আমি চাই শক্তিশালী স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ
পিলখানা থেকে খোয়া যাওয়া ১০ অস্ত্র শাহাদাত বাহিনীর হাতে
বিডিআর বিদ্রোহের সময় পিলখানার অস্ত্রভাণ্ডার থেকে খোয়া যাওয়া আগ্নেয়াস্ত্রের একাংশ চলে গেছে ভয়ঙ্কর শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহাদাত বাহিনীর হাতে। কলকাতায় পলাতক যুবলীগ নেতা লেদার লিটনকে ব্ল্যাকমেইল করে এসব অস্ত্র হাতিয়ে নিয়েছে শাহাদাত। কলকাতার স্পেশাল টাস্কফোর্স দিয়ে লিটনকে গ্রেফতার করিয়ে অস্ত্র দেওয়ার চুক্তিতে শাহাদাত তাকে ছাড়িয়ে আনে। বিদ্রোহের সময় হাতিয়ে নেওয়া বিপুল পরিমাণ অস্ত্র থেকে ৩টি রাইফেলসহ ছোট, বড় ১০টি অস্ত্র বাংলাদেশে সক্রিয় শাহাদাত বাহিনীর সদস্যদের হাতে তুলে দেয় লিটনের লোকজন। অত্যাধুনিক অস্ত্রের এ চালান হাতে পাওয়ার পর শাহাদাত বাহিনী আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
গার্মেন্ট, হাউজিং, জনশক্তি রফতানি ব্যবসায়ীদের পর এবার ঢাকা-কলকাতা মালামাল আনা নেওয়ার কাজে নিয়োজিত টান্সপোর্ট এজেন্সি মালিকদের কাছ থেকে শাহাদাত চাঁদাবাজি করছে। গত রোজার মাসে এ খাতের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অর্ধকোটি রুপির বেশি চাঁদা আদায় করে সে। টান্সপোর্ট এজেন্সির মাধ্যমে চোরাইপণ্য আনা-নেওয়ার জন্য চোরাকারবারিদের সঙ্গে মালিকদের সমঝোতা করিয়ে দিয়েও মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে শাহাদাত। গোয়েন্দা সংস্থাসহ একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের সময় বিপুল পরিমাণ অস্ত্র-গোলাবারুদ খোয়া যায়।
বিদ্রোহের পর র্যাব-পুলিশ পুরনো ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে অনেক অস্ত্র-গোলাবারুদ উদ্ধার করে। এরপরও খোয়া যাওয়া অস্ত্রের বড় একটি অংশ থেকে যায় হাজারীবাগের যুবলীগ নেতা লেদার লিটনের লোকজনের হাতে। এসব অস্ত্র উদ্ধারের জন্য সে সময় লেদার লিটনকে র্যাব আটকও করেছিল। তবে প্রভাবশালী মহলের তদবিরে ছাড়া পেয়ে কলকাতায় আত্মগোপন করে লিটন। এটাকেই সুযোগ হিসেবে নেয় শাহাদাত।
শীর্ষ সন্ত্রাসী হারিস ও তাজগীরের পরামর্শে শাহাদাত কলকাতার স্পেশাল টাস্কফোর্স দিয়ে লিটনকে আটক করায়। এরপর তাকে ছাড়িয়ে আনার বিনিময়ে তার হেফাজতে থাকা অস্ত্র দাবি করা হয়। শর্তে রাজি হয়ে লিটন পিলখানা থেকে হাতিয়ে নেওয়া অস্ত্রের একটি চালান দেশে শাহাদাত বাহিনীর সদস্যদের হাতে তুলে দিয়ে ছাড়া পায়। এ অস্ত্র হাতে পেয়ে শাহাদাত আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ব্যবসায়ীরা চাঁদা না দিলে যখন তখন খুন-খারাবির ঘটনা ঘটাচ্ছে শাহাদাতের কিলার বাহিনীর সদস্যরা।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, কলকাতায় শাহাদাতের নেতৃত্বে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের একটি গ্রুপ এক হয়ে বাংলাদেশে বেপরোয়া চাঁদাবাজি করছে। পুরস্কার ঘোষিত শীর্ষ সন্ত্রাসী হারিস ও তাজগীরের পরামর্শে শাহাদাত এ মোর্চা গড়ে তুলেছে। মিরপুরের ডিশ শাহীন, পাসপোর্ট অফিসের দেবাশীষ শাহাদাতের হয়ে বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে থাকে। কলকাতায় শাহাদাতের হয়ে প্রশাসনের সঙ্গে লিয়াজোঁ রক্ষা করে রিজু (ভারতীয় নাম সুদীপ) ও মুক্তার (ভারতীয় নাম সুনীল)। পল্টনের মোহাম্মদ ও মোহাম্মদপুর নূরজাহান রোডের হালিম ঢাকা থেকে চাঁদাবাজির টাকা তুলে কলকাতায় শাহাদাতের কাছে পাঠায় বলে গোয়েন্দারা নিশ্চিত হয়েছে।
র্যাব সূত্রে জানা গেছে, শাহাদাতের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ঢাকা ও কলকাতায় আত্মগোপনে থেকে চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করছে শীর্ষ সন্ত্রাসী ত্রিমতি সুব্রত বাইন, হারিস, পুরান ঢাকার ডাকাত শহীদ, মোহাম্মদপুরের নবী হোসেন, মনোয়ার হোসেন বাবু ওরফে ছ্যাঙ্গা বাবু (এরা কলকাতায় পলাতক), মগবাজারের রনি, শাহাজাদা, রামপুরার ডিকন, মোহাম্মপুর নূরজাহান রোডের হালিম ও মিরপুরের আলমগীর হোসেন ওরফে আলমগীর (এরা সবাই এখন ঢাকায়)। এরাই মূলত শাহাদাতের অস্ত্রভাণ্ডারের দেখভাল করে। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সম্প্রতি বেনাপোল বন্দর দিয়ে ঢাকা-কলকাতা মালামাল আনা নেওয়ার কাজে নিয়োজিত টান্সপোর্ট এজেন্সি মালিকরা কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্কফোর্সের প্রধান রাজীব কুমারের সঙ্গে দেখা করেন। তারা শাহাদাতের চাঁদাবাজির বিষয়টি জানিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। শাহাদাতের সঙ্গে রাজীব কুমারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায় প্রথমে তিনি ব্যবসায়ীদের পাত্তা দেননি।
তখন ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশনে তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার কথা জানিয়ে চলে আসার সময় রাজীব কুমার বিষয়টি মিটিয়ে ফেলার উদ্যোগ নেন। গত ২৪ রমজান শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহাদাত, হারিস, ডাকাত শহীদ, তাজগীরকে পার্ক হোটেলে ডেকে নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করিয়ে দেন রাজীব কুমার। বৈঠকে দীর্ঘ আলোচনার পর ৫২ লাখ রুপি চাঁদা দেওয়ার শর্তে সমঝোতা করেন ব্যবসায়ীরা। একই সঙ্গে ব্যবসায়ীদের শর্ত দেওয়া হয় শাহাদাতের প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতে পলাতক ঢাকার পুরস্কার ঘোষিত আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী তানভিরুল ইসলাম জয়ের বিরুদ্ধে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনে চাঁদাবাজির লিখিত অভিযোগ করতে হবে। তখন বৈঠকে উপস্থিত ব্যবসায়ীদের মধ্যে ৫/৬ জন এ শর্ত পূরণে রাজি না হয়ে চলে আসেন।
এ ব্যাপারে রাজীব কুমারের সঙ্গে আমাদের কলকাতা প্রতিনিধি বারবার কথা বলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি জানান, রাজীব কুমার লক্ষ্মীপূজার ছুটিতে থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব নয়। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, আর্থিকভাবে শাহাদাত জয়ের চেয়ে অনেক শক্তিশালী। রাজীব কুমারকে ম্যানেজ করে জয়কে গ্রেফতারের পর পুশব্যাকের মাধ্যমে বাংলাদেশে র্যাবের হাতে তুলে দিয়ে ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডের একচ্ছত্র অধিপতি হতে চাইছে শাহাদাত। এ জন্য সে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনে জয়ের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের দিয়ে অভিযোগ করাতে চেয়েছিল।
শাহাদাতের সামনে এখন একমাত্র বাধা জয় ও তার বাহিনী।
এ ব্যাপারে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার মোঃ মনিরুল ইসলাম সমকালকে বলেন, পুরস্কার ঘোষিত শীর্ষ সন্ত্রাসী জয়ের চেয়ে শাহাদাতের সহযোগীরা এখন বেশি সক্রিয়। শাহাদাতের বিরুদ্ধে তাদের কাছে চাঁদাবাজির অনেক অভিযোগ আছে। তাকে কলকাতা থেকে গ্রেফতার করিয়ে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
রিপোর্টারঃমাহবুব আলম লাবলু
(দৈনিক সমকাল, ৩রা অক্টোবর ২০০৯ইং)
******************************************
শেখ হাসিনা যে ক্ষমতা অপব্যাবহার ও ধূরন্ধর কটু বুদ্ধিতে পরাঙ্গম তা ২০০৯ সালের বিডিআর বিদ্রোহ নিয়ে বিএনপিকে দুষে তা প্রমাণ করলেন।
ঠিক নিজের নামে ১১টি মামলা প্রত্যাহার করে খালেদার গুলি রেখে বলছেন "খালেদা চোর"। ২৫শে ফেব্রুয়ারীর আগেই যে এগুলো সংগঠন করেছে আওয়ামী নেতা তোরাব ও তার পুত্র লেদার লিটন সেগুলো তারা মনে হয় জানেই না। কম্পিউটার কম্পোজে লিফলেট বিতরণ, ভাষণ দিয়ে সিপাহীদের উত্তেজিত করাই ছিল বাপ-বেটার কাজ। আমরা দেখেছি দ্বিতীয় দিন তথা ২৬শে ফেব্রুয়ারী সেনা অভিযান নামে আশে পাশের গোটা এলাকার মানুষ খালি করতে স্থানীয় এমপি তাপসের তোরজোড়। এভাবেই যে বিডিআরের অনেক বিদ্রোহী ও অন্যান্য খুনীরা পালিয়ে গেছে তা বর্তমানে আওয়ামী ও সুশীল মিডিয়াগণ প্রায় কিছুই বলে না।
আর বিডিআরের অস্ত্রাগার হতে লুট হওয়া অস্ত্র ও গোলাবারুদ লেদার লিটন মারফত শাহাদাত ও অন্যান্যদের কাছে সরবারাহ হয়েছিল। অনেক নাটকের পর চট্টগ্রাম হতে লেদার লিটনকে RAB গ্রেফতার করে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকায় তাকে হাসিনার নির্দেশে কারামুক্ত করে বিদেশে ভাগিয়ে দেওয়া হয়। আর হাসিনা ও তার বাকশালী গং প্রোপাগান্ডা করে বেড়ায় খালেদা ক্যান্টনমেন্টের বাসায় ছিলেন না তাকে দুবাই হতে ফোন করে সতর্ক করা হয় ইত্যাদি। কিন্তু কোন প্রমাণই আওয়ামী-বাকশালী গং খালেদা ও বিএনপির বিরুদ্ধে হাজির করতে পারেনি।
কিন্তু হাসিনার মিথ্যা অপবাদ দেওয়া থেমে নেই;
বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার সাথে বিএনপি জামায়াত জড়িত : শেখ হাসিনা
http://www.dailynayadiganta.com/details/31549
এমনকি মার্কিন তারবার্তা ফাস করে দেওয়া উইকিলিক্সে তৎকালীন রাষ্ট্রদূত মরিয়ার্টির উদ্ধৃতি আছে যেখানে বলা হয়েছে বিএনপি-জামাত জড়িত তার কোন প্রমাণ সরকার পায়নি;
২ মার্চের তারবার্তায় রাষ্ট্রদূত লেখেন, বিডিআর বিদ্রোহ কেন, কাদের দ্বারা হয়েছে, কারা এর পেছনে ছিল, এসব নিয়ে জল্পনাকল্পনায় ভরে উঠেছে বাংলাদেশ। সব পক্ষেরই একটা করে ষড়যন্ত্র-তত্ত্ব আছে এবং সেগুলো ব্যাপকভাবে প্রচারিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বয়ং জাতীয় সংসদের অধিবেশনে বলেছেন, বিডিআর বিদ্রোহ ছিল ‘সম্পূর্ণভাবে পূর্বপরিকল্পিত’ (কমপ্লিটলি প্রি-প্ল্যানড)। কিন্তু কারা কী উদ্দেশ্যে এটা ঘটিয়েছে সে ব্যাপারে কোনো তথ্যপ্রমাণ কোনো পক্ষই হাজির করেনি। ষড়যন্ত্র-তত্ত্বের প্রচার চলছে, সবাই এক ‘অদৃশ্য হাতে’র কথা বলছে।
এই পরিবেশে রাষ্ট্রদূত মন্তব্য লেখেন, তদন্ত কমিটিগুলোর কাজ প্রভাবিত হবে। এ ছাড়া তদন্তে যদি প্রমাণিত হয়, তেমন কোনো অদৃশ্য হাত ছিল না, তাহলে জনগণের মনে হবে তদন্ত সৎভাবে করা হয়নি, সত্য ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে। বিডিআর বিদ্রোহ নিয়ে সরকারি ও বিরোধী সব পক্ষের তথ্য-প্রমাণহীন কথাবার্তাগুলোয় মরিয়ার্টি বিস্মিত হননি; কিন্তু তাঁর অস্বস্তি চাপা থাকেনি।
Click This Link
স্পষ্টতই হাসিনা ও বাকশালী গং বিএনপি-জামাতের বিরুদ্ধে কোন প্রমাণ করতে ব্যার্থ। কিন্তু লেদার লিটনকে মূক্ত করে ও বিদেশ ভাগিয়ে হাসিনা প্রমাণ করল যে এর সাথে তারা জড়িত আছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।