তনিমা যে এভাবে দেখা দেবে ভাবিনি।
দেখতে চাইতাম তো অবশ্যই, ইদানীং না-দেখাটাকে আনস্মার্টনেসের বড় লক্ষণ বলে ধরা হয়। সেধে কে স্মার্টনেস হারাতে চায়? তার ওপর আবার আমি পুরুষ। পুরুষ তো দেখতে চাইবেই। পুরুষ তো শিকারী, শিকার করতে হলে তো আগে দেখতে হবে, পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
ক্ষেত্র প্রস্তুত করা কোন ব্যাপার ছিল না। একটা ঘর দরকার, যাতে সবার অলক্ষ্যে দেখাশোনাটা করে ফেলা যায়। এতদিন আছি এই শহরে, এতো পরিচিত, একটা ঘর ম্যানেজ করতে পারব না? বান্ধবেরা কিন্তু ঘরের ব্যবস্থা করে দিতে উদগ্রীব ছিল। আরে তাদের বন্ধু তার গার্লফ্রেন্ডের সাথে একান্তে ঘরের ভিতরে কিছু সময় কাটাবে, তার যোগাড়যন্ত্র করতে পারবে না, কিসের বন্ধু তারা?
কৌমার্য্য ধরে রাখতে আমার যে বিশেষ আগ্রহ ছিল, তা নয়। আরে পুরুষের কুমার জীবন আর কৌমার্য্য হারানোর পরের জীবনের কোন তফাৎ আছে কী? শুধু মাংসের ক্ষুধা বৃদ্ধি ছাড়া? নারী শরীরের মতো কোন পাতলা আবরনী নেই, নেই হঠাৎ করে জন্ম নেওয়া উত্তর পুরুষের চাপ।
কৌমার্য্য ধরে রাখাই তো পুরুষের জন্য কঠিন!
বন্ধুরা তাগাদা দেয়, কি কতদূর হোল?
কতদূর হোল বলতে পারিনা, লজ্জা লাগে। বহু-নারী-অভিজ্ঞ এক বন্ধু আমাদের জানায়, কীভাবে সে অমুককে উন্মোচিত করেছে। ''তাড়াতাড়ি রুমে নে'', বন্ধুটি বলে, ''না হোলে ভেগে যাবে। ''
ভেগে যাবে? শিউরে উঠি আমি। ওকে ছাড়া বাঁচতে পারবো?
ভয়ে ভয়ে তাই তনিমাকে জানাই, বয়ফ্রেন্ড মানে কী? অক্সফোর্ড ডিকশনারি কী বলে?ইমোশনাল অর সেক্সুয়াল রিলেশন।
এই যুগে নাকি সেক্সুয়াল রিলেশনটাই বড় ব্যাপার।
ও তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেয়। ওসব ও করবে ওর বেটার হাফের সাথে। বিয়ে ছাড়া বেটার হাফ হয় বুঝি? আগে বিয়ে করো, তারপর সব পাবে।
হায়! বিয়ে হবে কবে? কবে অন্ন-সংস্থান করতে পারবো অন্তত দু'জনের?
বিয়ে একদিন হোল।
তবে আমার না, তনিমার। না তখন ওকে আমার স্বার্থপর বলে মনে হয়নি। কেনই বা হবে? নিজের সুখী ভবিষ্যত বেছে নেবার অধিকার সবার আছে। স্বপ্ন দেখতে জানি আমি, কিন্তু পরিশ্রম করতে নয়। আমাদের সমাজে এমনিতেই কন্যাসন্তানকে দায় ধরা হয়।
কতদিন সে আমার জন্য বসে থাকবে?
কেন আমাদের মিলন হোল না, আমরা জানি। অথচ বন্ধু-বান্ধবেরা ব্যাখ্যা দিতে থাকল। কেউ কেউ আমার ক্লীবত্ব নিয়ে ঠাট্টা করলো। ফ্রয়েডের যুগ এটা।
না, আমার কৌমার্য্য অক্ষত থাকল।
আর কয়েক মাস পরেই দেখলাম, সয়ে গেছে সবকিছু। যাকে একদিন না দেখলে কেমন কেমন লাগতো, তাকে ভুলে থাকা যাচ্ছে। সত্যি, সময়ের চেয়ে ভালো প্রতিকারক নেই!
ভুলেই যেতাম হয়তো, তিন বছর পর আবার স্মৃতিচারণ করতে বসতাম না। হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে হতো না। যদি না, তনিমা এভাবে ফের দেখা দিত।
ইন্টারনেটে পর্নো সাইট দেখছিলাম। দেশি কাপলস হিশেবে তনিমা আর তার স্বামীকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছে। কামসূত্র শেখাচ্ছে দু'জন। সিঙ্গল ফটোগুলোতে তনিমা বেআব্রু। কীভাবে এসব ব্যক্তিগত ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ল সেসব ছাপিয়ে আমার মাথায় উঁকি দিচ্ছিল অন্য আর একটা কথা।
যার জন্য একসময় রুম খুঁজছিলাম, সে নিজে এসে হাজির আমার বেডরুমে!
রাজশাহী ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।