আমি চাই শক্তিশালী স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টার মতের সঙ্গে পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দ্বিমত
নৌ-প্রটোকল আলাদা করার উদ্যোগ
বাংলাদেশ-ভারত নৌ-প্রটোকলকে বাণিজ্য চুক্তির আওতা থেকে বের করে আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকারের দায়িত্বশীল একটি মহল। এদের যুক্তি, বাণিজ্য চুক্তির বাইরে পৃথকভাবে এবং দীর্ঘ মেয়াদে এ নৌ-প্রটোকলটি সই হলে বাংলাদেশ ভারতের কাছ থেকে ট্রানজিট (পণ্য পারাপার) অবকাঠামোর জন্য পর্যাপ্ত বিনিয়োগ পাবে।
তবে সরকারেরই একাধিক মন্ত্রণালয় এই উদ্যোগের বিরোধিতা করেছে। তাদের প্রশ্ন, ভারতের পাশাপাশি নেপাল ও ভুটানকে নিয়ে বাংলাদেশ ট্রানজিটের জন্য একটি রূপরেখা চুক্তি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ অবস্থায় আলাদা প্রটোকলের সুফলটা কী হবে? এর পাশাপাশি পৃথক প্রটোকল সই করলে ভারতের কাছ থেকে অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য বিনিয়োগ পাওয়া যাবে—এরই বা নিশ্চয়তা কী?
সংশ্লিষ্ট দুটি মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, এ অবস্থায় বিষয়টি নিয়ে অগ্রসর হতে নৌ মন্ত্রণালয়কে পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা।
ভারতকে ট্রানজিট দেওয়ার সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রটোকল নবায়নের আগে কোনো রকম প্রস্তুতি ছাড়াই স্বতন্ত্রভাবে এটি সইয়ের এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ-ভারত অভ্যন্তরীণ নৌপথ অতিক্রম ও জলবাণিজ্য প্রটোকল বা পিআইটিটি নামে পরিচিত প্রটোকলটির মেয়াদ গতকাল শনিবার (৩১ মার্চ) শেষ হয়েছে। বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তির অষ্টম ধারা অনুযায়ী সর্বশেষ ২০১০ সালে এটি নবায়ন হয়।
জানতে চাইলে পররাষ্ট্র, বাণিজ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা গত বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেন, গত ২২ মার্চ নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের সভাপতিত্বে এক বৈঠকে নৌ-প্রটোকলকে আলাদা করার বিষয়টি ওঠে। সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ উদ্যোগের বিরোধিতা করা হয়। মন্ত্রণালয় দুটির মত, বিষয়টি বিস্তারিতভাবে খতিয়ে না দেখে এখনই সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজন নেই।
বৈঠকে উপস্থিত এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নৌ-প্রটোকলকে আলাদা করার পক্ষে মত দেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা। তিনি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের এ ব্যাপারে সারসংক্ষেপ তৈরির নির্দেশ দেন। সারসংক্ষেপে পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দ্বিমতের বিষয়টি সংযুক্ত করার কথাও তিনি উল্লেখ করেন।
প্রটোকলকে আলাদা করতে উপদেষ্টার যুক্তি: ২২ মার্চের বৈঠকে উপস্থিত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টার বক্তব্য ছিল, বাণিজ্য চুক্তির আওতায় নৌ-প্রটোকল নবায়ন হলে তার মেয়াদ তিন বছরের বেশি হবে না। ভারত এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে পণ্য পরিবহনে নৌ, রেল ও সড়কপথের অবকাঠামো উন্নয়নে এত স্বল্প সময়ের জন্য বিনিয়োগে আগ্রহী হবে না। এ ক্ষেত্রে তিনি বিদ্যমান প্রটোকলটিকে দুই দেশের মধ্যে সম্পাদিত উন্নয়ন সহযোগিতার রূপরেখা চুক্তির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ বলে মত দেন। ওই রূপরেখা চুক্তির কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বাণিজ্যমন্ত্রী গোলাম মোহাম্মদ কাদেরকে লেখা চিঠিতেও প্রটোকল আলাদা করার যুক্তি দেখান প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ-সংক্রান্ত একটি বৈঠক হয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করেন। চিঠিতে তিনি বলেন, ওই সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি বা নতুন চুক্তি দুই দেশের মধ্যে সই হওয়া উন্নয়ন সহযোগিতার রূপরেখা চুক্তির ১১ ও ১২ ধারার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ হওয়া বাঞ্ছনীয়। দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি ছাড়া অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য পর্যাপ্ত বিনিয়োগ, অন্যান্য খাতে আন্তদেশীয় বিনিয়োগ এবং বাণিজ্য সম্প্রসারণ উৎসাহিত হয় না।
গত রাতে যোগাযোগ করা হলে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান প্রায় একই মত দেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, রূপরেখা চুক্তিতে দুই দেশের সরকারপ্রধানেরা সই করেছেন।
এই ধরনের রূপরেখা চুক্তিতে কাজ করার সুযোগ ও কাজের গভীরতা অনেক বেশি থাকে। আর এ কারণে নৌ-প্রটোকলটি রূপরেখা চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়া উচিত।
দ্বিমত পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের: ২২ মার্চের বৈঠকের পর ২৫ মার্চ নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে লিখিতভাবে মত পাঠিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়েছে, নৌ-প্রটোকলটিকে আলাদাভাবে সইয়ের আগে সংশ্লিষ্ট সবগুলো বিষয় যাচাই করতে হবে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মত নিতে হবে।
চুক্তির মেয়াদের ব্যাপারে উপদেষ্টার সঙ্গে মন্ত্রণালয় একমত নয়। কারণ, এ প্রটোকলটি সইয়ের পর থেকে কখনোই তামাদি হয়নি। কখনো নবায়নে দেরি হলে কূটনৈতিক উদ্যোগের মাধ্যমে এর ধারাবাহিকতা রক্ষা করা হয়েছে।
প্রটোকলের মেয়াদ কত হবে: নৌ-প্রটোকলটি কত বছরের জন্য নবায়ন হচ্ছে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। গত ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় অনুষ্ঠিত দুই দেশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বৈঠকে ভারত প্রটোকলটির মেয়াদ পাঁচ বছরের জন্য বাড়ানোর প্রস্তাব করে।
কিন্তু রাজি হয়নি বাংলাদেশ। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রটোকলটি দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্য চুক্তির আওতায় কার্যকর হয়। তাই বাণিজ্য চুক্তির নবায়ন মেয়াদ তিন বছর হওয়ায় প্রটোকলের মেয়াদ পাঁচ বছর করা সম্ভব নয়। প্রটোকলের মেয়াদ বাড়াতে হলে বাণিজ্য চুক্তির মেয়াদও বাড়াতে হবে।
যোগাযোগ করা হলে ট্রানজিট-সংক্রান্ত সরকার গঠিত কোর কমিটির সদস্য এম রহমতউল্লাহ গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিদ্যমান প্রটোকলটি উন্মুক্ত করায় অর্থাৎ বহুমুখী হওয়ায় নৌপথে পণ্য এনে সড়কপথে পরিবহন করতে কী সমস্যা হয়, তা আমরা আশুগঞ্জের ক্ষেত্রে দেখেছি।
কাজেই অবকাঠামো পুরোপুরি তৈরি হওয়ার আগে পোর্ট অব কল বাস্তবায়ন করা ঠিক হবে না। ’
রহমতউল্লাহর মতে, ভারতের পাশাপাশি নেপাল ও ভুটানকে ট্রানজিট দিতে সরকারের একটি রূপরেখা চুক্তি সই করা উচিত। কোর কমিটির দেওয়া সুপারিশের ভিত্তিতে এ চুক্তি এবং রূপরেখা চুক্তির আওতায় অনেকগুলো সম্পূরক প্রটোকল সই হওয়া উচিত। তিনি বলেন, প্রতিটি প্রটোকল সইয়ের আগে বাংলাদেশের স্বার্থ নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ দর-কষাকষি করতে হবে।
রিপোর্টারঃ রাহীদ এজাজ
Click This Link
**********************************************
আসাদ দূররানী ও পাকিস্তানের আদালতের সত্যায়িত কপি পাওয়ার পরও আওয়ামী-বাকশালী গং খালেদা জিয়াকে দূষেই চলছে।
অথচ তাদের প্রভু ভারত তার এজেন্ট মসিউর, রিজভীদের দিয়ে বাংলাদেশকে বিনা লাভে একের পর এক সুবিধা নিচ্ছে সেটা জেনেও না জানার ভান করছে। যেখানে বাণিজ্য, নৌ ও অর্থমন্ত্রণালয় বলছে ভারতকে দীর্ঘ মেয়াদে নৌ তথা নদী পথে ট্রানজিট দিলে বাংলাদেশের কোন লাভ নেই সেখানে মসিউর ব্যাটা কোন কিছু নিশ্চিত তথা লেভী বা ফি না নির্ধারণ করেই তা দিতে চাচ্ছে। ২০০৮ নির্বাচনের আগে বলেছিল বাংলাদেশ তথাকথিত ট্রানজিট দিলে সিঙ্গাপুর হয়ে যাবে। আর মসিউর ব্যাটা পরে বলছে ফি চাওয়া অসভ্যতা। হিন্দুস্থানের দালাল এবারও যেন তেন ভাবে চুক্তি করে আবার একই গান গাবে যে মহান ভারত হতে কোন অর্থ চাওয়া যাবে না।
আর প্রধানমন্ত্রী হাসিনার এই নিয়ে কোন বক্তব্যই নেই। থাকবে কি করে ভারতকে মূচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। দিল্লী হতে বাংলাদেশের স্বার্থে কোন কিছু চাবে তো দূর উল্টো লুটপাট-র্দূনীতি করে দেশটাকে দেউলিয়া করার অবস্থা। রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনুরা পর্যন্ত বলছে হাসিনার উপদেষ্টারা আসলে মনমোহনের উপদেষ্টা। আর তারপরেও ব্লগে দেখি কম গুরুত্বের বিষয় নিয়ে বিরোধী দলের গুষ্ঠি উদ্ধার।
ভারতকে মসিউর ও রিজভী গং দীর্ঘ মেয়াদী করিডোর দিলে ভবিষ্যতে দিল্লী যে আমাদের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাবে এই নিয়ে তাদের কোনই মাথা ব্যাথা নেই। এরাই নাকি বলে তথাকথিত মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি! ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।