আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রানির হীরক জয়ন্তী : স্কটল্যান্ডের বিচ্ছিন্ন হওয়ার পাঁয়তারা

যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে এখন এমন এক সময়ে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের হীরক জয়ন্তী (ক্ষমতায় ৬০ বছর) উদ্‌যাপিত হতে যাচ্ছে, যখন এ রাজ্যের একটি অন্যতম সমৃদ্ধ অঞ্চল বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পাঁয়তারা শুরু হয়েছে। তাহলে কি আগামী দেড়-দুই বছরের মধ্যে সত্যিই স্বাধীন হয়ে যাচ্ছে স্কটল্যান্ড? খসে যাচ্ছে যুক্তরাজ্যের বর্তমান সার্বভৌম মুকুট থেকে একটি উজ্জ্বল পালক? বছরখানেক ধরে সে আলোচনাই চলছে এডিনবরা এবং লন্ডনের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে। স্কটল্যান্ডের ক্ষমতাসীন স্কটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টির (এসএনপি) প্রথম মন্ত্রী আলেক্স স্যালমন্ড যুক্তরাজ্য থেকে স্বাধীনতার লক্ষ্যে ২০১৪ সালের মাঝামাঝির মধ্যে একটি গণভোট চেয়েছেন। তবুও যুক্তরাজ্য বা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন এবং অন্য রাজনৈতিক দলের নেতারা বিভিন্নভাবে চেষ্টা করছেন স্কটল্যান্ডের সে বিচ্ছিন্নতার উদ্যোগকে প্রতিহত করতে। তাদের সঙ্গে আরো একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক সমঝোতায় আসতে এবং বিশ্বের একটি অন্যতম প্রধান শক্তিশালী দেশ হিসেবে যুক্তরাজ্যের অখণ্ডতা রক্ষা করতে।

কিন্তু জাতীয়তাবাদী ভাবাবেগের বশবর্তী হয়ে স্কটল্যান্ডের বর্তমান ক্ষমতাসীন এসএনপির নেতারা হাজার বছরের অবিচ্ছিন্ন সভ্যতা, কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য ভেঙে বেরিয়ে যাওয়ার রাজনৈতিক উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে চান। কিন্তু সে উদ্যোগ বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাস্তবসম্মত কিংবা মোটেও স্বচ্ছ নয় বলে বিভিন্ন মহলে অভিযোগ উঠেছে। স্কটিশ প্রথম মন্ত্রী আলেক্স স্যালমন্ডকে ইতিমধ্যে যুক্তরাজ্যের অনেক ইংরেজ ও ওয়েলস নাগরিক 'অত্যন্ত স্বার্থপর এবং পিচ্ছিল' বলে উল্লেখ করেছেন। কারণ স্যালমন্ড রয়্যাল ব্যাংক অব স্কটল্যান্ডের (আরবিএস) ১৮৭ বিলিয়ন পাউন্ড-স্টার্লিংয়ের ঋণ পরিশোধের বিষয়টি সম্পূর্ণ পাশ কাটিয়ে এবং নর্থ সি-এর নয়-দশমাংশ তেলসম্পদ কুক্ষিগত করে পৃথক হয়ে যেতে চাচ্ছেন। ২০১৪ সালের মাঝামাঝি তিনি যুক্তরাজ্য থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ার ব্যাপারে স্কটল্যান্ডে একটি গণভোট অনুষ্ঠানের জোর প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।

সাবেক লেবার-দলীয় সরকারের অর্থমন্ত্রী আলেস্টার ডার্লিং আরবিএসের বিপর্যয়ের জন্য স্যালমন্ডকে অনেকাংশে দায়ী করেছেন। স্কটল্যান্ডের তেল-গ্যাস সম্পদের ব্যাপারেও তাঁর হিসাব-নিকাশে যথেষ্ট গরমিল ও ভুলত্রুটি রয়েছে বলে সমালোচনা করেছেন। তা ছাড়া আরবিএসের রক্ষা বা 'বেইল আউট'-এর ব্যাপারে এডিনবরা থেকে তিনি কেন্দ্রীয় সরকারকে বাধ্য করেছিলেন তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে। কিন্তু এখন তিনি সে বিষয়টি নিয়ে নানা রকম উদ্দেশ্যমূলক কথাবার্তা বলছেন বলে ডার্লিং অভিযোগ করেছেন। পরে আরবিএসের সাবেক প্রধান স্যার ফ্রেড গুডউইনের কাছে এবিএন আমব্রো ব্যাংক কেনার ব্যাপারে স্যালমন্ডের লিখিত একটি চিঠি প্রকাশ করা হলে বিব্রতবোধ করেন তিনি।

কারণ স্যালমন্ড তখন আরবিএসকে সর্বতোভাবে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছিলেন। তৎকালীন অর্থনৈতিক অবস্থায় সে ব্যাংক কেনার ব্যাপারে আলেস্টার ডার্লিং এবং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউনের এবিএন আমব্রো ব্যাংকটি কেনার ব্যাপারে কোনো উৎসাহ ছিল না। বর্তমান ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী নিক ক্লেগ অভিযোগ করেছেন, স্যালমন্ড স্কটিশ ভোটারদের তাদের চাকরি-বাকরি কিংবা স্কটল্যান্ডের অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ এবং যুক্তরাজ্যের ঋণের অংশীদারিত্ব সম্পর্কে কোনো ধারণা না দিয়ে স্বাধীনতার এক স্বপ্নীল ঘোরের মধ্যে রেখে দিয়েছেন। নিক ক্লেগ বর্তমান বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে যুক্তরাজ্য থেকে স্কটল্যান্ডের বিচ্ছিন্ন হওয়ার চিন্তাভাবনাকে অত্যন্ত অপরিণামদর্শী ও ক্ষতিকর বলে উল্লেখ করেছেন। কারণ এর সঙ্গে শুধু স্কটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টির কিছু নেতা-নেত্রী নয়, স্কটল্যান্ডের সব নাগরিকের জীবন-জীবিকা এবং ভবিষ্যতের প্রশ্ন জড়িয়ে রয়েছে।

সেদিকে দৃষ্টি না দিয়ে এসএনপি নেতারা স্কটিশ বীর বরার্ট দ্য ব্রুসের 'ব্যানকবার্ন যুদ্ধ জয়ের' সাত শ বছরপূর্তি উপলক্ষে ২০১৪ সালে স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার জন্য একটি গণভোট অনুষ্ঠানের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যুক্তরাজ্য কেন্দ্রীয় সরকারের মতে, স্কটিশ সংবিধান অনুযায়ী বাধ্যতামূলকভাবে গণভোট অনুষ্ঠানের ব্যাপারে স্কটল্যান্ডের আঞ্চলিক সরকারের কোনো রাজনৈতিক ক্ষমতা নেই। গণভোটের মাধ্যমে সম্মিলিত যুক্তরাজ্য থেকে স্বাধীনতার নামে বিচ্ছিন্ন না হলে স্কটল্যান্ডের জনগণকে আরো অধিক ক্ষমতা ও সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন বর্তমান রক্ষণশীল দলীয় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। তিনি এ ব্যাপারে স্কটল্যান্ডের বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে স্কটিশ সংসদ 'হলিরড'কে আরো অধিকতর সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রদান করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন। তবে স্কটিশরা যুক্তরাজ্যের সঙ্গে স্থায়ীভাবে থাকবে কি না, সব কিছুই এখন সে মৌলিক বিষয়ের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে বলে ডেভিড ক্যামেরন উল্লেখ করেছেন।

গণভোটে স্কটল্যান্ডের নাগরিকরা যুক্তরাজ্যে অবস্থানের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিলে বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার স্কটল্যান্ডকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে যথাযথ পদক্ষেপ নেবেন বলে সম্প্রতি এডিনবরায় প্রদত্ত এক বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেছেন। স্কটল্যান্ডকে আর কী কী ক্ষমতা ওয়েস্টমিনস্টার থেকে হস্তান্তর করা যায়, তা অবশ্যই ভেবে দেখা হবে বলে প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন। স্বাধীনতার পরিবর্তে আরো অধিক স্বশাসনের ক্ষমতার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো স্কটল্যান্ডবাসী এবং তাদের সরকারকে গভীরভাবে বিবেচনা করে দেখতে হবে। স্কটল্যান্ডকে আরো অধিক স্বশাসন দেওয়ার বিষয়গুলো বিবেচনা করার আগে স্বাধীনতার ইস্যুটি নিষ্পত্তি হওয়া দরকার বলে প্রধানমন্ত্রী মনে করেন। ক্যামেরন স্কটিশ জাতীয়তাবাদী দলকে তথাকথিত স্বাধীনতার প্রশ্নে পরাজিত করার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় জনগণের কাছে।

তিনি বলেছেন, ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ওয়েলস ও উত্তর আয়ারল্যান্ড- সবাই ঐতিহাসিক ও ভৌগোলিকভাবে যুক্তরাজ্যের অন্তর্ভুক্ত। এটি একটি দীর্ঘ রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার বহিঃপ্রকাশ এবং সহাবস্থানসংক্রান্ত নিরবচ্ছিন্ন ঐতিহ্যের বিষয়। সে ইতিহাস ও ঐতিহ্য হাজার বছরের পুরনো, যদিও ইংল্যান্ড এবং স্কটল্যান্ডের শাসকদের মধ্যে ক্ষমতার লড়াই সংগঠিত হয়েছে বিভিন্ন সময়ে। কিন্তু সে অবস্থায়ও যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলের জনগণের মধ্যে একটি বিশিষ্ট পারিবারিক ও সামাজিক সত্তা জেগে উঠেছে, যা ব্রিটিশ মূল্যবোধকে ধারণ করে। প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বলেছেন, ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসের সঙ্গে অংশীদারিত্বে এত দিন স্কটল্যান্ড অনেক শক্তিশালী, সম্পদশালী, নিরাপদ ও বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত ছিল।

কিন্তু স্কটল্যান্ড বিচ্ছিন্ন হলে সামরিক শক্তি এবং পররাষ্ট্র বিষয়ের দিক থেকে এক মহান মর্যাদা হারাবে। হারাবে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যপদ। অপরদিকে স্কটল্যান্ডের প্রথম মন্ত্রী আলেক্স স্যালমন্ডের একজন মুখপাত্র মন্তব্য করেছেন, যুক্তরাজ্য ত্যাগ করলে স্কটল্যান্ডের অর্থনৈতিক শক্তি মাথাপিছু আয়ের দিক থেকে উন্নত বিশ্বের মধ্যে ষষ্ঠ স্থানে পৌঁছে যাবে। কিন্তু স্কটল্যান্ডের জাতীয়তাবাদী নেতারা একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের নিজস্ব প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রসহ অন্যান্য অপরিহার্য মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও অধিদপ্তর পরিচালনার ব্যয় সম্পর্কে হয়তো গুরুত্বসহকারে অনেক কিছুই ভেবে দেখেননি। বিশ্বসভায় যুক্তরাজ্য থেকে বেরিয়ে যাওয়া স্কটল্যান্ডের অবস্থান কোথায় হবে, তা এখনো হয়তো উপলব্ধি করতে পারেননি।

নর্থ সি-এর সামান্য তেল ও গ্যাস ফুরিয়ে গেলে স্কটল্যান্ডের আর যেসব প্রাকৃতিক কিংবা খনিজ সম্পদ রয়েছে, তা একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্য যথেষ্ট নয় বলে অনেক বিশেষজ্ঞই মতপ্রকাশ করেছেন। বিশ্বব্যাপী বর্তমান অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্রগুলো যখন সংঘবদ্ধ হচ্ছে, আরো ঐক্যবদ্ধ কিংবা ঘনিষ্ঠ হচ্ছে, তখন যুক্তরাজ্যের মতো একটি ছোট রাষ্ট্রের আরো অধিকতর ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অঞ্চল বিচ্ছিন্ন হয়ে কিভাবে টিকে থাকবে, তা অবশ্যই একটি আর্থ-সামাজিক এবং রাজনৈতিক পর্যালোচনার বিষয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সদস্য রাষ্ট্রের বর্তমান অর্থনৈতিক বিপর্যয় এবং মন্দা কাটিয়ে ওঠার প্রাণান্তকর প্রচেষ্টার মুখে যুক্তরাজ্য থেকে স্কটল্যান্ডের বিচ্ছিন্ন হওয়ার বাসনাকে বিশেষজ্ঞরা তাই অত্যন্ত অবাস্তব ও অসময়োচিত বলে উল্লেখ করেছেন। স্কটল্যান্ডের দালিলিক ইতিহাস শুরু হয়েছিল রোম সম্রাটদের ব্রিটেনে রাজত্ব স্থাপনের পর থেকে। নবম শতাব্দীতে স্কটল্যান্ডে একটি সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হলেও ১৩৭১ থেকে সেখানে স্কটিশ স্টুয়ার্টদের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

বহু ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে ১৩০৬ সালে স্কটিশ জাতীয়তাবাদী শাসক রবার্ট দ্য ব্রুস রাজত্ব লাভ করলেও ইংল্যান্ডের রাজা দ্বিতীয় এডওয়ার্ড তাঁকে পরাজিত করেছিলেন। তারপর ১৩১৪ সালে ব্রুস দ্বিতীয় এডওয়ার্ডকে ব্যানকবার্ন যুদ্ধে পরাজিত করে আবার স্কটল্যান্ডের ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন। সে ধারাবাহিকতায় পরবর্তীকালে আবার ইংল্যান্ডের কাছ থেকে রানি মেরি এবং আরো পরে রাজা চতুর্থ জেমস স্কটল্যান্ডের ক্ষমতায় আসীন হয়েছিলেন। তারপর ১৬০৩ সালে স্কটল্যান্ডের রাজা ষষ্ঠ জেমস পারিবারিক সম্পর্কের কারণে ইংল্যান্ডের সিংহাসনের অধিকারী হয়েছিলেন। তাঁর পুত্র প্রথম চার্লসের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় কারণে শিরশ্ছেদ ঘটলে পরে দ্বিতীয় চার্লস ও সপ্তম জেমস যৌথভাবে ইংল্যান্ড ও স্কটল্যান্ড শাসন করেছিলেন।

ব্রিটিশ সিংহাসনে রানি অ্যান ছিলেন সর্বশেষ স্টুয়ার্ট (স্কটিশ) শাসক, যিনি ১৭১৪ সাল পর্যন্ত শাসন পরিচালনা করেছিলেন। ইতিমধ্যে ১৭০৭ সালে প্রণীত একটি আইনের মাধ্যমে স্কটল্যান্ড ও ইংল্যান্ডকে গ্রেট ব্রিটেন নামে একটি নয়া সার্বভৌম রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছিল। সে সম্মিলিত রাষ্ট্রই ১৮০১ সালে যুক্তরাজ্য নামে আত্মপ্রকাশ করেছিল। রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও বৈবাহিক কারণে স্কটল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের রাজপরিবার উলি্লখিত বিভিন্ন সময়ে একীভূত হয়েছিল বেশ কয়েকবার। সেটি ছিল রাজতন্ত্রের অধীনে এক দীর্ঘ ক্ষমতার লড়াই।

কিন্তু সে লড়াইয়ে যুক্তরাজ্যের জনগণের অবস্থান কোথায়? তাই একবিংশ শতাব্দীতে এসে স্কটল্যান্ডকে ইংল্যান্ড থেকে কিংবা ইংল্যান্ডকে স্কটল্যান্ড থেকে বিচ্ছিন্ন করা একটি অবাস্তব ও সংকীর্ণ প্রয়াস বলে তথ্যাভিজ্ঞ মহলের অনেকে মনে করেন। পঞ্চম থেকে অষ্টম শতাব্দীতে আয়ারল্যান্ড থেকে গাইলসরা (স্কটি) আদি স্কটল্যান্ডের ভূখণ্ড আক্রমণ ও সেখানে বসবাস স্থাপন করলেও দীর্ঘ যুগের সম্মিলিত ইতিহাস, সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও ঐতিহ্য এবং এমনকি ইংরেজি ভাষার বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে গড়ে উঠেছে আজকের যুক্তরাজ্যের আধুনিক জনপদ। তাই বর্তমান স্কটল্যান্ডের জাতীয়তাবাদী দলের কিছু নেতা-নেত্রীর ভাবাবেগপ্রসূত দাবির মুখে এ ক্ষুদ্র ভূখণ্ডের স্বাধীনতা কিংবা বিচ্ছিন্নতা একটি উল্লেখযোগ্য বিশ্বশক্তি হিসেবে যুক্তরাজ্যকে দুর্বলই করবে, সমৃদ্ধিশালী করবে না। স্কটল্যান্ডের লেবার, কনজারভেটিভ এবং লিব-ডেম সমর্থক ব্যাপক স্কটিশ জনগোষ্ঠী এ সত্য উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতা রক্ষার স্বার্থে আলেক্স স্যালমন্ডের মতো নেতারা এ বৃহত্তর সত্যটি গ্রহণ করতে গিয়েও বারবার পিছিয়ে গেছেন অত্যন্ত সুচতুরভাবে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।