বিদেশে পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনা সহজ করতে ‘মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিল-২০১২’ আজ সোমবার জাতীয় সংসদে উত্থাপিত হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনে পুঁজিবাজারকে প্রভাবিত করে সুবিধা নেওয়াকে মানিলন্ডারিং-সম্পর্কিত অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বিলটি উত্থাপন করেন। উত্থাপনের পর বিলটি তিন দিনের মধ্যে যাচাই-বাছাই করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
এর আগে গত ১৬ জানুয়ারি মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ অধ্যাদেশ ২০১২ জারি করা হয়।
এর মাধ্যমে ২০০৯ সালের প্রণীত এ-সংক্রান্ত আইনটি বাতিল হয়ে যায়। বিধান অনুযায়ী সংসদের অধিবেশন শুরুর ৩০ দিনের মধ্যে অধ্যাদেশকে আইনে পরিণত করা না হলে তা অকার্যকর হয়ে যাবে।
মানি লন্ডারিং-সম্পর্কিত অপরাধের সংজ্ঞায় জলদস্যুতা, বিমানদস্যুতা, শুল্ক-সংক্রান্ত অপরাধ, মেধাস্বত্ব লঙ্ঘন, সন্ত্রাসী কাজে অর্থ জোগান, পরিবেশগত অপরাধ, যৌন নিপীড়ন ও পুঁজিবাজার-সম্পর্কিত অপরাধসহ আরও বেশ কিছু বিষয়কে নতুন আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। পুঁজিবাজার-সম্পর্কিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ হওয়ার আগে তা কাজে লাগিয়ে শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে বাজার থেকে সুবিধা নেওয়া এবং ব্যক্তিগত বা প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধার লক্ষ্যে বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টাকে পুঁজিবাজার সম্পর্কিত অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে।
বিবৃতিতে অর্থমন্ত্রী বলেন, মানি লন্ডারিং আইনকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা এবং এর প্রয়োগকে বাস্তবসম্মত করতে নতুন আইন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এই আইনটি করা হলে বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ইউনিটগুলোর সংগঠন ইগমন্ট গ্রুপের সদস্যপদ পাওয়া সহজ হবে। বিদেশে পাচার করা অর্থ পুনরুদ্ধারের কাজও জোরদার হবে।
প্রস্তাবিত আইনের ১২ ধারায় বলা হয়েছে, ফৌজদারি কার্যবিধি বা আপাতত বলবত্ অন্য কোনো আইনে যা-ই থাকুক না কেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুমোদন ব্যতীত কোনো আদালত এই আইনের অধীনে কোনো অপরাধ বিচারের জন্য আমলে নেবে না।
বিলের ১৭ ধারায় বলা আছে, এই আইনের অধীনে কোনো ব্যক্তি বা সত্তা মানি লন্ডারিংয়ের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলে আদালত অপরাধের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত দেশে বা দেশের বাইরে অবস্থিত যেকোনো সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দিতে পারবে।
২৬ ধারায় বলা আছে, কোনো চুক্তির অধীনে কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের আদালতের কোনো আদেশ কার্যকর করার জন্য বাংলাদেশে অবস্থিত কোনো সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা বা ফেরত দেওয়ার প্রয়োজন হলে অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসের আবেদনক্রমে আদালত উপযুক্ত আদেশ দিতে পারবেন।
একইভাবে বাংলাদেশে আদালতের বাজেয়াপ্তকরণ আদেশ বা ওই সম্পত্তি ফেরত আনার আদেশ বাস্তবায়নের জন্য চুক্তি বা সমঝোতা স্মারকের অধীন রাষ্ট্রকে অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস অনুরোধ করতে পারবে। প্রস্তাবিত এই আইনে মানিলন্ডারিংয়ের সর্বোচ্চ দণ্ড ১২ বছর এবং সর্বনিম্ন ৪ বছর করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির ভাষণ: রাষ্ট্রপতির ভাষণ-সম্পর্কিত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় আজও সরকারদলীয় সাংসদেরা বিরোধী দল ও বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার সমালোচনা করেন। তাঁরা বিরোধী দলকে সংসদে এসে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে অন্য কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় কি না, সে সম্পর্কে প্রস্তাব করার আহ্বান জানান। আলোচনায় অংশ নেন প্রমোদ মানকিন, এম এস আকবর, ইদ্রিস আলী, আবদুল হাই, বজলুল হক হারুন, আবদুল মান্নান, টিপু মুন্সি, কে এম খালিদ, জুনায়েদ আহমেদ, মমতাজ বেগম প্রমুখ।
এরপর সংসদের অধিবেশন কাল মঙ্গলবার বিকেল চারটা পর্যন্ত মুলতবি করা হয়। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।