আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঈদুল মিয়ার টয়লেটকর্ম

ছন্দহীন জীবন বড়ই নীরস ভেবেছিলাম ঈদুল মিয়ার এই কাহিনীটা ছন্দে ছন্দে প্রকাশ করবো। কাহিনীর দুটো লাইন হতো এরকম— টয়লেটে পানি নাই টিস্যুও যে আনি নাই... পরে দেখলাম যে, তাতে ঘটনার পূর্ববৃত্তান্তটা আনতে আনতে গেলে আবার হয়তো কেমন লাগতে পারে। ঈদুল মিয়ার এই কাহিনীটা ঢাকা শহরে তার টয়লেট করা নিয়ে। টয়লেট শেষ করার পর সে ট্যাপ ঘুরিয়ে দেখে পানি নেই। টয়লেটের ইনচার্জ যেখানে বসে আছে, সেখানে একটা ড্রামে পানি রাখা আছে।

সে বোকার মতো ঢুকেই কাজ শুরু করে দিয়েছে। আগে যদি চেক করে নিতো, পানি আছে কি না, তাহলে এই দুর্ভোগে পড়তে হতো না। তার সাথে কোনো টয়লেট টিস্যুও নেই। এই পাবলিক টয়লেটে যেখানে শুধু প্রস্রাব করার জন্য তিন টাকা নেয়, সেখানে টিস্যু রাখলে হয়তো প্রতিপিস টিস্যুর দাম রাখতো এক টাকা করে। তিন পিসের দাম তিন টাকা করে তখন আট টাকা দেয়া লাগতো বড় কাজের জন্য।

ঈদুল মিয়া মহাভাবনায় পড়ে গেলো। ওদিকে আবার দরজায় কে যেন ধাক্কাচ্ছে। ভাগ্য ভালো যে, সময় হিসেবে পয়সা রাখে না। যদি এমন হতো যে, ছোট কাজের জন্য দুই মিনিট এবং বড় কাজের জন্য পাঁচ মিনিট; এরপর প্রতিমিনিটের জন্য এক টাকা করে দিতে হবে—তাহলে তো অবস্থা আরো ভয়াবহ হতো। বেশি দেরি করলে কনফারেন্সও মিস হয়ে যেতে পারে।

চরমুগুরিয়া থেকে সে ঢাকা এসেছে শুধু এই কনফারেন্সে যোগ দেয়ার জন্য। আজকের কনফারেন্সে বিদেশ থেকে কোন এক প্রফেসর আসবেন কীভাবে দুই হাত পদ্ধতিতে অতি অল্প সময়ে অর্থ উপার্জন করা যায় সে বিষয়ে বলতে। কনফারেন্সে যোগ দেয়ার টিকিট কিনতে হয়েছে পাঁচশো টাকা দিয়ে। এরপর আসতে-যেতেও পাঁচশো টাকার বেশি যাবে। সাথে খাওয়া আছে।

সুতরাং কনফারেন্স মিস করা যাবে না। কারেন্টও যাচ্ছে না। পানি নেই;, সাথে সাথে কারেন্টও যাবে, তা না। কারেন্টটা চলে গেলে জায়গাটা অন্ধকার হয়ে যেতো; সে তার কর্মটা দ্রুত সম্পন্ন করে বের ভাগতে পারতো। সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যেই সে নিয়ে ফেলেছে।

কারেন্ট থাকা অবস্থায়ই এখন তাকে কাজটা করতে হবে। ঈদুল মিয়া দাঁড়িয়ে প্যান্টটা পুরো খুলে ফেললো। এবার তার আন্ডারপ্যান্টটা বের করে সে কর্ম শেষ করলো। এবার? ভেন্টিলেটর দিয়ে তাকিয়ে দেখলো ওপাশে রাস্তা না। ওপাশে আরেকটা টয়লেট।

এখন কী করার? এটা নিয়ে সে বের হবে কীভাবে? অনেক কায়দা করে সে পেঁচিয়ে-পুঁচিয়ে জিনিসটাকে পকেটে ঢুকিয়ে দ্রুত বের হয়ে এলো রাস্তায়। একটা ডাস্টবিনে জিনিসটা ফেলে দিয়ে হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো। কিন্তু তার ইনের কী হবে? এখন ইন রাখা সম্ভব না। ওখানে আবার টাই ছাড়া যাওয়া যাবে না। ইন ছাড়াই প্যান্টের ওপর শার্ট ছেড়ে দিয়ে টাইটা ভালোভাবে এঁটে নিয়ে হাত দুটো প্যান্টের পকেটে ঢুকিয়ে প্যান্টটাকে সামনের দিকে ঠেলে ধরে কনফারেন্সে যোগ দেয়ার উদ্দেশ্যে ঈদুল মিয়া রওনা হলো।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।