এক.
লোকে বলে তুমি যেমন সে রকম বর পাবে । আমি দেখলাম অধিক সুন্দরী না পায় বর ।
অনিন্দ্য সুন্দরী বলত গায়ের রংটা ফর্সা বলে । নিজের মধ্যে একটা আত্মবিশ্বাস জন্মাতো আর ভালই লাগত যখন অনবরত ছেলেদের অফার পেতাম । পাত্তাই দিতাম না তাদের।
কারন আমার কাছে মনে হতো ছেলেরা যেন আমাকে নয় আমার রুপের পিছনেই ছুটত । আর অনেক ছেলেদের বা মেয়েদের তিক্ত অভিজ্ঞতা জানি । তাই প্রেম করা হয়নি । আর এ জন্য যে কম সমস্যা পোহাতে হয়নি তাও নয় । যা হোক শত যুবকের হৃদয় ভেঙে হঠাৎ একদিন বিয়ে হলো ! ছেলে অনেক পড়ুয়া ।
ধনী ঘরের সন্তান । টাকা গাড়ী বাড়ী আছে । ভাবলাম মধ্যবিত্ত ঘরের এই আমি শুধু সৌন্দর্যের জন্য এতদুরে আসছি । আল্লাহকে ধন্যবাদ দিলাম । কিন্তু আমার এই সুখ বেশিদিন থাকল না ।
বুঝলাম অর্থ মানুষকে কখনও অমানুষ করে তোলে । আমার সতীত্বকে তিলে তিলে লালন করেছি স্বামীর জন্য সেই স্বামীর পরনারীতে আসক্ত । নেশা আর তথাকথিত আভিজাত্য আমাকে প্রতিনিয়ত কষ্ট দিত । আমি হয়ে গেছি তার ঘরের শোপিস আর ভোগের পণ্য । কোন মূল্য নেই আমার ।
আমি অনেক চেষ্টা করেও তাকে ফেরাতে পারি নি । ভাবছি নিখুত একটা মেয়ের কেন এ পরিণতি ? মাঝে মাঝে স্রস্টার প্রতিও অভিমান জাগে ! আমি কেন আজ একা? কেন আজ ডিভোর্সি ? আমার তো কোন দোষ ছিল না !
দুই.
বংশ পরম্পরায় আমরা যেন খুনি ! আমাকে আজ খুনি হতে হয়েছে । আমার আপনজনকে যারা খুন করেছে তাদের আমি ছাড়িনি । নিজেও ওকদিন হারিয়ে যাব জানি । এমন জীবন আর ভাল লাগে না ।
আমিতো খুনি হয়ে জন্মাই নি । পারস্পরিক দ্বন্দ্ব আর কত দিন । এ দক্ষিণের নেতারা নিজেদের স্বার্থে সর্বহারা সহ অনেক দল উপদল তৈরী করেছে নিজেদের জন্য আর আমরা যুবকরা তাদের খেলার পুতুল হয়ে নাচছি । আমরা এ জীবন চাই না , আমনা বাঁচতে চাই ।
তিন.
আবার আমি তিন মাসের পোয়াতি ।
পাঁচ মেয়ের পরে পুত্র সন্তানের অপেক্ষায় । চতুর্থ সন্তান মেয়ে হবার পরে আমার উপর নেমে আসে চরম অশান্তি । যেন সন্তানটা আমি তৈরী করে দিব তাদের কে । এবার আরও নিলাম । খাবার নাই , কাপড় নাই তবুও তার পোলা দরকার ।
বংশের মুখ উজ্জ্বল হবে বলে কথা ! এবার পরীক্ষা করে সে দেখেছে পোলা হবে । আপনারা আমার জন্য দোআ করবেন পোলা যেন হয় ,আর না হলে আমার মরা মুখ দেখবেন ।
চার.
ছেলেটাকে অনেক ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মনে হত। ইস্কুলের টিসার । আমি ঢাকায় অনার্স ফাইনাল ইয়ারে পড়তাম ।
ফেসবুকে পরিচয় আর কথা হত । এলাকার ছেলে হিসেবে তাকে আমার ফ্যামিলি পছন্দ করল । আমাদের বিয়ে হবে । সব ঠিকঠাক । বিয়ের দিনে এসে তার ফ্যামিলি যৌতুক দাবী করল ।
আমাদের সামর্থ ছিল না । আমি সরাসরি তাকে জিজ্ঞেস করলাম , সে নির্বিকার । অবশেষে তাকে সেখানেই ডিভোর্স দিলাম । এখন আমাকে নিয়ে অনেক কুৎসা রটাচ্ছে ওরা ।
পাঁচ.
আমি কি করি তা যদি জান তাহলে মুখ ফিরিয়ে নিবে ।
আমকে পতিতা বলে গালি দিবে । কিন্তু একবারও কি ভাব কে আমাকে এমন বানাল? কেন আমি নিজেকে বিক্রি করে বেঁচে আছি । তেমারা পুরুষরা কেউ প্রেমের ছলনায়, কাজের লোভে , টাকার লোভে , ব্লাক মেইল করে আমাদের কে এখানে নিয়ে এসেছ । নিতান্ত অভাবে খুব কম মেয়েই এখানে আসে । আর একবার যখন আসে তখন আর ফেরার পথ থাকে না ।
অনেক ছেলেই মধুর মধুর কথা বলে কিন্তু আপন করে নেয়ার মত মহৎ কাউকে পাই নি । শুধু কিছু টাকার জন্য যে যন্ত্রণা তা বোঝার মানুষ নেই । সংসার হবে না । বিয়ে হবে না । সন্তান হবেনা এর মত কষ্টের আর কিছু আছে ! আর সন্ত্রাসী , পুলিশ , নেতা , সাংবাদিক , দালালদের ফ্রি নির্যাতন তো আছেই ।
আর আমাদের ইনকামেও অনেকেই ভাগ বসায় বা বেঁচে থাকে । বাহ্যিক সস্তা রুপের আড়ালে যে কস্ট লুকিয়ে আছে তা বুঝার মত মানুষ ইহজগতে একজনও নাই । আজ নিজেকে খুব অসহায় লাগে !
(সবগুলোই কাল্পনিক আর সংগৃহিত) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।