আল্লাহ তা'লা বলেন, "নিশ্চয় মদ, জুয়া, প্রতিমাসমূহ এবং ভাগ্য নির্ধারক শরকসমূহ অপবিত্র ও শয়তানের কাজ ছাড়া কিছুই না। অতএব, এগুলো থেকে বিরত থাক যাতে তোমরা সফলতা লাভ করতে পার। " সূরা আল মায়েদা - ৯০ সাংবাদিক সাগর-রুনি দম্পতি খুনের ঘটনার দিন সকাল ৭টা ২১ মিনিটে নিহত রুনির মোবাইল ফোন থেকে তানভীর নামে এক যুবকের মোবাইলে ফোন করা হয়েছিল। এই ফোনের কথোপকথনের সময় ছিল ৮ সেকেন্ড। ৭টা ২৭ মিনিটে রুনির মোবাইল ফোন থেকে ০১৭৩১-৪০২৮০৮ নম্বরে কল করা হয়।
এই ফোনের কথোপকথনের সময় ছিল ৪৪ সেকেন্ড। পরবর্তীতে ৭টা ৩১ মিনিটে একই নম্বরে আবারো কথোপকথনের সময় ছিল ৬ মিনিট ৫০ সেকেন্ড। অর্থাত্ ৭টা ৩৮ মিনিট পর্যন্ত রুনির মোবাইল ফোনে ৩ দফায় মোট কথোপকথন হয়েছে প্রায় ৮ মিনিট। প্রশ্ন উঠেছে, রুনি নিহত হওয়ার খবরটি প্রথমে মেঘ তার মায়ের মোবাইল ফোন থেকে নানি নূরুন নাহার মির্জার কাছে জানালে এই ৩টি ফোন কল কারা করেছিল? রুনির মোবাইল ফোনের কললিস্ট যাচাই করে দেখা যায়, এই ৩টি ফোন কল করার সময় রুনির মোবাইলের সেলকোড ৬০২ নম্বর ছিল। মোবাইল ফোনের ব্যবহূত টাওয়ার ছিল ৫৮/ঘ/১, পশ্চিম রাজা-বাজার।
এই টাওয়ার ও সেলকোডে ঘটনার আগেরদিন রাতে রুনির মোবাইলে ফোন কথোপকথনের সেলকোড ছিল ৬০২, এ থেকে ধারণা করা যায় যে, রুনির মোবাইল ফোন থেকে সকালে যেই ফোন করুক তার অবস্থান ছিল রুনি ও সাগরের বেডরুমে। আর রুনির মোবাইল ফোন থেকে যে মেঘ পরপর ৩ বার ফোন করেনি সে ব্যাপারে গোয়েন্দারা নিশ্চিত হয়েছে। গোয়েন্দারা ১১ ফেব্রুয়ারি সকালে এই ৩টি কল যাচাই করে জানতে পেরেছে, পরের যে ২টি কল একই নম্বরে করা হয়েছে, সেটি ছিল রুনির ভাই নওশেদ আলমের। তবে রুনির মোবাইল ফোন থেকে কে কল করেছিল-এ বিষয়টি তানভীর ও রুনির ভাই বলতে পারবেন। ইতিমধ্যে গোয়েন্দারা তানভীরকে আটক করে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাও করেছে।
এদিকে রুনির মোবাইল ফোনে তার মৃত্যুতে ৭ দিন পূর্ব পর্যন্ত যে ৫০৮টি কল (ইনকামিং ও আউটগোয়িং) করা হয়েছে তারমধ্যে একটি নম্বর থেকে ২৬৬টি কল ও ৯৬টি এসএমএস আদান-প্রদান হয়েছে। গোয়েন্দারা এই মোবাইল ফোন নম্বরের মালিক কাজী গোলাম তৌফিককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। সাগর-রুনি নিহত হওয়ার আগেরদিন ৫৮/এ/১, পশ্চিম রাজাবাজারের ফ্ল্যাটে তৌফিক নামে একব্যক্তির প্রবেশের ব্যাপারে অ্যাপার্টমেন্টের রেজিষ্টার বুকে নাম লিপিবদ্ধ রয়েছে। তবে সেখানে কমলাপুরের ঠিকানা দিয়ে কেটে দেয়া হয়েছে। ২৬৬ বার কল করা ঐ ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে জানানো হয়, তার নাম কাজী গোলাম তৌফিক, বাসা তেজগাঁওয়ের মনিপুরীপাড়ার ১৯/৪/বি নম্বর বাড়িতে।
এদিকে ১২ দিন অতিক্রম হলেও এ হত্যাকাণ্ডের কোন কুলকিনারা করতে পারেনি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি), ডিবির উপ-কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, ৩টি কারণকে সামনে রেখে তদন্ত করা হচ্ছে। ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও পেশাগত বিষয়গুলো মাথায় রেখে তদন্ত কাজ এগিয়ে যাচ্ছে।
অন্যদিকে গোয়েন্দারা রুনির সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথোপকথনের জের ধরে সংশ্লিষ্ট ২ যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। রুনির সঙ্গে ঐ দুই যুবকের ঘনিষ্ট সম্পর্কও ছিল বলে গোয়েন্দারা ধারণা করছেন। তবে সাগর ও রুনি নিহত হওয়ার সময় তাদের মোবাইল ফোনের অবস্থান পশ্চিম রাজাবাজারে ছিল না বলে হত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার তেমন গুরুতর অভিযোগ আনতে পারছে না।
তবে গোয়েন্দারা জানান, ঘটনার দিন সকালে ঐ ফ্ল্যাটে প্রথম প্রবেশ করেছেন রুনির মা নূরুন নাহার মির্জা। তার বক্তব্য আর মোবাইল ফোনের কললিস্টের তথ্যের মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে। এ কারণে গোয়েন্দারা জিজ্ঞাসাবাদে নিশ্চিত হতে পারছে না যে হত্যাকাণ্ডের পর ঘাতকরা কীভাবে ফ্ল্যাট থেকে চলে গেলো। কারণ রুনির মোবাইল সকাল ৭টা ২১ মিনিটে ব্যবহার হওয়ায় ধরেই নেয়া হচ্ছে কেউ ঐ ফ্ল্যাটে প্রবেশের পূর্বে লাশের পাশে অবস্থান করছিলেন অথবা রুনি সকাল ৭টা ৩১ মিনিট পর্যন্ত জীবিত ছিলেন।
সূত্র : ইত্তেফাক ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।