আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অতীব আধুনিক ডিজিটাল চুপকথা ( ভয়াবহ ১৮ পেলাস) রিপুষ্ট

কিছুনা লিচু খাই সে অনেকদিন আগের কথা, একটি ছোট দেশে ছিল একজন দেড়শো কেজি ওজনের একজন বিশাল রাজা। রাজার কিছুরই অভাব ছিলোনা, সব ছিল ডাবল ডাবল। সব মন্ত্রালয়ে ডাবল ডাবল মন্ত্রী ছিল, হাই কনফিগারশেনের দুইটি আপলের ল্যাপটপ ছিল। দুইটি হাই চিকন-ফিগারের সুন্দরি বউ ছিল সুউচ্চ দুটি ফ্ল্যাটে ইনষ্টল করা। নিচ থেকে সুউচ্চ ফ্ল্যটের বারান্দায় বিবিদের চুল শুকানোর মনোহর সেই ছবি লাইভ দেখতে এলাকার দুষ্ট প্রজারা দুরবিক্ষন যন্ত্র ব্যবহার করত এবং নিজের পায়ে দাড়াতে তা উচ্চ মুল্যে ভাড়াও দিতো।

রাজার মন্ত্রীরা এইসব জানলেও রাজার কানে কোনোদিন আসতে দেয়নি। কারন তারা সবাই ঐ দুরবিক্ষন যন্ত্রের গোপন গ্রাহক ছিলেন। রাজার বাচ্চা কাচ্চাও ছিল দুই জোড়া। বাচ্চা কাচ্চার গায়ে থলে থলে চর্বিযুক্ত মাংসের বার মাসব্যাপি বানিজ্য মেলা লেগেই থাকতো। ফাষ্ট ফুড ছাড়া কিছুই মুখে তুলতোনা তারা, কিন্ত তারা নিজেরা ছিলো খুবই স্লো।

নিজেদের ওজন বহন করতে নিজেরাই অপারগতা জানাতো প্রায়শই। ধানমন্ডী লেক মুখি দক্ষিনা বারান্দা, সেখানে সকালে চা খেতে খেতে পেপার পড়তেন রাজা। পাঠক বুঝেই গেছেন আশা করি , রাজার সব কিছুই ছিলো। তাও বাকিসব গল্পের মতন এই রাজার মনেও আমি লেখক হিসেবে সুখ দিতে নারাজ। হ্যা সব থাকার পরেও এই গল্পের রাজার মনে একদম সুখ ছিলোনা।

কারন শুনলে আগের রাজারা অক্কা পেতেন , কিন্ত অদ্যসময়ের পাঠকদের অবাক হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। রাজার কোনো কাজের বুয়া ছিলোনা। রাজা সব খানেই তন্য তন্য করে খুজেও একজন কাজের বুয়া জোগাড় করতে ব্যর্থ । রাজার প্রাসাদের ( চার হাজার স্কয়ার ফুট) ঘর মুছার কথা শুনে সব বুয়াই চলে যায়। বুয়াদের পায়ে ধরতেও বাকি রাখেননি আমাদের রাজা মশাই।

সর্বশেষ বুয়াকে অনেক লোভ দেখিয়ে আনা হলেও , রাজার বাচ্চা কাচ্চার জামার সাইজ দেখে বুয়া রেগে মেগে রাজাকে তার ফেসবুক ফ্রেন্ডলিষ্ট থেকেই ডিলেট মেরে দেয়, এমনকি পোক মারার রাস্তাও বন্ধ। রাজার বউদের হাতের রান্না ওয়াক থু ক্যাটগরির ও নিচের লেভেলের ছিলো। বউদের পা রাজা নিজ হস্তে টিপে দিবেন এই শর্তে ঘরের কিছু কাজ ছোট কাজ বউদের দিয়ে করাতেন। বাকি কাজ রাজা নিজেই করতেন। বান্ধা বুয়া মানে বাসায় থেকে সব কাজ করবে এমন বুয়া রাখার ড্রিম রাজার অনেক দিনের, রাতে অফিস থেকে এসে একটু আরাম করতে পারতেন।

অর্ধেক সম্পত্তি লিখে দেবার কথা বলেও বুয়া রাজি করতে না পেরে রাজা তার সপ্ন কেটে ছোট করে নিলেন, ছুটা বুয়ার পিছে হন্নে হয়ে ছুটতে লাগলেন। রাজ্যের নানা ফাইল ঐদিক দিয়ে জমতেই থাকলো। সে গুগলে how to find a good bua লিখে অনেক সার্চ দিয়ে ক্লান্ত হয়ে গেলো, এরপর how to find a bua দিয়েও সার্চ মেরে যখন কোনো কাজ হলোনা তখন আশা প্রায় ছেড়েই দিলেন। হঠাত একদিন রাতে সপনে দেখতে পেলেন, সাদা দাড়িওয়ালা এক নুরানি চেহারার লোক তাকে বলছেন " ওহে অবুঝ , বুয়া পাওয়া কি এতোই সোজা রে । তোকে সাধনা করতে হবে।

" রাজা প্রশ্ন করলো কি সাধনা করতে হবে বলেন শুধু হুজুর। লোকট বলিলো, তোকে এক সপ্তাহ নেটবিহীন থাকতে হবে। সাথে রাজা আতকে উঠলেন। রাজার মনে ফেসবুক, সামু , আমু, নাগু , সচু , যৌবনযাত্রা নানা ওয়েবের হোমপেজ ভেসে উঠতে লাগল। সে তখন দুই কানে হাত দিয়ে নাআআআআ বলে বিশাল চিতকার দিয়ে উঠে পরলেন।

বিবি প্রশ্ন করলো কি হয়েছে বুয়াহীন রাজার, উঠেই বিবির এহেন তিরষ্কার শুনে রাজা ক্ষিপ্ত হইয়া মডেম খানা কমোডে ছুড়ে ফেলে দিলেন। রাজার বেগম তা দেখিয়া খুবই আনন্দ পেলেন। পরের রাতে আবার ঐ হুজুর আসিলো , এইবার হুজুর বললেন " তোকে নেট ছাড়া থাকতে বললাম আর তুই কিনা জিপির আনলিমিটেড নেট নিয়ে মোবাইলে ঘাপানো শুরু করলি, এইরকম সাধনা করলে বুয়াতো দুরের কথা একটা শুয়োপোকাও পাবিনারে অধম। তখন রাজার টনকে ভাইব্রেশন অনুভুত হইলো। সে ঘুম থেকে উঠেই জিপির সিম ফেলে টেলিটক ভরে নিলো, যেটাতে চাইলেও নেট এক্টেভেট করা সম্ভব না, কারন কিভাবে ইহাতে নেট চালাতে হয় ইহজগতের কেউ তা জানেনা।

এরপর রাজা ভাবিলো , এতো কিছু ছেড়ে দিলাম একটা তরতাজা বুয়াতো এইবার পাবোই ,কিন্ত না । রাতে ঘুমের মধ্যে বুড়োটা আবার হাজির , এইবার বুড়াটা যা বললো তা শুনে রাজার সব ঝাপসা হয়ে গেলো। এইবার বুড়াটা বললো তোমার বাসার ডিশের লাইন কাটতে হবে। বিবিদের কিভাবে এই কথা বলবে এই চিন্তা করে ঘুমের মধ্যেই তার পুরা শরীরে কালা ঘাম ছুটিলো। তাও একটি বুয়ার লোভ সে বিবিদের এই কথা বললো।

সাথে সাথে তার দুই বিবির হামলার মুখে তার প্রানবায়ু প্রায় বের হয়ে যাওয়ার পথে। বিবিদের কথা হলো, ***লের রাজা তুমি, কতো কথা বলে আমাদের বিয়ে করে আনলে এখন কাজের লোকতো দিতেই পারোনা। এখন ডিশের লাইন কেটে দিতে বলো, ষ্টার প্লাস , সনি , ষ্টার জলসা ছাড়া আমাদের পেটের ভাত কোনোদিন হজম হতে দেখেছো । এতো পাষানের মত এই কথা তুমি কিভাবে বললা। রাজা বুঝলেন কঠোর হতেই হবে।

রাজার সাফ বলে দিলেন ডিশের লাইন না কাটলে সোজা তালাক দিয়ে দিবেন। তখন বিবিদের একটু বিদ্রোহ কমে গেলো। তখন তাদের মাথায় তেরি মেরির বাংলা ভার্সনের ভিডিও গানটা ভাসছিলো " দোহাই লাগি পায়ে পড়ি যাইয়োনাগো ময়নার বাপ, ছুটু ছুটু পোলাপান নিয়া এখন আমি কি করুম" । এভাবে ইন্টারনেট , মোবাইলে ব্রাউজ, ডিশ ছাড়াই তাদের দিন কাটতে লাগলো বুয়ার আশায় আশায় । এরপর এভাবে কতোদিন কেটে গেলো আমি ( মানে এই গল্পের লেখক) নিজেও টের পাইনি ।

হঠাত রাজার ঘুমের মধ্যে ঐ বুড়াটা আবার হাজির। এইবার বলতে লাগলো " কি বাছা তোমার বুয়ার অভাব পুরনা হলো। " রাজা জবাব দিলো, না বুয়াতো আসেনি কোনো। বুড়া বলে, আমি কিন্ত প্রশ্ন করেছি বুয়ার অভাব পুরন হয়েছে কিনা। তখন রাজা চিন্তা করে দেখে, তাইতো এখন আমি নেট গুতাইয়া আর একি খবর সারাদিন বা টেষ্ট ম্যাচ দেখে টাইম নষ্ট করিনা।

এখন আমি নিজেই ঘরের অনেক কাজ করতে পারি, আর আমার বিবিরাও ঘরের অনেক কাজ করে রাখে । আমার তেমন কাজও করতে হয়না। আর বিবিদের রান্নার হাতো ভাল হচ্ছে দিন দিন। তারমানে আগে তারা সিরিয়াল দেখার উত্তেজনায় মন দিয়ে রান্নাই করতোনা। এখন আমার বিবিদের আমার আগের চেয়ে অনেক বেশি সুন্দরও লাগে।

নেটে বাজে আজে সাইটে ঢুকে বেগানা নারীও দেখা হয়না। মন ভাল থাকে কারন সামুতে ঢুকে ছাগু, হাগু , আস্থিক নাস্তিক ক্যাচালো দেখিনা। অতঃপর আমার গল্পের রাজা বুড়োর কাছে অনেক ধন্যবাদ দিয়ে সবপ্ন শেষ করলো, এবং সুখে শান্তিতে রাজা বসবাস করতে লাগলো। আর গল্পের বেকার লেখক তার হাজার কাজ ফেলে কিবোর্ড টিপিতে টিপিতে ক্লান্ত হয়ে লেপের নিচে ঢুকে সুখে শান্তিতে আগডুম বাগডুম চিন্তায় মশগুল হয়ে গেলো। বিঃদ্রঃ অনেকদিন পর সেইফ হইয়া খুশিতে এই পোষ্টটা আবার দিলাম ।

আরো একটা কথা, ১৮ প্লাস কন্টেন্ট ডুকাতে ভুলেই গেছিলাম , পরে কোনোদিন ডুকাবো ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.