‘ধুমপান বিষপান'। কিন্তু ধূমপান না করলে অনেকেই অস্বস্তি বোধ করেন। আবার জেনেও অনেকেই এখনও ধুমপান করে যাচ্ছে। ধুমপানমুক্ত বিশ্ব গড়ে তুলতে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। আমরা নিজেরা যারা ধুমপান করছি তাদেরকে আগে ধুমপান ত্যাগ করতে হবে।
এ জন্য নিজের ইচ্ছে শক্তিটাই যথেষ্ট।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু ১৯৮৭ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী তামাকমুক্ত দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। মানুষকে ধুমপানের কুফল সম্পর্কে সচেতন করে তোলাই ওই পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু'র রিপোর্টে বলা হয়েছে, বর্তমানে বিশ্বের প্রায় দেড়'শ কোটি মানুষ ধুমপান করে। এরমধ্যে ৮০ শতাংশেরই বসবাস উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এবং ধুমপায়ীদের গড় আয়ু অধুমপায়ীদের গড় আয়ুর চেয়ে ২০ বছর কম।
ধুমপানের কারণে প্রতি বছর পঞ্চাশ লক্ষ মানুষ মারা যায়। স্বাস্থ্য বিষয়ক এক গবেষেণায় দেখা গেছে, ক্যান্সার, শ্বাসকষ্ট ও হৃদরোগসহ অন্তত : ২৫ ধরনের রোগের সঙ্গে ধুমপানের কোন না কোনভাবে সম্পর্ক রয়েছে।
ধুমপান জাতীয় অর্থনীতির জন্য ক্ষতি বয়ে আনে। কিন্তু বিড়ি-সিগারেটের ব্যবসায় যেহেতু লাভ অনেক বেশি সে কারণে বড় বড় কোম্পানিগুলো ধুমপায়ীর সংখ্যা বাড়াতে ব্যপক তৎপরতা চালাচ্ছে। অবশ্য গত কয়েক দশক ধরে উন্নত দেশগুলো ধুমপান নিয়ন্ত্রণের গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পেরেছে এবং ধুমপান নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে।
তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে তরুণদের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি হবার কারণে তা বিড়ি ও সিগারেটের লাভজনক বাজার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
এক গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব শিশুর বাবা-মা সিগারেট খান তারা অন্যদের তুলনায় দ্রুত রোগাক্রান্ত হয় এবং শারীরিকভাবে দুর্বল থাকে। এছাড়া, ধুমপায়ী মায়েদের সন্তানের ওজন জন্মের সময় স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম বা বেশি হয়ে থাকে।
যারা সিগারেট খায় তাদের মাদকাসক্ত হবার আশংকা বেশি থাকে। কাজেই সন্তানকে বিড়ি বা সিগারেট থেকে দূরে রাখার অর্থ হলো মাদকের কাছ থেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখা।
তবে সন্তানরা তখনি ধুমপান না করার উপদেশ শুনবে যখন তার বাবা নিজে ধুমপান থেকে বিরত থাকবে। অবশ্য ধুমপানের মতো মারাত্মক সমস্যা সমাধানের জন্য একদিন, দুইদিন বা এক সপ্তাহর কর্মসূচি যথেষ্ট নয়। এ জন্য বছরজুড়ে চেষ্টা চালাতে হবে। দেশ ও সমাজকে সচেতন করে তুলতে ধুমপানের কুফল সম্পর্কে হাতে কলমে শিক্ষা দিতে হবে। গণমাধ্যমে সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান প্রচার করতে হবে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ বিষয়ে আলোচনা হতে হবে। বিদ্যমান আইনগুলো কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।