন্তু কিছুই বলতে পারে না ওকে। কারন রাজ কখনও জানতোনা ভালবাসা কিভাবে প্রকাশ করতে হয়। কারণ এটাই ছিল তার প্রথম ভালোবাসা।

সে তার প্রথম দেখাতে শুধু একটা খাতা চেয়েছিল অপ্সরীর কাছে আর এতেই তার প্রায় ৮ গ্লাস পানি খেতে হল। সেদিন অনেক ভঁয় পেয়ে গেছিলো রাজ। অনেক কষ্ট করলেও খাতা পাই সে। কিছু লিখেনি , এমনকি কোন প্রেম পত্র ও না। শুধু কয়েকটা নীল গোলাপ দিয়ে ঠিক যেন শপ্নচারিনির স্বাদ পূরণ করল।

অজানা স্বপ্নঃ অনেকদিন পর, সেদিন ছিল ১৯ শে ডিসেম্বর , রাত ৭ টা ৩১ মিনিট রাজের ফোণে একটা অজানা কল । রাজ ফোন রিছিভ করল, রাজ-“ হেলো কে বলছেন? ” অপ্সরী-“ আমি অপ্সরী বলছিলাম, তুমি নাকি আমাকে ভালবাস?কেন আমাকে তুমি ভালবাস? তুমি কি আমাকে ভালোভাবে চিনো? আর যদি ভালবাস তাহলে বলতে পারছনা কেন? তুমি কিভাবে ভাবলে আমি তুমার কথাই রাজি হব? যদি কখনও আমার কথা মনে হয় তাহলে নিজের সাহস দেখাতে আমার সামনে কখনও এশনা। ভাল থেক। ’’ রাজ কিছু বলতে পারল না । কিছু বলে উঠার আগেই ফোন কেটে দিল।

সেদিন সারা রাত রাজ ঘুমতে পারেনি। সে শুধু ভাবল, ও যদি আমাকে ভাল নাই বা বাসে তাহলে এমন কান্নাজরিত কণ্ঠে আমাকে রাগ দেখাচ্ছিল কেন? ও কি আমাকে আর ফোন দিবে না? ও কিভাবে জানল আমার কথা? ও আমাকে কোন কথা বলার সুযোগ দেইনি কেন? ও কি সত্যি আমাকে ভালবাসে? অ্যালার্ম এর শব্দে রাজের ঘুম ভাঙল। ভোর ৬ টা ১০ দেখে এক লাফ দিয়ে বিছানা ছেড়ে বেসিনে দাঁড়িয়ে গেল। কিছুক্ষণ চুপ করে রইল। এতক্ষণ সে বুঝতে পারল, (অজানা স্বপ্ন) অংশটা পুরোটাই স্বপ্ন ছিল।

রাজ হাফ ছেড়ে বাঁচল, “ভাগ্যিস এমনটা হইনি। তা হলে কি যে হত ???? যাক ওটা স্বপ্ন ছিল । তাড়াতাড়ি রেডি হই। আজকে কোচিং এ যাব। আজকে ওকে বলবই আমার সব মনের কথা।

আমি ওকে অনেক ভালবাসি তা আজকে ওকে বলে দিব। আমি আর নিজেকে গুটিয়ে রাখবনা , আমি বলব “ I LOVE U OPSHORI’’ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।