আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঘুরে এলাম বালিয়াটি প্রাসাদ, পাকুটিয়া জমিদার বাড়ী

হঠাৎ করেই অফিসের সবাই মিলে প্ল্যান করলাম ছুটির দিনে কোথাও ঘুরতে যাবো । ময়মনসিংহ, বিরিশিরি আর মানিকগঞ্জের মধ্যে আপাতত সবাই মত দিলো । দ্বিতীয়টি দিন যেয়ে দিন ঘুরে আসা যায় তাই সবাই মানিকগঞ্জ যাওয়ার পক্ষপাতী । মানিকগঞ্জ যেহেতু আমি একবার ঘুরে এসেছি তাই ট্যুর এ্যারেঞ্জ করার দায়িত্ব আমাকেই দেয়া হল । নির্দিষ্ট দিনে বের হয়ে গেলাম মানিকগঞ্জের পথে ।

এক মাইক্রোতে আমরা ৮ জন আর আমাদের ম্যানেজার ডিপার্টমেন্ট হেড তার প্রাইভেট কারে তার পরিবারসহ । বলা বাহুল্য ট্যুর করার ব্যাপারে তার আগ্রহ সবার বেশী ছিলো । তাহলে চলুন ঘুরে আসা যাক সংক্ষিপ্ত ইতিহাস বালিয়াটি প্রাসাদ, সাটুরিয়া, মানিকগঞ্জ ======================== মানিকগঞ্জ জেলার পুরাকীর্তির ইতিহাসে বালিয়াটির জমিদারদের অবদান উল্লেখ যোগ্য। বালিয়াটির জমিদারেরা ঊনিশ শতকের প্রথমার্ধ থেকে আরম্ভ করে বিশ শতকের প্রথমার্ধ পর্যন্ত প্রায় শতাধিক বছর বহুকীর্তি রেখে গেছেন যা জেলার পুরাকীর্তিকে বিশেষভাবে সমৃদ্ধ করেছে। বালিয়াটির পাঠান বাড়ীর জমিদার নিত্যানন্দ রায় চৌধুরীর দু’ছেলে বৃন্দাবন চন্দ্র রায় চৌধুরী এবং জগন্নাথ রায় চৌধুরীর মাধ্যমে বালিয়াটির নাম দেশে বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছিল।

বালিয়াটিতে আজও দু’বেলা রাধা বল্লব পূজো হচ্ছে। বালিয়াটিতে ১৯২৩ সালের দিকে জমিদার কিশোরী রায় চৌধুরী নিজ ব্যয়ে একটি এলোপ্যাথিক দাতব্য চিকিৎসালয় স্থাপন করেন। বর্তমানে এটি সরকারী নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হচ্ছে। জমিদার হীরালাল রায় চৌধুরী সাটুরিয়া থেকে বালিয়াটির প্রবেশ পথের পাশে কাউন্নারা গ্রামে একটি বাগানবাড়ী নির্মাণ করেন এবং সেখানে দিঘির মাঝখানে একটি প্রমোদ ভবন গড়ে তোলেন যেখানে সুন্দরী নর্তকী বা প্রমোদ বালাদের নাচগান ও পান চলতো। বর্তমানে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর দৃষ্টিনন্দন এ প্রাসাদের রক্ষনাবেক্ষণ করছে ।

সাপ্তাহিক দেড়দিন (রবিবার পুরা দিন, সোমবার অর্ধবেলা )ছুটি এবং সরকারী ছুটির দিন বন্ধ থাকে । গরম কাল (১ এপ্রিল - ৩০ সেপ্টেম্বর) খোলা: সকাল ১০:০০ - সন্ধ্যা ৬:০০ বিরতি: দুপুর ১:০০ - ১:৩০ শীতকাল ( ১ অক্টোবর - ৩০ মার্চ) খোলা: সকাল ৯:০০ - সন্ধ্যা ৫:০০ বন্ধ জানালা মরিচা পরা ইতিহাস অযত্নে বেড়ে উঠা নতুন প্রাণ নিশ্চুপ সাক্ষী প্রাসাদ- ১ প্রাসাদ- ২ পাকুটিয়া জমিদার বাড়ী কমপ্লেক্স, নাগরপুর, টাঙ্গাইল ================================ ইতিহাস থেকে জানা যায় এককালে পশ্চিম বঙ্গের বাকুরা, মেদেনীপুর, বর্ধমান ও শাওতাল পরগনায় কিয়দংশ ও ছোট নাগপুরের অধিত্যক্তা ভূমির কিছু অংশ নিয়ে গঠিত বিষ্ণপুর থেকে প্রথমে রামকৃষ্ণ সাহা মন্ডল নামের একজন বিশিষ্ট ব্যক্তি প্রথমে ছনকায় পরে নদী ভাঙ্গনের কারণে হাড়িপাড়া হয়ে অপেক্ষাকৃত উচু ভূমি পাকুটিয়াতে বশত স্থাপন করেন। ইংরেজদের কাছ থেকে ক্রয় সূত্রে তাঁদের জমিদারী শুরু হয়। এটি ঊনবিংশ শতাব্দীর ঠিক শুরুতে। রামকৃষ্ণ সাহা মন্ডলের দুই ছেলে বৃন্দাবন ও রাধা গোবিন্দ।

রাধা গোবিন্দ নিঃসন্তান কিন্তু বৃন্দাবন চন্দ্রের তিন ছেলে- ব্রজেন্দ্র মোহন , উপেন্দ্র মোহন এবং যোগেন্দ্র মোহন। এভাবে পাকুটিয়া জমিদারী তিনটি তরফে বিভক্ত ছিল। জমিদাররা সবাই ছিলেন প্রজানন্দিত। ১৯১৬ খ্রিঃ তাঁরা তাঁদের পিতা বৃন্দাবন এবং কাকা রাধা গোবিন্দের নামে বৃন্দবন চন্দ্র রাধা গোবিন্দ উচ্চ বিদ্যালয় (বিসিআরজি) প্রতিষ্ঠা করেন। ডঃ এ,আর মল্লিক, সাবেক প্রধান মন্ত্রী আতাউর রহমান খান ভবা পাগলা প্রমুখ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কৃতি সন্তান ছিলেন।

বর্তমান প্রধান তিনটি স্থাপনাই অপূর্ব শিল্প সুষমমন্ডিত। পাশ্চত্তীয় শিল্প সংস্কৃতি সমৃদ্ধ মনের মাধুরী মিশিয়ে স্থাপত্য মূল্যের এক অনন্য সৃষ্টি তাদের এই অট্টালিকা। তিনটি বাড়ীর সামনেই তিনটি নাট মন্দির। বড় তরফের পূজা মন্ডপের শিল্পিত কারুকাজ শতবছর পর এখনও আমাদের মুগ্ধ করে। দেশ বিভাগের পরে তৎকালীন সরকার কর্তৃক পুরো সম্পদ অধিগ্রহণের পর জমিদারদের প্রতি আনুগত্য প্রকাশের নিদর্শন স্বরূপ ১৯৬৭ সালে এই সম্পদের উপর গড়ে তোলা হয় বিসিআরজি ডিগ্রী কলেজ।

বিসিআরজি ডিগ্রী কলেজ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর মনেহয় এর খোঁজ এখনও পায়নাই তাই এর কোন রক্ষনাবেক্ষণ নাই এবং ঐতিহ্যবাহী সব নিদর্শন ধ্বংস হওয়ার পথে । । ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.